Skip to content

কুরআন মজীদ সূরা আল হুজরাত আয়াত ৯

Qur'an Surah Al-Hujurat Verse 9

আল হুজরাত [৪৯]: ৯ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ

وَاِنْ طَاۤىِٕفَتٰنِ مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ اقْتَتَلُوْا فَاَصْلِحُوْا بَيْنَهُمَاۚ فَاِنْۢ بَغَتْ اِحْدٰىهُمَا عَلَى الْاُخْرٰى فَقَاتِلُوا الَّتِيْ تَبْغِيْ حَتّٰى تَفِيْۤءَ اِلٰٓى اَمْرِ اللّٰهِ ۖفَاِنْ فَاۤءَتْ فَاَصْلِحُوْا بَيْنَهُمَا بِالْعَدْلِ وَاَقْسِطُوْا ۗاِنَّ اللّٰهَ يُحِبُّ الْمُقْسِطِيْنَ (الحجرات : ٤٩)

wa-in
وَإِن
And if
এবং যদি
ṭāifatāni
طَآئِفَتَانِ
two parties
দুটি দল
mina
مِنَ
among
মধ্য হতে
l-mu'minīna
ٱلْمُؤْمِنِينَ
the believers
মু'মিনদের
iq'tatalū
ٱقْتَتَلُوا۟
fight
পরস্পরে যুদ্ধে লিপ্ত হয়
fa-aṣliḥū
فَأَصْلِحُوا۟
then make peace
তবে তোমরা  মীমাংসা করে দাও
baynahumā
بَيْنَهُمَاۖ
between both of them
তাদের উভয়ের মাঝে
fa-in
فَإِنۢ
But if
যদি অতঃপর
baghat
بَغَتْ
oppresses
সীমালংঘন করে
iḥ'dāhumā
إِحْدَىٰهُمَا
one of them
তাদের একদল
ʿalā
عَلَى
on
বিরুদ্ধে
l-ukh'rā
ٱلْأُخْرَىٰ
the other
অন্যের
faqātilū
فَقَٰتِلُوا۟
then fight
তবে তোমরা যুদ্ধ করো
allatī
ٱلَّتِى
one which
(তার বিরুদ্ধে) যে
tabghī
تَبْغِى
oppresses
সীমালংঘন করে
ḥattā
حَتَّىٰ
until
যতক্ষণ না
tafīa
تَفِىٓءَ
it returns
ফিরে আসে
ilā
إِلَىٰٓ
to
দিকে
amri
أَمْرِ
(the) command
নির্দেশের
l-lahi
ٱللَّهِۚ
(of) Allah
আল্লাহর
fa-in
فَإِن
Then if
যদি অতঃপর
fāat
فَآءَتْ
it returns
ফিরে আসে
fa-aṣliḥū
فَأَصْلِحُوا۟
then make peace
তবে তোমরা মীমাংসা করে দাও
baynahumā
بَيْنَهُمَا
between them
তাদের উভয়ের মাঝে
bil-ʿadli
بِٱلْعَدْلِ
with justice
ন্যায়ানুগভাবে
wa-aqsiṭū
وَأَقْسِطُوٓا۟ۖ
and act justly
এবং তোমরা সুবিচার করো
inna
إِنَّ
Indeed
নিশ্চয়ই
l-laha
ٱللَّهَ
Allah
আল্লাহ
yuḥibbu
يُحِبُّ
loves
পছন্দ করেন
l-muq'siṭīna
ٱلْمُقْسِطِينَ
those who act justly
সুবিচারকারীদেরকে

Transliteration:

Wa in taaa'ifataani minal mu'mineenaq tataloo faaslihoo bainahumaa fa-im baghat ih daahumaa 'alal ukhraa faqaatilul latee tabhee hattaa tafeee'a ilaaa amril laah; fa-in faaa't fa aslihoo bainahumaa bil'adli wa aqsitoo innal laaha yuhibbul muqsiteen (QS. al-Ḥujurāt:9)

English Sahih International:

And if two factions among the believers should fight, then make settlement between the two. But if one of them oppresses the other, then fight against the one that oppresses until it returns to the ordinance of Allah. And if it returns, then make settlement between them in justice and act justly. Indeed, Allah loves those who act justly. (QS. Al-Hujurat, Ayah ৯)

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

মু’মিনদের দু’দল লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়লে তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দাও। অতঃপর একটি দল অপরটির উপর বাড়াবাড়ি করলে যে দলটি বাড়াবাড়ি করে, তার বিরুদ্ধে তোমরা লড়াই কর যতক্ষণ না সে দলটি আল্লাহর নির্দেশের দিকে ফিরে আসে। অতঃপর যদি দলটি ফিরে আসে, তাহলে তাদের মধ্যে ইনসাফের সঙ্গে ফয়সালা কর আর সুবিচার কর; আল্লাহ সুবিচারকারীদেরকে ভালবাসেন। (আল হুজরাত, আয়াত ৯)

Tafsir Ahsanul Bayaan

বিশ্বাসীদের দুই দল যুদ্ধে লিপ্ত হলে তোমরা তাদের মধ্যে সন্ধি স্থাপন কর;[১] অতঃপর তাদের একদল অপর দলের প্রতি বিদ্রোহাচরণ করলে তোমরা বিদ্রোহী দলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর; যতক্ষণ না তারা আল্লাহর নির্দেশের দিকে ফিরে আসে,[২] যদি তারা ফিরে আসে, তাহলে তাদের মধ্যে ন্যায়ের সাথে সন্ধি স্থাপন কর[৩] এবং সুবিচার কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ সুবিচারকারীদেরকে ভালবাসেন। [৪]

