কুরআন মজীদ সূরা আস-সাফফাত আয়াত ১৮২
Qur'an Surah As-Saffat Verse 182
আস-সাফফাত [৩৭]: ১৮২ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ
وَالْحَمْدُ لِلّٰهِ رَبِّ الْعٰلَمِيْنَ ࣖ (الصافات : ٣٧)
- wal-ḥamdu
- وَٱلْحَمْدُ
- And all praise
- এবং সমস্ত প্রশংসা
- lillahi
- لِلَّهِ
- (be) to Allah
- আল্লাহরই
- rabbi
- رَبِّ
- (the) Lord
- (যিনি) রব
- l-ʿālamīna
- ٱلْعَٰلَمِينَ
- (of) the worlds
- বিশ্বজগতের
Transliteration:
Walhamdu lillaahi Rabbil 'aalameen(QS. aṣ-Ṣāffāt:182)
English Sahih International:
And praise to Allah, Lord of the worlds. (QS. As-Saffat, Ayah ১৮২)
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
আর যাবতীয় প্রশংসা বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহর জন্যই। (আস-সাফফাত, আয়াত ১৮২)
Tafsir Ahsanul Bayaan
আর সমস্ত প্রশংসা বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহর জন্য। [১] 
 
[১] এখানে বান্দাদেরকে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে যে, আল্লাহ তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন; পয়গম্বর পাঠিয়েছেন, কিতাব অবতীর্ণ করেছেন এবং পয়গম্বরগণ তোমাদের নিকট আল্লাহর বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন। অতএব তোমরা আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। অনেকে বলেন যে, কাফেরদেরকে ধ্বংস করে ঈমানদার ব্যক্তিদের ও পয়গম্বরদেরকে বাঁচিয়েছেন, এর জন্য আল্লাহর শুকরিয়া জ্ঞাপন কর। حَمد হাম্দ শব্দদের অর্থ হলঃ স্বেচ্ছায় মহত্ত্ব ও বড়ত্ব বর্ণনা করা, সুনাম ও প্রশংসা করা। 
Tafsir Abu Bakr Zakaria
আর সকল প্রশংসা সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহরই প্ৰাপ্য [১]। 
 
[১] ১৮০-১৮২ নং আয়াতগুলোর মাধ্যমে সূরা সাফফাত সমাপ্ত করা হয়েছে। কি সুন্দর সমাপ্তি! সংক্ষেপে বলা যায় যে, আল্লাহ তা’আলা এই সংক্ষিপ্ত তিনটি আয়াতের মধ্যে সূরার সমস্ত বিষয়বস্তু ভরে দিয়েছেন। তাওহীদের বর্ণনা দ্বারা সূরার সূচনা হয়েছিল, যার সারমর্ম ছিল এই যে, মুশরিকরা আল্লাহ সম্পর্কে যেসব বিষয় বর্ণনা করে, আল্লাহ তা'আলা সেগুলো থেকে পবিত্র। সে মতে আলোচ্য প্রথম আয়াতে সে দীর্ঘ বিষয়বস্তুর দিকেই ইঙ্গিত রয়েছে। এরপর সূরায় নবী-রাসূলগণের ঘটনাবলী বৰ্ণিত হয়েছিল। সে মতে দ্বিতীয় আয়াতে সেগুলোর দিকে ইশারা করা হয়েছে। অতঃপর পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে কাফেরদের বিশ্বাস, সন্দেহ ও আপত্তিসমূহ যুক্তি ও উক্তির মাধ্যমে খণ্ডন করে বলা হয়েছিল যে, শেষ বিজয় সত্যপন্থীরাই অর্জন করবে। এসব বিষয়বস্তু যে ব্যক্তিই জ্ঞান ও অন্তদৃষ্টি সহকারে পাঠ করবে, সে অবশেষে আল্লাহ্ তা'আলার প্রশংসা ও স্তুতি পাঠ করতে বাধ্য হবে। সে মতে এই প্রশংসা ও স্তুতির ওপরই সূরার সমাপ্তি টানা হয়েছে। 
 
