Skip to content

কুরআন মজীদ সূরা আল-আনফাল আয়াত ৫৮

Qur'an Surah Al-Anfal Verse 58

আল-আনফাল [৮]: ৫৮ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ

وَاِمَّا تَخَافَنَّ مِنْ قَوْمٍ خِيَانَةً فَانْۢبِذْ اِلَيْهِمْ عَلٰى سَوَاۤءٍۗ اِنَّ اللّٰهَ لَا يُحِبُّ الْخَاۤىِٕنِيْنَ ࣖ (الأنفال : ٨)

wa-immā
وَإِمَّا
And if
এবং যদি
takhāfanna
تَخَافَنَّ
you fear
তুমি আশঙ্কা করো
min
مِن
from
হতে
qawmin
قَوْمٍ
a people
কোনো জাতি
khiyānatan
خِيَانَةً
betrayal
বিশ্বাসভঙ্গের
fa-inbidh
فَٱنۢبِذْ
throw back
তবে নিক্ষেপ করো
ilayhim
إِلَيْهِمْ
to them
দিকে তাদের (তাদের সন্ধিচুক্তি)
ʿalā
عَلَىٰ
on
ভাবে
sawāin
سَوَآءٍۚ
equal (terms)
সমান (একই)
inna
إِنَّ
Indeed
নিশ্চয়ই
l-laha
ٱللَّهَ
Allah
আল্লাহ
لَا
(does) not
না
yuḥibbu
يُحِبُّ
love
ভালোবাসেন
l-khāinīna
ٱلْخَآئِنِينَ
the traitors
বিশ্বাসভঙ্গকারীদেরকে

Transliteration:

Wa immaa takhaafana min qawmin khiyaanatan fambiz ilaihim 'alaa sawaaa'; innal laaha laayuhibbul khaaa'ineen (QS. al-ʾAnfāl:58)

English Sahih International:

If you [have reason to] fear from a people betrayal, throw [their treaty] back to them, [putting you] on equal terms. Indeed, Allah does not like traitors. (QS. Al-Anfal, Ayah ৫৮)

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

আর যদি তুমি কোন সম্প্রদায়ের চুক্তি ভঙ্গের আশঙ্কা কর তাহলে (তাদের চুক্তিকে) তাদের প্রতি নিক্ষেপ কর যাতে সমান সমান অবস্থা বিরাজিত হয়। আল্লাহ নিশ্চয়ই (ওয়াদা-চুক্তি-প্রতিশ্রুতি) ভঙ্গকারীদের পছন্দ করেন না। (আল-আনফাল, আয়াত ৫৮)

Tafsir Ahsanul Bayaan

যদি তুমি কোন সম্প্রদায়ের বিশ্বাসঘাতকতার আশংকা কর, তাহলে তোমার চুক্তিও তুমি যথাযথভাবে বাতিল কর। [১] নিশ্চয় আল্লাহ বিশ্বাসঘাতকদেরকে পছন্দ করেন না। [২]

[১] 'বিশ্বাসঘাতকতা' বলতে সন্ধিচুক্তিতে আবদ্ধ জাতির তরফ হতে চুক্তি ভঙ্গ করার আশঙ্কা। আর 'যথাযথ বা সমভাবে' বলতে তাদেরকে যথারীতি খবর করে দাও যে, আগামীতে আমাদের ও তোমাদের মাঝে কোন সন্ধিচুক্তি থাকবে না। যাতে উভয় দল নিজ নিজ সংরক্ষণের দায়িত্ব পালন করে এবং কোন দল অজানা অবস্থায় বা ভুলবশতঃ মারা না পড়ে।

[২] অর্থাৎ, এই চুক্তি ভঙ্গ করা যদি মুসলিমদের পক্ষ থেকেও হয় তবুও তা খিয়ানত; যা মহান আল্লাহ অপছন্দ করেন। মুআবিয়াহ (রাঃ) এবং রোমকদের মাঝে সন্ধিচুক্তি ছিল। যখন চুক্তির সময় শেষ হওয়ার নিকটবর্তী হয়ে এল, তখন মুআবিয়াহ (রাঃ) রোমকদের সীমান্ত এলাকার নিকট নিজের সৈন্যদল জমায়েত করতে শুরু করলেন। উদ্দেশ্য ছিল সন্ধিচুক্তি শেষ হওয়ার পরপরই রোমকদের উপর হামলা চালাবেন। এক সাহাবী আমর বিন আবাসাহ (রাঃ)-এর কানে মুআবিয়াহ (রাঃ)-এর এই প্রস্তুতির খবর পৌঁছলে তিনি এই আক্রমণকে প্রতারণা বলে আখ্যায়িত করলেন এবং রসূল (সাঃ)-এর একটি হাদীস উল্লেখ করে এই আক্রমণকে সন্ধিচুক্তির পরিপন্থী বলে মন্তব্য করলেন। এ কথা শুনে মুআবিয়াহ (রাঃ) তাঁর সৈন্য প্রত্যাহার করে নিলেন। (মুসনাদে আহমাদ ৫/১১১, আবু দাঊদঃ জিহাদ অধ্যায়, তিরমিযীঃ সিয়ার)