[১] এই সন্ধির পদ্ধতি হল, তাদেরকে কুরআন ও হাদীসের প্রতি আহবান করতে হবে। অর্থাৎ, কুরআন ও হাদীসের আলোকে তাদের দ্বন্দ্বের সমাধান খুঁজতে হবে।

[২] অর্থাৎ, আল্লাহ ও তাঁর রসূল (সাঃ)-এর বিধানানুসারে নিজেদের দন্ধ মিটাতে না চায়, বরং ঔদ্ধত্য ও বিদ্রোহের পথ অবলম্বন করে, তবে অন্য মুসলিমদের কর্তব্য হবে বিদ্রোহী দলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা, যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহর নির্দেশকে মেনে নিতে প্রস্তুত হয়ে যায়। আলোচ্য আয়াতে বিদ্রোহী দলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অথচ হাদীসে কোন মুসলিমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা কুফরী বলা হয়েছে। তো কথা হল, এটা কুফরী তখনই হবে, যখন বিনা কারণে মুসলিমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হবে। কিন্তু এই যুদ্ধের ভিত্তি যদি বিদ্রোহ হয়, তবে এই যুদ্ধ কেবল জায়েযই নয়, বরং তার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যা প্রমাণ করে যে, এ যুদ্ধ উত্তম ও তাকীদপ্রাপ্ত। অনুরূপ কুরআন বিদ্রোহী এই দলটিকে বিশ্বাসী (মু'মিন) বলেই আখ্যায়িত করেছে; যার অর্থ এই যে, শুধু বিদ্রোহের কারণে, যা মহাপাপ তার ফলে ঐ দলটি ঈমান থেকে খারিজ হয়ে যায় না। যেমন, খাওয়ারিজ এবং কোন কোন মু'তাযিলাদের আকীদা-বিশ্বাস। তাদের মতে মহাপাপ সম্পাদনকারীরা ঈমান থেকে বহিষ্কার হয়ে যায়।

[৩] অর্থাৎ, বিদ্রোহী দলটি যদি বিদ্রোহাচরণ থেকে আল্লাহর নির্দেশের দিকে ফিরে আসে, তবে ন্যায়ভাবে অর্থাৎ, কুরআন ও হাদীসের আলোকে উভয় দলের মাঝে মীমাংসা ও সালিস করে দিতে হবে।

[৪] আর তাঁর এই ভালবাসার এটাই দাবী যে, তিনি সুবিচারকারীদেরকে উত্তম প্রতিদান দানে ধন্য করবেন।

Tafsir Abu Bakr Zakaria

আর মুমিনদের দু’দল দ্বন্দ্বে লিপ্ত হলে তোমরা তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দাও ; অতঃপর তাদের একদল অন্য দলের বিরুদ্ধে বাড়াবাড়ি করলে, যারা বাড়াবাড়ি করে তাদের বিরুদ্ধে তোমরা যুদ্ধ কর, যতক্ষণ না তারা আল্লাহর নির্দেশের দিকে ফিরে আসে। তারপর যদি তারা ফিরে আসে, তবে তাদের মধ্যে ইনসাফের সাথে আপোষ মীমাংসা করে দাও এবং ন্যায়বিচার কর। নিশ্চয় আল্লাহ ন্যায়বিচারকদেরকে ভালবাসেন।

Tafsir Bayaan Foundation

আর যদি মুমিনদের দু’দল যুদ্ধে লিপ্ত হয়, তাহলে তোমরা তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দাও। অতঃপর যদি তাদের একদল অপর দলের উপর বাড়াবাড়ি করে, তাহলে যে দলটি বাড়াবাড়ি করবে, তার বিরুদ্ধে তোমরা যুদ্ধ কর, যতক্ষণ না সে দলটি আল্লাহর নির্দেশের দিকে ফিরে আসে। তারপর যদি দলটি ফিরে আসে তাহলে তাদের মধ্যে ইনসাফের সাথে মীমাংসা কর এবং ন্যায়বিচার কর। নিশ্চয় আল্লাহ ন্যায়বিচারকারীদের ভালবাসেন।

Muhiuddin Khan

যদি মুমিনদের দুই দল যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে পড়ে, তবে তোমরা তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দিবে। অতঃপর যদি তাদের একদল অপর দলের উপর চড়াও হয়, তবে তোমরা আক্রমণকারী দলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে; যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহর নির্দেশের দিকে ফিরে আসে। যদি ফিরে আসে, তবে তোমরা তাদের মধ্যে ন্যায়ানুগ পন্থায় মীমাংসা করে দিবে এবং ইনছাফ করবে। নিশ্চয় আল্লাহ ইনছাফকারীদেরকে পছন্দ করেন।

Zohurul Hoque

আর যদি মুমিনদের দুই দল লড়াই করে তাহলে তাদের উভয়ের মধ্যে শান্তি স্থাপন করো। কিন্তু তাদের একদল যদি অন্যদের বিরুদ্ধে বিবাদ করে তবে তোমরা লড়াই করবে তার সঙ্গে যে বিবাদ করছে, যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহ্‌র নির্দেশের প্রতি ফিরে আসে। তারপর যখন তারা ফেরে তখন তাদের উভয়ের মধ্যে শান্তিস্থাপন করো ন্যায়বিচারের সাথে, আর নিরপেক্ষতা অবলন্বন করবে। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ নিরপেক্ষতা-অবলন্বনকারীদের ভালবাসেন।