Skip to content

কুরআন মজীদ সূরা আল ইমরান আয়াত ৪

Qur'an Surah Ali 'Imran Verse 4

আল ইমরান [৩]: ৪ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ

مِنْ قَبْلُ هُدًى لِّلنَّاسِ وَاَنْزَلَ الْفُرْقَانَ ەۗ اِنَّ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا بِاٰيٰتِ اللّٰهِ لَهُمْ عَذَابٌ شَدِيْدٌ ۗوَاللّٰهُ عَزِيْزٌ ذُو انْتِقَامٍۗ (آل عمران : ٣)

min
مِن
From
থেকে
qablu
قَبْلُ
before (this)
ইতিপূর্ব
hudan
هُدًى
(as) guidance
সঠিকপথ (হিসেবে)
lilnnāsi
لِّلنَّاسِ
for the mankind
মানুষের জন্য
wa-anzala
وَأَنزَلَ
And (He) revealed
এবং তিনি অবতীর্ণ করেছেন
l-fur'qāna
ٱلْفُرْقَانَۗ
the Criterion
ফুরকান(ন্যায়-অন্যায়ের মীমাংসা)
inna
إِنَّ
Verily
নিশ্চয়ই
alladhīna
ٱلَّذِينَ
those who
যারা
kafarū
كَفَرُوا۟
disbelieve[d]
অস্বীকার করেছে
biāyāti
بِـَٔايَٰتِ
in (the) Verses
নিদর্শনগুলোর প্রতি
l-lahi
ٱللَّهِ
(of) Allah
আল্লাহর
lahum
لَهُمْ
for them
তাদের জন্য
ʿadhābun
عَذَابٌ
(is) a punishment
শাস্তি (রয়েছে)
shadīdun
شَدِيدٌۗ
severe
কঠিন
wal-lahu
وَٱللَّهُ
And Allah
এবং আল্লাহ
ʿazīzun
عَزِيزٌ
(is) All-Mighty
পরাক্রমশালী
dhū
ذُو
All-Able
(একটি)
intiqāmin
ٱنتِقَامٍ
(of) retribution
প্রতিশোধ ক্ষমতা সম্পন্ন

Transliteration:

Min qablu hudal linnaasi wa anzalal Furqaan; innallazeena kafaroo bi Aayaatil laahi lahum 'azaabun shadeed; wallaahu 'azeezun zun tiqaam (QS. ʾĀl ʿImrān:4)

English Sahih International:

Before, as guidance for the people. And He revealed the Criterion [i.e., the Quran]. Indeed, those who disbelieve in the verses of Allah will have a severe punishment, and Allah is Exalted in Might, the Owner of Retribution. (QS. Ali 'Imran, Ayah ৪)

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

ইতোপূর্বে মানবজাতির পথ প্রদর্শনের জন্য; আর তিনি সেই মানদন্ড নাযিল করেছেন যা হাক্ব ও বাতিলের পার্থক্য দেখিয়ে দেয়; নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর আয়াতের সাথে কুফুরী করে, তাদের জন্য কঠিন শাস্তি রয়েছে। আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী, দন্ডদাতা। (আল ইমরান, আয়াত ৪)

Tafsir Ahsanul Bayaan

পূর্বে তিনি মানবজাতিকে সৎপথ প্রদর্শনের জন্য[১] তাওরাত ও ইঞ্জীল অবতীর্ণ করেছেন এবং তিনি ফুরক্বান (ন্যায়-অন্যায়ের মীমাংসাকারী; কুরআন) অবতীর্ণ করেছেন। [২] নিশ্চয় যারা আল্লাহর নিদর্শনাবলীকে অমান্য করে তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি। বস্তুতঃ আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রতিশোধ গ্রহণকারী।

[১] ইতিপূর্বে নবীদের উপর যে কিতাবসমূহ নাযিল হয়েছে, এই কিতাব সেগুলোর সত্যায়ন করে। অর্থাৎ, সে কিতাবগুলোতে যে কথাগুলো লিপিবদ্ধ ছিল, তার সত্যায়ন করে এবং তাতে যে সব ভবিষ্যদ্বাণী বর্ণিত হয়েছে, তা সত্য বলে স্বীকার করে। আর এর পরিষ্কার অর্থ হল, কুরআন কারীমও সেই সত্তার পক্ষ হতে অবতীর্ণ, যে সত্তা পূর্বেও বহু কিতাব নাযিল করেছেন। এটা যদি কোন অন্য পক্ষ হতে আসত অথবা মানুষের চেষ্টার ফল হত, তাহলে এর এবং উক্ত কিতাবগুলোর মধ্যে পারস্পরিক মিল থাকার পরিবর্তে অমিলই থাকত।

[২] অর্থাৎ, অবশ্যই তাওরাত এবং ইঞ্জীল সব সব সময়ে মানুষের হিদায়াতের উৎস ছিল। কারণ এগুলোর অবতীর্ণ হওয়ার উদ্দেশ্যই ছিল এটাই। এরপর 'তিনি ফুরকান অবতীর্ণ করেছেন' বলে এ কথা পরিষ্কার করে দিলেন যে, তাওরাত ও ইঞ্জীলের যামানা শেষ হয়ে গেছে। এখন তো কুরআন অবতীর্ণ হয়ে গেছে। আর কুরআনই হল ফুরকান এবং সত্য ও মিথ্যা জানার এটাই হল কষ্টিপাথর। এটাকে সত্য বলে বিশ্বাস না করলে আল্লাহর নিকট কেউ মুসলিম ও মু'মিন হতে পারবে না।

