Skip to content

কুরআন মজীদ সূরা আল আ'রাফ আয়াত ১৫৮

Qur'an Surah Al-A'raf Verse 158

আল আ'রাফ [৭]: ১৫৮ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ

قُلْ يٰٓاَيُّهَا النَّاسُ اِنِّيْ رَسُوْلُ اللّٰهِ اِلَيْكُمْ جَمِيْعًا ۨالَّذِيْ لَهٗ مُلْكُ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِۚ لَآ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ يُحْيٖ وَيُمِيْتُۖ فَاٰمِنُوْا بِاللّٰهِ وَرَسُوْلِهِ النَّبِيِّ الْاُمِّيِّ الَّذِيْ يُؤْمِنُ بِاللّٰهِ وَكَلِمٰتِهٖ وَاتَّبِعُوْهُ لَعَلَّكُمْ تَهْتَدُوْنَ (الأعراف : ٧)

qul
قُلْ
Say
বলো
yāayyuhā
يَٰٓأَيُّهَا
"O!
"হে
l-nāsu
ٱلنَّاسُ
"mankind!
"মানবমন্ডলী
innī
إِنِّى
Indeed I am
নিশ্চয়ই আমি
rasūlu
رَسُولُ
(the) Messenger
রাসূল
l-lahi
ٱللَّهِ
(of) Allah
আল্লাহর
ilaykum
إِلَيْكُمْ
to you
প্রতি তোমাদের
jamīʿan
جَمِيعًا
all
সকলের জন্যে
alladhī
ٱلَّذِى
the One
যিনি (এমন যে)
lahu
لَهُۥ
for Whom
জন্যে তাঁরই (রয়েছে)
mul'ku
مُلْكُ
(is the) dominion
সার্বভৌমত্ব
l-samāwāti
ٱلسَّمَٰوَٰتِ
(of) the heavens
আকাশসমূহের
wal-arḍi
وَٱلْأَرْضِۖ
and the earth
ও পৃথিবীর
لَآ
(There is) no
নেই
ilāha
إِلَٰهَ
god
(কোনো) ইলাহ
illā
إِلَّا
except
ছাড়া
huwa
هُوَ
Him
তিনি
yuḥ'yī
يُحْىِۦ
He gives life
তিনি জীবিত করেন
wayumītu
وَيُمِيتُۖ
and causes death
ও মৃত্যু দেন
faāminū
فَـَٔامِنُوا۟
So believe
অতএব তোমরা ঈমান আনো
bil-lahi
بِٱللَّهِ
in Allah
উপর আল্লাহর
warasūlihi
وَرَسُولِهِ
and His Messenger
ও তাঁর রাসূলের (উপর)
l-nabiyi
ٱلنَّبِىِّ
the Prophet
নাবীর (উপর)
l-umiyi
ٱلْأُمِّىِّ
the unlettered
নিরক্ষর
alladhī
ٱلَّذِى
the one who
যে
yu'minu
يُؤْمِنُ
believes
ঈমান আনে
bil-lahi
بِٱللَّهِ
in Allah
উপর আল্লাহর
wakalimātihi
وَكَلِمَٰتِهِۦ
and His Words
ও তাঁর বাণীসমূহের (উপর)
wa-ittabiʿūhu
وَٱتَّبِعُوهُ
and follow him
এবং তোমরা অনুসরণ করো তাঁকেই
laʿallakum
لَعَلَّكُمْ
so that you may
সম্ভবতঃ তোমরা
tahtadūna
تَهْتَدُونَ
(be) guided"
সঠিক পথ পাবে"

Transliteration:

Qul yaaa aiyuhan naasu innee Rasoohul laahi ilaikum jamee'anil lazee lahoo mulkus samaawaati wal ardi laaa ilaaha illaa Huwa yuhyee wa yumeetu fa aaminoo billaahi wa Rasoolihin Nabiyyil ummiy yil lazee yu'minu billaahi wa Kalimaatihee wattabi'oohu la'allakum tahtadoon (QS. al-ʾAʿrāf:158)

English Sahih International:

Say, [O Muhammad], "O mankind, indeed I am the Messenger of Allah to you all, [from Him] to whom belongs the dominion of the heavens and the earth. There is no deity except Him; He gives life and causes death." So believe in Allah and His Messenger, the unlettered prophet, who believes in Allah and His words, and follow him that you may be guided. (QS. Al-A'raf, Ayah ১৫৮)

