Skip to content

কুরআন মজীদ সূরা আল মায়িদাহ আয়াত ৭৭

Qur'an Surah Al-Ma'idah Verse 77

আল মায়িদাহ [৫]: ৭৭ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ

قُلْ يٰٓاَهْلَ الْكِتٰبِ لَا تَغْلُوْا فِيْ دِيْنِكُمْ غَيْرَ الْحَقِّ وَلَا تَتَّبِعُوْٓا اَهْوَاۤءَ قَوْمٍ قَدْ ضَلُّوْا مِنْ قَبْلُ وَاَضَلُّوْا كَثِيْرًا وَّضَلُّوْا عَنْ سَوَاۤءِ السَّبِيْلِ ࣖ (المائدة : ٥)

qul
قُلْ
Say
বলো
yāahla
يَٰٓأَهْلَ
"O People
"হে অধিকারীরা
l-kitābi
ٱلْكِتَٰبِ
(of) the Book!
কিতাবের
لَا
(Do) not
না
taghlū
تَغْلُوا۟
exceed
তোমরা বাড়াবাড়ি করো
فِى
in
ব্যাপারে
dīnikum
دِينِكُمْ
your religion
দীনের তোমাদের
ghayra
غَيْرَ
other than
নয়
l-ḥaqi
ٱلْحَقِّ
the truth
ন্যায়
walā
وَلَا
and (do) not
এবং না
tattabiʿū
تَتَّبِعُوٓا۟
follow
তোমরা অনুসরণ করো
ahwāa
أَهْوَآءَ
(vain) desires
খেয়ালখুশির
qawmin
قَوْمٍ
(of) a people
সম্প্রদায়ের
qad
قَدْ
certainly
নিশ্চয়ই
ḍallū
ضَلُّوا۟
who went astray
তারা পথভ্রষ্ট হয়েছে
min
مِن
from
থেকেও
qablu
قَبْلُ
before
পূর্ব
wa-aḍallū
وَأَضَلُّوا۟
and they misled
ও তারা পথভ্রষ্ট করেছে
kathīran
كَثِيرًا
many
অনেককে
waḍallū
وَضَلُّوا۟
and they have strayed
এবং তারা ভ্রষ্ট হয়েছে
ʿan
عَن
from
হতে
sawāi
سَوَآءِ
(the) right
সরল সোজা
l-sabīli
ٱلسَّبِيلِ
[the] way
পথ

Transliteration:

Qul yaaa Ahlal Kitaabi laa taghloo fee deenikum ghairal haqqi wa laa tattabi'ooo ahwaaa'a qawmin qad dalloo min qablu wa adalloo kaseeranw wa dalloo 'an Sawaaa'is Sabeel (QS. al-Māʾidah:77)

English Sahih International:

Say, "O People of the Scripture, do not exceed limits in your religion beyond the truth and do not follow the inclinations of a people who had gone astray before and misled many and have strayed from the soundness of the way." (QS. Al-Ma'idah, Ayah ৭৭)

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

বল, হে কিতাবধারীগণ! তোমরা তোমাদের দ্বীন সম্বন্ধে অন্যায়ভাবে বাড়াবাড়ি করো না, আর সেই সম্প্রদায়ের খেয়াল খুশির অনুসরণ করো না যারা ইতোপূর্বে পথভ্রষ্ট হয়ে গেছে, অনেককে পথভ্রষ্ট করেছে আর সোজা পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে গেছে। (আল মায়িদাহ, আয়াত ৭৭)

Tafsir Ahsanul Bayaan

বল, ‘হে ঐশীগ্রন্থধারিগণ! তোমরা তোমাদের ধর্ম সম্বন্ধে বাড়াবাড়ি করো না[১] এবং যে সম্প্রদায় ইতিপূর্বে পথভ্রষ্ট হয়েছে ও অনেককে পথভ্রষ্ট করেছে[২] এবং সরল পথ হতে বিচ্যুত হয়েছে তাদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করো না।’

[১] অর্থাৎ, সত্যের অনুসরণ করতে গিয়ে সীমা অতিক্রম করো না। যাঁর সম্মান প্রদর্শন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তাঁর ব্যাপারে বাড়াবাড়ি ও অতিরঞ্জন করে তাঁকে আল্লাহর আসনে অধিষ্ঠিত করো না। যেমন ঈসা (আঃ)-এর ব্যাপারে তোমরা করেছ। অতিরঞ্জন সর্বযুগে শিরক ও ভ্রষ্টতার সব থেকে বড় উপকরণ হিসাবে দেখা গেছে। মানুষের মনে যাঁর প্রতি নিতান্ত বিশ্বাস ও ভালোবাসা আছে, সে তাঁর ব্যাপারে অতিরঞ্জন ও বাড়াবাড়ি করে থাকে। তিনি যদি ইমাম বা ধর্মীয় নেতা হন, তাহলে তাঁকে নবীদের মত নিষ্পাপ মনে করা এবং নবীদেরকে আল্লাহর গুণে গুণান্বিত করা তো সাধারণ ব্যাপার। দুর্ভাগ্যবশতঃ মুসলিমরাও এই অতিরঞ্জন থেকে মুক্ত নয়। তারাও কিছু ইমাম ও উলামার ব্যাপারে অতিরঞ্জন ও বাড়াবাড়ি করেছে যে, তাঁদের রায় ও উক্তি এমনকি তাঁদের প্রতি সম্পৃক্ত ফতোয়া এবং ফিকহকেও রসূল (সাঃ)-এর হাদীসের উপর অগ্রাধিকার প্রদান করেছে!

