সূরা ইউনুস - Page: 3

وَاِذَآ اَذَقْنَا النَّاسَ رَحْمَةً مِّنْۢ بَعْدِ ضَرَّاۤءَ مَسَّتْهُمْ اِذَا لَهُمْ مَّكْرٌ فِيْٓ اٰيٰتِنَاۗ قُلِ اللّٰهُ اَسْرَعُ مَكْرًاۗ اِنَّ رُسُلَنَا يَكْتُبُوْنَ مَا تَمْكُرُوْنَ ٢١

দুঃখ কষ্ট মানুষকে স্পর্শ করার পর আমি যখন তাদেরকে অনুগ্রহ আস্বাদন করতে দেই, তখন তারা আমার নিদর্শনগুলোর ব্যাপারে কুট কৌশলের আশ্রয় নেয়। বল, ‘কৌশল গ্রহণে আল্লাহ হলেন ক্ষিপ্রগতিসম্পন্ন, তোমরা যে সব কূটচাল গ্রহণ কর আমার ফেরেশতাগণ তা লিপিবদ্ধ করে রাখে।’ ([১০] ইউনুস: ২১)

هُوَ الَّذِيْ يُسَيِّرُكُمْ فِى الْبَرِّ وَالْبَحْرِۗ حَتّٰٓى اِذَا كُنْتُمْ فِىْ الْفُلْكِۚ وَجَرَيْنَ بِهِمْ بِرِيْحٍ طَيِّبَةٍ وَّفَرِحُوْا بِهَا جَاۤءَتْهَا رِيْحٌ عَاصِفٌ وَّجَاۤءَهُمُ الْمَوْجُ مِنْ كُلِّ مَكَانٍ وَّظَنُّوْٓا اَنَّهُمْ اُحِيْطَ بِهِمْۙ دَعَوُا اللّٰهَ مُخْلِصِيْنَ لَهُ الدِّيْنَ ەۚ لَىِٕنْ اَنْجَيْتَنَا مِنْ هٰذِهٖ لَنَكُوْنَنَّ مِنَ الشّٰكِرِيْنَ ٢٢

তিনি তোমাদেরকে জলে ও স্থলে ভ্রমণ করান। এমনকি যখন তোমরা নৌকায় আরোহণ করে অনুকূল হাওয়ার তালে আমোদ আহলাদে সফর করতে থাক, তখন ঝড়ো হাওয়া আঘাত হানে আর চারদিক থেকে তরঙ্গ ধেয়ে আসে, আর তারা মনে করে যে, তারা তরঙ্গমালায় পরিবেষ্টিত হয়ে পড়েছে। তখন তারা বিশুদ্ধ আনুগত্যে আল্লাহকে ডেকে বলে, ‘তুমি যদি এত্থেকে আমাদেরকে পরিত্রাণ দাও তাহলে অবশ্য অবশ্যই আমরা শুকরগুজার বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব।’ ([১০] ইউনুস: ২২)

فَلَمَّآ اَنْجٰىهُمْ اِذَا هُمْ يَبْغُوْنَ فِى الْاَرْضِ بِغَيْرِ الْحَقِّ ۗيٰٓاَيُّهَا النَّاسُ اِنَّمَا بَغْيُكُمْ عَلٰٓى اَنْفُسِكُمْ مَّتَاعَ الْحَيٰوةِ الدُّنْيَاۖ ثُمَّ اِلَيْنَا مَرْجِعُكُمْ فَنُنَبِّئُكُمْ بِمَا كُنْتُمْ تَعْمَلُوْنَ ٢٣

অতঃপর যেমনই তিনি তাদেরকে বাঁচিয়ে দেন, তখন তারা অন্যায়ভাবে যমীনে বিদ্রোহী আচরণ শুরু করে দেয়। ওহে মানুষ! তোমাদের এ বিদ্রোহ তো (প্রকৃতপক্ষে) তোমাদের নিজেদেরই বিপক্ষে, অস্থায়ী দুনিয়ার আনন্দ সামগ্রী মাত্র। অতঃপর আমার কাছেই তোমাদের প্রত্যাবর্তন হবে, তখন আমি তোমাদেরকে জানিয়ে দেব তোমরা যা কিছু করছিলে। ([১০] ইউনুস: ২৩)

اِنَّمَا مَثَلُ الْحَيٰوةِ الدُّنْيَا كَمَاۤءٍ اَنْزَلْنٰهُ مِنَ السَّمَاۤءِ فَاخْتَلَطَ بِهٖ نَبَاتُ الْاَرْضِ مِمَّا يَأْكُلُ النَّاسُ وَالْاَنْعَامُ ۗحَتّٰٓى اِذَآ اَخَذَتِ الْاَرْضُ زُخْرُفَهَا وَازَّيَّنَتْ وَظَنَّ اَهْلُهَآ اَنَّهُمْ قٰدِرُوْنَ عَلَيْهَآ اَتٰىهَآ اَمْرُنَا لَيْلًا اَوْ نَهَارًا فَجَعَلْنٰهَا حَصِيْدًا كَاَنْ لَّمْ تَغْنَ بِالْاَمْسِۗ كَذٰلِكَ نُفَصِّلُ الْاٰيٰتِ لِقَوْمٍ يَّتَفَكَّرُوْنَ ٢٤

