Skip to content

কুরআন মজীদ সূরা আল মায়িদাহ আয়াত ২৬

Qur'an Surah Al-Ma'idah Verse 26

আল মায়িদাহ [৫]: ২৬ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ

قَالَ فَاِنَّهَا مُحَرَّمَةٌ عَلَيْهِمْ اَرْبَعِيْنَ سَنَةً ۚيَتِيْهُوْنَ فِى الْاَرْضِۗ فَلَا تَأْسَ عَلَى الْقَوْمِ الْفٰسِقِيْنَ ࣖ (المائدة : ٥)

qāla
قَالَ
(Allah) said
(আল্লাহ) বললেন
fa-innahā
فَإِنَّهَا
"Then indeed it
"অত:পর নিশ্চয়ই তা
muḥarramatun
مُحَرَّمَةٌ
(will be) forbidden
নিষিদ্ধ (করা হলো)
ʿalayhim
عَلَيْهِمْۛ
to them
উপর তাদের
arbaʿīna
أَرْبَعِينَ
(for) forty
চল্লিশ
sanatan
سَنَةًۛ
years
বছর (পর্যন্ত)
yatīhūna
يَتِيهُونَ
they will wander
তারা উদ্ভ্রান্ত হয়ে ফিরবে
فِى
in
উপর
l-arḍi
ٱلْأَرْضِۚ
the earth
পৃথিবীর
falā
فَلَا
So (do) not
অতএব না
tasa
تَأْسَ
grieve
দু:খ করো
ʿalā
عَلَى
over
জন্যে
l-qawmi
ٱلْقَوْمِ
the people"
(ঐসব)সম্প্রদায়ের"
l-fāsiqīna
ٱلْفَٰسِقِينَ
the defiantly disobedient"
(যারা)সত্যত্যাগী"

Transliteration:

Qaala fa innahaa muhar ramatun 'alaihim arba'eena sanah; yateehoona fil ard; falaa taasa 'alal qawmil faasiqeen (QS. al-Māʾidah:26)

English Sahih International:

[Allah] said, "Then indeed, it is forbidden to them for forty years [in which] they will wander throughout the land. So do not grieve over the defiantly disobedient people." (QS. Al-Ma'idah, Ayah ২৬)

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

আল্লাহ বললেন, তবে তা চল্লিশ বছর পর্যন্ত তাদের জন্য নিষিদ্ধ হল, উদভ্রান্তের মত তারা যমীনে ঘুরে বেড়াবে, কাজেই এই অবাধ্য সম্প্রদায়ের জন্য হা-হুতাশ করো না। (আল মায়িদাহ, আয়াত ২৬)

Tafsir Ahsanul Bayaan

(আল্লাহ) বললেন, ‘তবে এ (ভূমি) চল্লিশ বছর তাদের জন্য নিষিদ্ধ রইল। তারা ভূ-পৃষ্ঠে উদ্ভ্রান্ত হয়ে ঘুরে বেড়াবে,[১] সুতরাং তুমি সত্যত্যাগী সম্প্রদায়ের জন্য দুঃখ করো না।’ [২]

[১] এই ভূ-পৃষ্ঠকে ময়দানে 'তীহ' বলা হয়। ('তীহ' গোলক-ধাঁধার ময়দানকে বলে।) এই ময়দানে চল্লিশ বছর পর্যন্ত এই জাতি নিজেদের বিদ্রোহের ও জিহাদ থেকে বিমুখতা অবলম্বন করার কারণে উদ্ভ্রান্ত হয়ে ঘুরে বেড়ায়। এর পরেও (আল্লাহর পক্ষ থেকে) এই ময়দানে 'মান্ন্' ও 'সালওয়া' অবতরণ হয়। যা (খেতে খেতে) বিরক্ত হয়ে তারা তাদের নবী (মূসা (আঃ))-কে বলে, 'প্রতিদিন একই খাবার খাওয়ার কারণে আমাদের অরুচি হয়ে গেছে। অতএব আপনি আপনার প্রভুর নিকট দু'আ করুন যে, তিনি যেন আমাদের জন্য বিভিন্ন ধরনের সবজী ও ডাল উৎপন্ন করেন।' এই ময়দানেই তাদের উপর মেঘ দ্বারা ছায়া দান করা হয়। এখানেই মূসা (আঃ) লাঠি দ্বারা পাথরকে আঘাত করলে বারো গোত্রের জন্য বারোটি ঝর্ণা নিঃসৃত হয় এবং অনুরূপ তারা আরো বহুভাবে নিয়ামতপ্রাপ্ত হতে থাকে। পরিশেষে চল্লিশ বছর পর এমন অবস্থার সৃষ্টি হয় যে, তখন তারা বায়তুল মাকদিস প্রবেশ করে।

