Skip to content

কুরআন মজীদ সূরা মুহাম্মদ আয়াত ৩৮

Qur'an Surah Muhammad Verse 38

মুহাম্মদ [৪৭]: ৩৮ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ

هٰٓاَنْتُمْ هٰٓؤُلَاۤءِ تُدْعَوْنَ لِتُنْفِقُوْا فِيْ سَبِيْلِ اللّٰهِۚ فَمِنْكُمْ مَّنْ يَّبْخَلُ ۚوَمَنْ يَّبْخَلْ فَاِنَّمَا يَبْخَلُ عَنْ نَّفْسِهٖ ۗوَاللّٰهُ الْغَنِيُّ وَاَنْتُمُ الْفُقَرَاۤءُ ۗ وَاِنْ تَتَوَلَّوْا يَسْتَبْدِلْ قَوْمًا غَيْرَكُمْۙ ثُمَّ لَا يَكُوْنُوْٓا اَمْثَالَكُمْ ࣖ (محمد : ٤٧)

hāantum
هَٰٓأَنتُمْ
Here you are -
তোমরা দেখ
hāulāi
هَٰٓؤُلَآءِ
these
ঐসব লোক (যাদের)
tud'ʿawna
تُدْعَوْنَ
called
আহবান করা হচ্ছে
litunfiqū
لِتُنفِقُوا۟
to spend
তোমরা খরচ কর যেন
فِى
in
মধ্যে
sabīli
سَبِيلِ
(the) way
পথের
l-lahi
ٱللَّهِ
(of) Allah -
আল্লাহ্‌র
faminkum
فَمِنكُم
but among you
তখন তোমাদের মধ্য হতে
man
مَّن
(are some) who
কেউ কেউ
yabkhalu
يَبْخَلُۖ
withhold
কৃপণতা করে
waman
وَمَن
and whoever
অথচ যে
yabkhal
يَبْخَلْ
withholds
কৃপণতা করে
fa-innamā
فَإِنَّمَا
then only
প্রকৃতপক্ষে
yabkhalu
يَبْخَلُ
he withholds
সে কৃপণতা করে
ʿan
عَن
from
প্রতি
nafsihi
نَّفْسِهِۦۚ
himself
তার নিজের
wal-lahu
وَٱللَّهُ
But Allah
এবং আলাহ
l-ghaniyu
ٱلْغَنِىُّ
(is) Free of need
অভাবমুক্ত
wa-antumu
وَأَنتُمُ
while you
কিন্তু তোমরা
l-fuqarāu
ٱلْفُقَرَآءُۚ
(are) the needy
অভাবগ্রস্ত
wa-in
وَإِن
And if
আর যদি
tatawallaw
تَتَوَلَّوْا۟
you turn away
তোমরা মুখ ফিরাও (তবে)
yastabdil
يَسْتَبْدِلْ
He will replace you
তিনি পরিবর্তন করে আনবেন
qawman
قَوْمًا
(with) a people
(অন্য এক) জাতিকে
ghayrakum
غَيْرَكُمْ
other than you
তোমাদের ব্যতীত
thumma
ثُمَّ
then
এরপর
لَا
not
না
yakūnū
يَكُونُوٓا۟
they will be
তারা হবে
amthālakum
أَمْثَٰلَكُم
(the) likes of you
তোমাদের মতো

Transliteration:

haaa antum haaa'ulaaa'i tud'awna litunfiqoo fee sabeelillaahi faminkum many yabkhalu wa many yabkhal fa innamaa yabkhalu 'an nafsih; wallaahu Ghaniyyu wa antumul fuqaraaa'; wa in tatwal law yastabdil qawman ghairakum summa laa yakoonooo amsaalakum (QS. Muḥammad:38)

English Sahih International:

Here you are – those invited to spend in the cause of Allah – but among you are those who withhold [out of greed]. And whoever withholds only withholds [benefit] from himself; and Allah is the Free of need, while you are the needy. And if you turn away [i.e., refuse], He will replace you with another people; then they will not be the likes of you. (QS. Muhammad, Ayah ৩৮)

