Skip to content

কুরআন মজীদ সূরা আল আনআম আয়াত ১৫৯

Qur'an Surah Al-An'am Verse 159

আল আনআম [৬]: ১৫৯ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ

اِنَّ الَّذِيْنَ فَرَّقُوْا دِيْنَهُمْ وَكَانُوْا شِيَعًا لَّسْتَ مِنْهُمْ فِيْ شَيْءٍۗ اِنَّمَآ اَمْرُهُمْ اِلَى اللّٰهِ ثُمَّ يُنَبِّئُهُمْ بِمَا كَانُوْا يَفْعَلُوْنَ (الأنعام : ٦)

inna
إِنَّ
Indeed
নিশ্চয়ই
alladhīna
ٱلَّذِينَ
those who
যারা
farraqū
فَرَّقُوا۟
divide
খন্ড বিখন্ড করেছে
dīnahum
دِينَهُمْ
their religion
দীনকে তাদের
wakānū
وَكَانُوا۟
and become
ও তারা হয়েছে (বিভক্ত)
shiyaʿan
شِيَعًا
sects
(বিভিন্ন) উপদলে
lasta
لَّسْتَ
you are not
নও তুমি
min'hum
مِنْهُمْ
with them
মধ্য হতে তাদের
فِى
in
কোনো
shayin
شَىْءٍۚ
anything
কিছু
innamā
إِنَّمَآ
Only
মূলতঃ
amruhum
أَمْرُهُمْ
their affair
বিষয় তাদের(ন্যস্ত)
ilā
إِلَى
(is) with
উপর
l-lahi
ٱللَّهِ
Allah
আল্লাহ্‌র
thumma
ثُمَّ
then
এরপর
yunabbi-uhum
يُنَبِّئُهُم
He will inform them
তিনি জানিয়ে দিবেন তাদের
bimā
بِمَا
of what
ঐ বিষয়ে যা
kānū
كَانُوا۟
they used to
তারা ছিলো
yafʿalūna
يَفْعَلُونَ
do
তারা কাজ করতে

Transliteration:

Innal lazeena farraqoo deenahum wa kaanoo shiya'allasta minhum fee shai'; innamaaa amruhum ilallaahi summma yunabbi'uhum bimaa kaanoo yaf'aloon (QS. al-ʾAnʿām:159)

English Sahih International:

Indeed, those who have divided their religion and become sects – you, [O Muhammad], are not [associated] with them in anything. Their affair is only [left] to Allah; then He will inform them about what they used to do. (QS. Al-An'am, Ayah ১৫৯)

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

যারা নিজেদের (পূর্ণ পরিণত) দ্বীনকে খন্ডে খন্ডে বিভক্ত করে নিয়েছে আর (আপন আপন অংশ নিয়ে) দলে দলে ভাগ হয়ে গেছে তাদের কোন কাজের সাথে তোমার কোন সম্পর্ক নেই। তাদের ব্যাপারটি পুরোপুরি আল্লাহর ইখতিয়ারভুক্ত। (সময় হলেই) তিনি তাদেরকে জানিয়ে দেবেন তাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে। (আল আনআম, আয়াত ১৫৯)

Tafsir Ahsanul Bayaan

অবশ্যই যারা ধর্ম সম্বন্ধে নানা মতের সৃষ্টি করেছে এবং বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়েছে[১] তাদের কোন কাজের দায়িত্ব তোমার নেই, তাদের বিষয় আল্লাহর এখতিয়ারভুক্ত। তিনিই তাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে তাদেরকে অবহিত করবেন।

[১] এ থেকে কেউ কেউ ইয়াহুদী ও খ্রিষ্টানদের বুঝিয়েছেন। তারা বিভিন্ন দলে বিভক্ত ছিল। কেউ কেউ এ থেকে মুশরিকদের বুঝিয়েছেন। কিছু মুশরিক ফিরিশতাদের, কিছু তারকারাজির এবং কিছু বিভিন্ন মূর্তির পূজা করত। তবে এ আয়াত ব্যাপক। কাফের ও মুশরিকরা সহ সেই সমস্ত লোকই এর আওতাভুক্ত, যারা আল্লাহর দ্বীন এবং রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর তরীকা ত্যাগ করে অন্য দ্বীন বা তরীকা গ্রহণ করে বিচ্ছিন্নতা ও দলাদলির পথ অবলম্বন করে। شِيَعًا এর অর্থ, বিভিন্ন দল। আর এ কথা এমন সকল সম্প্রদায়ের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য, যারা দ্বীনের ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধ ছিল পরে তাদের বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ নিজেদের বুযুর্গদের মতকেই নির্ভরযোগ্য এবং সেটাকেই শেষ সিদ্ধান্ত গণ্য করে নিজেদের পথ পৃথক করে নিয়েছে, যদিও সে মত সত্য ও সঠিকতার বিপরীত। (ফাতহুল ক্বাদীর)

Tafsir Abu Bakr Zakaria

নিশ্চয় যারা তাদের দ্বীনকে বিচ্ছিন্ন করেছে এবং বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়েছে, তাদের কোন দায়িত্ব আপনার নয় ; তাদের বিষয় তো আল্লাহ্‌র নিকট, অতপর তিনি তাদেরকে তাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে জানাবেন [১]।

