কুরআন মজীদ সূরা আল আনআম আয়াত ১১৯
Qur'an Surah Al-An'am Verse 119
আল আনআম [৬]: ১১৯ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ
وَمَا لَكُمْ اَلَّا تَأْكُلُوْا مِمَّا ذُكِرَ اسْمُ اللّٰهِ عَلَيْهِ وَقَدْ فَصَّلَ لَكُمْ مَّا حَرَّمَ عَلَيْكُمْ اِلَّا مَا اضْطُرِرْتُمْ اِلَيْهِ ۗوَاِنَّ كَثِيرًا لَّيُضِلُّوْنَ بِاَهْوَاۤىِٕهِمْ بِغَيْرِ عِلْمٍ ۗاِنَّ رَبَّكَ هُوَ اَعْلَمُ بِالْمُعْتَدِيْنَ (الأنعام : ٦)
- wamā
- وَمَا
- And what
- এবং কি হয়েছে
- lakum
- لَكُمْ
- for you
- তোমাদের
- allā
- أَلَّا
- that not
- যে না
- takulū
- تَأْكُلُوا۟
- you eat
- তোমরা খাও
- mimmā
- مِمَّا
- of what
- তা হতে (যার উপর)
- dhukira
- ذُكِرَ
- has been mentioned
- হয়েছে নেয়া
- us'mu
- ٱسْمُ
- (the) name
- নাম
- l-lahi
- ٱللَّهِ
- (of) Allah
- আল্লাহ্র
- ʿalayhi
- عَلَيْهِ
- on it
- উপর তার
- waqad
- وَقَدْ
- when indeed
- অথচ নিশ্চয়ই
- faṣṣala
- فَصَّلَ
- He (has) explained in detail
- তিনি বিস্তারিত বিবৃত করেছেন
- lakum
- لَكُم
- to you
- জন্যে তোমাদের
- mā
- مَّا
- what
- যা
- ḥarrama
- حَرَّمَ
- He (has) forbidden
- নিষিদ্ধ করেছেন (আল্লাহ্)
- ʿalaykum
- عَلَيْكُمْ
- to you
- উপর তোমাদের
- illā
- إِلَّا
- except
- তবে
- mā
- مَا
- what
- যা
- uḍ'ṭurir'tum
- ٱضْطُرِرْتُمْ
- you are compelled
- নিরুপায় হয়ে যাও তোমরা
- ilayhi
- إِلَيْهِۗ
- to it
- দিকে তার (সেটা ভিন্ন কথা)
- wa-inna
- وَإِنَّ
- And indeed
- এবং নিশ্চয়ই
- kathīran
- كَثِيرًا
- many
- অনেকে
- layuḍillūna
- لَّيُضِلُّونَ
- surely lead astray
- অবশ্যই পথভ্রষ্ট করে(অন্যকে)
- bi-ahwāihim
- بِأَهْوَآئِهِم
- by their (vain) desires
- তাদের খেয়াল খুশী দ্বারা
- bighayri
- بِغَيْرِ
- without
- ছাড়া
- ʿil'min
- عِلْمٍۗ
- knowledge
- কোনো জ্ঞান (অর্থাৎ অজ্ঞতাবশত)
- inna
- إِنَّ
- Indeed
- নিশ্চয়ই
- rabbaka
- رَبَّكَ
- your Lord
- তোমার রব
- huwa
- هُوَ
- He
- তিনি
- aʿlamu
- أَعْلَمُ
- (is) most knowing
- খুব জানেন
- bil-muʿ'tadīna
- بِٱلْمُعْتَدِينَ
- of the transgressors
- সম্পর্কে সীমালঙ্ঘনকারীদের
Transliteration:
Wa maa lakum allaa taakuloo mimmaa zukirasmul laahi 'alaihi wa qad fassala lakum maa harrama 'alaikum illaa mad turirtum ilaih; wa inna kaseeral la yudilloona bi ahwaaa'ihim bighairi 'ilm; inna Rabbaka Huwa a'lamu bilmu'tadeen(QS. al-ʾAnʿām:119)
English Sahih International:
And why should you not eat of that upon which the name of Allah has been mentioned while He has explained in detail to you what He has forbidden you, excepting that to which you are compelled. And indeed do many lead [others] astray through their [own] inclinations without knowledge. Indeed, your Lord – He is most knowing of the transgressors. (QS. Al-An'am, Ayah ১১৯)
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
তোমাদের কী হয়েছে যে, যাতে আল্লাহর নাম নেয়া হয়েছে তা তোমরা খাবে না? তোমাদের জন্য যা হারাম করা হয়েছে তা তোমাদের জন্য বিশদভাবে বাতলে দেয়া হয়েছে, তবে যদি তোমরা নিরুপায় হও (তবে ততটুকু নিষিদ্ধ বস্তু খেতে পার যাতে প্রাণে বাঁচতে পার), কিন্তু অনেক লোকই অজ্ঞানতাবশতঃ তাদের খেয়াল খুশী দ্বারা অবশ্যই (অন্যদেরকে) পথভ্রষ্ট করে, তোমার প্রতিপালক সীমালঙ্ঘনকারীদের সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি অবগত। (আল আনআম, আয়াত ১১৯)
Tafsir Ahsanul Bayaan