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

বল, হে মানুষ! আমি তোমাদের সকলের জন্য আল্লাহর রসূল, (সেই আল্লাহর) যিনি আকাশসমূহ আর পৃথিবীর রাজত্বের মালিক, তিনি ছাড়া সত্যিকারের কোন ইলাহ নেই, তিনিই জীবিত করেন আর মৃত্যু আনেন। কাজেই তোমরা ঈমান আন আল্লাহর প্রতি ও তাঁর প্রেরিত সেই উম্মী বার্তাবাহকের প্রতি যে নিজে আল্লাহর প্রতি ও তাঁর যাবতীয় বাণীর প্রতি বিশ্বাস করে, তোমরা তাঁর অনুসরণ কর যাতে তোমরা সঠিক পথ পেতে পার। (আল আ'রাফ, আয়াত ১৫৮)

Tafsir Ahsanul Bayaan

বল, ‘হে মানুষ! আমি তোমাদের সকলের জন্য সেই আল্লাহর (প্রেরিত) রসূল; যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সার্বভৌমত্বের অধিকারী, তিনি ব্যতীত অন্য কোন (সত্য) উপাস্য নেই, তিনিই জীবিত করেন ও মৃত্যু ঘটান। সুতরাং আল্লাহর প্রতি ও তাঁর রসূল নিরক্ষর নবীর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর; যে আল্লাহ ও তাঁর বাণীতে বিশ্বাস করে, এবং তোমরা তার অনুসরণ কর, যাতে তোমরা পথ পাও।’ [১]

[১] এই আয়াতও মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর রিসালাত সার্বজনীন রিসালাত প্রমাণিত হওয়ার জন্য স্পষ্ট। এতে মহান আল্লাহ নবী (সাঃ)-কে আদেশ করেছেন, যেন তিনি ঘোষণা করে দেন যে, 'হে বিশ্বের মানুষ! আমি তোমাদের সকলের প্রতি রসূলরূপে প্রেরিত হয়েছি।' এভাবে তিনি বিশ্বের সকল মানব জাতির জন্য ত্রাণকর্তা ও রসূল। এখন পরিত্রাণ ও সুপথ না খ্রিষ্টধর্মে আছে, আর না ইয়াহুদী বা অন্য কোন ধর্মে। পরিত্রাণ ও সুপথ যদি থাকে, তাহলে কেবল ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করা ও তাকে নিজ দ্বীন বলে স্বীকার করার মাঝে আছে। এই আয়াতে এবং এর পূর্বের আয়াতেও নবী (সাঃ)-কে নিরক্ষর বলা হয়েছে। এটি তাঁর একটি বিশেষ গুণ। যার অর্থ (তিনি লিখাপড়া জানতেন না, তাঁর অক্ষরজ্ঞান ছিল না) তিনি কোন গুরুর নিকট শিষ্যত্ব গ্রহণ করেননি। কোন শিক্ষকের নিকট হতে কোন শিক্ষাও তিনি অর্জন করেননি। তা সত্ত্বেও তিনি এমন এক কুরআন পেশ করলেন যে, তার অলৌকিকতা ও সাহিত্য-অলংকারের সামনে পৃথিবীর সকল সাহিত্যিক ও পন্ডিত তার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে অক্ষম রয়ে গেল। আর তিনি যে শিক্ষা পেশ করলেন, যার সত্যতা ও যথার্থতা পৃথিবীর মানুষের কাছে স্বীকৃত। আর তা এ কথারই প্রমাণ যে, তিনি সত্যিই আল্লাহর রসূল। তাছাড়া একজন নিরক্ষর, না এ রকম গ্রন্থ পেশ করতে পারে, আর না এমন শিক্ষার বর্ণনা দিতে পারে, যা ন্যায় ও ইনসাফের এক সুন্দর নমুনা এবং বিশ্ব-মানবতার পরিত্রাণ ও সাফল্যের জন্য অপরিহার্য। এ শিক্ষা গ্রহণ বিনা পৃথিবীর মানুষ সত্যিকার সুখ-শান্তি পেতে পারে না।