[১] এ আয়াতে মুশরিক, ইয়াহূদী, নাসারা ও মুসলিম সবাইকে ব্যাপকভাবে সম্বোধন করা হয়েছে এবং তাদেরকে আল্লাহর সরল পথ পরিহার করার অশুভ পরিণতি সম্পর্কে হুশিয়ার করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে বলা হয়েছে যে, এসব ভ্রান্ত পথের মধ্যে কিছু পথ সরল পথের সম্পূর্ণ বিপরীতমুখীও রয়েছে; যেমন, মুশরিক ও আহলে-কিতাবদের অনুসৃত পথ এবং কিছু পথ রয়েছে যা বিপরীতমুখী নয়, কিন্তু সরল পথ থেকে বিচ্যুত করে ডানে-বামে নিয়ে যায়। এগুলো হচ্ছে সন্দেহযুক্ত ও বিদ'আতের পথ। এগুলোও মানুষকে পথভ্রষ্টতায় লিপ্ত করে দেয়। “যারা দ্বীনের মধ্যে বিভিন্ন পথ আবিস্কার করেছে এবং বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে পড়েছে, তাদের সাথে আপনার কোন সম্পর্ক নেই। তাদের কাজ আল্লাহ্ তা'আলার নিকট সম্পর্কিত। অতঃপর আল্লাহ্ তা'আলা তাদের কাছে তাদের কৃতকর্মসমূহ বিবৃত করবেন।" আয়াতে উল্লেখিত দ্বীনে বিভেদ সৃষ্টি করা এবং বিভিন্ন দলে বিভক্ত হওয়ার অর্থ দ্বীনের মূলনীতিসমূহের অনুসরণ ছেড়ে স্বীয় ধ্যান-ধারণা ও প্রবৃত্তি অনুযায়ী কিংবা শয়তানের ধোঁকা ও সন্দেহে লিপ্ত হয়ে দ্বীনে কিছু নতুন বিষয় ঢুকিয়ে দেয়া অথবা কিছু বিষয় তা থেকে বাদ দেয়া। কিছু লোক দ্বীনের মূলনীতি বর্জন করে সে জায়গায় নিজের পক্ষ থেকে কিছু বিষয় ঢুকিয়ে দিয়েছিল। এ উম্মতের বিদ'আতীরাও নতুন ও ভিত্তিহীন বিষয়কে দ্বীনের অন্তর্ভুক্ত করে থাকে। তারা সবাই আলোচ্য আয়াতের অন্তর্ভুক্ত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ বিষয়টি বর্ণনা করে বলেন, বনী-ইসরাঈলরা যেসব অবস্থার সম্মুখীন হয়েছিল, আমার উম্মতও সেগুলোর সম্মুখীন হবে। তারা যেমন কর্মে লিপ্ত হয়েছিল, আমার উম্মতও তেমনি হবে। বনী-ইসরাঈলরা ৭২ টি দলে বিভক্ত হয়েছিল, আমার উম্মতে ৭৩ টি দল সৃষ্টি হবে। তন্মধ্যে একদল ছাড়া সবাই জাহান্নামে যাবে। সাহাবায়ে কেরাম আর্য করলেনঃ মুক্তিপ্রাপ্ত দল কোনটি? উত্তর হল, যে দল আমার ও আমার সাহাবীদের পথ অনুসরণ করবে,তারাই মুক্তি পাবে’। [তিরমিযীঃ ১৫৪০,২৬৪১] অনুরূপভাবে ইরবায ইবন সারিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “তোমাদের মধ্যে যারা আমার পর জীবিত থাকবে, তারা বিস্তর মতানৈক্য দেখতে পাবে। তাই (আমি তোমাদেরকে উপদেশ দিচ্ছি যে,) তোমরা আমার ও খোলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নাতকে শক্তভাবে আঁকড়ে থেকো। নতুন নতুন পথ থেকে সযত্নে গা বাঁচিয়ে চলো। কেননা, দ্বীনে নতুন সৃষ্ট প্রত্যেক বিষয়ই বিদ'আত এবং প্রত্যেক বিদ'আতই পথভ্রষ্টতা। [আবুদাউদ ৪৬০৭; তিরমিয়ী; ২৬৭৬; ইবন মাজাহঃ ৪৩; মুসনাদে আহমাদ; ৪/১২৬]

Tafsir Bayaan Foundation

নিশ্চয় যারা তাদের দীনকে বিচ্ছিন্ন করেছে এবং দল-উপদলে বিভক্ত হয়েছে, তাদের কোন ব্যাপারে তোমার দায়িত্ব নেই। তাদের বিষয়টি তো আল্লাহর নিকট। অতঃপর তারা যা করত, তিনি তাদেরকে সে বিষয়ে অবগত করবেন।

Muhiuddin Khan

নিশ্চয় যারা স্বীয় ধর্মকে খন্ড-বিখন্ড করেছে এবং অনেক দল হয়ে গেছে, তাদের সাথে আপনার কোন সম্পর্ক নেই। তাদের ব্যাপার আল্লাহ তা'আয়ালার নিকট সমর্পিত। অতঃপর তিনি বলে দেবেন যা কিছু তারা করে থাকে।

Zohurul Hoque

নিঃসন্দেহ যারা তাদের ধর্মকে বিভক্ত করেছে এবং বিভিন্ন দল হয়ে গেছে, তাদের জন্য তোমার কোনো দায়দায়িত্ব নেই। নিঃসন্দেহ তাদের ব্যাপার আল্লাহ্‌র কাছে, তিনিই এরপরে তাদের জানাবেন যা তারা করে চলতো।