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

দেখ, তোমরা তো তারাই, তোমাদেরকে আল্লাহর পথে ব্যয় করার জন্য ডাক দেয়া হচ্ছে, তখন তোমাদের কিছু লোক কৃপণতা করছে। যে কৃপণতা করে, সে কৃপণতা করে কেবল নিজের আত্মার সাথে। আল্লাহ তো অভাবহীন আর তোমরাই অভাবী। তোমরা যদি মুখ ফিরিয়ে নাও তাহলে তিনি তোমাদের পরিবর্তে অন্য জাতিকে নিয়ে আসবেন, তখন তারা তোমাদের মত হবে না। (মুহাম্মদ, আয়াত ৩৮)

Tafsir Ahsanul Bayaan

তোমরাই তো তারা যাদেরকে আল্লাহর পথে ব্যয় করতে বলা হচ্ছে[১] অথচ তোমাদের অনেকে কৃপণতা করছে; যারা কার্পণ্য করে, তারা তো কার্পণ্য করে নিজেদের প্রতি।[২] আল্লাহ অভাবমুক্ত এবং তোমরা অভাবগ্রস্ত।[৩] যদি তোমরা বিমুখ হও,[৪] তাহলে তিনি অন্য জাতিকে তোমাদের স্থলবর্তী করবেন; অতঃপর তারা তোমাদের মত হবে না। [৫]

[১] অর্থাৎ, কিয়দংশ যাকাত হিসেবে এবং কিছু আল্লাহর পথে ব্যয় কর।

[২] অর্থাৎ, নিজেকেই আল্লাহর পথে ব্যয় করার পুণ্য থেকে বঞ্চিত রাখে।

[৩] অর্থাৎ, আল্লাহ তোমাদেরকে ব্যয় করার উৎসাহ এই কারণে দেন না যে, তিনি তোমাদের ধন-সম্পদের মুখাপেক্ষী। তা আদৌ নয়। তিনি তো ধনী ও অমুখাপেক্ষী। তিনি তোমাদেরই লাভের জন্য তোমাদেরকে এই নির্দেশ দেন। যাতে প্রথমতঃ তোমাদের নাফসের পবিত্রতা সাধন হয়। দ্বিতীয়তঃ তোমাদেরই অভাবী ভাইদের প্রয়োজন পূরণ হয়। আর তৃতীয়তঃ তোমরা শত্রুদের উপর বিজয়ী ও উন্নত থাক। কাজেই আল্লাহর রহমত ও তাঁর সাহায্যের মুখাপেক্ষী তোমরাই। তিনি তোমাদের মুখাপেক্ষী নন।

[৪] অর্থাৎ, ইসলাম থেকে কুফরীর দিকে প্রত্যাবর্তন কর।

[৫] বরং তোমাদের চেয়েও বেশী আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্যশীল এবং আল্লাহর পথে অনেক ব্যয়কারী হবে। নবী করীম (সাঃ)-কে এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি সালমান ফারসী (রাঃ)-এর কাঁধে হাত রেখে বললেন, "এ থেকে লক্ষ্য এই (সালমান) এবং তাঁর গোত্রের লোক। শপথ সেই সত্তার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ রয়েছে, যদি ঈমান 'সুরাইয়া' তারকাগুচ্ছের সাথে ঝুলে থাকত, তবুও তা পারস্যের কিছু মানুষ অর্জন করে নিত। (তিরমিযী, আল্লামা আলবানী তাঁর সহীহাতেও উল্লেখ করেছেন।)

Tafsir Abu Bakr Zakaria

দেখ, তোমারাই তো তারা যাদেরকে আল্লাহর পথে ব্যয় করতে বলা হচ্ছে অথচ তোমাদের কেউ কেউ কার্পণ্য করছে। তবে যে কার্পণ্য করছে সে তো কার্পণ্য করছে নিজেরই প্রতি [১]। আর আলাহ অভাবমুক্ত এবং তোমারা অভাবগ্রস্ত। আর যদি তোমারা বিমুখ হও, তবে তিনি তোমাদের ছাড়া অন্য সম্প্রদায়কে তোমাদের স্থলবর্তী করবেন; তারপর তারা তোমাদের মত হবে না [২]।