আর তোমাদের কি হয়েছে যে, যার যবেহকালে আল্লাহর নাম নেওয়া হয়েছে, তোমরা তা ভক্ষণ করবে না? অথচ তোমরা নিরুপায় না হলে যা তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ, তা তিনি বিশদভাবেই তোমাদের নিকট বিবৃত করেছেন।[১] অনেকে অজ্ঞানতাবশতঃ নিজেদের খেয়াল-খুশী দ্বারা অবশ্যই অন্যকে বিপথগামী করে। নিশ্চয় তোমার প্রতিপালক সীমা লংঘনকারীদের সম্বন্ধে সবিশেষ অবহিত।
[১] যার বিশদ বর্ণনা এই সূরাতেই (৬;১৪৫-১৪৬ আয়াতে) পরে আসছে। এ ছাড়াও অন্যান্য সূরা এবং বহু হাদীসে হারাম জিনিসের বিশদ বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। সেগুলো ছাড়া সবই হালাল। এমন কি হারাম পশুও নিরুপায় অবস্থায় ততটুকু পরিমাণ খাওয়া বৈধ, যতটুকু জান বাঁচানোর জন্য দরকার।
Tafsir Abu Bakr Zakaria
আর তোমাদের কি হয়েছে যে, যাতে আল্লাহর নাম নেয়া হয়েছে তোমরা তা থেকে খাবে না? যা তোমাদের জন্য তিনি হারাম করেছেন তা তিনি বিশদভাবেই তোমাদের কাছে বিবৃত করেছেন [১], তবে তোমরা নিরুপায় হলে তা স্বতন্ত্র [২]। আর নিশ্চিত অনেক অজ্ঞতাবশত নিজেদের খেয়াল –খুশী দ্বারা অন্যকে বিপদ্গামী করে ; নিশ্চয় আপানার রব সীমালঙ্ঘনকারীদের সম্বদ্ধে অধিক জানেন।
[১] অর্থাৎ কোনটি হারাম আর কোনটি হালাল তার বিশদ বিবরণ আল্লাহ তা'আলা তাঁর বান্দাদেরকে জানিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত জন্তু, রক্ত, শূকরের গোস্ত , আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে যবেহ্ করা পশু, গলা চিপে মারা যাওয়া জন্তু, প্রহারে মারা যাওয়া জন্তু, উপর থেকে পড়ে মারা যাওয়া জন্তু , অন্য প্রাণীর শিং এর আঘাতে মারা যাওয়া জন্তু এবং হিংস্র পশুতে খাওয়া জন্তু ; তবে যা তোমরা যবেহ্ করতে পেরেছ তা ছাড়া, আর যা মূর্তি পূজার বেদীর উপর বলী দেয়া হয় তা এবং জুয়ার তীর দিয়ে ভাগ নির্ণয় করা, এসব পাপ কাজ। ...অতঃপর কেউ পাপের দিকে না ঝুঁকে ক্ষুধার তাড়নায় বাধ্য হলে তবে নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” [সূরা আল-মায়িদাহ ৩] তবে সূরা আল মায়িদার এ আয়াতটি মদীনায় আবতীর্ণ হয়েছে। পক্ষান্তরে সূরা আল-আন’আমের এ আয়াতটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। সে জন্য কুরতুবী বলেন, এখানে বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন বলে ‘বিস্তারিত বর্ণনা করবেন’ বুঝানো হয়েছে। [কুরতুবী] তাছাড়া এ সূরাতেই ১৪৫ নং আয়াতে হারাম বস্তুসমূহের কিছু বর্ণনা এসেছে। [আত-তাফসীরুস সহীহ]
[২] অর্থাৎ উপরোক্ত হারামকৃত বস্তুসমূহও তোমাদের অপারগ অবস্থায় খাওয়ার অনুমতি রয়েছে। যেমন কেউ ক্ষুধায় কাতর হয়ে হালাল বস্তু না পেলে নিরুপায় অবস্থায় তার জন্য মৃত বস্তুও খাওয়ার বিধান দেয়া হয়েছে। [ সাদী, আত-তাফসীরুস সহীহ]
Tafsir Bayaan Foundation
আর তোমাদের কী হল যে তোমরা তা থেকে আহার করো না, যার উপর আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা হয়েছে! অথচ তিনি তোমাদের জন্য বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন, যা তোমাদের উপর হারাম করেছেন। তবে যার প্রতি তোমরা বাধ্য হয়েছ এবং নিশ্চয় অনেকে না জেনে তাদের খেয়াল-খুশি দ্বারা পথভ্রষ্ট করে। নিশ্চয় তোমার রব সীমালঙ্ঘনকারীদের সম্পর্কে অধিক জ্ঞাত।
Muhiuddin Khan
কোন কারণে তোমরা এমন জন্তু থেকে ভক্ষণ করবে না, যার উপর আল্লাহর নাম উচ্চারিত হয়, অথচ আল্লাহ ঐ সব জন্তুর বিশদ বিবরণ দিয়েছেন, যেগুলোকে তোমাদের জন্যে হারাম করেছেন; কিন্তু সেগুলোও তোমাদের জন্যে হালাল, যখন তোমরা নিরুপায় হয়ে যাও। অনেক লোক স্বীয় ভ্রান্ত প্রবৃত্তি দ্বারা না জেনে বিপথগামী করতে থাকে। আপনার প্রতিপালক সীমাতিক্রম কারীদেরকে যথার্থই জানেন।
Zohurul Hoque
আর তোমাদের কি হয়েছে যে তোমরা তা খাবে না যার উপরে আল্লাহ্র নাম উল্লেখ করা হয়েছে, আর তিনি ইতিপূর্বে তোমাদের জন্য বিশদভাবে বর্ণনা করেছেন যা তোমাদের জন্য তিনি নিষেধ করেছেন, তবে যতটাতে তোমরা বাধ্য হও তা ব্যতীত? আর নিঃসন্দেহ অনেকেই বিপথে চালিত করে তাদের খেয়াল-খুশির দ্বারা জ্ঞানহীনতা বশতঃ। নিঃসন্দেহ তোমার প্রভু -- তিনি ভলো জানেন সীমা-লঙ্ঘনকারীদের।