Skip to content

কুরআন মজীদ সূরা আল মায়িদাহ আয়াত ৬৩

Qur'an Surah Al-Ma'idah Verse 63

আল মায়িদাহ [৫]: ৬৩ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ

لَوْلَا يَنْهٰىهُمُ الرَّبَّانِيُّوْنَ وَالْاَحْبَارُ عَنْ قَوْلِهِمُ الْاِثْمَ وَاَكْلِهِمُ السُّحْتَۗ لَبِئْسَ مَا كَانُوْا يَصْنَعُوْنَ (المائدة : ٥)

lawlā
لَوْلَا
Why (do) not
কেন না
yanhāhumu
يَنْهَىٰهُمُ
forbid them
নিষেধ করে তাদের
l-rabāniyūna
ٱلرَّبَّٰنِيُّونَ
the Rabbis
রব্বানি
wal-aḥbāru
وَٱلْأَحْبَارُ
and the religious scholars
ও পন্ডিতগণ (তাদের মধ্যকার)
ʿan
عَن
from
হতে
qawlihimu
قَوْلِهِمُ
their saying
কথা তাদের (বলা)
l-ith'ma
ٱلْإِثْمَ
the sinful
পাপের
wa-aklihimu
وَأَكْلِهِمُ
and their eating
ও তাদের খাওয়া (হতে)
l-suḥ'ta
ٱلسُّحْتَۚ
(of) the forbidden?
অবৈধ
labi'sa
لَبِئْسَ
Surely evil
অবশ্যই নিকৃষ্ট
مَا
(is) what
যা
kānū
كَانُوا۟
they used to
তারা ছিলো
yaṣnaʿūna
يَصْنَعُونَ
do
তারা রচনা করে এসেছে

Transliteration:

Law laa yanhaahumur rabbaaniyyoona wal ahbaaru 'an qawlihimul ismaa wa aklihimus suht; labi'sa maa kaanoo yasna'oon (QS. al-Māʾidah:63)

English Sahih International:

Why do the rabbis and religious scholars not forbid them from saying what is sinful and devouring what is unlawful? How wretched is what they have been practicing. (QS. Al-Ma'idah, Ayah ৬৩)

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

দরবেশ ও পুরোহিতগণ তাদেরকে পাপের কথা বলা হতে এবং হারাম ভক্ষণ থেকে নিষেধ করে না কেন? তারা যা করে তা কতই না নিকৃষ্ট! (আল মায়িদাহ, আয়াত ৬৩)

Tafsir Ahsanul Bayaan

রাব্বানী (আল্লাহ-ভক্ত)গণ ও পন্ডিতগণ কেন তাদেরকে পাপ-কথা বলতে ও অবৈধ ভক্ষণ করতে নিষেধ করে না? এরা যা করে নিশ্চয় তা নিকৃষ্ট! [১]

[১] এখানে উলামা, মাশায়েখ, আবেদ ও ধর্মভীরু ব্যক্তিদেরকে ভৎর্সনা করা হয়েছে যে, সাধারণ মানুষদের বেশীর ভাগ লোক তোমাদের সামনে পাপাচার, অপকর্ম এবং হারামখোরীতে লিপ্ত; কিন্তু তোমরা তাদেরকে নিষেধ কর না। এই অবস্থায় তোমাদের নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করা খুব বড় অপরাধ। এর দ্বারা পরিষ্কার হয় যে, সৎকাজের আদেশ ও অসৎ কাজে বাধা দান করার কত গুরুত্বপূর্ণ এবং তা পরিত্যাগ করা কত ভয়ানক ও কঠিন শাস্তিযোগ্য। যেমন বহু হাদীসেও এ বিষয়টি বিশদভাবে বর্ণিত হয়েছে।

Tafsir Abu Bakr Zakaria

রাব্বানীগণ ও পণ্ডিতগণ [১] কেন তাদেরকে পাপ কথা বলা ও অবৈধ খাওয়া থেকে নিষেধ করে না? এরা যা করছে নিশ্চয়ই তা কতই না নিকৃষ্ট [২]।

[১] কোন কোন মুফাসসির বলেন, রব্বানী বলে নাসারাদের আলেম সম্প্রদায়, আর আহবার বলে ইয়াহুদীদের আলেমদের উদ্দেশ্য নেয়া হয়েছে। অপর মুফাসসিরগণ মনে করেন, এখানে শুধু ইয়াহুদীদের আলেমদেরকেই বোঝানো হয়েছে। কারণ, এর পূর্বেকার আলোচনা তাদের সম্পর্কেই চলছিল। [ফাতহুল কাদীর] এ ব্যাপারে আরও বিস্তারিত বর্ণনা এ সূরার ৪৪ নং আয়াতের ব্যাখ্যায় এসেছে।

