Skip to content

কুরআন মজীদ সূরা আল মায়িদাহ আয়াত ২১

Qur'an Surah Al-Ma'idah Verse 21

আল মায়িদাহ [৫]: ২১ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ

يٰقَوْمِ ادْخُلُوا الْاَرْضَ الْمُقَدَّسَةَ الَّتِيْ كَتَبَ اللّٰهُ لَكُمْ وَلَا تَرْتَدُّوْا عَلٰٓى اَدْبَارِكُمْ فَتَنْقَلِبُوْا خٰسِرِيْنَ (المائدة : ٥)

yāqawmi
يَٰقَوْمِ
"O my people!
"হে আমার জাতি
ud'khulū
ٱدْخُلُوا۟
Enter
তোমরা প্রবেশ করো
l-arḍa
ٱلْأَرْضَ
the land
জমিনে
l-muqadasata
ٱلْمُقَدَّسَةَ
the Holy
পবিত্র (ফিলিস্তিনের)
allatī
ٱلَّتِى
which
যা
kataba
كَتَبَ
(has been) ordained
নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন
l-lahu
ٱللَّهُ
(by) Allah
আল্লাহ
lakum
لَكُمْ
for you
জন্যে তোমাদের
walā
وَلَا
and (do) not
এবং না
tartaddū
تَرْتَدُّوا۟
turn
তোমরা ফিরো
ʿalā
عَلَىٰٓ
on
দিকে
adbārikum
أَدْبَارِكُمْ
your backs
পিছনের তোমাদের
fatanqalibū
فَتَنقَلِبُوا۟
then you will turn back
তাহ'লে তোমরা প্রত্যাবর্তন করবে
khāsirīna
خَٰسِرِينَ
(as) losers"
ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে"

Transliteration:

Yaa qawmid khulul Ardal MMuqaddasatal latee katabal laahu lakum wa laa tartaddoo 'alaaa adbaarikum fatanqaliboo khaasireen (QS. al-Māʾidah:21)

English Sahih International:

O my people, enter the blessed land [i.e., Palestine] which Allah has assigned to you and do not turn back [from fighting in Allah's cause] and [thus] become losers." (QS. Al-Ma'idah, Ayah ২১)

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

হে আমার সম্প্রদায়! তোমাদের জন্য যে পবিত্র ভূমি আল্লাহ নির্দিষ্ট করেছেন তাতে প্রবেশ কর আর পশ্চাতে ঘুরে দাঁড়িও না, তা করলে ধ্বংসে পতিত হবে। (আল মায়িদাহ, আয়াত ২১)

Tafsir Ahsanul Bayaan

হে আমার সম্প্রদায়! আল্লাহ তোমাদের জন্য যে পবিত্র ভূমি[১] নির্দিষ্ট করেছেন (লিখে দিয়েছেন), তাতে তোমরা প্রবেশ কর[২] এবং পশ্চাদপসরণ করো না,[৩] করলে তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে।’

[১] বানী ইসরাঈলের প্রধান পুরুষ ইয়াকুব (আঃ)-এর বাসস্থান ছিল বায়তুল মুকাদ্দাস (জেরুজালেম)। কিন্তু তাঁর পুত্র ইউসুফ (আঃ) মিসরের রাষ্ট্রপ্রধান হওয়ার পর তাঁরা সকলেই মিসরে গিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে থাকেন। পরিশেষে মূসা (আঃ) ফিরআউনের কবল থেকে মুক্তিলাভের জন্য গোপনভাবে রাতারাতি বানী ইস্রাঈলকে নিয়ে মিসর থেকে চলে আসেন। কিন্তু সে সময় বায়তুল মুকাদ্দাসে আমালেকাদের শাসন ছিল, যারা এক বীর-বাহাদুর গোত্র রূপে পরিচিত ছিল। যখন মূসা (আঃ) পুনরায় বায়তুল মুকাদ্দাসে গিয়ে বসবাস করার ইচ্ছা পোষণ করলেন তখন তার জন্য ক্ষমতাসীন আমালেকাদের বিরুদ্ধে জিহাদ জরুরী ছিল। সুতরাং মূসা (আঃ) নিজ গোত্রকে ঐ পবিত্র ভূমিতে প্রবেশ করার নির্দেশ দিলেন এবং সাথে সাথে আল্লাহর সাহায্যের সুসংবাদও শুনালেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও বানী ইস্রাঈল আমালেকাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে প্রস্তুত হল না। (তাফসীরে ইবনে কাসীর)

[২] এর উদ্দেশ্য, ঐ বিজয় ও সাহায্য; যার প্রতিশ্রুতি আল্লাহ জিহাদের শর্তে দিয়ে রেখেছিলেন।

[৩] অর্থাৎ জিহাদ থেকে বিমুখ হয়ো না।

Tafsir Abu Bakr Zakaria

‘হে আমার সম্প্রদায়! আল্লাহ তোমাদের জন্য যে পবিত্র ভূমি লিখে দিয়েছেন তাতে তোমরা প্রবেশ কর [১] এবং পশ্চাদপসরণ করো না, করলে তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে প্রত্যাবর্তন করবে’।

