কুরআন মজীদ সূরা আল-আনফাল আয়াত ৭২
Qur'an Surah Al-Anfal Verse 72
আল-আনফাল [৮]: ৭২ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ
اِنَّ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا وَهَاجَرُوْا وَجَاهَدُوْا بِاَمْوَالِهِمْ وَاَنْفُسِهِمْ فِيْ سَبِيْلِ اللّٰهِ وَالَّذِيْنَ اٰوَوْا وَّنَصَرُوْٓا اُولٰۤىِٕكَ بَعْضُهُمْ اَوْلِيَاۤءُ بَعْضٍۗ وَالَّذِيْنَ اٰمَنُوْا وَلَمْ يُهَاجِرُوْا مَا لَكُمْ مِّنْ وَّلَايَتِهِمْ مِّنْ شَيْءٍ حَتّٰى يُهَاجِرُوْاۚ وَاِنِ اسْتَنْصَرُوْكُمْ فِى الدِّيْنِ فَعَلَيْكُمُ النَّصْرُ اِلَّا عَلٰى قَوْمٍۢ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهُمْ مِّيْثَاقٌۗ وَاللّٰهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ بَصِيْرٌ (الأنفال : ٨)
- inna
- إِنَّ
- Indeed
- নিশ্চয়ই
- alladhīna
- ٱلَّذِينَ
- those who
- যারা
- āmanū
- ءَامَنُوا۟
- believed
- ঈমান এনেছে
- wahājarū
- وَهَاجَرُوا۟
- and emigrated
- ও হিজরত করেছে
- wajāhadū
- وَجَٰهَدُوا۟
- and strove hard
- ও জিহাদ করেছে
- bi-amwālihim
- بِأَمْوَٰلِهِمْ
- with their wealth
- দিয়ে ধনসম্পদ তাদের
- wa-anfusihim
- وَأَنفُسِهِمْ
- and their lives
- এবং প্রাণসমূহ তাদের (দিয়ে)
- fī
- فِى
- in
- মধ্যে
- sabīli
- سَبِيلِ
- (the) way
- পথের
- l-lahi
- ٱللَّهِ
- (of) Allah
- আল্লাহর
- wa-alladhīna
- وَٱلَّذِينَ
- and those who
- ও যারা
- āwaw
- ءَاوَوا۟
- gave shelter
- আশ্রয় দিয়েছে
- wanaṣarū
- وَّنَصَرُوٓا۟
- and helped
- ও সাহায্য করেছে
- ulāika
- أُو۟لَٰٓئِكَ
- those
- ঐসবলোক
- baʿḍuhum
- بَعْضُهُمْ
- some of them
- একে তাদের
- awliyāu
- أَوْلِيَآءُ
- (are) allies
- বন্ধু
- baʿḍin
- بَعْضٍۚ
- (of) another
- অপরের
- wa-alladhīna
- وَٱلَّذِينَ
- But those who
- এবং যারা
- āmanū
- ءَامَنُوا۟
- believed
- ঈমান এনেছে
- walam
- وَلَمْ
- and (did) not
- কিন্তু নি
- yuhājirū
- يُهَاجِرُوا۟
- emigrate
- তারা হিজরত করে
- mā
- مَا
- (it is) not
- নেই
- lakum
- لَكُم
- for you
- জন্যে তোমাদের
- min
- مِّن
- (of)
- থেকে
- walāyatihim
- وَلَٰيَتِهِم
- their protection
- অভিভাবকের দায়-দায়িত্ত্ব তাদের
- min
- مِّن
- (in)
- কোনো
- shayin
- شَىْءٍ
- (in) anything
- কিছুই
- ḥattā
- حَتَّىٰ
- until
- যতক্ষণ না
- yuhājirū
- يُهَاجِرُوا۟ۚ
- they emigrate
- তারা হিজরত করে
- wa-ini
- وَإِنِ
- And if
- এবং যদি
- is'tanṣarūkum
- ٱسْتَنصَرُوكُمْ
- they seek your help
- তোমাদের কাছে তারা সাহায্য চায়
- fī
- فِى
- in
- ব্যাপারে
- l-dīni
- ٱلدِّينِ
- the religion
- দীনের
- faʿalaykumu
- فَعَلَيْكُمُ
- then upon you
- তবে তোমাদের দায়িত্ব
- l-naṣru
- ٱلنَّصْرُ
- (is to) help them