দুনিয়ার জীবনের দৃষ্টান্ত হচ্ছে যেমন আকাশ থেকে আমি পানি বর্ষণ করি যার সংস্পর্শে ঘন সন্নিবিষ্ট ভূমি জাত উদ্ভিদ উৎপন্ন হয়। যাত্থেকে ভক্ষণ করে মানুষ আর জীবজন্তু। অবশেষে যমীন যখন সোনালীরূপ ধারণ করে আর শোভামন্ডিত হয়, আর তার মালিকগণ ভাবতে থাকে যে, ওগুলো তাদের হাতের মুঠোয় তখন রাত্রিকালে কিংবা দিনের বেলা আমার নির্দেশ এসে পড়ে আর আমি ওগুলো এমনভাবে ধ্বংস করে দেই মনে হয় যেন গতকাল সেখানে কোন কিছুই ছিল না। এভাবে আমি আমার নিদর্শনগুলোকে বিশদভাবে বর্ণনা করি ঐ সম্প্রদায়ের জন্য যারা চিন্তাভাবনা করে বুঝতে চেষ্টা করে। ([১০] ইউনুস: ২৪)

وَاللّٰهُ يَدْعُوْٓ اِلٰى دَارِ السَّلٰمِ ۚوَيَهْدِيْ مَنْ يَّشَاۤءُ اِلٰى صِرَاطٍ مُّسْتَقِيْمٍ ٢٥

আল্লাহ তোমাদেরকে শান্তির কেন্দ্রভূমির দিকে আহবান জানান আর যাকে তিনি চান সঠিক পথে পরিচালিত করেন। ([১০] ইউনুস: ২৫)

۞ لِلَّذِيْنَ اَحْسَنُوا الْحُسْنٰى وَزِيَادَةٌ ۗوَلَا يَرْهَقُ وُجُوْهَهُمْ قَتَرٌ وَّلَا ذِلَّةٌ ۗاُولٰۤىِٕكَ اَصْحٰبُ الْجَنَّةِ هُمْ فِيْهَا خٰلِدُوْنَ ٢٦

যারা কল্যাণকর কাজ করে তাদের জন্য রয়েছে কল্যাণ এবং আরো অতিরিক্ত (পুরস্কার), কলংক ও লাঞ্ছনা তাদের মুখমন্ডলকে মলিন করবে না, তারাই হল জান্নাতের অধিবাসী, সেখানে তারা থাকবে চিরকাল। ([১০] ইউনুস: ২৬)

وَالَّذِيْنَ كَسَبُوا السَّيِّاٰتِ جَزَاۤءُ سَيِّئَةٍ ۢبِمِثْلِهَاۙ وَتَرْهَقُهُمْ ذِلَّةٌ ۗمَا لَهُمْ مِّنَ اللّٰهِ مِنْ عَاصِمٍۚ كَاَنَّمَآ اُغْشِيَتْ وُجُوْهُهُمْ قِطَعًا مِّنَ الَّيْلِ مُظْلِمًاۗ اُولٰۤىِٕكَ اَصْحٰبُ النَّارِ ۚهُمْ فِيْهَا خٰلِدُوْنَ ٢٧

পক্ষান্তরে যারা মন্দ কাজ করে, তারা তাদের মন্দ কাজের শাস্তি পাবে কাজের অনুপাতে এবং অপমান তাদেরকে আচ্ছাদিত করবে, আল্লাহর (শাস্তি) হতে কেউই তাদেরকে রক্ষা করতে পারবে না- যেন তাদের মুখমন্ডলকে আচ্ছাদিত করে দেয়া হয়েছে গাঢ় অন্ধকার রাত্রির টুকরো দিয়ে; তারা জাহান্নামের অধিবাসী, তারা তার মধ্যে চিরকাল থাকবে। ([১০] ইউনুস: ২৭)

وَيَوْمَ نَحْشُرُهُمْ جَمِيْعًا ثُمَّ نَقُوْلُ لِلَّذِيْنَ اَشْرَكُوْا مَكَانَكُمْ اَنْتُمْ وَشُرَكَاۤؤُكُمْۚ فَزَيَّلْنَا بَيْنَهُمْ وَقَالَ شُرَكَاۤؤُهُمْ مَّا كُنْتُمْ اِيَّانَا تَعْبُدُوْنَ ٢٨

সেদিন আমি তাদের সবাইকে একত্রিত করে যারা শিরক করেছিল তাদেরকে বলব, ‘‘তোমরা এবং তোমরা যাদেরকে শরীক করেছিলে তারা নিজ নিজ জায়গায় থাক।’’ আমি তাদেরকে পরস্পর থেকে পৃথক করে দেব আর তারা যাদেরকে শরীক করেছিল তারা বলবে, ‘তোমরা তো আমাদের ‘ইবাদাত করতে না।’ ([১০] ইউনুস: ২৮)

فَكَفٰى بِاللّٰهِ شَهِيْدًاۢ بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمْ اِنْ كُنَّا عَنْ عِبَادَتِكُمْ لَغٰفِلِيْنَ ٢٩

এখন আল্লাহই আমাদের আর তোমাদের মাঝে সাক্ষী হিসেবে যথেষ্ট, আমরা তোমাদের ‘ইবাদাতের ব্যাপারে সম্পূর্ণ বেখবর ছিলাম।’ ([১০] ইউনুস: ২৯)

هُنَالِكَ تَبْلُوْا كُلُّ نَفْسٍ مَّآ اَسْلَفَتْ وَرُدُّوْٓا اِلَى اللّٰهِ مَوْلٰىهُمُ الْحَقِّ وَضَلَّ عَنْهُمْ مَّا كَانُوْا يَفْتَرُوْنَ ࣖ ٣٠

সেখানে প্রতিটি আত্মা তার পূর্বকৃত কাজ (এর ফলাফল) দেখতে পাবে। তাদেরকে তাদের প্রকৃত অভিভাবক আল্লাহর নিকট ফিরিয়ে আনা হবে, আর তাদের রচিত সকল মিথ্যা তাদের থেকে বিলীন হয়ে যাবে। ([১০] ইউনুস: ৩০)