Tafsir Abu Bakr Zakaria

বলুন, ‘হে মানুষ! নিশ্চয় আমি তোমাদের সবার প্রতি আল্লাহ্‌র রাসূল [১], যিনি আসমানসমূহ ও যমীনের সার্বভৌমত্বের অধিকারী।তিনি ছাড়া কোন সত্য ইলাহ নেই; তিনি জীবিত করেন ও মৃত্যু ঘটান। কাজেই তোমারা ঈমান আন আল্লাহ্‌র প্রতি ও তাঁর রাসূল উম্মী নবীর প্রতি যিনি আল্লাহ ও তাঁর বাণীসমূহে ঈমান রাখেন। আর তোমারা তার অনুসরণ কর, যাতে তোমারা হিদায়াতপ্রাপ্ত হও।’

বিশতম রুকূ’

[১] এ আয়াতে ইসলামের মূলনীতি সংক্রান্ত বিষয়গুলোর মধ্য থেকে রিসালাতের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক আলোচিত হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের রিসালাত সমগ্র দুনিয়ার সমস্ত জিন ও মানবজাতি তথা কেয়ামত পর্যন্ত আগত তাদের বংশধরদের জন্য ব্যাপক। তাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সাধারণভাবে ঘোষণা করে দেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে যে, আপনি মানুষকে বলে দিনঃ “আমি তোমাদের সবার প্রতি নবীরূপে প্রেরিত হয়েছি”। আমার নবুওয়ত লাভ ও রিসালাতপ্রাপ্তি বিগত নবীগণের মত কোন বিশেষ জাতি কিংবা বিশেষ ভূখণ্ড অথবা কোন নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নয়; বরং সমগ্র বিশ্ব মানবের জন্য, বিশ্বের প্রতিটি অংশ, প্রতিটি দেশ ও রাষ্ট্র এবং বর্তমান ও ভবিষ্যত বংশধরদের জন্য কেয়ামতকাল পর্যন্ত তা পরিব্যাপ্ত। অন্য আয়াতেও এসেছে, “আর আমরা তো আপনাকে কেবল সমগ্র মানবজাতির প্রতি সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে প্রেরণ করেছি" [সূরা সাবা; ২৮] অনুরূপভাবে সূরা আলে ইমরান; ২০; সূরা আল-আনআমঃ ৯০; সূরা হূদ; ১৭; সূরা ইউসুফ ১০৪; সূরা আল-আম্বিয়া; ১০৭; সূরা আল-ফুরকান; ১; সূরা ছোয়াদ; ৮৭; সূরা আল-কালাম; ৫২; সূরা আত-তাকওয়ীর; ২৭।

হাফেজ ইবনে কাসীর রাহিমাহুল্লাহ বলেছেন যে, এ আয়াতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের খাতামুন্নাবিয়ীন বা শেষ নবী হওয়ার বিষয়ে ইঙ্গিত করা হয়েছে। কারণ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আবির্ভাব ও রিসালাত যখন কেয়ামত পর্যন্ত আগত সমস্ত বংশধরদের জন্য এবং সমগ্র বিশ্বের জন্য ব্যাপক, তখন আর অন্য কোন নতুন রাসূলের প্রয়োজনীয়তা অবশিষ্ট থাকেই না। [ইবন কাসীর]

হাদীসে এসেছে, আবু বকর ও উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুমার মধ্যে কোন এক বিষয়ে মতবিরোধ হয়। তাতে উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু নারায হয়ে চলে যান। তা দেখে আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহুও তাকে মানাবার জন্য এগিয়ে যান। কিন্তু উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু কিছুতেই রাযী হলেন না। এমনকি নিজের ঘরে পৌঁছে দরজা বন্ধ করে দিলেন। আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু ফিরে যেতে বাধ্য হন এবং রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে গিয়ে হাযির হন। এদিকে কিছুক্ষণ পরেই উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু নিজের এহেন আচরণের জন্য লজ্জিত হয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে গিয়ে উপস্থিত হয়ে নিজের ঘটনা বিবৃত করেন। আবুদ্দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেনঃ এতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অসন্তুষ্ট হয়ে পড়েন। আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু যখন লক্ষ্য করলেন যে, উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুর প্রতি ভর্ৎসনা করা হচ্ছে, তখন নিবেদন করলেনঃ হে আল্লাহর রাসূল, দোষ আমারই বেশী। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমার একজন সহচরকে কষ্ট দেয়া থেকে বিরত থাকাটাও কি তোমাদের পক্ষে সম্ভব হয় না। তোমরা কি জান না যে, আল্লাহর অনুমতিক্রমে আমি যখন বললামঃ হে মানবমণ্ডলী, আমি তোমাদের সমস্ত লোকের জন্য আল্লাহ রাসূল। তখন তোমরা সবাই আমাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছিলে। শুধু এই আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহুই ছিলেন, যিনি সর্বপ্রথম আমাকে সত্য বলে স্বীকৃতি দিয়েছেন। [বুখারীঃ ৪৬৪০]