[২] আয়াতের শেষভাগে বলা হয়েছেঃ “সৎকাজে আদেশ ও অসৎকাজে নিষেধ” করার কর্তব্যটি ত্যাগ করে ইয়াহুদীদের এসব মাশায়েখ ও আলেম অত্যন্ত বদভ্যাসে লিপ্ত হয়েছে। জাতিকে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যেতে দেখেও তারা বাধা দিচ্ছে না। লক্ষণীয় যে, পূর্বোক্ত আয়াতে সর্বসাধারণের দুষ্কর্ম বর্ণিত হয়েছিল। তাই এর শেষে

(لَبِئْسَ مَا كَانُوْا يَعْمَلُوْنَ)

বলা হয়েছে, কিন্তু এ আয়াতে ইয়াহুদী মাশায়েখ ও আলেমদের ভ্রান্তি প্রকাশ করা হয়েছে। তাই এর শেষে

(لَبِئْسَ مَا كَانُوْا يَعْمَلُوْنَ)

বলা হয়েছে। কারণ, আরবী অভিধানের দিক দিয়ে ইচ্ছাকৃত কিংবা অনিচ্ছাকৃত সব কাজকেই (فعل) বলা হয়। (عمل) শব্দটি ঐ কাজকে বুঝাবার জন্য ব্যবহৃত হয়, যা ইচ্ছাকৃতভাবে করা হয় এবং (صنع) ও (صنعت) শব্দ ঐ কাজের বেলায় প্রয়োগ করা হয়, যা ইচ্ছার সাথে সাথে বারবার অভ্যাস ও লক্ষ্য হিসাবে ঠিক করে করা হয়। তাই সর্বসাধারণের কুকর্মের পরিণতির ক্ষেত্রে শুধু (عمل) শব্দ ব্যবহার করে বলা হয়েছে

(لَبِئْسَ مَا كَانُوْا يَعْمَلُوْنَ)

আর বিশিষ্ট মাশায়েখ ও আলেমদের ভ্রান্ত কাজের জন্য (صنع) শব্দ প্রয়োগে

(لَبِئْسَ مَا كَانُوْا يَصْنَعُوْنَ)

বলা হয়েছে। [ফাতহুল কাদীর] আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, মাশায়েখ ও আলেমদের জন্য সমগ্র কুরআনে এ আয়াতের চাইতে কঠোর হুঁশিয়ারী আর কোথাও নাই। তাফসীরবিদ যাহ্‌হাক বলেন, আমার মতে মাশায়েখ ও আলেমদের জন্য এ আয়াত সর্বাধিক ভয়াবহ। [তাবারী]

এ কারণেই জাতির সামগ্রিক সংশোধনের জন্যে কুরআন ও হাদীসে ‘সৎকাজে আদেশ ও অসৎকাজে নিষেধ’ এর প্রতি জোর দেয়া হয়েছে। কুরআন এ কর্তব্যটিকে উম্মতে মুহাম্মদীর বৈশিষ্ট্য আখ্যা দিয়েছে এবং এর বিরুদ্ধাচরণ করাকে কঠোর পাপ ও শাস্তির কারণ বলে সাব্যস্ত করেছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ “কোন জাতির মধ্যে যখন কোন পাপ কাজ করা হয় অথচ কোন লোক তা নিষেধ করে না, তখন তাদের প্রতি আল্লাহর পক্ষ থেকে আযাব প্রেরণের সম্ভাবনা প্রবল হয়ে যায়”। [মুসনাদে আহমাদঃ ৪/৩৬৩]

মালেক ইবন দীনার রাহিমাহুল্লাহ বলেন, আল্লাহ তা’আলা এক জায়গায় ফেরেশতাদেরকে নির্দেশ দিলেন যে, অমুক বস্তি ধ্বংস করে দাও। ফেরেশ্‌তারা বললেন, এ বস্তিতে আপনার অমুক ইবাদতকারী বান্দাও রয়েছে। নির্দেশ এল, তাকেও আযাবের স্বাদ গ্রহণ করাও- আমার অবাধ্যতা ও পাপাচার দেখেও তার চেহারা কখনও ক্রোধে বিবর্ণ হয়নি। [কুরতুবী, বাহরে মুহীত]

Tafsir Bayaan Foundation

কেন তাদেরকে রববানী ও ধর্মবিদগণ তাদের পাপের কথা ও হারাম ভক্ষণ থেকে নিষেধ করে না? তারা যা করছে, নিশ্চয় তা কতইনা মন্দ!

Muhiuddin Khan

দরবেশ ও আলেমরা কেন তাদেরকে পাপ কথা বলতে এবং হারাম ভক্ষণ করতে নিষেধ করে না? তারা খুবই মন্দ কাজ করছে।

Zohurul Hoque

রব্বিগণ ও পুরোহিতরা কেন তাদের নিষেধ করে না তাদের পাপপূর্ণ কথাবার্তা বলাতে আর তাদের গ্রাস-করণে অবৈধভাবে লব্ধ বস্তু। অবশ্যই গর্হিত যা তারা করে যাচ্ছে।