কুরআন মজীদ সূরা আল মায়িদাহ আয়াত ৯৪
Qur'an Surah Al-Ma'idah Verse 94
আল মায়িদাহ [৫]: ৯৪ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ
يٰٓاَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا لَيَبْلُوَنَّكُمُ اللّٰهُ بِشَيْءٍ مِّنَ الصَّيْدِ تَنَالُهٗٓ اَيْدِيْكُمْ وَرِمَاحُكُمْ لِيَعْلَمَ اللّٰهُ مَنْ يَّخَافُهٗ بِالْغَيْبِۚ فَمَنِ اعْتَدٰى بَعْدَ ذٰلِكَ فَلَهٗ عَذَابٌ اَلِيْمٌ (المائدة : ٥)
- yāayyuhā
- يَٰٓأَيُّهَا
- O you
- হে
- alladhīna
- ٱلَّذِينَ
- who
- যারা
- āmanū
- ءَامَنُوا۟
- believe!
- ঈমান এনেছো
- layabluwannakumu
- لَيَبْلُوَنَّكُمُ
- Surely will test you
- অবশ্যই পরীক্ষা করবেন তোমাদের
- l-lahu
- ٱللَّهُ
- Allah
- আল্লাহ
- bishayin
- بِشَىْءٍ
- through something
- দিয়ে(কিছু) জিনিস
- mina
- مِّنَ
- of
- থেকে
- l-ṣaydi
- ٱلصَّيْدِ
- the game
- শিকারের
- tanāluhu
- تَنَالُهُۥٓ
- can reach it
- নাগালে আসে যা
- aydīkum
- أَيْدِيكُمْ
- your hands
- হাতগুলোর তোমাদের
- warimāḥukum
- وَرِمَاحُكُمْ
- and your spears
- ও বর্শাগুলোর তোমাদের
- liyaʿlama
- لِيَعْلَمَ
- that may make evident
- যেন জানেন
- l-lahu
- ٱللَّهُ
- Allah
- আল্লাহ
- man
- مَن
- who
- কে
- yakhāfuhu
- يَخَافُهُۥ
- fears Him
- ভয় করে তাঁকে
- bil-ghaybi
- بِٱلْغَيْبِۚ
- in the unseen
- অবস্থায় অদৃশ্য
- famani
- فَمَنِ
- And whoever
- অতঃপর যে
- iʿ'tadā
- ٱعْتَدَىٰ
- transgressed
- সীমালঙ্ঘন করবে
- baʿda
- بَعْدَ
- after
- পরেও
- dhālika
- ذَٰلِكَ
- that
- এর
- falahu
- فَلَهُۥ
- then for him
- তবে জন্যে তার (রয়েছে)
- ʿadhābun
- عَذَابٌ
- (is) a punishment
- শাস্তি
- alīmun
- أَلِيمٌ
- painful
- নিদারুণ
Transliteration:
Yaaa aiyuhal lazeena aamanoo la yabluwannnakumul laahu bishai'im minas saidi tanaaluhooo aideekum wa rimaahukum liya'lamal laahu mai yakhaafuhoo bilghaib; famani' tadaa ba'da zaalika falahoo 'azaabun aleem(QS. al-Māʾidah:94)
English Sahih International:
O you who have believed, Allah will surely test you through something of the game that your hands and spears [can] reach, that Allah may make evident those who fear Him unseen. And whoever transgresses after that – for him is a painful punishment. (QS. Al-Ma'idah, Ayah ৯৪)
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
ওহে ঈমানদারগণ! আল্লাহ তোমাদেরকে কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন করবেন (মুহরিম অবস্থায়) শিকারের ব্যাপারে যা তোমাদের হাত আর বর্শার নাগালের ভিতর এসে যায়, এটা জেনে নেয়ার জন্য যে অদৃশ্যে থেকেও কে আল্লাহকে ভয় করে। (সুস্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে) এরপরও যারা সীমালঙ্ঘন করে তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। (আল মায়িদাহ, আয়াত ৯৪)
Tafsir Ahsanul Bayaan
হে বিশ্বাসীগণ! তোমাদের হাত ও বর্শা দ্বারা যা শিকার করা যায়[১] তার কিছু দ্বারা আল্লাহ তোমাদেরকে (ইহরাম অবস্থায়) পরীক্ষা করবেন।[২] যাতে আল্লাহ অবহিত হন, কে তাঁকে না দেখেও ভয় করে। সুতরাং এরপর কেউ সীমালংঘন করলে, তার জন্য মর্মন্তুদ শাস্তি রয়েছে।