তাছাড়া এ তিন আয়াতের পরস্পর এক ধরনের সামঞ্জস্যতা লক্ষণীয়, প্রথম আয়াতে বলা হচ্ছে যে, কাফের মুশরিকরা যে সমস্ত খারাপ গুণে মহান আল্লাহকে চিত্রিত করার অপচেষ্টা চালিয়েছে তা থেকে তিনি কতই না পবিত্ৰ! তাদের কথা ও কর্মকাণ্ড তাঁর মহান সমীপে ও তার মর্যাদার সামান্যতমও হেরফের করার ক্ষমতা রাখে না। তারা তাঁকে খারাপ গুণে গুণান্বিত করতে চায়, পক্ষান্তরে নবী রাসূলগণ তাঁকে সঠিকভাবে জানে বিধায় তাঁর জন্য সমস্ত হক নাম ও সঠিক গুণে গুণান্বিত করে। তাই তারা সালাম পাওয়ার যোগ্য। তারা নিরাপত্তা পাবে কারণ তারা আল্লাহর ব্যাপারে নিরাপত্তার বেষ্টনী অবলম্বন করেছে। আল্লাহর সঠিক গুণাগুণকে অস্বীকার করেনি। তারা তাঁকে তাঁর সঠিক নাম ও গুণ দ্বারা গুণান্বিত করে এবং সেগুলোর অসীলায় আহবান করে। আর তাদের আহবানে তিনিই সাড়া দেন; কারণ তিনিই তো সর্বপ্রশংসিত সত্ত্বা। দুনিয়া ও আখেরাতে সর্বদা সর্বত্র সর্বাবস্থায় তিনি প্ৰশংসিত। আর এটাই শেষ আয়াতে বর্ণিত হয়েছে। 
 
এখানে আরো একটি বিষয় লক্ষণীয় যে, প্রথম আয়াতে তাসবীহ বা পবিত্ৰতা ও মহানুভবতা ঘোষণার মাধ্যমে যাবতীয় খারাপ গুণকে সরাসরি অস্বীকার করা হয়েছে। আর পরোক্ষভাবে যাবতীয় সৎ ও সঠিক গুণকে সাব্যস্ত করা হয়েছে। তৃতীয় আয়াতে তাহমীদ বা প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশের মাধ্যমে যাবতীয় সৎ ও সঠিক গুণাবলীকে আল্লাহর জন্য সরাসরি সাব্যস্ত করা হয়েছে। আর পরোক্ষভাবে যাবতীয় খারাপ গুণ থেকে মুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এর মাঝখানে রাসূলদের উল্লেখ করে এ কথাই প্রমাণ করতে চেয়েছেন যে, এ তাওহীদ বা আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর ক্ষেত্রে সে নীতি অবলম্বন করা উচিত, যা প্রথম ও তৃতীয় আয়াতে বর্ণিত হয়েছে এবং তা একমাত্র রাসূলগণই সঠিকভাবে বুঝতে সক্ষম হয়েছেন; সুতরাং তারাই সালাম ও নিরাপত্তা পাওয়ার যোগ্য। এর বিপরীতে যারা আল্লাহর সুন্দর সুন্দর নামসমূহকে অস্বীকার করে, তার সিফাত বা গুণাগুণকে বিকৃত করে তারা রাসূলদের পথে নয়, তাদের জন্য শান্তি ও নিরাপত্তা নেই। [দেখুন, মাজমু’ ফাতাওয়া ৩/১৩০; ইবনুল কাইয়্যেম, বাদায়ে’উল ফাওয়ায়েদ ২/১৭১; জালাউল আফহাম; ১৭০] 
Tafsir Bayaan Foundation
আর সকল প্রশংসা সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহর জন্য।
Muhiuddin Khan
সমস্ত প্রশংসা বিশ্বপালক আল্লাহর নিমিত্ত।
Zohurul Hoque
আর সকল প্রশংসা আল্লাহ্রই জন্য -- বিশ্বজগতের প্রভু!