কুরআন মজীদ সূরা আল-আনফাল আয়াত ৩৩
Qur'an Surah Al-Anfal Verse 33
আল-আনফাল [৮]: ৩৩ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ
وَمَا كَانَ اللّٰهُ لِيُعَذِّبَهُمْ وَاَنْتَ فِيْهِمْۚ وَمَا كَانَ اللّٰهُ مُعَذِّبَهُمْ وَهُمْ يَسْتَغْفِرُوْنَ (الأنفال : ٨)
- wamā
- وَمَا
- But not
- এবং না
- kāna
- كَانَ
- is
- হয় (এমন যে)
- l-lahu
- ٱللَّهُ
- (for) Allah
- আল্লাহ
- liyuʿadhibahum
- لِيُعَذِّبَهُمْ
- that He punishes them
- যেন শাস্তি দিবেন তাদেরকে
- wa-anta
- وَأَنتَ
- while you
- যখন তুমি
- fīhim
- فِيهِمْۚ
- (are) among them
- মধ্যে তাদের(উপস্থিত আছো)
- wamā
- وَمَا
- and not
- এবং না
- kāna
- كَانَ
- is
- হয় (এমনও যে)
- l-lahu
- ٱللَّهُ
- Allah
- আল্লাহ
- muʿadhibahum
- مُعَذِّبَهُمْ
- the One Who punishes them
- শাস্তিদানকারী তাদেরকে
- wahum
- وَهُمْ
- while they
- অথচ তারা
- yastaghfirūna
- يَسْتَغْفِرُونَ
- seek forgiveness
- ক্ষমা চাচ্ছে
Transliteration:
Wa maa kanal laahu liyu'az zibahum wa anta feehim; wa maa kaanal laahu mu'az zibahum wa hum yastaghfiroon(QS. al-ʾAnfāl:33)
English Sahih International:
But Allah would not punish them while you, [O Muhammad], are among them, and Allah would not punish them while they seek forgiveness. (QS. Al-Anfal, Ayah ৩৩)
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
তুমি তাদের মাঝে থাকা অবস্থায় আল্লাহ তাদেরকে শাস্তি দিবেন না এবং যখন তারা ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকবে এরূপ অবস্থায়ও আল্লাহ তাদেরকে শাস্তি দিবেন না। (আল-আনফাল, আয়াত ৩৩)
Tafsir Ahsanul Bayaan
আল্লাহ এরূপ নন যে, তুমি তাদের মধ্যে থাকা অবস্থায় তিনি তাদেরকে শাস্তি দেবেন[১] এবং তিনি এরূপ নন যে, তাদের ক্ষমা প্রার্থনা করা অবস্থায় তিনি তাদেরকে শাস্তি দেবেন। [২]
[১] অর্থাৎ নবীর বিদ্যমান থাকা অবস্থায় জাতির উপর আযাব আসে না। এই দিক দিয়ে নবী (সাঃ)-এর বিদ্যমানতা তাদের জন্য শান্তি ও নিরাপত্তার কারণ ছিল।
[২] এর অর্থ তারা ভবিষ্যতে ইসলাম গ্রহণ করে ক্ষমা প্রার্থনা করবে। অথবা তাওয়াফ করার সময় মুশরিকরা 'গুফরানাকা রাব্বানা গুফরানাক' (তোমার ক্ষমা চাই প্রভু! তোমার ক্ষমা চাই) বলত।
Tafsir Abu Bakr Zakaria
আর আল্লাহ এমন নন যে, আপনি তাদের মধ্যে থাকবেন অথচ তিনি তাদেরকে শাস্তি দেবেন এবং আল্লাহ এমনও নন যে, তারা ক্ষমা প্রার্থনা করবে অথচ তিনি তাদেরকে শাস্তি দেবেন [১]।
[১] এখানে কারা ইস্তেগফার বা ক্ষমা প্রার্থনা করবে এ ব্যাপারে দুটি মত রয়েছে। কোন কোন মুফাসসির বলেনঃ এখানে কাফেরদেরকে উদ্দেশ্য করা হয়েছে। কারণ তারা উক্ত কথা বলার পরে লজ্জিত হয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়েছিল। কোন কোন বর্ণনায় এসেছে তারা কাবা ঘরের তাওয়াফ করার সময় বলত, গোফরানাকা, গোফরানাক। [আইসারুত তাফসীর] অথবা, তাদের মাঝে ঐ সমস্ত লোকদেরকে এ আয়াতে উদ্দেশ্য করা হয়েছে, যারা ঈমান আনবে বলে আল্লাহ তা'আলা তাঁর ইলমে গায়েবে নির্ধারিত করেছেন [ইবন কাসীর] অপরপক্ষে, কোন কোন মুফাসসির বলেনঃ এখানে ঐ সমস্ত ঈমানদারদের উদ্দেশ্য করা হয়েছে, যারা মক্কায় অসহায় অবস্থায় জীবন-যাপন করছিলেন; হিজরত করতে সমর্থ হননি। তারা আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাচ্ছিলেন। [ইবন কাসীর] এ আয়াতটি উদ্দেশ্য করে আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেনঃ আল্লাহ আমাদেরকে দুটি নিরাপত্তা দিয়েছিলেন। যার একটি চলে গেছে। [অর্থাৎ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মৃত্যু] কিন্তু আরেকটি রয়ে গেছে। (অর্থাৎ ইস্তেগফার) [মুস্তাদরাকে হাকেমঃ ১/৫৪২] অনুরূপ বর্ণনা ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকেও রয়েছে। অন্য এক হাদীসে এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ ইবলিস তার রবকে উদ্দেশ্য করে বললঃ আপনার সম্মান ও ইজ্জতের শপথ করে বলছি, যতক্ষণ বনী আদমের দেহে প্রাণ থাকবে ততক্ষণ আমি তাদেরকে পথভ্রষ্ট করতে থাকব। ফলে আল্লাহ বললেনঃ আমি আমার সম্মান-প্রতিপত্তির শপথ করে বলছিঃ আমি তাদেরকে ক্ষমা করতে থাকব যতক্ষণ তারা আমার কাছে ক্ষমা চাইতে থাকবে। [মুসনাদে আহমাদঃ ৩/২৯, মুস্তাদরাকে হাকেমঃ ৪/২৬১]
Tafsir Bayaan Foundation
আর আল্লাহ এমন নন যে, তাদেরকে আযাব দেবেন এ অবস্থায় যে, তুমি তাদের মাঝে বিদ্যমান এবং আল্লাহ তাদেরকে আযাব দানকারী নন এমতাবস্থায় যে, তারা ক্ষমা প্রার্থনা করছে।
Muhiuddin Khan
অথচ আল্লাহ কখনই তাদের উপর আযাব নাযিল করবেন না যতক্ষণ আপনি তাদের মাঝে অবস্থান করবেন। তাছাড়া তারা যতক্ষণ ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকবে আল্লাহ কখনও তাদের উপর আযাব দেবেন না।
Zohurul Hoque
আর আল্লাহ্ তাদের শাস্তি দেবেন না যতক্ষণ তুমি তাদের মধ্যে রয়েছে। আর আল্লাহ্ এরূপ নন যে তিনি তাদের শাস্তিদাতা হবেন যখন তারা ক্ষমা প্রার্থনা করে।