Skip to content

কুরআন মজীদ সূরা মুযযামমিল আয়াত ৪

Qur'an Surah Al-Muzzammil Verse 4

মুযযামমিল [৭৩]: ৪ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ

اَوْ زِدْ عَلَيْهِ وَرَتِّلِ الْقُرْاٰنَ تَرْتِيْلًاۗ (المزمل : ٧٣)

aw
أَوْ
Or
অথবা
zid
زِدْ
add
বাড়াও
ʿalayhi
عَلَيْهِ
to it
তার উপর
warattili
وَرَتِّلِ
and recite
এবং আবৃতি করো ধীরে ধীরে
l-qur'āna
ٱلْقُرْءَانَ
the Quran
কুরআন
tartīlan
تَرْتِيلًا
(with) measured rhythmic recitation
তারতিলসহ

Transliteration:

Aw zid 'alaihi wa rattilil Qur'aana tarteela (QS. al-Muzzammil:4)

English Sahih International:

Or add to it, and recite the Quran with measured recitation. (QS. Al-Muzzammil, Ayah ৪)

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

অথবা তার চেয়ে বাড়াও, আর ধীরে ধীরে সুস্পষ্টভাবে কুরআন পাঠ কর। (মুযযামমিল, আয়াত ৪)

Tafsir Ahsanul Bayaan

অথবা তার চাইতে বেশী।[১] আর কুরআন আবৃত্তি কর ধীরে ধীরে, স্পষ্ট ও সুন্দরভাবে। [২]

[১] এটা قَلِيْلاَ এর পরিবর্ত স্বরূপ (বদল)। অর্থাৎ, এই কিয়াম যদি অর্ধরাত থেকে কিছু কম (এক-তৃতীয়াংশ) হয় অথবা কিছু বেশী (দুই-তৃতীয়াংশ) হয়, তাতে কোন দোষ নেই।

[২] সুতরাং বহু হাদীসে এসেছে যে, নবী (সাঃ) কুরআন পড়তেন ধীরে ধীরে, স্পষ্ট ও সুন্দরভাবে এবং তিনি তাঁর উম্মতকেও ধীরে ধীরে, স্পষ্ট ও সুন্দরভাবে থেমে থেমে কুরআন পড়া শিক্ষা দিতেন।

Tafsir Abu Bakr Zakaria

অথবা তার চেয়েও একটু বাড়ান। আর কুরআন তিলাওয়াত করুন ধীরে ধীরে সুস্পষ্টভাবে [১];