অন্য বর্ণনায় এসেছে, তাবুক যুদ্ধের সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করছিলেন। সাহাবায়ে কেরামের ভয় হচ্ছিল যে, শক্ররা না এ অবস্থায় আক্রমণ করে বসে। তাই তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চারদিকে সমবেত হয়ে গেলেন। রাসূল সালাত শেষ করে বললেনঃ আজকের রাতে আমাকে এমন পাঁচটি বিষয় দান করা হয়েছে, যা আমার পূর্বে আর কোন নবী-রাসূলকে দেয়া হয়নি। তার একটি হল এই যে, আমার রিসালাত ও নবুওয়াতকে সমগ্র দুনিয়ার জাতিসমূহের জন্য ব্যাপক করা হয়েছে। আর আমার পূর্বে যত নবী-রাসূলই এসেছেন, তাদের দাওয়াত ও আবির্ভাব নিজ নিজ সম্প্রদায়ের সাথে সম্পৃক্ত ছিল। দ্বিতীয়তঃ আমাকে আমার শক্রর মোকাবেলায় এমন প্রভাব দান করা হয়েছে যাতে তারা যদি আমার কাছ থেকে এক মাসের দূরত্বেও থাকে, তবুও তাদের উপর আমার প্রভাব ছেয়ে যাবে। তৃতীয়তঃ কাফেরদের সাথে যুদ্ধে প্রাপ্ত মালে-গনীমত আমার জন্য হালাল করে দেয়া হয়েছে। অথচ পূর্ববতী উম্মতদের জন্য তা হালাল ছিল না। বরং এসব মালের ব্যবহার মহাপাপ বলে মনে করা হত। তাদের গনীমতের মাল ব্যয়ের একমাত্র স্থান ছিল এই যে, আকাশ থেকে বিদ্যুৎ এসে সে সমস্তকে জ্বালিয়ে ভষ্ম করে দিয়ে যাবে চতুর্থতঃ আমার জন্য সমগ্র ভূমণ্ডলকে মসজিদ করে দেয়া হয়েছে এবং পবিত্র করার উপকরণ বানিয়ে দেয়া হয়েছে, যাতে আমাদের সালাত যমীনের যে কোন অংশে, যে কোন জায়গায় শুদ্ধ হয়, কোন বিশেষ মসজিদে সীমাবদ্ধ না হয়। পক্ষান্তরে পূর্ববতী উম্মতদের ইবাদাত শুধু তাদের উপাসনালয়েই হত, অন্য কোথাও নয়। নিজেদের ঘরে কিংবা মাঠে-ময়দানে তাদের সালাত বা ইবাদাত হত না। তাছাড়া পানি ব্যবহারের যখন সামর্থ্য না থাকে, তা পানি না পাওয়ার জন্য হোক কিংবা কোন রোগ-শোকের কারণে, তখন মাটির দ্বারা তায়াম্মুম করে নেয়াই পবিত্রতা ও অযুর পরিবর্তে যথেষ্ট হয়ে যায়। পূর্ববতী উম্মতদের জন্য এ সুবিধা ছিল না। অতঃপর বললেনঃ আর পঞ্চমটি এই যে, আল্লাহ্ তা'আলা তাঁর প্রত্যেক রাসূলকে একটি দোআ কবুল হওয়ার এমন নিশ্চয়তা দান করেছেন, যার কোন ব্যতিক্রম হতে পারে না। আর প্রত্যেক নবী-রাসূলই তাদের নিজ নিজ দো’আকে বিশেষ বিশেষ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে নিয়েছেন এবং সে উদ্দেশ্যও সিদ্ধ হয়েছে। আমাকে তাই বলা হল যে, আপনি কোন একটা দোআ করুন। আমি আমার দো’আকে আখেরাতের জন্য সংরক্ষিত করে রেখেছি। সে দো'আ তোমাদের জন্য এবং কেয়ামত পর্যন্ত (لااله الّاالله) 'আল্লাহ ছাড়া কোন হক মা’বুদ নেই কালেমার সাক্ষ্য দানকারী যেসব লোকের জন্ম হবে, তাদের কাজে লাগবে। [মুসনাদে আহমাদঃ ২/২২২]