[২] নবী (মূসা (আঃ)) দাওয়াত ও তাবলীগ করার পর যখন দেখেন যে, তাঁর গোত্র সোজা ও সরল পথ অবলম্বনে প্রস্তুত নয়; যার মধ্যে তাদের ইহকাল ও পরকালে কল্যাণ ও মঙ্গল রয়েছে, তখন প্রকৃতিগতভাবে তিনি বড় আক্ষেপ ও আন্তরিকভাবে দুঃখ-দুশ্চিন্তার শিকার হয়ে পড়েন। ঠিক একই অবস্থা মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর হত, যা কুরআন শরীফের বিভিন্ন জায়গায় বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু আলোচ্য আয়াতে মূসা (আঃ)-কে সম্বোধন করে বলা হচ্ছে যে, যখন তুমি তাবলীগের গুরুভার আদায় করেছ এবং আল্লাহর পয়গাম লোকদের নিকট পৌঁঁছে দিয়েছ, তুমি তোমার জাতিকে এক মহান সফলতার দ্বার প্রান্তে উপস্থিত করেছ, কিন্তু তারা তাদের হীনন্মন্যতা ও দুর্মতির কারণে তোমার কথা মান্য করে না, তখন তুমি তোমার কর্তব্য পালনের দায়িত্ব হতে নিষ্কৃতি পেয়ে গেছ। সুতরাং তোমাকে এ ব্যাপারে দুঃখিত ও চিন্তিত হওয়ার কোন প্রয়োজন নেই। এমন পরিস্থিতিতে দুঃখিত ও চিন্তিত হওয়াটা একটা প্রকৃতগত ব্যাপার ছিল। কিন্তু সান্ত্বনা দানের উদ্দেশ্য এই ছিল যে, দাওয়াত ও তাবলীগের পর আল্লাহর নিকটে তুমি দায়িত্বমুক্ত।

Tafsir Abu Bakr Zakaria

আল্লাহ বললেন, ‘তবে তা [১] চল্লিশ বছর তাদের জন্য নিষিদ্ধ করা হল, তারা যমীনে উদ্ভ্রান্ত হয়ে ঘুরে বেড়াবে, কাজেই আপনি ফাসিক সম্প্রদায়ের জন্য দুঃখ করবেন না [২] ।’

[১] অর্থাৎ সে পবিত্র ভূমিতে প্রবেশ করার অধিকার তারা চল্লিশ বছরের জন্য হারিয়েছে। কারণ তারা অবাধ্যতা করেছিল। এটা ছিল তাদের জন্য নির্ধারিত দুনিয়ার শাস্তি। হয়ত এর মাধ্যমে তাদের উপর আপতিত কোন কঠোর শাস্তি লাঘব করা হয়েছিল। চল্লিশ বছর নির্ধারনের কারণ সম্ভবত; এই ছিল যে, এ সময়ের মধ্যে সে জনগোষ্ঠীর অধিকাংশের মৃত্যু সংঘটিত হবে, যারা ফিরআউনের দাসত্ব ও তাবেদারীর কারণে ইজ্জতের যিন্দেগী যাপন করার মত হিম্মত অবশিষ্ট ছিল না। পরবর্তীতে যারা সেই কঠোর প্রতিকুল অবস্থায় জন্মলাভ করেছিল তারাই শক্রদের পরাভূত করার মত সাহসী হতে পেরেছিল। [সা’দী]

[২] মহান আল্লাহ যখন জানলেন যে, মূসা ‘আলাইহিস সালাম সম্ভবত; তার কাওমের জন্য দয়াপরবশ হবেন এবং তাদের প্রতি নাযিলকৃত শাস্তির জন্য দুঃখবোধ করতে থাকবেন, তখন আল্লাহ্ তা'আলা মূসা ‘আলাইহিস সালামকে এ ব্যাপারে আফসোস না করার নির্দেশ দিলেন। যাতে তিনি জানিয়ে দিলেন যে, এ শাস্তিটুকু তাদের অপরাধের কারণে, এর মাধ্যমে আল্লাহ তা'আলা বান্দার উপর সামান্যও জুলুম করেন নি। [সা’দী]

Tafsir Bayaan Foundation

তিনি বললেন, ‘তাহলে নিশ্চয় তা তাদের জন্য চল্লিশ বছর নিষিদ্ধ; তারা যমীনে উদ্ভ্রান্ত হয়ে ঘুরতে থাকবে। সুতরাং তুমি ফাসিক কওমের জন্য আফসোস করো না’।

Muhiuddin Khan

বললেনঃ এ দেশ চল্লিশ বছর পর্যন্ত তাদের জন্যে হারাম করা হল। তারা ভুপৃষ্ঠে উদভ্রান্ত হয়ে ফিরবে। অতএব, আপনি অবাধ্য সম্প্রদায়ের জন্যে দুঃখ করবেন না।

Zohurul Hoque

তিনি বললেন -- ''তবে নিঃসন্দেহ এটি তাদের জন্য হারাম থাকবে চল্লিশ বৎসর কাল, তারা পৃথিবীতে ঘুরে বেড়াবে। অতএব দুঃখ করো না এই দুষ্কৃতিপরায়ণ জাতির জন্য।