- সাহায্য করা
- illā
- إِلَّا
- except
- ছাড়া
- ʿalā
- عَلَىٰ
- against
- বিরুদ্ধে
- qawmin
- قَوْمٍۭ
- a people
- কোনো জাতির
- baynakum
- بَيْنَكُمْ
- between you
- মাঝে তোমাদের
- wabaynahum
- وَبَيْنَهُم
- and between them
- ও মাঝে তাদের
- mīthāqun
- مِّيثَٰقٌۗ
- (is) a treaty
- সন্ধিচুক্তি (থাকে)
- wal-lahu
- وَٱللَّهُ
- And Allah
- এবং আল্লাহ
- bimā
- بِمَا
- of what
- ঐ সম্বন্ধে যা
- taʿmalūna
- تَعْمَلُونَ
- you do
- তোমরা কাজ করো
- baṣīrun
- بَصِيرٌ
- (is) All-Seer
- খুব ভালো করে দেখছেন
Transliteration:
Innal lazeena aamanoo wa haajaroo wa jaahadoo bi amwaalihim wa anfusihim fee sabeelil laahi wallazeena aawaw wa nasarooo ulaaa'ika ba'duhum awliyaaa'u ba'd; wallazeena aamanoo wa lam yuhaajiroo maa lakum minw walaayatihim min shai'in hatta yuhaajiroo; wa inistan sarookum fid deeni fa'alaiku munnasru illaa 'alaa qawmim bainakum wa bainahum meesaaq; wallaahu bimaa ta'maloona Baseer(QS. al-ʾAnfāl:72)
English Sahih International:
Indeed, those who have believed and emigrated and fought with their wealth and lives in the cause of Allah and those who gave shelter and aided – they are allies of one another. But those who believed and did not emigrate – for you there is no support of them until they emigrate. And if they seek help of you for the religion, then you must help, except against a people between yourselves and whom is a treaty. And Allah is Seeing of what you do. (QS. Al-Anfal, Ayah ৭২)
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
যারা ঈমান এনেছে, হিজরাত করেছে, নিজেদের মাল দিয়ে জান দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করেছে আর যারা তাদেরকে আশ্রয় দিয়েছে, সাহায্য করেছে, এরা পরস্পর পরস্পরের বন্ধু। আর যারা ঈমান এনেছে কিন্তু হিজরাত করেনি তারা হিজরাত না করা পর্যন্ত তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করার কোন দায়-দায়িত্ব তোমার উপর নেই, তবে তারা যদি দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের সাহায্য চায় তাহলে তাদেরকে সাহায্য করা তোমাদের কর্তব্য, তবে তাদের বিরুদ্ধে নয় যাদের সঙ্গে তোমাদের মৈত্রী চুক্তি রয়েছে। তোমরা যা কর আল্লাহ তা দেখেন। (আল-আনফাল, আয়াত ৭২)
Tafsir Ahsanul Bayaan
নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে, (দ্বীনের জন্য স্বদেশত্যাগ) হিজরত করেছে, জীবন ও সম্পদ দ্বারা আল্লাহর পথে জিহাদ করেছে[১] এবং যারা (মুমিনদেরকে) আশ্রয় দান করেছে ও সাহায্য করেছে[২] তারা পরস্পর পরস্পরের বন্ধু।[৩] আর যারা ঈমান এনেছে; কিন্তু হিজরত করেনি, তারা হিজরত না করা পর্যন্ত তাদের অভিভাবকত্বের কোন দায়িত্ব তোমাদের নেই।[৪] দ্বীন সম্বন্ধে যদি তারা তোমাদের সাহায্য প্রার্থনা করে, তাহলে তাদেরকে সাহায্য করা তোমাদের জন্য আবশ্যক;[৫] কিন্তু যে সম্প্রদায় ও তোমাদের মধ্যে চুক্তি রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে নয়। [৬] তোমরা যা কর, আল্লাহ তার সম্যক দ্রষ্টা।
[১] এই সাহাবাদেরকে 'মুহাজিরীন' বলা হয়; যাঁরা ফযীলতের দিক দিয়ে সাহাবাদের মধ্যে প্রথম নম্বরে আছেন।
[২] এঁদেরকে 'আনসার' (সাহায্যকারী) বলা হয়; এঁরা সাবাহাবাদের মধ্যে দ্বিতীয় নম্বরে আছেন।
[৩] অর্থাঁৎ, একে অপরের পৃষ্ঠপোষক ও সাহায্যকারী। কেউ কেউ বলেন, একে অপরের ওয়ারেস বা উত্তরাধিকারী। যেমন হিজরতের পর রসূল (সাঃ) একজন মুহাজির ও একজন আনসারীর মাঝে ভ্রাতৃত্ব সম্পর্ক কায়েম করে দিয়েছিলেন। এমনকি তাঁরা একে অপরে উত্তরাধিকারীও হতেন। (অবশ্য পরবর্তীতে উত্তরাধিকারের বিধান রহিত হয়ে যায়)।
[৪] এই সাহাবাগণ তৃতীয় পর্যায়ের ছিলেন; যাঁরা মুহাজিরীন ও আনসার ছিলেন না। এঁরা মুসলমান হওয়ার পর নিজেদের এলাকা ও গোত্রের বাসিন্দা ছিলেন। এই জন্য বলা হল যে, তাদের অভিভাবকত্বের কোন দায়িত্ব তোমাদের উপর নেই; অর্থাৎ, এরা তোমাদের পৃষ্ঠপোষক কিম্বা উত্তরাধিকারী হওয়ার উপযুক্ত নয়।
[৫] অর্থাৎ, মুশরিকদের বিরুদ্ধে যদি তাদের জন্য তোমাদের সাহায্যের প্রয়োজন হয়, তাহলে তাদেরকে সাহায্য করা জরুরী।
[৬] হ্যাঁ! যদি তারা এমন সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সাহায্যকামী হয়, যাদের ও তোমাদের মাঝে সন্ধি ও যুদ্ধ-বিরতির চুক্তি থাকে, তাহলে সেই মুসলিমদের পৃষ্ঠপোষকতার তুলনায় চুক্তি পালন করা অধিক জরুরী।
Tafsir Abu Bakr Zakaria
নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে, হিজরত করেছে, জীবন ও সম্পদ দ্বারা আল্লাহ্র পথে জিহাদ করেছে, আর যারা আশ্রয় দান করেছে এবং সাহয্য করেছে [১], তারা পরস্পর পরস্পরের অভিভাবক। আর যারা ঈমান এনেছে কিন্তু হিজরত করেনি, হিজরত না করা পর্যন্ত তাদের অভিভাবকত্বের দায়িত্ব তোমাদের নেই [২]; আর যদি তারা দ্বীন সম্মন্ধে তোমাদের নিকট সাহায্য প্রার্থনা করে তখন তাদের সাহায্য করা তোমাদের কর্তব্য [৩], তবে যে সম্প্রদায় ও তোমাদের মধ্যে চুক্তি রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে নয় [৪]। আর তোমরা যা করছ আল্লাহ্ তার সম্যক দ্রষ্টা।
[১] এ আয়াতে আল্লাহ তা'আলা মুমিনদের শ্রেণী বিন্যাস করেছেন। তাদের একশ্রেণী হচ্ছে, মুহাজির। যারা তাদের ঘর ও সম্পদ ছেড়ে বের হয়ে এসেছে, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাহায্যার্থে, তার দ্বীনকে প্রতিষ্ঠা করতে। আর এ পথে তাদের যাবতীয় জান ও মাল ব্যয় করেছে। মুমিনদের অপর শ্রেণী হচ্ছে, আনসার। যারা তখনকার মদীনাবাসী মুসলিম, তাদের মুহাজির ভাইদেরকে আশ্রয় দিয়েছে তাদের ঘরে, তাদের প্রতি সমব্যথী হয়ে সম্পদ বন্টন