Skip to content

কুরআন মজীদ সূরা আত তাওবাহ আয়াত ১২

Qur'an Surah At-Tawbah Verse 12

আত তাওবাহ [৯]: ১২ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ

وَاِنْ نَّكَثُوْٓا اَيْمَانَهُمْ مِّنْۢ بَعْدِ عَهْدِهِمْ وَطَعَنُوْا فِيْ دِيْنِكُمْ فَقَاتِلُوْٓا اَىِٕمَّةَ الْكُفْرِۙ اِنَّهُمْ لَآ اَيْمَانَ لَهُمْ لَعَلَّهُمْ يَنْتَهُوْنَ (التوبة : ٩)

wa-in
وَإِن
And if
আর যদি
nakathū
نَّكَثُوٓا۟
they break
তারা ভঙ্গ করে
aymānahum
أَيْمَٰنَهُم
their oaths
শপথ তাদের
min
مِّنۢ
after
থেকে
baʿdi
بَعْدِ
after
পর
ʿahdihim
عَهْدِهِمْ
their treaty
চুক্তির তাদের
waṭaʿanū
وَطَعَنُوا۟
and defame
ও বিদ্রূপ করে
فِى
[in]
সম্পর্কে
dīnikum
دِينِكُمْ
your religion
দীনের তোমাদের
faqātilū
فَقَٰتِلُوٓا۟
then fight
তখন তোমরা লড়াই করো
a-immata
أَئِمَّةَ
the leaders
নেতৃবৃন্দের (বিরুদ্ধে)
l-kuf'ri
ٱلْكُفْرِۙ
(of) [the] disbelief
অবিশ্বাসের
innahum
إِنَّهُمْ
indeed, they
নিশ্চয়ই তারা (এমন যে)
لَآ
no
নেই(বিশ্বাস)
aymāna
أَيْمَٰنَ
oaths
শপথ
lahum
لَهُمْ
for them
কাছে তাদের
laʿallahum
لَعَلَّهُمْ
so that they may
(এরূপ আচরণে)সম্ভবতঃ তারা
yantahūna
يَنتَهُونَ
cease
বিরত হবে

Transliteration:

Wa in nakasooo aimaanahum mim ba'di 'ahdihim wa ta'anoo fee deenikum faqaatilooo a'immatal kufri innahum laaa aimaana lahum la'allahum yantahoon (QS. at-Tawbah:12)

English Sahih International:

And if they break their oaths after their treaty and defame your religion, then combat the leaders of disbelief, for indeed, there are no oaths [sacred] to them; [fight them that] they might cease. (QS. At-Tawbah, Ayah ১২)

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

তারা যদি চুক্তি করার পর তাদের শপথ ভঙ্গ করে আর তোমাদের দীনের বিরুদ্ধে কটুক্তি করে, তাহলে কাফিরদের নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে লড়াই কর, শপথ বলে কোন জিনিস তাদের কাছে নেই, (কাজেই শক্তি প্রয়োগ কর) যাতে তারা (শয়ত্বানী কার্যকলাপ থেকে) নিবৃত্ত হয়। (আত তাওবাহ, আয়াত ১২)

Tafsir Ahsanul Bayaan

আর তারা যদি তাদের চুক্তির পর তাদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে ও তোমাদের দ্বীন সম্পর্কে খোঁটা দেয়, তাহলে অবিশ্বাসীদের নেতৃবর্গের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর। এরা এমন লোক যাদের কোনই চুক্তি (বা কসম) নেই। [১] সম্ভবতঃ তারা নিরস্ত হতে পারে।

[১] أيمان শব্দটি يمين এর বহুবচন। যার অর্থ হল কসম। أئمة শব্দটি إمام শব্দের বহুবচন, অর্থঃ নেতা বা লিডার। উদ্দেশ্য হল, যদি এই সব লোকেরা অঙ্গীকার বা চুক্তি ভঙ্গ করে ফেলে আর দ্বীনের ব্যাপারে খোঁটা মারে, তাহলে প্রকাশ্যভাবে এরা কসম খেলেও এদের কসমের কোন মূল্য নেই। বরং কাফেরদের ঐ নেতৃবর্গের বিরুদ্ধে লড়াই কর। সম্ভবতঃ এর ফলে তারা কুফর থেকে ফিরে আসবে। এ থেকে হানাফী উলামাগণ দলীল গ্রহণ করে প্রমাণ করেন যে, যিম্মী (ইসলামী দেশে অবস্থানকারী অমুসলিম) যদি চুক্তি ভঙ্গ না করে দ্বীন ইসলামের ব্যাপারে খোঁটা দেয় বা কুমন্তব্য করে, তাহলে তাদেরকে হত্যা করা হবে না। কেননা, কুরআন তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার দু'টি শর্ত উল্লেখ করেছে। অতএব যতক্ষণ পর্যন্ত না সেই দু'টি শর্ত পাওয়া যাবে তাদেরকে হত্যা করা হবে না। কিন্তু ইমাম মালেক (রঃ), ইমাম শাফেয়ী (রঃ) এবং অন্যান্য উলামাগণ দ্বীনের ব্যাপারে খোঁটা দেওয়া বা নিন্দা গাওয়াকে চুক্তি ভঙ্গ করা বলে গণ্য করেছেন। এই জন্য তাঁদের নিকটে দু'টি শর্তই একত্রিত হয়। অতএব এই প্রকার যিম্মী ব্যক্তিকে হত্যা করা (মুসলিম সরকারের জন্য) বৈধ; যেমন বৈধ চুক্তি ভঙ্গকারীকেও হত্যা করা। (ফাতহুল ক্বাদীর)

