Skip to content

কুরআন মজীদ সূরা মারইয়াম আয়াত ৪৭

Qur'an Surah Maryam Verse 47

মারইয়াম [১৯]: ৪৭ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ

قَالَ سَلٰمٌ عَلَيْكَۚ سَاَسْتَغْفِرُ لَكَ رَبِّيْۗ اِنَّهٗ كَانَ بِيْ حَفِيًّا (مريم : ١٩)

qāla
قَالَ
He said
সে বললো
salāmun
سَلَٰمٌ
"Peace (be)
"শান্তি (সালাম)
ʿalayka
عَلَيْكَۖ
on you
আপনার উপর
sa-astaghfiru
سَأَسْتَغْفِرُ
I will ask forgiveness
অচিরেই ক্ষমা চাইবো আমি
laka
لَكَ
for you
আপনার জন্য
rabbī
رَبِّىٓۖ
(from) my Lord
আমার রবের কাছে
innahu
إِنَّهُۥ
Indeed He
নিশ্চয়ই তিনি
kāna
كَانَ
is
হলেন
بِى
to me
আমার প্রতি
ḥafiyyan
حَفِيًّا
Ever Gracious
অনুগ্রহশীল

Transliteration:

Qaala salaamun 'alaika sa astaghfiru laka Rabbeee innahoo kaana bee hafiyyaa (QS. Maryam:47)

English Sahih International:

[Abraham] said, "Peace [i.e., safety] will be upon you. I will ask forgiveness for you of my Lord. Indeed, He is ever gracious to me. (QS. Maryam, Ayah ৪৭)

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

ইবরাহীম বলল, ‘আপনার প্রতি সালাম, আমি আমার প্রতিপালকের নিকট আপনার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করব, তিনি আমার প্রতি বড়ই মেহেরবান। (মারইয়াম, আয়াত ৪৭)

Tafsir Ahsanul Bayaan

ইব্রাহীম বলল, ‘তোমার উপর সালাম; [১] আমি আমার প্রতিপালকের নিকট তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করব, [২] নিশ্চয় তিনি আমার প্রতি অতিশয় অনুগ্রহশীল।

[১] এই সালাম অভিবাদনের জন্য নয়; যেমন এক মুসলিম অন্য মুসলিমকে করে থাকে; বরং এটি হল কথা বলা বন্ধ করার ইঙ্গিত। যেমন মহান আল্লাহ অন্যত্র বলেন, "তাদেরকে যখন অজ্ঞ ব্যক্তিরা সম্বোধন করে, তখন তারা বলে, সালাম।" (সূরা ফুরকান ২৫;৬৩) অর্থাৎ, তারা চুপ হয়ে যায়। আর এর মধ্যে ঈমানদার ও আল্লাহর প্রকৃত বান্দাদের আচরণ বর্ণনা করা হয়েছে।

[২] ইবরাহীম (আঃ) এ কথা ঐ সময় বলেছিলেন, যখন মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা নিষেধ হওয়া সম্পর্কে জ্ঞান ছিল না। অতঃপর যখন তিনি জানতে পারলেন, তখন সাথে সাথে প্রার্থনা করা বন্ধ করে দিলেন। (সূরা তাওবা ৯;১১৪)

Tafsir Abu Bakr Zakaria

ইবরাহীম বললেন, ‘আপনার প্রতি সালাম [১]। আমি আপনার রব-এর কাছে আপনার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করব [২], নিশ্চয় তিনি আমার প্রতি খুবই অনুগ্রহশীল।

[১] ইবরাহীম আলাইহিসসালাম أَبَتِ বলে মিষ্ট ভাষায় পিতাকে সম্বোধন করেছিলেন। কিন্তু আযর তাকে প্রস্তরাঘাতে হত্যা করার হুমকি এবং বাড়ী থেকে বের হয়ে যাওয়ার আদেশ জারি করে দিল। তখন ইবরাহীম আলাইহিসসালাম বললেনঃ سَلَامٌ عَلَيْكَ এখানে سلام শব্দটি অধিকাংশ মুফাসসিরের মতে, বয়কটের সালাম অর্থাৎ কারও সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার ভদ্রজনোচিত পন্থা হচ্ছে কথার উত্তর না দিয়ে সালাম বলে পৃথক হয়ে যাওয়া। পবিত্র কুরআন আল্লাহর প্রিয় ও সৎকর্মপরায়ণ বান্দাদের প্রশংসায় বলেঃ “মূর্খরা যখন তাদের সাথে মূর্খসুলভ তর্কবিতর্কে প্রবৃত্ত হয়, তখন তারা তাদের মোকাবেলা করার পরিবর্তে সালাম শব্দ বলে দেন। ” [সূরা আল-ফুরকান; ৬৯] অথবা এর উদ্দেশ্য এই যে, বিরুদ্ধাচরণ সত্ত্বেও আমি আপনার কোন ক্ষতি করব না। [ফাতহুল কাদীর]

