Skip to content

কুরআন মজীদ সূরা আল আনআম আয়াত ২৪

Qur'an Surah Al-An'am Verse 24

আল আনআম [৬]: ২৪ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ

اُنْظُرْ كَيْفَ كَذَبُوْا عَلٰٓى اَنْفُسِهِمْ وَضَلَّ عَنْهُمْ مَّا كَانُوْا يَفْتَرُوْنَ (الأنعام : ٦)

unẓur
ٱنظُرْ
Look
দেখো
kayfa
كَيْفَ
how
কিভাবে
kadhabū
كَذَبُوا۟
they lied
তারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করে
ʿalā
عَلَىٰٓ
against
উপর
anfusihim
أَنفُسِهِمْۚ
themselves
নিজেদের তাদের
waḍalla
وَضَلَّ
And lost
ও হারিয়ে যাবে
ʿanhum
عَنْهُم
from them
থেকে তাদের
مَّا
what
যা
kānū
كَانُوا۟
they used to
তারা ছিলো
yaftarūna
يَفْتَرُونَ
invent
তারা মিথ্যা রচনা করতো

Transliteration:

Unzur kaifa kazaboo 'alaaa anfusihim, wa dalla 'anhum maa kaanoo yaftaroon (QS. al-ʾAnʿām:24)

English Sahih International:

See how they will lie about themselves. And lost from them will be what they used to invent. (QS. Al-An'am, Ayah ২৪)

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

লক্ষ্য কর তারা নিজেদের সম্পর্কে কেমন মিথ্যে কথা বলবে, আর তারা মিছেমিছি যা উদ্ভাবন করেছিল তা নিস্ফল হয়ে যাবে। (আল আনআম, আয়াত ২৪)

Tafsir Ahsanul Bayaan

দেখ, তারা নিজেরাই নিজেদেরকে কিরূপ মিথ্যাবাদী প্রতিপন্ন করবে এবং যে মিথ্যা তারা রচনা করত, তা কিভাবে উধাও হয়ে যাবে। [১]

[১] তবে সেখানে সুস্পষ্ট এই মিথ্যার কোন লাভ তাদের হবে না। যেমন, দুনিয়াতে কোন কোন সময় মানুষ এ রকম (মিথ্যা ফলপ্রসূ বলে) অনুভব করে। অনুরূপ যে বাতিল উপাস্যগুলোকে এরা তাদের সমর্থক, সাহায্যকারী এবং সুপারিশকারী মনে করত, তারাও অদৃশ্য হয়ে যাবে এবং এই শরীকদের প্রকৃত অবস্থা সেখানে স্পষ্ট হয়ে যাবে, কিন্তু সেখানে এই অবস্থাকে দূরীভূত করার কোন উপায় থাকবে না।

Tafsir Abu Bakr Zakaria

দেখুন, তারা নিজেদের প্রতি কিরূপ মিথ্যাচার করে এবং মিথ্যা তারা রটনা করত তা কিভাবে তাদের থেকে উধাও হয়ে গেল [১]

[১] এতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে বলা হয়েছে যে, দেখুন, তারা নিজেদের বিপক্ষে কেমন মিথ্যা বলছে আল্লাহর বিরুদ্ধে যাদেরকে মিছেমিছি শরীক তৈরী করেছিল, আজ তারা সবাই উধাও হয়ে গেছে। নিজেদের বিরুদ্ধে মিথ্যা বলার অর্থ এই যে, এ মিথ্যার শাস্তি তাদের উপরই পতিত হবে। মনগড়া তৈরী করার অর্থ এই যে, দুনিয়াতে তাদেরকে আল্লাহর অংশীদার করার ব্যাপারটি ছিল মিছামিছি (শরীক) ও মনগড়া। আজ বাস্তব সত্য সামনে এসে যাওয়ায় এ মিথ্যা অকেজো হয়ে গেছে। মনগড়া তৈরীর অর্থ মিথ্যা কসমও হতে পারে, যা হাশরের ময়দানে উচ্চারণ করবে। অতঃপর হস্তপদ ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সাক্ষ্য দ্বারা সে মিথ্যা ধরা পড়ে যাবে। কোন কোন মুফাসসির বলেছেনঃ মনগড়া তৈরী করা বলতে মুশরিকদের ঐ সব অপব্যাখ্যাকে বুঝানো হয়েছে, যা তারা দুনিয়াতে মিথ্যা উপাস্যদের সম্পর্কে মনে করত। উদাহরণতঃ তারা বলতো