[১] শিকার করা আরববাসীদের জীবিকা নির্বাহের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পন্থা ছিল। আর সে জন্যই ইহরাম অবস্থায় তা নিষিদ্ধ করে তাদের পরীক্ষা নেওয়া হয়। বিশেষ করে হুদায়বিয়ায় অবস্থান কালে সাহাবাদের নিকট অধিকহারে শিকার আসতে থাকে, আর সে সময় এই চারটি আয়াত অবতীর্ণ হয়, যাতে এই সম্পর্কিত বিধান বর্ণনা করা হয়েছে ।
[২] নিকটবর্তী শিকার অথবা ছোট জন্তু শিকার সাধারণতঃ হাত দিয়েই ধরা হত এবং দূরবর্তী ও বড় জন্তুর জন্য তীর-বল্লম ব্যবহার করা হত। সেই জন্যে এই দুয়েরই কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু উদ্দেশ্য হচ্ছে, শিকার যেমনই হোক আর যেভাবেই করা হোক, ইহরাম অবস্থায় কোন রকম শিকার করা যাবে না; যা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।
Tafsir Abu Bakr Zakaria
হে ঈমানদারগণ! আল্লাহ অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করবেন শিকারের এমন বস্তু দ্বারা যা তোমাদের হাত [১] ও বর্শা [২] নাগাল পায়, যাতে আল্লাহ প্রকাশ করে দেন, কে তাঁকে গায়েবের সাথে ভয় করে [৩]। কাজেই এরপর কেউ সীমালংঘন করলে তার জন্য কষ্টদায়ক শাস্তি রয়েছে।
তেরতম রুকূ‘
[১] অর্থাৎ সহজলভ্য শিকার। কারণ, এগুলো মুহরিম ব্যক্তির আশেপাশেই থাকে। এর মাধ্যমে মুহরিম ব্যক্তির পরীক্ষা করা হয়। মুজাহিদ বলেন, এখানে ছোট ও বাচ্চা শিকারকে বোঝানো হয়েছে। [ইবন কাসীর]
[২] এর অর্থ বড় শিকার। [ইবন কাসীর] কারণ, বড় শিকার করতেই সাধারণতঃ বর্শা ব্যবহার করতে হয়।
[৩] মুকাতিল বলেন, মুসলিমরা যখন উমরা পালনের উদ্দেশ্যে হুদায়বিয়ায় অবস্থান করছিলেন, তখন এ আয়াত নাযিল হয়। সেখানে বন্য চতুষ্পদ জন্তু, পাখী এবং অন্যান্য শিকার তাদের অবস্থানস্থলে জমা হয়েছিল। এরূপ দৃশ্য তারা ইতোপূর্বে দেখেনি। সুতরাং ইহরামের অবস্থায় তাদেরকে শিকার করতে নিষেধ করা হয়, যাতে আল্লাহ্ তা’আলা স্পষ্ট করে দেন যে, কে তাঁর আনুগত্য স্বীকার করছে, আর কে করছে না। অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘আপনি শুধু তাকেই সতর্ক করতে পারেন যে ‘যিকর’ এর অনুসরণ করে এবং গায়েবের সাথে রহমানকে ভয় করে। অতএব তাকে আপনি ক্ষমা ও সম্মানজনক পুরস্কারের সুসংবাদ দিন।’ [সূরা ইয়াসীন ১১] [ইবন কাসীর]
Tafsir Bayaan Foundation
হে মুমিনগণ, অবশ্যই আল্লাহ তোমাদেরকে পরীক্ষা করবেন শিকারের এমন বস্তু দ্বারা তোমাদের হাত ও বর্শা যার নাগাল পায়, যাতে আল্লাহ জেনে নেন কে তাঁকে গায়েবের সাথে ভয় করে। সুতরাং এরপর যে সীমালঙ্ঘন করবে তার জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আযাব ।
Muhiuddin Khan
হে মুমিনগণ, আল্লাহ তোমাদেরকে এমন কিছু শিকারের মাধ্যমে পরীক্ষা করবেন, যে শিকার পর্যন্ত তোমাদের হাত ও বর্শা সহজেই পৌছতে পারবে-যাতে আল্লাহ বুঝতে পারেন যে, কে তাকে অদৃশ্যভাবে ভয়করে। অতএব, যে ব্যক্তি এরপর সীমা অতিক্রম করবে, তার জন্য যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি রয়েছে।
Zohurul Hoque
ওহে যারা ঈমান এনেছ! আল্লাহ্ নিশ্চয়ই তোমাদের পরীক্ষা করবেন শিকারের কিছু ব্যাপারে যা তোমাদের হাত ও তোমাদের বর্শা নাগাল পায়, যেন আল্লাহ্ যাচাই করতে পারেন কে তাঁকে ভয় করে অগোচরে। কাজেই যে কেউ এর পরেও সীমালঙ্ঘন করে তার জন্য ব্যথাদায়ক শাস্তি।