আবু মূসা আশ’আরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে উদ্ধৃত বর্ণনায় আরো উল্লেখ রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে লোক আমার আবির্ভাব সম্পর্কে শুনবে, তা সে আমার উম্মতদের মধ্যে হোক কিংবা ইয়াহুদীনাসারা হোক, যদি সে আমার উপর ঈমান না আনে, তাহলে জাহান্নামে যাবে’। [মুসনাদে আহমাদঃ ২/৩৫০]

সারমর্ম এই যে, এ আয়াতের দ্বারা বর্তমান ও ভবিষ্যত বংশধরদের জন্য, প্রত্যেক দেশ ও ভূখণ্ডের অধিবাসীদের জন্য এবং প্রত্যেকটি জাতি ও সম্প্রদায়ের জন্য মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ব্যাপকভাবে রাসূল হওয়া প্রমাণিত হয়েছে। সাথে সাথে একথাও সাব্যস্ত হয়ে গেছে যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আবির্ভাবের পর যে লোক তার প্রতি ঈমান আনবে না, সে লোক কোন সাবেক শরীআত ও কিতাবের কিংবা অন্য কোন ধর্ম ও মতের পরিপূর্ণ আনুগত্য একান্ত নিষ্ঠাপরায়ণভাবে করতে থাকা সত্বেও কষ্মিনকালেও মুক্তি পাবে না।

Tafsir Bayaan Foundation

বল, ‘হে মানুষ, আমি তোমাদের সবার প্রতি আল্লাহর রাসূল, যার রয়েছে আসমানসমূহ ও যমীনের রাজত্ব। তিনি ছাড়া কোন (সত্য) ইলাহ নেই। তিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু দেন। সুতরাং তোমরা আল্লাহর প্রতি ঈমান আন ও তাঁর প্রেরিত উম্মী নবীর প্রতি, যে আল্লাহ ও তাঁর বাণীসমূহের প্রতি ঈমান রাখে। আর তোমরা তার অনুসরণ কর, আশা করা যায়, তোমরা হিদায়াত লাভ করবে।

Muhiuddin Khan

বলে দাও, হে মানব মন্ডলী। তোমাদের সবার প্রতি আমি আল্লাহ প্রেরিত রসূল, সমগ্র আসমান ও যমীনে তার রাজত্ব। একমাত্র তাঁকে ছাড়া আর কারো উপাসনা নয়। তিনি জীবন ও মৃত্যু দান করেন। সুতরাং তোমরা সবাই বিশ্বাস স্থাপন করো আল্লাহর উপর তাঁর প্রেরিত উম্মী নবীর উপর, যিনি বিশ্বাস রাখেন আল্লাহর এবং তাঁর সমস্ত কালামের উপর। তাঁর অনুসরণ কর যাতে সরল পথপ্রাপ্ত হতে পার।

Zohurul Hoque

বলো -- ''ওহে জনগণ! আমি নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌র রসূল তোমাদের সবার কাছে, -- মহাকাশমন্ডল ও পৃথিবীর সার্বভৌমত্ব যাঁর সেইজনেরই, তিনি ছাড়া অন্য উপাস্য নেই, তিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু ঘটান। সেজন্য আল্লাহ্‌তে বিশ্বাস করো ও তাঁর রসূলের প্রতি -- উম্মী নবী, যিনি ঈমান এনেছেন আল্লাহতে ও তাঁর বাণীসমূহে, আর তোমরাও তাঁর অনুসরণ করো যেন তোমরা সৎপথপ্রাপ্ত হতে পারো।’’