Skip to content

কুরআন মজীদ সূরা আল গাশিয়াহ আয়াত ৩

Qur'an Surah Al-Ghashiyah Verse 3

আল গাশিয়াহ [৮৮]: ৩ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ

عَامِلَةٌ نَّاصِبَةٌ ۙ (الغاشية : ٨٨)

ʿāmilatun
عَامِلَةٌ
Laboring
ক্লিষ্ট (হবে)
nāṣibatun
نَّاصِبَةٌ
exhausted
ক্লান্ত (হবে)

Transliteration:

'Aamilatun naasibah (QS. al-Ghāšiyah:3)

English Sahih International:

Working [hard] and exhausted. (QS. Al-Ghashiyah, Ayah ৩)

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

হবে কর্মক্লান্ত, শ্রান্ত। (আল গাশিয়াহ, আয়াত ৩)

Tafsir Ahsanul Bayaan

কর্মক্লান্ত পরিশ্রান্ত। [১]

[১] ناصِبَة ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত। অর্থাৎ, তাদের আযাব এমন কষ্টদায়ক হবে যে, তাতে তাদের অবস্থা খুবই করুণ হবে। এর দ্বিতীয় অর্থ এটাও নেওয়া যেতে পারে যে, দুনিয়াতে আমল করে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। অর্থাৎ, তারা অনেক অনেক আমল করেছে। কিন্তু সে সব আমল বাতিল ধর্ম অনুযায়ী অথবা বিদআত ভিত্তিক হবে। আর এ জন্যই 'ইবাদত' ও 'ক্লান্তকর আমল' মওজুদ থাকা সত্ত্বেও তারা জাহান্নামে যাবে। এই অর্থানুযায়ী ইবনে আব্বাস (রাঃ) عامِلَة نَاصِبَة শব্দ থেকে উদ্দেশ্য 'খ্রিষ্টান' বুঝিয়েছেন। (সহীহ বুখারী সূরা গাশিয়ার ব্যাখ্যা পরিচ্ছেদ)

Tafsir Abu Bakr Zakaria

ক্লিষ্ট, ক্লান্ত [১],

[১] দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থা হবে عَامِلَةٌ نَّا صِبَةٌ বাকপদ্ধতিতে অবিরাম কর্মের কারণে পরিশ্রান্ত ব্যক্তিকে عَامِلَةٌ نَّا صِبَةٌ এবং ক্লান্ত ও ক্লিষ্ট ব্যক্তিকে বলা হয় نَاصِبَةٌ। [ফাতহুল কাদীর] কাফেরদের এ অবস্থা কখন হবে? এ নিয়ে কয়েকটি মত রয়েছে। কোন কোন মুফাসসিরের মতে, কাফেরদের এ দুরাবস্থা দুনিয়াতেই হবে। কেননা, আখেরাতে কোন কর্ম ও মেহনত নেই। [ফাতহুল কাদীর] কেননা, অনেক কাফের দুনিয়াতে মুশরিকসুলভ ইবাদত এবং বাতিল পন্থায় অধ্যবসায় ও সাধনা করে থাকে। হিন্দু যোগী ও নাসারা পাদ্রী অনেক এমন আছে, যারা আন্তরিকতা সহকারে আল্লাহ্ তা‘আলারই সন্তুষ্টির জন্যে দুনিয়াতে ইবাদত ও সাধনা করে থকে এবং এতে অসাধারণ পরিশ্রম স্বীকার করে। কিন্তু এসব ইবাদত মুশরিক সুলভ ও বাতিল পন্থায় হওয়ার কারণে আল্লাহ্র কাছে সওয়াব ও পুরস্কার লাভের যোগ্য হয় না। অতএব, তাদের মুখমণ্ডল দুনিয়াতেও ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত রইল এবং আখেরাতে তাদেরকে লাঞ্ছনা ও অপমানের অন্ধকার আচ্ছন্ন করে রাখবে। খলীফা ওমর ফারুক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু যখন শাম সফর করেন তখন জনৈক নাসারা বৃদ্ধ পাদ্রী তাঁর কাছ দিয়ে যেতে দেখলেন। সে তাঁর ধর্মীয় ইবাদত সাধনা ও মোজাহাদায় এত বেশী আত্মনিয়োগ করেছিল যে, অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণে চেহারা বিকৃত এবং দেহ শুকিয়ে কাঠ হয়ে গিয়েছিল। তার পোশাকের মধ্যেও কোন শ্ৰী ছিল না। খলীফা তাকে দেখে অশ্রু সংবরণ করতে পারলেন না। ক্ৰন্দনের কারণ জিজ্ঞাসিত হলে তিনি বললেন; এই বৃদ্ধার করুণ অবস্থা দেখে আমি ক্ৰন্দন করতে বাধ্য হয়েছি। বেচারী স্বীয় লক্ষ্য অজর্নের জন্যে জীবনপণ পরিশ্রম ও সাধনা করেছে কিন্তু সে তার লক্ষ্য অজর্নে ব্যর্থ হয়েছে এবং আল্লাহ্র সন্তুটি অর্জন করতে পারেনি। তারপর তিনি এ আয়াত তেলাওয়াত করলেন। [ইবন কাসীর]

কাতাদাহ রাহেমাহুল্লাহর মতে, তাদের অবিরাম কষ্ট ও ক্লান্তি দু’টোই আখেরাতে হবে। সে হিসেবে আয়াতের অর্থ, যারা দুনিয়াতে আল্লাহ্র ইবাদত করতে অহংকার করেছিল তাদেরকে সেদিন কর্মে খাটানো হবে এবং তাদেরকে জাহান্নামে প্রতিষ্ঠিত করা হবে; এমতাবস্থায় যে তারা তাদের ভারী জিঞ্জির ও ভারী বোঝাসমূহ বহন করতে থাকবে। অনুরূপভাবে তারা হাশরের মাঠের সে বিপদসংকুল সময়ে নগ্ন পা ও শরীর নিয়ে কঠিন অবস্থায় অবস্থান করতে থাকবে, যার পরিমান হবে পঞ্চাশ হাজার বছর। হাসান বসরী ও সাঈদ ইবনে জুবাইর রাহেমাহুমাল্লাহ বলেন, তারা জাহান্নামে কঠিন খাটুনি ও কষ্ট করবে। কোন কোন বর্ণনায় এসেছে, তাদেরকে কঠিন কঠিন পাহাড়ে ওঠা-নামার কাজে লাগানো হবে। পরে কষ্ট ও ক্লান্তি উভয়টিরই সম্মুখীন হবে। [ফাতহুল কাদীর]

Tafsir Bayaan Foundation

কর্মক্লান্ত, পরিশ্রান্ত।

Muhiuddin Khan

ক্লিষ্ট, ক্লান্ত।

Zohurul Hoque

পরিশ্রান্ত, অবসাদগ্রস্ত,