Skip to content

কুরআন মজীদ সূরা আল বুরূজ আয়াত ৮

Qur'an Surah Al-Buruj Verse 8

আল বুরূজ [৮৫]: ৮ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ

وَمَا نَقَمُوْا مِنْهُمْ اِلَّآ اَنْ يُّؤْمِنُوْا بِاللّٰهِ الْعَزِيْزِ الْحَمِيْدِۙ (البروج : ٨٥)

wamā
وَمَا
And not
এবং না
naqamū
نَقَمُوا۟
they resented
তারা প্রতিশোধ নিয়েছিল
min'hum
مِنْهُمْ
[of] them
তাদের থেকে (অন্য কারণে)
illā
إِلَّآ
except
এ ছাড়া
an
أَن
that
যে
yu'minū
يُؤْمِنُوا۟
they believed
তারা ঈমান এনেছে
bil-lahi
بِٱللَّهِ
in Allah
আল্লাহর উপর
l-ʿazīzi
ٱلْعَزِيزِ
the All-Mighty
পরাক্রমশালী
l-ḥamīdi
ٱلْحَمِيدِ
the Praiseworthy
প্রশংসিত

Transliteration:

Wa maa naqamoo minhum illaaa aiyu'minoo billaahil 'azeezil Hameed (QS. al-Burūj:8)

English Sahih International:

And they resented them not except because they believed in Allah, the Exalted in Might, the Praiseworthy, (QS. Al-Buruj, Ayah ৮)

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

তারা তাদেরকে নির্যাতন করেছিল একমাত্র এই কারণে যে, তারা মহাপরাক্রান্ত প্রসংসিত আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছিল। (আল বুরূজ, আয়াত ৮)

Tafsir Ahsanul Bayaan

তারা তাদেরকে শাস্তি দিয়েছিল শুধু এই কারণে যে, তারা মহাপরাক্রমশালী প্রশংসাভাজন আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছিল।[১]

[১] অর্থাৎ, ঐ সব লোকেদের অপরাধ যাদেরকে আগুনে নিক্ষেপ করা হচ্ছিল এই ছিল যে, তারা মহাপরাক্রমশালী আল্লাহর উপর ঈমান এনেছিল। এ ব্যাপারে বিস্তারিত ঘটনা, যা সহীহ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, তার সংক্ষিপ্ত বিবরণ নিম্নরূপঃ-