[২] কোন কাফেরের জন্যে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা শরীআতের আইনে নিষিদ্ধ ও নাজায়েয। একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার চাচা আবু তালেবকে বলেছিলেনঃ “আল্লাহর কসম, আমি আপনার জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকিব, যে পর্যন্ত না আল্লাহর পক্ষ থেকে আমাকে নিষেধ করে দেয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে এই আয়াত নাযিল হয়; “নবী ও ঈমানদারদের পক্ষে মুশরেকদের জন্যে ইস্তেগফার করা বৈধ নয়। ” [সূরা আত-তাওবাহঃ ১১৩] এ আয়াত নাযিল হওয়ার পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম চাচার জন্যে ইস্তেগফার ত্যাগ করেন। ইবরাহীম আলাইহিসসালাম কর্তৃক তার পিতার জন্য ক্ষমা চাওয়ার উত্তর এই যে, ইবরাহীম আলাইহিস সালামের ওয়াদা “আপনার জন্যে আমার প্রভুর কাছে ইস্তেগফার করব। ” এটা নিষেধাজ্ঞার পূর্বেকার ঘটনা। নিষেধ পরে করা হয়। তারপর তিনি তার পিতার জন্য সুপারিশ করা পরিত্যাগ করেছিলেন, আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ “ইবরাহীম তার পিতার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছিল, তাকে এর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বলে; তারপর যখন এটা তার কাছে সুস্পষ্ট হল যে, সে আল্লাহর শত্রু তখন ইবরাহীম তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করলেন। ইবরাহীম তো কোমল হৃদয় ও সহনশীল।" [সরা আত-তাওবাহঃ ১১৪] তারপরও ইবরাহীম আলাইহিসসালাম হাশরের মাঠে যখন তার পিতাকে কুৎসিত অবস্থায় দেখবেন তখন তার জন্য কোন দোআ বা সুপারিশ করবেন না। এ ব্যাপারে হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “হাশরের মাঠে ইবরাহীম আলাইহিসসালাম তার পিতাকে দেখে বলবেন, হে আল্লাহ! আপনি আমাকে আজকের দিনে অপমান থেকে রক্ষা করার ওয়াদা করেছেন। আমার পিতার অপমানের চেয়ে বড় অপমান আর কি হতে পারে? আল্লাহ তা’আলা বলবেনঃ “আমি কাফেরদের জন্য জান্নাত হারাম করেছি। ” তারপর আল্লাহ তা'আলা তখন তাকে তার পায়ের নীচে তাকাবার নির্দেশ দিবেন। তিনি তাকিয়ে একটি মৃত দুৰ্গন্ধযুক্ত পঁচা জানোয়ার দেখতে পাবেন, ফলে তিনি তার জন্য সুপারিশ না করেই তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন। [বুখারীঃ ৩১৭২, ৪৪৯০, ৪৪৯১]

Tafsir Bayaan Foundation

ইবরাহীম বলল, ‘তোমার প্রতি সালাম। আমি আমার রবের কাছে তোমার জন্য ক্ষমা চাইব। নিশ্চয় তিনি আমার প্রতি বড়ই অনুগ্রহশীল’।

Muhiuddin Khan

ইব্রাহীম বললেনঃ তোমার উপর শান্তি হোক, আমি আমার পালনকর্তার কাছে তোমার জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করব। নিশ্চয় তিনি আমার প্রতি মেহেরবান।

Zohurul Hoque

তিনি বললেন, ''তোমার উপরে শান্তি, আমি অবশ্য আমার প্রভুর কাছে তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করব। নিঃসন্দেহ তিনি আমার প্রতি পরম স্নেহময়।