Skip to content

কুরআন মজীদ সূরা আল আনআম আয়াত ১৭

Qur'an Surah Al-An'am Verse 17

আল আনআম [৬]: ১৭ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ

وَاِنْ يَّمْسَسْكَ اللّٰهُ بِضُرٍّ فَلَا كَاشِفَ لَهٗٓ اِلَّا هُوَ ۗوَاِنْ يَّمْسَسْكَ بِخَيْرٍ فَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ (الأنعام : ٦)

wa-in
وَإِن
And if
এবং যদি
yamsaska
يَمْسَسْكَ
touches you
তোমাকে স্পর্শ করেন
l-lahu
ٱللَّهُ
Allah
আল্লাহ
biḍurrin
بِضُرٍّ
with affliction
দিয়ে অনিষ্ট
falā
فَلَا
then no
তবে নেই
kāshifa
كَاشِفَ
remover
কোনো অপসারণকারী
lahu
لَهُۥٓ
of it
জন্যে তার
illā
إِلَّا
except
ছাড়া
huwa
هُوَۖ
Him
তিনি
wa-in
وَإِن
And if
এবং যদি
yamsaska
يَمْسَسْكَ
He touches you
তোমাকে স্পর্শ করেন
bikhayrin
بِخَيْرٍ
with good
দিয়ে কল্যাণ
fahuwa
فَهُوَ
then He
তবুও তিনি
ʿalā
عَلَىٰ
(is) on
উপর
kulli
كُلِّ
every
সব
shayin
شَىْءٍ
thing
কিছুর
qadīrun
قَدِيرٌ
All-Powerful
সর্বশক্তিমান

Transliteration:

Wa iny-yamsaskal laahu bidurrin falaaa kaashifa lahoo illaa Huwa wa iny-yamsaska bikhairin fa Huwa 'alaa kulli shai'in Qadeer (QS. al-ʾAnʿām:17)

English Sahih International:

And if Allah should touch you with adversity, there is no remover of it except Him. And if He touches you with good – then He is over all things competent. (QS. Al-An'am, Ayah ১৭)

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

আল্লাহ তোমার কোন ক্ষতি করতে চাইলে তিনি ছাড়া কেউ তা সরাতে পারবে না। আর তিনি যদি তোমার কল্যাণ করতে চান, তবে তো সব কিছুই করার তাঁর ক্ষমতা রয়েছে। (আল আনআম, আয়াত ১৭)

Tafsir Ahsanul Bayaan

আর যদি আল্লাহ তোমাকে ক্লেশদান করেন, তাহলে তিনি ব্যতীত আর কেউ তার মোচনকারী নেই। আর যদি তিনি তোমার কল্যাণ করেন, তাহলে তিনিই তো সর্ব বিষয়ে শক্তিমান। [১]

[১] অর্থাৎ, ইষ্টানিষ্টের মালিক এবং সারা জাহানে সর্বপ্রকারের কর্তৃত্বকারী কেবল আল্লাহই। তাঁর বিচার-ফায়সালাকে খন্ডাবার মত কেউ নেই। একটি হাদীসে এই বিষয়টাকে এইভাবে বর্ণনা করা হয়েছে, اللَّهُمَّ لاَ مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ وَلاَ مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَ وَلاَ يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْكَ الْجَدُّ)) "হে আল্লাহ! তুমি যা দান কর, তা কেউ রোধ করতে পারে না। আর তুমি যা রোধ কর, তা কেউ দিতেও পারে না। আর ধনীদের ধন তোমার আযাব থেকে বাঁচতে কোন উপকারে আসবে না।" (বুখারীঃ ই'তিসাম অধ্যায়, মুসলিম, সালাত ও মাসাজিদ অধ্যায়) নবী করীম (সাঃ) প্রত্যেক ফরয নামাযের পর এই দু'আটি পাঠ করতেন।

Tafsir Abu Bakr Zakaria

আর যদি আল্লাহ্‌ আপনাকে কোন দুর্দশা দ্বারা স্পর্শ করেন, তবে তিনি ছাড়া তা মোচনকারী আর কেঊ নেই।আর যদি তিনি আপনাকে কোন কল্যাণ দ্বারা স্পর্শ করেন,তবে তিনি তো সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান [১]।

