কুরআন মজীদ সূরা আল ক্বেয়ামাহ আয়াত ১৯
Qur'an Surah Al-Qiyamah Verse 19
আল ক্বেয়ামাহ [৭৫]: ১৯ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ
ثُمَّ اِنَّ عَلَيْنَا بَيَانَهٗ ۗ (القيامة : ٧٥)
- thumma
- ثُمَّ
- Then
- অতঃপর
- inna
- إِنَّ
- indeed
- নিশ্চয়
- ʿalaynā
- عَلَيْنَا
- upon Us
- আমাদের দায়িত্ব
- bayānahu
- بَيَانَهُۥ
- (is) its explanation
- তা ব্যাখ্যা দেয়া
Transliteration:
Summa inna 'alainaa bayaanah(QS. al-Q̈iyamah:19)
English Sahih International:
Then upon Us is its clarification [to you]. (QS. Al-Qiyamah, Ayah ১৯)
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
অতঃপর তা (ওয়াহীয়ে খফী বা প্রচ্ছন্ন ওয়াহীর মাধ্যমে) বিশদভাবে ব্যাখ্যা করা আমারই দায়িত্ব। (আল ক্বেয়ামাহ, আয়াত ১৯)
Tafsir Ahsanul Bayaan
অতঃপর নিশ্চয় এর বিবৃতির দায়িত্ব আমারই। [১]
[১] অর্থাৎ, তার জটিল ব্যাপারগুলোর ব্যাখ্যা এবং হালাল ও হারামের বিশদ বিবরণ দেওয়ার দায়িত্বও আমারই। এর পরিষ্কার অর্থ হল, কুরআনের সংক্ষিপ্ত আয়াতগুলোর যে ব্যাখ্যা, অস্পষ্ট আয়াতগুলোর যে বিশদ বিবরণ (ভাব-সম্প্রসারণ) এবং তার সাধারণ ও ব্যাপকার্থবোধক আয়াতগুলোকে নির্দিষ্টীকরণের কাজ নবী (সাঃ) যে করেছেন -- যাকে হাদীস বলা হয়, এটাও আল্লাহর পক্ষ হতে (অহী ও) ইলহামের মাধ্যমে তাঁরই বুঝানোর আলোকে হয়েছে। কাজেই এটাকেও কুরআনের মত মেনে নেওয়া জরুরী।
Tafsir Abu Bakr Zakaria
তারপর তার বর্ণনার দায়িত্ব নিশ্চিতভাবে আমাদেরই [১]।
[১] এ আয়াতসমূহে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে একটি বিশেষ নির্দেশ দেয়া হয়েছে, যা ওহী নাযিল হওয়ার সময় অবতীর্ণ আয়াতগুলো সম্পর্কিত। নির্দেশ এই যে, যখন জিবরাঈল আলাইহিস্ সালাম কুরআনের কিছু আয়াত নিয়ে আগমন করতেন, তখন তা পাঠ করার সময় রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দ্বিবিধ চিন্তায় জড়িত হয়ে পড়তেন যেন কোথায়ও এর শ্রবণ ও তদনুযায়ী পাঠে কোন পার্থক্য না হয়ে যায় বা কোথাও এর কোন অংশ, কোন বাক্য স্মৃতি থেকে উধাও না হয়ে যায়। এই চিন্তার কারণে যখন জিবরাঈল আলাইহিস্ সালাম কোন আয়াত শোনাতেন, তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাথে সাথে পাঠ করতেন এবং জিহবা নেড়ে দ্রুত আবৃত্তি করতেন, যাতে বার বার পড়ে তা মুখস্থ করে নেন। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর এই পরিশ্রম ও কষ্ট দূর করার উদ্দেশ্যে এ আয়াতসমূহে আল্লাহ্ তা'আলা কুরআন পাঠ করানো, মুখস্থ করানো ও মুসলিমদের কাছে হুবহু পেশ করানোর দায়িত্ব নিজেই গ্ৰহণ করেছেন এবং রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে বলে দিয়েছেন যে, আপনি এই উদ্দেশ্যে জিহবাকে দ্রুত নাড়া দেয়ার কষ্ট করবেন না। আয়াতসমুহকে আপনার অন্তরে সংরক্ষণ করা এবং হুবহু আপনার দ্বারা পাঠ করিয়ে দেয়া আমার দায়িত্ব। কাজেই আপনি এ চিন্তা পরিত্যাগ করুন। সুতরাং যখন আমি অর্থাৎ আমার পক্ষ থেকে জিবরাঈল আলাইহিস্ সালাম কুরআন পাঠ করে, তখন আপনি সাথে সাথে পাঠ করবেন না; বরং চুপ করে শুনবেন এবং আমার পাঠের পর পাঠ করবেন। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাই করতেন। তিনি জিবরাঈল থেকে শুনতেন তারপর জিবরাঈল চলে গেলে তা অনুরূপ পড়তেন যেমন জিবরাঈল পড়েছেন। [দেখুন, বুখারী; ৫, মুসলিম, ৪৪৮] এখানে কুরআন অনুসরণ করান মানে চুপ করে জিবরাঈলের পাঠ শ্রবণ করা। অবশেষে বলা হয়েছে আপনি এ চিন্তাও করবেন না যে, অবতীর্ণ আয়াতসমূহের সঠিক মর্ম ও উদ্দেশ্য কি? এটা বুঝিয়ে দেয়াও আমার দায়িত্ব। আমি কুরআনের প্রতিটি শব্দ ও তার উদ্দেশ্য আপনার কাছে ফুটিয়ে তুলব। [দেখুন, ইবন কাসীর]
Tafsir Bayaan Foundation
তারপর তার বর্ণনার দায়িত্ব আমারই।
Muhiuddin Khan
এরপর বিশদ বর্ণনা আমারই দায়িত্ব।
Zohurul Hoque
তারপর নিশ্চয় আমাদেরই উপরে রয়েছে এর ব্যাখ্যাকরণ।