কুরআন মজীদ সূরা আল জিন আয়াত ৯
Qur'an Surah Al-Jinn Verse 9
আল জিন [৭২]: ৯ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ
وَّاَنَّا كُنَّا نَقْعُدُ مِنْهَا مَقَاعِدَ لِلسَّمْعِۗ فَمَنْ يَّسْتَمِعِ الْاٰنَ يَجِدْ لَهٗ شِهَابًا رَّصَدًاۖ (الجن : ٧٢)
- wa-annā
- وَأَنَّا
- And that we
- এবং যে
- kunnā
- كُنَّا
- used (to)
- (আমরা)
- naqʿudu
- نَقْعُدُ
- sit
- আমরা বসতাম
- min'hā
- مِنْهَا
- there in
- সেখানে
- maqāʿida
- مَقَٰعِدَ
- positions
- আসনগুলোতে
- lilssamʿi
- لِلسَّمْعِۖ
- for hearing
- শুনার জন্য
- faman
- فَمَن
- but (he) who
- যে কিন্তু
- yastamiʿi
- يَسْتَمِعِ
- listens
- শুনবে
- l-āna
- ٱلْءَانَ
- now
- এখন
- yajid
- يَجِدْ
- will find
- সে পাবে
- lahu
- لَهُۥ
- for him
- তার জন্য
- shihāban
- شِهَابًا
- a flaming fire
- অগ্নিশিখা
- raṣadan
- رَّصَدًا
- waiting
- পেতে রাখা
Transliteration:
Wa annaa kunnaa naq'udu minhaa maqaa'ida lis'sam'i famany yastami'il aana yajid lahoo shihaabar rasada(QS. al-Jinn:9)
English Sahih International:
And we used to sit therein in positions for hearing, but whoever listens now will find a burning flame lying in wait for him. (QS. Al-Jinn, Ayah ৯)
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
আমরা (আগে) সংবাদ শুনার জন্য আকাশের বিভিন্ন ঘাঁটিতে বসতাম, কিন্তু এখন কেউ সংবাদ শুনতে চাইলে তার উপর নিক্ষেপের জন্য সে জ্বলন্ত অগ্নিকুন্ডকে লুকিয়ে থাকতে দেখে। (আল জিন, আয়াত ৯)
Tafsir Ahsanul Bayaan
আর পূর্বে আমরা আকাশের বিভিন্ন ঘাঁটিতে (সংবাদ) শুনবার জন্য বসতাম,[১] কিন্তু এখন কেউ (সংবাদ) শুনতে চাইলে সে তার উপর নিক্ষেপের জন্য প্রস্তুত জ্বলন্ত উল্কাপিন্ডের সম্মুখীন হয়।[২]
[১] আসমানী কথার সামান্য কিছু শুনে জ্যোতিষীদের বলে দিতাম। তাতে তারা শত মিথ্যা মিশ্রিত করে প্রচার করত।
[২] তবে মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর প্রেরিত হওয়ার পর এ পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এখন যে-ই এই (কথা শোনার) উদ্দেশ্যে উপরে আরোহণ করে, উল্কা তার অপেক্ষায় থাকে এবং ছুটে তার উপর আপতিত হয়।
Tafsir Abu Bakr Zakaria
‘এও যে, আমরা আগে আকাশের বিভিন্ন ঘাঁটিতে সংবাদ শুনার জন্য বসতাম [১] কিন্তু এখন কেউ সংবাদ শুনতে চাইলে সে তার উপর নিক্ষেপের জন্য প্রস্তুত জলন্ত উল্কাপিণ্ডের সম্মুখীন হয়।
[১] জিনরা আসমানের সংবাদ শোনার জন্যে উপরের দিকে যেত। হাদীসে এসেছে, আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহ্ তা‘আলা যখন আকাশে কোন হুকুম জারি করেন তখন সব ফেরেশতা আনুগত্যসূচক পাখা নাড়া দেয়। এরপর তারা পরস্পর সে বিষয়ে আলোচনা করে। শয়তানরা এখান থেকে এগুলো চুরি করে অতীন্দ্ৰিয়বাদীদের কাছে পৌছিয়ে দেয় এবং তাতে নিজেদের পক্ষ থেকে শত শত মিথ্যা বিষয় সংযোজন করে দেয়।’ [বুখারী; ৪৭০১, ৪৮০০]
সার কথা; রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নবুওয়াত লাভের পূর্বে আকাশের খবর চুরির ধারা বিনা বাধায় অব্যাহত ছিল। শয়তানরা নির্বিঘ্নে উপরে আরোহন করে ফেরেশতাগনের কাছে শুনে নিত। কিন্তু রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নবুওয়াত লাভের সময় তার ওহীর হেফাযতের উদ্দেশ্যে চুরির সুযোগ বন্ধ করে দেয়া হল এবং কোন শয়তান খবর চুরির জন্য উপরে গেলে তাকে লক্ষ্য করে জ্বলন্ত উল্কাপিণ্ড নিক্ষিপ্ত হতে লাগল। চোর বিতাড়নের এই নতুন উদ্যোগ দেখেই শয়তান ও জিনরা চিন্তিত হয়ে পড়ে; কারণ অনুসন্ধানের জন্যে পৃথিবীর কোণে কোণে সন্ধানকারী দল প্রেরণ করেছিল, অতঃপর ‘নাখলাহ্’ নামক স্থানে একদল জিন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাছে কুরআন শুনে ইসলাম গ্রহণ করেছিল যা আলোচ্য সূরায় বর্ণিত হয়েছে। [দেখুন, ফাতহুল কাদীর]
Tafsir Bayaan Foundation
আর আমরা তো সংবাদ শোনার জন্য আকাশের বিভিন্ন ঘাটিতে বসতাম, কিন্তু এখন যে শুনতে চাইবে, সে তার জন্য প্রস্তুত জ্বলন্ত উল্কাপিন্ড পাবে’।
Muhiuddin Khan
আমরা আকাশের বিভিন্ন ঘাঁটিতে সংবাদ শ্রবণার্থে বসতাম। এখন কেউ সংবাদ শুনতে চাইলে সে জলন্ত উল্কাপিন্ড ওঁৎ পেতে থাকতে দেখে।
Zohurul Hoque
'আর আমরা নিশ্চয় তার মধ্যের বসবার জায়গাগুলোয় বসে থাকতাম গুনবার জন্য, কিন্ত যে কেউ শুনতে চায় সে এখন দেখতে পায় তার জন্য রয়েছে অগ্নিশিখা অপেক্ষারত;