করে দিয়েছে, আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের জন্য যুদ্ধ করেছে। এ দু’শ্রেণী একে অপরের বেশী হকদার। আর এজন্যই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুহাজির ও আনসারদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তাদের দু’জন ছিল ভাই। একে অপরের ওয়ারিশ হতো। শেষ পর্যন্ত যখন মীরাসের আয়াত নাযিল হয়, তখন এ বিধানটি রহিত হয়ে যায় [ইবন কাসীর] হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, মুহাজির ও আনসারগণ একে অপরের ‘ওলী’।[মুসনাদে আহমাদ; ৪/৩৬৩] এখানে কুরআনুল কারম ’ওলী’ ও ‘বেলায়াত’ শব্দ ব্যবহার করেছে, যার প্রকৃত অর্থ হল বন্ধুত্ব ও গভীর সম্পর্ক। ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু, হাসান, কাতাদাহ ও মুজাহিদ রাহিমাহুমুল্লাহ প্রমূখ তাফসীর শাস্ত্রের ইমামগণের মতে এখানে 'বেলায়াত’ অর্থ উত্তরাধিকার এবং 'ওলী’ অর্থ উত্তরাধিকারী। এ তাফসীর অনুসারে আয়াতের মর্ম এই যে, মুসলিম মুহাজির ও আনসার পারস্পরিকভাবে একে অপরের ওয়ারিস হবেন। তাদের উত্তরাধিকারের সম্পর্ক না থাকবে অমুসলিমদের সাথে, আর না থাকবে সে সমস্ত মুসলিমদের সাথে যারা হিজরত করেনি। পরবর্তীতে এ বিধান রহিত হয়ে যায়। আর কেউ কেউ এখানে এর আভিধানিক অর্থ বন্ধুত্ব ও সাহায্য সহায়তা নিয়েছেন। সে হিসেবে এ বিধান রহিত করার প্রয়োজন পড়ে না। [কুরতুবী]
[২] অর্থাৎ এরা মুসলিমদের তৃতীয় গোষ্ঠী [ইবন কাসীর] যারা ঈমান আনার পরে হিজরত করেনি। তাদের মীরাসের অধিকারী তোমরা নও। তারা এ আয়াত অনুসারে আমল করত, সুতরাং আত্মীয়তার সম্পর্কের কারণেও ঈমান ও হিজরতে সাথী হওয়ার পরও ‘যবিল আরহাম’ রক্ত সম্পৰ্কীয় গোষ্ঠী ওয়ারিস হত না। তারপর যখন তাদের মীরাসের আয়াত (সূরা আল-আনফালের ৭৫ এবং আল-আহ্যাবের ৬) নাযিল হয় তখন এটা রহিত হয়ে যায় এবং যবিল আরহাম বা রক্তসম্পৰ্কীয় আত্মীয়দের জন্য মীরাস নির্ধারিত হয়ে যায় [আত-তাফসীরুস সহীহ]
[৩] অর্থাৎ তাদের সাথে উত্তরাধিকারের সম্পর্ক ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে ঠিকই কিন্তু যে কোন অবস্থায় তারাও মুসলিম। যদি তারা নিজেদের দ্বীনের হেফাজতের জন্য মুসলিমদের নিকট সাহায্য প্রার্থনা করে, তবে তাদের সাহায্য করা মুসলিমদের উপর অপরিহার্য হয়ে দাড়ায়। [তাবারী] কিন্তু তাই বলে ন্যায় ও ইনসাফের অনুবর্তিতার নীতিকে বিসর্জন দেয়া যাবে না। তারা যদি এমন কোন সম্পপ্রদায়ের বিরুদ্ধে তোমাদের নিকট সাহায্য প্রার্থনা করে, যাদের সাথে তোমাদের যুদ্ধ নয় চুক্তি সম্পাদিত হয়ে গেছে, তবে সে ক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধে সেসব মুসলিমের সাহায্য করা জায়েয নয়। [ইবন কাসীর]
