কুরআন মজীদ সূরা আত তাওবাহ আয়াত ১৮
Qur'an Surah At-Tawbah Verse 18
আত তাওবাহ [৯]: ১৮ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ
اِنَّمَا يَعْمُرُ مَسٰجِدَ اللّٰهِ مَنْ اٰمَنَ بِاللّٰهِ وَالْيَوْمِ الْاٰخِرِ وَاَقَامَ الصَّلٰوةَ وَاٰتَى الزَّكٰوةَ وَلَمْ يَخْشَ اِلَّا اللّٰهَ ۗفَعَسٰٓى اُولٰۤىِٕكَ اَنْ يَّكُوْنُوْا مِنَ الْمُهْتَدِيْنَ (التوبة : ٩)
- innamā
- إِنَّمَا
- Only
- মূলত
- yaʿmuru
- يَعْمُرُ
- will maintain
- রক্ষণাবেক্ষণ করবে
- masājida
- مَسَٰجِدَ
- (the) masajid of Allah
- মাসজিদসমূহের
- l-lahi
- ٱللَّهِ
- (the) masajid of Allah
- আল্লাহর
- man
- مَنْ
- (the one) who
- (সেই) যে
- āmana
- ءَامَنَ
- believes
- ঈমান এনেছে
- bil-lahi
- بِٱللَّهِ
- in Allah
- উপর আল্লাহর
- wal-yawmi
- وَٱلْيَوْمِ
- and the Day
- ও দিনের
- l-ākhiri
- ٱلْءَاخِرِ
- the Last
- আখিরাতের
- wa-aqāma
- وَأَقَامَ
- and establishes
- ও প্রতিষ্ঠা করে
- l-ṣalata
- ٱلصَّلَوٰةَ
- the prayer
- সালাত
- waātā
- وَءَاتَى
- and gives
- ও আদায় করে
- l-zakata
- ٱلزَّكَوٰةَ
- the zakah
- যাকাত
- walam
- وَلَمْ
- and not
- ও না
- yakhsha
- يَخْشَ
- fear
- ভয় করে (অন্য কাউকে)
- illā
- إِلَّا
- except
- ছাড়া
- l-laha
- ٱللَّهَۖ
- Allah
- আল্লাহ
- faʿasā
- فَعَسَىٰٓ
- Then perhaps
- আশা করা যায়
- ulāika
- أُو۟لَٰٓئِكَ
- those
- ঐসব লোক
- an
- أَن
- [that]
- যে
- yakūnū
- يَكُونُوا۟
- they are
- তারাই হবে
- mina
- مِنَ
- of
- অন্তর্ভুক্ত
- l-muh'tadīna
- ٱلْمُهْتَدِينَ
- the guided ones
- সঠিক পথপ্রাপ্তদের
Transliteration:
Innamaa ya'muru masaa jidal laahi man aamana billaahi wal Yawmil Aakhiri wa aqaamas Salaata wa aataz Zakaata wa lam yakkhsa illal laaha fa'asaaa ulaaa'ika ai yakoonoo minal muhtadeen(QS. at-Tawbah:18)
English Sahih International:
The mosques of Allah are only to be maintained by those who believe in Allah and the Last Day and establish prayer and give Zakah and do not fear except Allah, for it is expected that those will be of the [rightly] guided. (QS. At-Tawbah, Ayah ১৮)
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
আল্লাহর মাসজিদের আবাদ তো তারাই করবে যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রতি ঈমান আনে, নামায প্রতিষ্ঠা করে, যাকাত আদায় করে আর আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে ভয় করে না। আশা করা যায়, তারাই হবে সঠিক পথপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত। (আত তাওবাহ, আয়াত ১৮)
Tafsir Ahsanul Bayaan
তারাই তো আল্লাহর মসজিদ রক্ষণাবেক্ষণ করবে, যারা আল্লাহতে ও পরকালে বিশ্বাস করে এবং যথাযথভাবে নামায পড়ে, যাকাত আদায় করে এবং আল্লাহ ব্যতীত অন্য কাউকেও ভয় করে না, ওদেরই সম্বন্ধে আশা যে, ওরা সৎপথ প্রাপ্ত হবে। [১]
[১] যেমন হাদীসেও এসেছে যে, নবী (সাঃ) বলেছেন "যখন তোমরা দেখবে যে, মানুষ মসজিদে (নামাযের জন্য) নিয়মিত উপস্থিত হচ্ছে, তখন তোমরা তার ঈমানের ব্যাপারে সাক্ষ্য দাও।" (তিরমিযীঃ সূরা তাওবার তাফসীর, হাদীসটিকে আল্লামা আলবানী যয়ীফ বলেছেন, যয়ীফুল জামে' ৫০৯নং) কুরআন মাজীদে এখানেও আল্লাহ ও আখেরাতের প্রতি ঈমানের পর যে সব আমলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তা হল নামায, যাকাত এবং আল্লাহর ভয়। যা হতে নামায, যাকাত ও আল্লাহ-ভীতির মাহাত্ম্য ও গুরুত্ব প্রকাশ পায়।