Tafsir Abu Bakr Zakaria

আর যদি তারা তাদের চুক্তির পর তাদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে এবং তোমাদের দ্বীন সম্মন্ধে কটুক্তি করে [১], তবে কুফরের নেতাদের সাথে যুদ্ধ কর [২]; এরা এমন লোক যাদের কোন প্রতিশ্রুতি নেই [৩] যেন তারা নিবৃত হয় [৪]।

[১] এ বাক্য থেকে আলেমগণ প্রমাণ করেন যে, মুসলিমদের ধর্মের প্রতি বিদ্রুপ করা চুক্তিভঙ্গের নামান্তর। যে ব্যক্তি ইসলাম, ইসলামের নবী বা ইসলামী শরী’আতকে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করে, তাকে চুক্তি রক্ষাকারী বলা যাবে না। শরীআত তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলে। [ইবন কাসীর]

[২] কতিপয় মুফাসসির বলেন, এখানে কুফর-প্রধান বলতে বোঝায় মক্কার ঐ সকল কোরাইশ প্রধান যারা মুসলিমদের বিরুদ্ধে লোকদের উস্কানি দান ও রণ প্রস্তুতিতে নিয়োজিত ছিল। বিশেষতঃ এদের সাথে যুদ্ধ করতে আদেশ এজন্যে দেয়া হয় যে, মক্কাবাসীদের শক্তির উৎস হল এরা। [তাবারী; ইবন কাসীর] কোন কোন মুফাসসির বলেনঃ এখানে অঙ্গীকার অর্থ, ইসলাম ও রাষ্ট্রীয় আনুগত্য। কারণ সন্ধি-চুক্তি তো পূর্বেই প্রত্যাহার করা হয়েছিল, তারপর ভবিষ্যতে তাদের সাথে নতুন করে কোন চুক্তি বা সন্ধি করার এখন কোন ইচ্ছাই ছিল না। কাজেই এখানে অঙ্গীকার ভংগ করা ও চুক্তি বিরোধী কাজ করার কোন প্রশ্নই উঠতে পারে না। তা ছাড়া এ আয়াতটি পূর্ববর্তী আয়াতের পরেই উল্লেখিত হয়েছে। আর পূর্ববর্তী আয়াতে বলা হয়েছে যে, “তারা যদি তাওবা করে, নামাজ পড়ে ও যাকাত আদায় করে তা হলে তারা তোমাদের ভাই হবে"। এরপর “তারা যদি অঙ্গীকার ভংগ করে” বলার পরিষ্কার অর্থ এই হতে পারে যে, এর দ্বারা সে লোকদের ইসলাম কবুল ও ইসলামী রাষ্ট্রের আনুগত্যের অঙ্গীকার করার পর তা ভঙ্গ করা-ই বুঝানো হয়েছে। আসলে এ আয়াতে মুর্তাদ হওয়ার ফেতনার কথাই বলা হয়েছে, যা তখনো আসেনি। যা এর দেড় বছর পর আবু বকর সিদীক রাদিয়াল্লাহু আনহুর খিলাফতের শুরুতে হয়েছিল। আৰু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু এ সময় যে কর্মনীতি গ্রহণ করেছিলেন তা কিছুকাল পূর্বে এ আয়াতে দেওয়া হেদায়াত অনুরূপই ছিল। [তাবারী; ইবন কাসীর]

[৩] এখানে বলা হয়েছেঃ “এদের কোন শপথ নেই”; কারণ, এরা শপথ ও প্রতিশ্রুতি ভঙ্গে অভ্যস্ত। তাই এদের শপথের কোন মূল্য মান নেই। [সা’দী]

[৪] এ থেকে বুঝা যায় যে, মুসলিমদের যুদ্ধ-বিগ্রহের উদ্দেশ্য অপরাপর জাতির মত শক্ৰ নির্যাতন ও প্রতিশোধ স্পৃহা নিবারণ, কিংবা সাধারণ রাষ্ট্রনায়কগণের মত নিছক দেশ দখল না হওয়া চাই। বরং তাদের যুদ্ধের উদ্দেশ্য হওয়া চাই শক্রদের মঙ্গল কামনা ও সহানুভূতি এবং বিপথ থেকে তাদের ফিরিয়ে আনা। হয়ত তারা যুদ্ধ থেকে বিরত থাকবে, ইসলামে অপবাদ দেয়া বাদ দিবে, অথবা ঈমান আনবে। [সা’দী]

Tafsir Bayaan Foundation

আর যদি তারা তাদের অঙ্গীকারের পর তাদের কসম ভঙ্গ করে এবং তোমাদের দীন সম্পর্কে কটূক্তি করে, তাহলে তোমরা কুফরের নেতাদের বিরুদ্ধে লড়াই কর, নিশ্চয় তাদের কোন কসম নেই, যেন তারা বিরত হয়।

Muhiuddin Khan

আর যদি ভঙ্গ করে তারা তাদের শপথ প্রতিশ্রুতির পর এবং বিদ্রুপ করে তোমাদের দ্বীন সম্পর্কে, তবে কুফর প্রধানদের সাথে যুদ্ধ কর। কারণ, এদের কেন শপথ নেই যাতে তারা ফিরে আসে।

Zohurul Hoque

আর তারা যদি তাদের চুক্তি সম্পাদনের পরেও তাদের প্রতি‌শ্রুতি ভঙ্গ করে আর তোমাদের ধর্ম নিয়ে বিদ্রূপ করে তবে অবিশ্বাসের সর্দারদের সাথে যুদ্ধ করো, -- নিঃসন্দেহ তাদের বেলা প্রতিজ্ঞাসব তাদের কাছে কিছুই নয়, -- যেন তারা বিরত হতে পারে।