[১] এখানে পবিত্র ভূমি বলতে কোন্‌ ভূমি বোঝানো হয়েছে, এ প্রশ্নে তাফসীরবিদগণের বিভিন্ন মত রয়েছে। কারো মতে বায়তুল-মুকাদ্দাস, কারো মতে কুদস শহর ও ইলিয়া এবং কেউ কেউ বলেন, আরিহা শহর- যা জর্দান নদী ও বায়তুল মুকাদ্দাসের মধ্যস্থলে বিশ্বের একটি প্রাচীনতম শহর যা পূর্বেও ছিল এবং এখনও আছে। কোন কোন রেওয়ায়েতে আছে যে, পবিত্র ভূমি বলে দামেস্ক ও ফিলিস্তিনকে এবং কারো মতে জর্দানকে বোঝানো হয়েছে। কাতাদাহ বলেনঃ সমগ্র শামই পবিত্র ভূমি। [ইবন কাসীর, আত-তাফসীরুস সহীহ]

আল্লাহ্ তা’আলা মূসা ‘আলাইহিস সালামের মাধ্যমে বনী-ইসরাঈলকে আমালেকা সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে জিহাদ করে শামদেশ দখল করতে বলেছিলেন। সাথে সাথে এ সুসংবাদও দিয়েছিলেন যে, এ পবিত্র ভূখণ্ড তাদের জন্যে লেখা হয়ে গেছে। কাজেই তোমাদের বিজয় সুনিশ্চিত। তা সত্বেও বনী-ইসরাঈল চিরাচরিত ঔদ্ধত্য ও বক্র স্বভাবের কারণে এ নির্দেশ পালনে স্বীকৃত হল না; বরং মূসা ‘আলাইহিস সালামকে বললঃ হে মূসা, এ দেশে প্রবল পরাক্রান্ত জাতি বাস করে। যতদিন এ দেশ তাদের দখলে থাকবে, ততদিন আমরা সেখানে প্রবেশ করব না। যদি তারা অন্য কোথাও চলে যায়, তবে আমরা সেখানে যেতে পারি। বিভিন্ন তাফসীরে এসেছে, তখন সিরিয়া ও বায়তুল-মুকাদ্দাস আমালেকা সম্প্রদায়ের দখলে ছিল। তারা ছিল ‘আদ’ সম্প্রদায়ের একটি শাখা। দৈহিক দিক দিয়ে তারা অত্যন্ত সুঠাম, বলিষ্ঠ ও ভয়াবহ আকৃতিবিশিষ্ট ছিল। তাদের সাথেই জিহাদ করে বায়তুল-মুকাদাস অধিকার করার নির্দেশ মূসা ‘আলাইহিস সালাম ও তাঁর সম্প্রদায়কে দেয়া হয়েছিল। মূসা ‘আলাইহিস সালাম আল্লাহর নির্দেশ পালনের জন্যে বনীইসরাঈলকে সঙ্গে নিয়ে শাম দেশ অভিমুখে রওয়ানা হলেন। কিন্তু বনী-ইসরাঈল যেখানে নবীর কথার প্রতিই কর্ণপাত করল না, সেখানে তাদের উপদেশের আর মূল্য কি? তারা পূর্বের জবাবেরই আরও বিশ্রী ভঙ্গিতে পুনরাবৃত্তি করে বললঃ “আপনি ও আপনার আল্লাহ উভয়ে গিয়েই যুদ্ধ করুন। আমরা এখানেই বসে থাকব”। কথাটি অত্যন্ত বিশ্রী ও পীড়াদায়ক। এ কারণেই তাদের এ বাক্যটি প্রবাদ বাক্যের রূপ পরিগ্রহ করেছে। বদরযুদ্ধে নিরস্ত্র ও ক্ষুধার্ত মুসলিমদের মোকাবেলায় কাফেরদের এক হাজার সশস্ত্র বাহিনী প্রস্তুত হয়েছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দৃশ্য দেখে আল্লাহর দরবারে দোআ করতে লাগলেন। এতে সাহাবী মিকদাদ ইবন আসওয়াদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেনঃ ‘ইয়া রসূলাল্লাহ আল্লাহর কসম, আমরা কস্মিন কালেও ঐকথা বলব না, যা মূসা ‘আলাইহিস সালামকে তার স্বজাতি বলেছিল; বরং আমরা আপনার ডানে, বামে, সামনে ও পেছনে থেকে শক্রর আক্রমণ প্রতিহত করব। আপনি নিশ্চিন্তে যুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণ করুন।’ [বুখারীঃ ৩৭৩৬]

Tafsir Bayaan Foundation

‘হে আমার কওম, তোমরা পবিত্র ভূমিতে প্রবেশ কর, যা আল্লাহ তোমাদের জন্য লিখে দিয়েছেন এবং তোমরা তোমাদের পেছনে ফিরে যেয়ো না, তাহলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে প্রত্যাবর্তন করবে’।

Muhiuddin Khan

হে আমার সম্প্রদায়, পবিত্র ভুমিতে প্রবেশ কর, যা আল্লাহ তোমাদের জন্যে নির্ধারিত করে দিয়েছেন এবং পেছন দিকে প্রত্যাবর্তন করো না। অন্যথায় তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে।

Zohurul Hoque

''হে আমার লোকদল! সেই পুণ্য ভূমিতে প্রবেশ করো যা আল্লাহ্ তোমাদের জন্য বিধান করেছেন, আর তোমাদের পেছন দিকে ফিরে যাবে না, কেননা তোমরা তাহলে মোড় ফেরাবে ক্ষতিগ্রস্তভাবে।’’