Tafsir Abu Bakr Zakaria

ইতোপূর্বে মানুষের জন্য হেদায়াতসরূপ [১]; আর তিনি ফুরকান নাযিল করেছেন [২]। নিশ্চয় যারা আল্লাহ্‌র আয়াতসমূহে কুফরী করে তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি। আর আল্লাহ্‌ মহা-পরাক্রমশালী, প্রতিশোধ গ্রহণকারী [৩]।

[১] কাতাদা বলেন, এ দুটি আল্লাহ্‌র নাযিলকৃত কিতাব। এতে রয়েছে আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে বর্ণনা। যে এ দুটি থেকে হিদায়াত গ্রহণ করেছে, সত্য বলে বিশ্বাস করেছে এবং সেটা অনুসারে আমল করেছে সে নিরাপত্তা পেয়েছে। আত-তাফসীরুস সহীহ সে হিসেবে এটাকে মানুষের হিদায়াতের জন্য নাযিল করা হয়েছে বলে এখানে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে পবিত্র কুরআন নাযিল হওয়ারপর এ দুটি গ্রন্থ রহিত হয়ে গেছে, তা থেকে হিদায়াত লাভের আর কোন উপায় নেই।

[২] ওয়াসিলা ইবন আসকা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালামের সহীফাসমূহ রামাদান মাসের প্রথম রাত্রিতে নাযিল হয়েছিল, তাওরাত নাযিল হয়েছিল রামাদান মাসের ছয়দিন অতিবাহিত হওয়ার পর, ইঞ্জীল নাযিল হয়েছিল রামাদান মাসের তের রাত্রি পার হওয়ার পর। আর ফুরকান নাযিল হয়েছিল রামাদান মাসের চব্বিশ রাত্রি পার হওয়ার পর। ” [মুসনাদে আহমাদ ৪/১০৭]

কাতাদাহ বলেন, আয়াতে ফুরকান বলে পবিত্র কুরআনকে বোঝানো হয়েছে। আল্লাহ্ তা'আলা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর তা নাযিল করে এর মাধ্যমে হক ও বাতিলের পার্থক্য স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তাঁর হালালকৃত বস্তুকে হালাল এবং হারামকৃত বস্তুকে এর মাধ্যমে হারাম ঘোষণা করেছেন। তাঁর শরীআতকে প্রবর্তন করেছেন। অপরাধের শাস্তি নির্ধারণ করে দিয়েছেন। কি কি জিনিস ফরয করেছেন তা বর্ণনা করেছেন। আর তাঁর আনুগত্যের নির্দেশ দিয়েছেন এবং অবাধ্যতা হতে নিষেধ করেছেন। [আত-তাফসীরুস সহীহ]

[৩] আয়াতে আল্লাহ্‌ তা'আলার পরিপূর্ণ শক্তি এবং সর্ববিষয়ে সার্বিক সামর্থ্যের কথা বর্ণনা করা হয়েছে যে, তিনি মানুষকে জননীর উদরে তিনটি অন্ধকার স্তরের মাঝে কিরূপ নিপুণভাবে গঠন করেছেন। তাদের আকার-আকৃতি ও বর্ণ বিন্যাসে এমন দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন যে, আকৃতি ও বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের মধ্যে একজনের আকার-আকৃতি অন্যজনের অনুরূপ নয় বিধায়, স্বতন্ত্র পরিচয় দূরূহ হয়ে পড়ে। এহেন সর্বব্যাপী জ্ঞান ও পরিপূর্ণ শক্তি-সামর্থ্যের যুক্তিসঙ্গত দাবী এই যে, ইবাদাত একমাত্র তারই করতে হবে। তিনি ছাড়া আর কারো জ্ঞান ও শক্তি-সামর্থ্য এরূপ নয়। কাজেই অন্য কেউ ‘ইবাদাতের যোগ্যও নয়। [মা'আরিফুল কুরআন]

Tafsir Bayaan Foundation

ইতঃপূর্বে মানুষের জন্য হিদায়াতস্বরূপ। আর তিনি ফুরকান নাযিল করেছেন। নিশ্চয় যারা অস্বীকার করে আল্লাহর আয়াতসমূহ, তাদের জন্যই রয়েছে কঠিন আযাব। আর আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রতিশোধগ্রহণকারী।

Muhiuddin Khan

নাযিল করেছেন তাওরত ও ইঞ্জিল, এ কিতাবের পূর্বে, মানুষের হেদায়েতের জন্যে এবং অবতীর্ণ করেছেন মীমাংসা। নিঃসন্দেহে যারা আল্লাহর আয়াতসমূহ অস্বীকার করে, তাদের জন্যে রয়েছে কঠিন আযাব। আর আল্লাহ হচ্ছেন পরাক্রমশীল, প্রতিশোধ গ্রহণকারী।

Zohurul Hoque

-- এর আগে, মানুষের জন্য এক একটি পথনির্দেশ হিসেবে, আর তিনি অবতারণ করেছেন এই ফুরকান। নিঃসন্দেহ যারা অবিশ্বাস করে আল্লাহ্‌র বাণীসমূহে, তাদের জন্য রয়েছে ভয়ঙ্কর শাস্তি। আর আল্লাহ্ মহাশক্তিশালী, প্রতিফল দান সুসমর্থ।