[১] এ আয়াতে ইসলামের একটি মৌলিক বিশ্বাস বর্ণিত হয়েছে। অর্থাৎ প্রতিটি লাভক্ষতির মালিক প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ্ তা'আলা। সত্যিকারভাবে কোন ব্যক্তি কারো সামান্য উপকারও করতে পারে না, ক্ষতিও করতে পারে না। আল্লাহ যদি কারও লাভ করতে চান তবে তা বন্ধ করার ক্ষমতা কারও নেই। অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, “আর আল্লাহ যদি আপনার মংগল চান তবে তাঁর অনুগ্রহ প্রতিহত করার কেউ নেই। তাঁর বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছে তার কাছে সেটা পৌঁছান [সূরা ইউনুস ১০৭] এ আয়াতের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে ইমাম বাগভী আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণনা করেন, একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উটে সওয়ার হয়ে আমাকে পিছনে বসিয়ে নিলেন। কিছু দূর যাওয়ার পর আমার দিকে মুখ ফিরিয়ে বললেনঃ “হে বৎস’! আমি আরয করলামঃ আদেশ করুন, আমি হাযির আছি। তিনি বললেনঃ “তুমি আল্লাহর বিধি-বিধানকে হেফাযত করবে, আল্লাহ তোমাকে হেফাযত করবেন। তুমি আল্লাহর বিধি-বিধানকে হেফাযত করো তাহলে আল্লাহকে সাহায্যের সাথে তোমার সামনে পাবে। তুমি শান্তি ও সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের সময় আল্লাহকে স্মরণ রাখলে, বিপদের সময় তিনি তোমাকে স্মরণ রাখবেন। কোন কিছু চাইতে হলে তুমি আল্লাহর কাছেই চাও এবং সাহায্য চাইতে হলে আল্লাহর কাছেই চাও। জগতে যা কিছু হবে, ভাগ্যের লেখনী তা লিখে ফেলেছে। সমগ্র সৃষ্টজীব সম্মিলিতভাবে তোমার কোন উপকার করতে চাইলে যা তোমার তাকদিরে লিখা নেই তারা কখনো তা করতে পারবে না। পক্ষান্তরে যদি তারা সবাই মিলে তোমার এমন কোন ক্ষতি করতে চায়, যা তোমার ভাগ্যে নেই, তবে কখনোই তারা তা করতে সক্ষম হবে না। যদি তুমি বিশ্বাস সহকারে ধৈর্যধারণের মাধ্যমে আমল করতে পার তবে অবশ্যই তা করো। সক্ষম না হলে ধৈর্য ধর। কেননা, তুমি যা অপছন্দ করো তার বিপক্ষে ধৈর্য ধারণ করায় অনেক মঙ্গল রয়েছে। মনে রাখবে, আল্লাহর সাহায্য ধৈর্যের সাথে জড়িত-কষ্টের সাথে সুখ এবং অভাবের সাথে স্বাচ্ছন্দ্য জড়িত। [মুসনাদে আহমাদ;১/৩০৭]

পরিতাপের বিষয়, কুরআনুল কারীমের এ সুস্পষ্ট ঘোষণা এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আজীবনের শিক্ষা সত্ত্বেও মুসলিমরা এ ব্যাপারে পথ ভ্রান্ত। তারা আল্লাহ্ তা'আলার সব ক্ষমতা সৃষ্টজীবের মধ্যে বন্টন করে দিয়েছে। আজ এমন মুসলিমের সংখ্যা নগণ্য নয়, যারা বিপদের সময় আল্লাহ্ তা'আলাকে স্মরণ করে না এবং তারা তাঁর কাছে দো'আ করার পরিবর্তে বিভিন্ন নামের দোহাই দেয় এবং তাদেরই সাহায্য কামনা করে। তারা আল্লাহ তা'আলার প্রতি লক্ষ্য করে না। কোন সৃষ্ট জীবকে অভাব পূরণের জন্য ডাকা এ কুরআনী নির্দেশের পরিপন্থী ও প্রকাশ্য বিদ্রোহ ঘোষণার নামান্তর। আল্লাহ তা'আলা মুসলিমদেরকে সরল পথে কায়েম রাখুন।

Tafsir Bayaan Foundation

আর যদি আল্লাহ তোমাকে কোন দুর্দশা দ্বারা স্পর্শ করেন, তবে তিনি ছাড়া তা দূরকারী কেউ নেই। আর যদি কোন কল্যাণ দ্বারা স্পর্শ করেন তবে তিনিই তো সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান।

Muhiuddin Khan

আর যদি আল্লাহ তোমাকে কোন কষ্ট দেন, তবে তিনি ব্যতীত তা অপসারণকারী কেউ নেই। পক্ষান্তরে যদি তোমার মঙ্গল করেন, তবে তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান।

Zohurul Hoque

আর আল্লাহ্ যদি তোমাকে দুঃখ দিয়ে স্পর্শ করেন তবে তার মোচনকারী তিনি ব্যতীত আর কেউ নেই। আর যদি তিনি তোমাকে স্পর্শ করেন কল্যাণ দিয়ে তবে তিনিই তো সব-কিছুর উপরে সর্বশক্তিমান।