[১] এখানে বলা হয়েছে যে, তারতীল সহকারে পড়তে হবে। ترتيل বলে উদ্দেশ্য হলো ধীরে ধীরে সঠিকভাবে বাক্য উচ্চারণ করা। অর্থাৎ কুরআনের শব্দগুলো ধীরে ধীরে মুখে উচ্চারণ করার সাথে সাথে তা উপলব্ধি করার জন্য গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনাও করতে হবে। [ইবন কাসীর] আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কুরআন পাঠের নিয়ম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেন, “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, শব্দগুলোকে টেনে টেনে পড়তেন। উদাহরণ দিতে গিয়ে তিনি ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম’ পড়ে বললেন যে, তিনি আল্লাহ, রাহমান এবং রাহীম শব্দকে মদ্দ করে বা টেনে পড়তেন।’ [বুখারী; ৫০৪৬] উম্মে সালামা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহাকে একই প্রশ্ন করা হলে তিনি বললেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক একটি আয়াত আলাদা আলাদা করে পড়তেন এবং প্রতিটি আয়াত পড়ে থামতেন। তিনি ‘আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামীন’ বলে থামতেন। তারপর ‘আর-রাহমানির রাহীম’ বলে থামতেন। তারপর ‘মালিকি ইয়াওমিদ্দীন’ বলে থামতেন। [মুসনাদে আহমাদ; ৬/৩০২. আবু দাউদ; ১৪৬৬, তিরমিযী; ২৯২৭] হুযায়ফা ইবনে ইয়ামান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বর্ণনা করেন, একদিন রাতে আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে সালাত পড়তে দাঁড়ালাম। আমি দেখলাম, তিনি এমনভাবে কুরআন তেলাওয়াত করছেন যে, যেখানে তাসবীহের বিষয় আসছে সেখানে তিনি তাসবীহ পড়ছেন, যেখানে দো‘আর বিষয় আসছে সেখানে দো‘আ করছেন এবং যেখানে আল্লাহ্র কাছে আশ্রয় প্রার্থনার বিষয় আসছে সেখানে তিনি আশ্রয় প্রার্থনা করছেন। [মুসলিম;৭৭২] আবু যার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বর্ণনা করেন, একবার রাতের সালাতে কুরআন তেলাওয়াত করতে করতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন এ আয়াতটির কাছে পৌঁছলেন “আপনি যদি তাদের শাস্তি দেন, তবে তারা আপনারই বান্দা। আর যদি আপনি তাদের ক্ষমা করে দেন, তাহলে আপনি পরাক্রমশালী ও বিজ্ঞ” তখন তিনি বার বার এ আয়াতটিই পড়তে থাকলেন এবং এভাবে ভোর হয়ে গেল। [মুসনাদে আহমাদ; ৫/১৪৯] সাহাবী ও তাবেয়ীগণেরও এই অভ্যাস ছিল। তাছাড়া, যথাসম্ভব সুললিত স্বরে তিলাওয়াত করাও তারতীলের অন্তর্ভুক্ত। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে নবী সশব্দে সুললিত স্বরে তেলাওয়াত করেন, তার কেরাআতের মত অন্য কারও কেরাআত আল্লাহ্ তা‘আলা শুনেন না। [বুখারী; ৫০২৩, ৫০২৪] তবে পরিস্কার ও বিশুদ্ধ উচ্চারণসহ শব্দের অন্তর্নিহিত অর্থ চিন্তা করে তদ্বারা প্রভাবান্বিত হওয়াই আসল তারতীল। অনুরূপভাবে সুন্দর করে পড়াও এর অংশ। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “যে কুরআনকে সুন্দর স্বরে পড়ে না সে আমার দলভুক্ত নয়।’ [বুখারী; ৭৫২৭] অন্য হাদীসে এসেছে, “তোমরা কুরআনকে তোমাদের সুর দিয়ে সৌন্দর্যমণ্ডিত কর” [ইবনে মাজাহঃ ১৩৪২] আবু মুসা আল-আশ‘আরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু সুমিষ্ট স্বরে কুরআন পাঠ করতেন বিধায় রাসূল তার প্রশংসা করে বলেছিলেন, “তোমাকে দাউদ পরিবারের সুর দেয়া হয়েছে" ৷ [বুখারী; ৫০৪৮, মুসলিম; ৭৯৩] তাছাড়া হাদীসে আরও এসেছে, “কিয়ামতের দিন কুরআনের অধিকারীকে বলা হবে, তুমি পড় এবং আরোহন করতে থাক। সেখানেই তোমার স্থান হবে যেখানে তোমার কুরআন পড়ার আয়াতটি শেষ হবে।” [আবুদাউদ; ১৪৬৪, তিরমিয়ী; ২৯১৪]

Tafsir Bayaan Foundation

অথবা তার চেয়ে একটু বাড়াও। আর স্পষ্টভাবে ধীরে ধীরে কুরআন আবৃত্তি কর।

Muhiuddin Khan

অথবা তদপেক্ষা বেশী এবং কোরআন আবৃত্তি করুন সুবিন্যস্ত ভাবে ও স্পষ্টভাবে।

Zohurul Hoque

অথবা এর উপরে বাড়িয়ে নাও, আর কুরআন আবৃত্তি করো ধীরস্থিরভাবে শান্ত-সুন্দর আবৃত্তিতে।