[২] অর্থাৎ, পূর্ববর্তী লোকেদের পিছে পড়ো না, যারা এক নবীকে মা'বূদ বা উপাস্য বানিয়ে নিয়ে নিজেরা ভ্রষ্ট হয়েছে এবং অন্যদেরকেও ভ্রষ্ট করেছে।

Tafsir Abu Bakr Zakaria

বলুন, ‘হে কিতাবীরা! তোমরা তোমাদের দ্বীনে অন্যায় [১] বাড়াবাড়ি করো না [২]। আর যে সম্প্রদায় ইতোপূর্বে পথভ্রষ্ট হয়েছে ও অনেককে পথভ্রষ্ট করেছে এবং সরল পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে, তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করো না [৩]।

[১] আলোচ্য আয়াতে (لَا تَغْلُوْا فِيْ دِيْنِكُمْ) বলার সাথে সাথে (غَيْرَ الْحَقِّ) বলা হয়েছে। এর অর্থ এই যে, অন্যায় বাড়াবাড়ি করো না। তাফসীরবিদদের মতে এ শব্দটি তাকীদ অর্থাৎ বিষয়বস্তুকে জোরদার করার জন্য ব্যবহৃত হয়েছে। কেননা, দ্বীনে বাড়াবাড়ি সর্বাবস্থায়ই অন্যায়। এটা ন্যায় হওয়ার কোন সম্ভাবনাই নেই। কোন কোন তাফসীরবিদ বলেন, এখানে (غَيْرَ الْحَقِّ) কথাটি (دِيْن) এর গুণ হিসেবে এসেছে। সুতরাং এর অর্থ হবে, তোমরা তোমাদের দ্বীনের মধ্যে বাড়াবাড়ি করো না। কারণ, তোমাদের দ্বীনটি হকের বিপরীত অবস্থানে রয়েছে। [তাবারী]

[২] (غُلُوّ) শব্দের অর্থ সীমা অতিক্রম করা দ্বীনের সীমা অতিক্রম করার অর্থ এই যে, বিশ্বাস ও কর্মের ক্ষেত্রে দ্বীন যে সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে, তা লংঘন করা। উদাহরণতঃ নবীদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের সীমা এই যে, আল্লাহর সৃষ্টজীবের মধ্যে তাদেরকে সর্বোত্তম মনে করতে হবে। এ সীমা অতিক্রম করে তাদেরকে আল্লাহ কিংবা আল্লাহর পুত্র বলে দেয়া হচ্ছে বিশ্বাসগত সীমা লংঘন। নবীদের প্রতি মিথ্যারোপ করা এবং হত্যা করতেও কুষ্ঠিত না হওয়া অথবা তাদেরকে স্বয়ং আল্লাহ কিংবা আল্লাহর পুত্র বলে দেয়া বনী-ইসরাঈলের এ পরস্পর বিরোধী দু’টি কাজই হচ্ছে মূর্খতাপ্রসূত বাড়াবাড়ি। মূর্খ ব্যক্তি কখনো মিথ্যাচার অথবা মধ্যপন্থা অবলম্বন করতে পারে না। হয় সে বাড়াবাড়িতে লিপ্ত হয়, না হয় সীমালংঘনে। তাই আয়াতে বনী-ইসরাঈলদেরকে এ ধরনের বাড়াবাড়ি থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। [ইবন কাসীর, ফাতহুল কাদীর]

[৩] আলোচ্য আয়াতের শেষভাগে বর্তমান কালের বনী-ইসরাঈলদেরকে সম্বোধন করে বলা হয়েছে, তোমরা ঐ সম্প্রদায়ের অনুসরণ করো না, যারা তোমাদের পূর্বে নিজের পথভ্রষ্ট হয়েছিল এবং অপরকেও পথভ্রষ্ট করেছিল। অতঃপর তাদের পথভ্রষ্টতার স্বরূপ ও কারণ বর্ণনা করে বলা হয়েছে, তারা সরল পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়েছিল, যা ছিল বাড়াবাড়ি ও ক্রটির মাঝখানে মধ্যবর্তী পথ। এর দ্বারা হয় তারা নিজেরাই ভ্রান্ত পথে অগ্রসর হয়েছিল, না হয় তাদেরকে অন্যরা ভ্রান্তপথে পরিচালিত করেছিল। [তাবারী, ফাতহুল কাদীর]

Tafsir Bayaan Foundation

বল, ‘হে কিতাবীরা, সত্য ছাড়া তোমরা তোমাদের ধর্মের ব্যাপারে সীমালঙ্ঘন করো না এবং এমন কওমের প্রবৃত্তির অনুসরণ করো না, যারা পূর্বে পথভ্রষ্ট হয়েছে, আর অনেককে পথভ্রষ্ট করেছে এবং সোজা পথ বিচ্যুত হয়েছে।

Muhiuddin Khan

বলুনঃ হে আহলে কিতাবগন, তোমরা স্বীয় ধর্মে অন্যায় বাড়াবাড়ি করো না এবং এতে ঐ সম্প্রদায়ের প্রবৃত্তির অনুসরণ করো না, যারা পূর্বে পথভ্রষ্ট হয়েছে এবং অনেককে পথভ্রষ্ট করেছে। তারা সরল পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়েছে।

Zohurul Hoque

বলো -- ''হে গ্রন্থপ্রাপ্ত লোকেরা! তোমাদের ধর্মমতে বাড়াবাড়ি করো না সত্য কারণ ছাড়া, আর লোকদের হীন-কামনার অনুবর্তী হয়ো না, -- যারা ইতিপূর্বে পথভ্রষ্ট হয়েছিল আর বহুজনকে করেছিল পথহারা, আর বিপথে গিয়েছিল সরল পথ থেকে।