আসহাবুল উখদূদের সংক্ষিপ্ত কাহিনীঃ

অতীতকালে এক বাদশার একটি যাদুকর ও গণক ছিল। যখন সে গণক বৃদ্ধ অবস্থায় উপনীত হল, তখন সে বাদশাহকে বলল, আমাকে একটি বুদ্ধিমান বালক দিন, যাকে আমি এই বিদ্যা শিক্ষা দেব। সুতরাং বাদশাহ সেই রকম বুদ্ধিমান বালক খোঁজ করে তাকে তার কাছে সমর্পণ করলেন। ঐ বালকের পথে এক পাদরিরও ঘর ছিল। বালকটি পথে আসা-যাওয়ার সময় সেই পাদরির নিকট গিয়ে বসত এবং তার কথা মনোযোগ সহকারে শ্রবণ করত, যা তাকে ভালও লাগত। এ ভাবেই তার আসা যাওয়া অব্যাহত থাকে। একদা এই বালকটির যাওয়ার পথে এক বৃহদাকার জন্তু (বাঘ অথবা সাপ) বসেছিল; যে মানুষের আসা-যাওয়ার রাস্তা বন্ধ করে রেখেছিল। বালকটি চিন্তা করল, আজকে আমি পরীক্ষা করব যে, যাদুকর সত্য, না পাদরি। সে একটি পাথরের টুকরা কুড়িয়ে বলল, 'হে আল্লাহ! যদি পাদরির আমল তোমার নিকট যাদুকরের আমল থেকে উত্তম এবং পছন্দনীয় হয়, তাহলে এই জন্তুকে মেরে ফেল; যাতে মানুষের আসা-যাওয়ার পথ চালু হয়ে যায়।' এই বলে বালকটি পাথর ছুড়লে জন্তুটি মারা গেল। এবার বালকটি পাদরির নিকট গিয়ে সব কথা বিস্তারিত বলল। পাদরি বললেন, 'হে বৎস! এবার দেখছি তুমি পূর্ণ দক্ষতায় পৌঁছে গেছ। এবার তোমার পরীক্ষা শুরু হতে চলেছে। কিন্তু এই পরীক্ষা অবস্থায় আমার নাম তুমি প্রকাশ করবে না।' এই বালকটি জন্মান্ধত্ব, ধবল প্রভৃতি রোগের চিকিৎসাও করত; তবে তা আল্লাহর উপর বিশ্বাসের উপর শর্ত রেখেই করত। এই শর্তানুযায়ী বাদশার এক সহচরের অন্ধ চক্ষুকে আল্লাহর কাছে দু'আ করে ভাল করে দিল। বালকটি বলত যে, 'যদি আপনি আল্লাহর উপর ঈমান আনেন, তাহলে আমি তাঁর নিকট দু'আ করব; তিনি আরোগ্য দান করবেন।' সুতরাং সে আল্লাহর নিকট প্রার্থনা জানালে তিনি রোগীকে আরোগ্য দান করতেন। এই খবর বাদশাহর নিকট পৌঁছলে, তিনি বড় উদ্বিগ্ন হলেন। কিছু সংখ্যক ঈমানদারকে তিনি হত্যা করে ফেললেন। আর এই বালকটির ব্যাপারে তিনি কয়েকটি লোককে ডেকে বললেন যে, 'এই বালকটিকে উঁচু পাহাড়ের উপর নিয়ে গিয়ে নিচে ফেলে দাও।' বালকটি আল্লাহর কাছে দু'আ করলে পাহাড় কাঁপতে লাগল; যার কারণে সে ছাড়া সকলেই পড়ে মারা গেল। বাদশাহ তখন বালকটিকে অন্য কিছু লোকের কাছে সমর্পণ করে বললেন, 'একে একটি নৌকায় চড়িয়ে সমুদ্রের মধ্যস্থলে নিয়ে গিয়ে তাতে নিক্ষেপ কর।' সেখানেও বালকটির দু'আর কারণে নৌকাটি উল্টে গেল। যার ফলে সকলে পানিতে ডুবে মারা গেল। কিন্তু বালকটি বেঁচে গেল। এবার বালকটি বাদশাকে বলল, 'যদি আপনি আমাকে হত্যাই করতে চান, তাহলে এর সঠিক পদ্ধতি হল এই যে, একটি খোলা ময়দানে লোকদেরকে জমায়েত করুন, আর 'বিসমিল্লাহি রাব্বিল গুলাম' (অর্থাৎ, বালকের প্রভুর নামে আরম্ভ করছি) বলে আমার প্রতি তীর নিক্ষেপ করুন; দেখবেন আমি মৃত্যু বরণ করব।' বাদশাহ তাই করলেন। যার কারণে বালকটি মৃত্যু বরণ করল। সেই ঘটনাস্থলেই লোকেরা সোচ্চার হয়ে বলে উঠল যে, 'আমরা এই বালকটির রবের (প্রভুর) উপর ঈমান আনলাম।' বাদশাহ আরো অধিক উদ্বিগ্ন হলেন। অতএব তিনি তাদের জন্য গর্ত খনন করিয়ে তাতে আগুন জ্বালাতে আদেশ করলেন। অতঃপর হুকুম দিলেন যে, 'যে ব্যক্তি ঈমান হতে ফিরে না আসবে, তাকে এই অগ্নিকুন্ডে নিক্ষেপ কর।' এইভাবে ঈমানদার ব্যক্তিরা আসতে থাকল এবং আগুনে নিক্ষিপ্ত হতে থাকল। পরিশেষে একটি মহিলার পালা এল, যার সঙ্গে তার বাচ্চাও ছিল। সে একটু পশ্চাদপদ হল। কিন্তু বাচ্চাটি বলে উঠল, 'আম্মাজান! ধৈর্য ধরুন। আপনি সত্যের উপরে আছেন।' (সুতরাং সেও আগুনে শহীদ হয়ে গেল।) (সহীহ মুসলিম যুহদ অধ্যায় আসহাবে উখদূদ পরিচ্ছেদ)

ইমাম ইবনে কাসীর (রঃ) আরো অন্যান্য ঘটনা নকল করেছেন যা এ ঘটনা হতে ভিন্ন। তিনি বলেছেন, হতে পারে এইরূপ অন্যান্য ঘটনাবলী নানান স্থানে ঘটেছে। (ইবনে কাসীর দেখুন)

Tafsir Abu Bakr Zakaria

আর তারা তাদেরকে নির্যাতন করেছিল শুধু এ কারণে যে, তারা ঈমান এনেছিল পরাক্রমশালী ও প্রশংসার যোগ্য আল্লাহ্র উপর---

Tafsir Bayaan Foundation

আর তারা তাদেরকে নির্যাতন করেছিল শুধুমাত্র এ কারণে যে, তারা মহাপরাক্রমশালী প্রশংসিত আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছিল।

Muhiuddin Khan

তারা তাদেরকে শাস্তি দিয়েছিল শুধু এ কারণে যে, তারা প্রশংসিত, পরাক্রান্ত আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছিল,

Zohurul Hoque

আর তারা এদের প্রতি বিরূপ ছিল না এই ব্যতীত যে এরা বিশ্বাস করত মহাশক্তিশালী পরমপ্রশংসিত আল্লাহ্ তে-