Tafsir Abu Bakr Zakaria

আর যদি আপনি কোন সম্প্রদায়ের চুক্তি ভঙ্গের আশংকা করেন, তবে আপনি তাদের চুক্তি তাদের প্রতি সরাসরি নিক্ষেপ করুন [১]; নিশ্চয় আল্লাহ্‌ চুক্তি ভংগকারীকে পছন্দ করেন না [২]

[১] অর্থাৎ তাদেরকে তাদের চুক্তি সম্পর্কে অবহিত করুন। তারা যেন জানতে পারে যে, তাদের সাথে কৃত চুক্তির কার্যকারিতা শেষ হয়েছে। তারা যেন আপনাকে কোন দোষারোপ করতে না পারে যে, আমরা আপনার সাথে কৃত চুক্তি শেষ হওয়ার ব্যাপারে অবহিত ছিলাম না। [জালালাইন, সা’দী]

[২] আয়াতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে যুদ্ধ ও সন্ধির আইন সংক্রান্ত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ধারা বলে দেয়া হয়েছে। যদি চুক্তির দ্বিতীয় পক্ষের দিক থেকে বিশ্বাসঘাতকতা অর্থাৎ চুক্তি লঙ্ঘনের আশঙ্কা সৃষ্টি হয়ে যায়, তবে চুক্তির বাধ্যবাধকতাকে অক্ষুণ্ন রাখা অপরিহার্য নয়। কিন্তু চুক্তিকে সম্পূর্ণভাবে বাতিল করে দেয়ার পূর্বে তাদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করাও জায়েয নয়। বরং যদি কোন প্রস্তুতি নিতে হয়, তা এই ঘোষণা ও সতকীকরণের পরেই নেবেন। নির্দিষ্ট এক সময়ের জন্য মু'আবিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহু এবং রোমবাসীদের মধ্যে এক যুদ্ধবিরতি চুক্তি ছিল। মু'আবিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহু ইচ্ছা করলেন যে, এই চুক্তির দিনগুলিতে নিজেদের সৈন্য-সামন্ত ও যুদ্ধের সাজ-সরঞ্জাম নিজেদের সে সম্প্রদায়ের কাছাকাছি নিয়ে রাখবেন, যাতে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার সাথে সাথেই শক্রর উপর ঝাপিয়ে পড়া যায়। কিন্তু ঠিক যখন মু'আবিয়ার সৈন্যদল সেদিকে রওয়ানা হচ্ছিল, দেখা গেল, একজন বুড়ো লোক ঘোড়ায় চড়ে খুব উচ্চঃস্বরে বললেনঃ আল্লাহু আকবার! আল্লাহু আকবার! সম্পাদিত চুক্তি পূরণ করা কর্তব্য। এর বিরুদ্ধাচরণ করা উচিত নয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে, কোন জাতি-সম্প্রদায়ের সাথে কোন সন্ধি বা চুক্তি সম্পাদিত হয়ে গেলে, তার বিরুদ্ধে কোন গিট খোলা বা বাধাও উচিত নয়’। মু'আবিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহু-কে বিষয়টি জানানো হল। দেখা গেল, কথাগুলো যিনি বলেছেন, তিনি হলেন সাহাবী আমর ইবন আবাসাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু। [আবু দাউদঃ ২৭৫৯, তিরমিযীঃ ১৫৮০, মুসনাদে আহমাদঃ ৪/১১১,১১৩] মু'আবিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহু তৎক্ষনাৎ স্বীয় বাহিনীকে ফিরে আসার নির্দেশ দিয়ে দিলেন, যাতে যুদ্ধবিরতির মেয়াদে সৈন্য স্থাপনার পদক্ষেপের দরুন খেয়ানতকারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে না পড়েন।

Tafsir Bayaan Foundation

আর যদি তুমি কোন কওম থেকে নিশ্চিতভাবে বিশ্বাসঘাতকতার আশঙ্কা কর, তাহলে (তাদের চুক্তি) তাদের দিকে সোজা নিক্ষেপ কর, নিশ্চয় আল্লাহ বিশ্বাসঘাতকদের পছন্দ করেন না।

Muhiuddin Khan

তবে কোন সম্প্রদায়ের ধোঁকা দেয়ার ব্যাপারে যদি তোমাদের ভয় থাকে, তবে তাদের চুক্তি তাদের দিকেই ছুঁড়ে ফেলে দাও এমনভাবে যেন হয়ে যাও তোমরাও তারা সমান। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধোকাবাজ, প্রতারককে পছন্দ করেন না।

Zohurul Hoque

আর যদি তুমি কোনো দল থেকে বিশ্বাসঘাতকতার আশঙ্কা করো, তবে ছোঁড়ে দাও তাদের দিকে সমান-সমানভাবে। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ বিশ্বাসঘাতকদের ভালোবাসেন না।