Tafsir Abu Bakr Zakaria
তারাই তো আল্লাহ্র মসজিদের আবাদ করবে [১], যারা ঈমান আনে আল্লাহ্ ও শেষ দিনের প্রতি, সালাত কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কাউকে ভয় করে না। অতএব আশা করা যায়, তারা হবে সৎপথ প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত [২]।
[১] এ আয়াতে আল্লাহর মসজিদ নির্মানের ও আবাদের যোগ্যতা কাদের রয়েছে তা জানিয়ে বলা হচ্ছেঃ আল্লাহর মসজিদ আবাদ করার যোগ্যতা রয়েছে উপরোক্ত গুণাবলীসম্পন্ন নেককার মুসলিমদের। এই থেকে বুঝা যায়, যে ব্যক্তি মসজিদের হেফাযত, পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন ও অন্যান্য ব্যবস্থায় নিয়োজিত থাকে কিংবা যে ব্যক্তি আল্লাহর যিকর বা দ্বনী ইলমের শিক্ষা দানে কিংবা শিক্ষা লাভের উদ্দেশ্যে মসজিদে যাতায়াত করে, তা তার কামেল মুমিন হওয়ার সাক্ষ্য বহন করে। হাদীসে বর্ণিত রয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ‘যে ব্যক্তি সকালসন্ধ্যা মসজিদে উপস্থিত হয়, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে একটি স্থান প্রস্তুত করেন।’ [বুখারীঃ ৬৬২, মুসলিমঃ ৬৬৯] সালমান ফারেসী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ‘মসজিদে আগমনকারী ব্যক্তি আল্লাহর যিয়ারতকারী মেহমান, আর মেজবানের কর্তব্য হল মেহমানের সম্মান করা।’ [আত-তাবরানী ফিল কাবীর ৬/২৫৫] তৃতীয় খলীফা উসমান ইবন আফফান রাদিয়াল্লাহু আনহু যখন মসজিদে নববী নতুন করে তৈরী করছিলেন তখন লোকেরা বিভিন্ন ধরনের কথা বলছিল। তখন তিনি বললেন, তোমরা বড্ড বেশী কথা বলছ, অথচ আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, যে কেউ আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে মসজিদ বানাবে আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে অনুরূপ একটি ঘর বানাবেন। [বুখারী ৪৫০; মুসলিম; ৫৩৩]
[২] ইবন আব্বাস থেকে এ আয়াতের অর্থ এরূপ বর্ণিত হয়েছে যে, ঐ ব্যক্তিই মসজিদ নির্মাণ করবে, যে আল্লাহর তাওহীদ প্রতিষ্ঠা করেছে, শেষ দিবসের উপর ঈমান এনেছে, আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তা স্বীকার করে নিয়েছে। পাঁচ ওয়াক্ত সালাত কায়েম করেছে, আর আল্লাহ ব্যতীত কারও ইবাদত করেনি, নিশ্চয় তারাই হবে সফলকাম। কুরআনে যেখানেই আল্লাহ্ তা'আলা আশা করা যায় বলেছেন সেটাই অবশ্যম্ভাবী। [তাবারী]
Tafsir Bayaan Foundation
একমাত্র তারাই আল্লাহর মসজিদসমূহ আবাদ করবে, যারা আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখে, সালাত কায়েম করে, যাকাত প্রদান করে এবং আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করে না। আশা করা যায়, ওরা হিদায়াতপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।
Muhiuddin Khan
নিঃসন্দেহে তারাই আল্লাহর মসজিদ আবাদ করবে যারা ঈমান এনেছে আল্লাহর প্রতি ও শেষ দিনের প্রতি এবং কায়েম করেছে নামায ও আদায় করে যাকাত; আল্লাহ ব্যতীত আর কাউকে ভয় করে না। অতএব, আশা করা যায়, তারা হেদায়েত প্রাপ্তদের অন্তর্ভূক্ত হবে।
Zohurul Hoque
নিঃসন্দেহ সে-ই শুধু আল্লাহ্র মসজিদগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করবে যে আল্লাহ্তে বিশ্বাস করে আর পরকালেও, আর নামায কায়েম করে ও যাকাত আদায় করে, আর আল্লাহ্ ছাড়া কাউকেও ভয় করে না, কাজেই এদের পক্ষেই সাব্য যে এরা হেদায়তপ্রাপ্তদের মধ্যেকার হবে।