[৪] হুদায়বিয়ার সন্ধিকালে এমনি ঘটনা ঘটেছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মক্কার কাফেরদের সাথে সন্ধি চুক্তি সম্পাদন করেন এবং চুক্তির শর্তে এ বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত থাকে যে, এখন মক্কা থেকে যে ব্যক্তি মদীনায় চলে যাবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ফিরিয়ে দেবেন। ঠিক এই সন্ধি চুক্তিকালেই আবু জান্দাল রাদিয়াল্লাহু আনহু-যাকে কাফেররা মক্কায় বন্দী করে রেখেছিল এবং খেদমতে গিয়ে হাজির হলেন এবং নিজের উৎপীড়নের কাহিনী প্রকাশ করে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট সাহায্য প্রার্থনা করলেন। যে নবী সমগ্র বিশ্বের জন্য রহমত হয়ে আগমন করেছিলেন, একজন নিপীড়িত মুসলিমের ফরিয়াদ শুনে তিনি কি পরিমাণ মর্মাহত হয়েছিলেন, তার অনুমান করাও যে কারও জন্য সম্ভব নয়, কিন্তু এহেন মর্মপীড়া সত্ত্বেও উল্লেখিত আয়াতের হুকুম অনুসারে তিনি তার সাহায্যের ব্যাপারে অপারগতা জানিয়ে ফিরিয়ে দেন। [দেখুন, বুখারী; ২৭০০; মুসনাদে আহমাদ ৪/৩২৩
Tafsir Bayaan Foundation
নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে, হিজরত করেছে এবং নিজদের মাল ও জান দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করেছে আর যারা আশ্রয় দিয়েছে ও সহায়তা করেছে, তারা একে অপরের বন্ধু। আর যারা ঈমান এনেছে, কিন্তু হিজরত করেনি, তাদেরকে সাহায্যের কোন দায়িত্ব তোমাদের নেই, যতক্ষণ না তারা হিজরত করে। আর যদি তারা দীনের ব্যাপারে তোমাদের নিকট কোন সহযোগিতা চায়, তাহলে সাহায্য করা তোমাদের কর্তব্য। তবে এমন কওমের বিরুদ্ধে নয়, যাদের সাথে তোমাদের একে অপরের চুক্তি রয়েছে এবং তোমরা যে আমল কর, তার ব্যাপারে আল্লাহ পূর্ণ দৃষ্টিমান।
Muhiuddin Khan
এতে কোন সন্দেহ নেই যে, যারা ঈমান এনেছে, দেশ ত্যাগ করেছে, স্বীয় জান ও মাল দ্বারা আল্লাহর রাহে জেহাদ করেছে এবং যারা তাদেরকে আশ্রয় ও সাহায্য সহায়তা দিয়েছে, তারা একে অপরের সহায়ক। আর যারা ঈমান এনেছে কিন্তু দেশ ত্যাগ করেনি তাদের বন্ধুত্বে তোমাদের প্রয়োজন নেই যতক্ষণ না তারা দেশত্যাগ করে। অবশ্য যদি তারা ধর্মীয় ব্যাপারে তোমাদের সহায়তা কামনা করে, তবে তাদের সাহায্য করা তোমাদের কর্তব্য। কিন্তু তোমাদের সাথে যাদের সহযোগী চুক্তি বিদ্যমান রয়েছে, তাদের মোকাবেলায় নয়। বস্তুতঃ তোমরা যা কিছু কর, আল্লাহ সেসবই দেখেন।
Zohurul Hoque
নিঃসন্দেহ যারা ঈমান এনেছে ও হিজরত করেছে, আর তাদের ধনদৌলত ও তাদের জান-প্রাণ দিয়ে আল্লাহ্র পথে সংগ্রাম করেছে, আর যারা আশ্রয় দান করেছে ও সাহায্য করেছে, -- এরাই হচ্ছে পরস্পর পরস্পরের বন্ধু। আর যারা ঈমান এনেছে, অথচ হিজরত করে নি, তাদের অভিভাবকত্ব কোনোভাবেই তোমাদের দায়িত্ব নয় যে পর্যন্ত না তারাও হিজরত করে। কিন্তু যদি তারা তোমাদের কাছে ধর্মের ব্যাপারে সাহায্য প্রার্থনা করে তবে সাহায্য করা তোমাদের কর্তব্য, অবশ্য সে-সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ছাড়া যাদের মধ্যে চুক্তি রয়েছে। আর তোমরা যা করো আল্লাহ্ তার সম্যক দ্রষ্টা।