(مَا نَعْبُدُهُمْ اِلَّا لِيُقَرِّبُوْنَآ اِلَى اللّٰهِ زُلْفٰى)

অর্থাৎ আমরা উপাস্য মনে করে মূর্তির উপাসনা করি না, বরং উপাসনা করার কারণ এই যে, তারা আল্লাহর কাছে সুপারিশ করে আমাদেরকে তার নিকটবতী করে দেবে। হাশরে তাদের এ মনগড়া ব্যাখ্যা এমনভাবে মিথ্যা প্রমাণিত হবে যে, তাদের মহাবিপদের সময় কেউ তাদের সুপারিশ করবে না।

উভয় আয়াতে এ বিষয়টি বিশেষভাবে স্মরণযোগ্য যে, হাশরের ভয়াবহ ময়দানে মুশরিকদেরকে যা ইচ্ছা বলার স্বাধীনতা দানের মধ্যে সম্ভবতঃ ইঙ্গিত রয়েছে যে, মিথ্যা বলার অভ্যাস এমন খারাপ অভ্যাস যা পরিত্যাগ করা অতি কঠিন। সুতরাং যারা দুনিয়াতে মিথ্যা কসম খেত, তারা এখানেও তা থেকে বিরত থাকতে পারেনি। ফলে সমগ্র সৃষ্ট জগতের সামনে তারা লাঞ্ছিত হয়েছে। এ কারণেই কুরআন ও হাদীসে মিথ্যা বলার নিন্দা জোরালো ভাষায় করা হয়েছে। কুরআনের স্থানে স্থানে মিথ্যাবাদীদের প্রতি অভিসম্পাত বর্ণিত হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ মিথ্যা থেকে বেঁচে থাক। কেননা, মিথ্যা পাপাচারের দোসর। মিথ্যা ও পাপাচার উভয়ই জাহান্নামে যাবে [ইবনে হাববান; ৫৭৩৪] অন্য হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করা হয়ঃ ‘যে কাজের দরুন মানুষ জাহান্নামে যাবে, তা কি? তিনি বললেনঃ সে কাজ হচ্ছে মিথ্যা’। [মুসনাদে আহমাদ; ২/১৭৬] অনুরূপভাবে, মে'রাজের রাতে রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রত্যক্ষ করেছিলেন যে, এক ব্যক্তির চোয়াল চিরে দেয়া হচ্ছে। তার সাথে এ কার্যধারা কেয়ামত পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। তিনি জিবরাঈল আলাইহিস সালাম-কে জিজ্ঞাসা করলেনঃ ‘এ ব্যক্তি কে? জিবরাঈল বললেনঃ ‘এ হলো মিথ্যাবাদী’। [বুখারী ১৩৮৬; মুসনাদে আহমাদ; ৫/১৪]

Tafsir Bayaan Foundation

দেখ, তারা কীভাবে মিথ্যা বলেছে নিজদের উপর, তারা যে মিথ্যা রটনা করত, তা তাদের থেকে হারিয়ে গেল।

Muhiuddin Khan

দেখতো, কিভাবে মিথ্যা বলছে নিজেদের বিপক্ষে ? এবং যেসব বিষয় তারা আপনার প্রতি মিছামিছি রচনা করত, তা সবই উধাও হয়ে গেছে।

Zohurul Hoque

দেখ, কিভাবে তারা নিজেদের বিরুদ্ধে মিথ্যা কথা বলে, আর তাদের থেকে বিদায় নিয়েছে যা তারা রচনা করতো!