[১] অর্থাৎ তোমাদেরকে তোমাদের ধন-সম্পদের কিছু অংশ আল্লাহর পথে ব্যয় করার দাওয়াত দেয়া হলে তোমাদের কেউ কেউ এতে কৃপণতা করে। যে ব্যক্তি এতেও কৃপণতা করে, সে আল্লাহর কোন ক্ষতি করে না; বরং এর মাধ্যমে সে নিজেরই ক্ষতি করে। [ফাতহুল কাদীর, সাদী]

[১] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন সাহাবায়ে কেরামের সামনে এই আয়াত তেলাওয়াত করলেন, তখন তারা বললেন; ইয়া রাসূলাল্লাহ, তারা কোন জাতি, যাদেরকে আমাদের স্থলে আনা হবে, অতঃপর আমাদের মত শরীয়তের বিধানাবলীর প্রতি বিমুখ হবে না? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মজলিসে উপস্থিত সালমান ফারেসী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর উরুতে হাত মেরে বললেন; সে এবং তার জাতি। যদি সত্য দ্বীন সপ্তর্ষিমণ্ডলস্থ নক্ষত্রেও থাকত, (যেখানে মানুষ পৌঁছতে পারে না)। তবে পারস্যের কিছু সংখ্যক লোক সেখানেও পৌঁছে সত্যদ্বান হাসিল করতো এবং তা মেনে চলত। [হিব্বান; ৭১২৩, তিরমিয়ী; ৩২৬০, ৩২৬১]

এখানে এ কথা স্মরণ রাখতে হবে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ভবিষ্যদ্বাণীর উদ্দেশ্য হচ্ছে, যদি কোন সম্প্রদায় আল্লাহর দ্বীন থেকে, রাসূলের সুন্নাত থেকে দূরে সরে যায়, রাসূলের দ্বীনের সাহায্য করতে পিছপা হয়, তবে আল্লাহ তাদের পরিবর্তে অন্য কাউকে এর স্থলাভিষিক্ত করবেন, তারা হতে পারে আরব, হতে পারে অনারব, হতে পারে কাছে কিংবা দূরের কোন জাতি। ইতিহাস থেকে প্রমাণিত যে আল্লাহ তা’আলা বিভিন্ন জাতির মাধ্যমে তাঁর দ্বীনের জন্য এ খেদমত নিয়েছেন। তারা সবাই পারস্য কিংবা কোন সুনির্দিষ্ট এক জাতি ছিল না। পারস্যের লোকদের মধ্য থেকে যারা এ কাজের আঞ্জাম দিয়েছেন তাদের মধ্যে বিখ্যাত হচ্ছেন, ইমাম বুখারী, তিরমিয়ী, ইবন মাজাহ, নাসায়ী সহ আরও অনেকে। তারা সবাই আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা'আতের অনুসারী ছিলেন। এ ব্যাপারে শী'আ, রাফেয়ী, মু'তাযিলা কিংবা খারেজীদের কোন সামান্যতমও খেদমত ছিল না। বরং তাদের মতবাদ খণ্ডন করতে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা'আতের যে সমস্ত ইমাম পরিশ্রম করেছেন এ আয়াত তাদেরকেও শামিল করে।

Tafsir Bayaan Foundation

তোমরাই তো তারা, তোমাদের আহবান করা হচ্ছে যে, তোমরা আল্লাহর পথে ব্যয় করবে। অথচ তোমাদের কেউ কেউ কার্পণ্য করছে। তবে যে কার্পণ্য করছে সে তো নিজের প্রতিই কার্পণ্য করছে। আর আল্লাহ অভাবমুক্ত এবং তোমরা অভাবগ্রস্ত। যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও, তবে তিনি তোমাদের ছাড়া অন্য কোন কওমকে স্থলাভিষিক্ত করবেন। তারপর তারা তোমাদের অনুরূপ হবে না।

Muhiuddin Khan

শুন, তোমরাই তো তারা, যাদেরকে আল্লাহর পথে ব্যয় করার আহবান জানানো হচ্ছে, অতঃপর তোমাদের কেউ কেউ কৃপণতা করছে। যারা কৃপণতা করছে, তারা নিজেদের প্রতিই কৃপণতা করছে। আল্লাহ অভাবমুক্ত এবং তোমরা অভাবগ্রস্থ। যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও, তবে তিনি তোমাদের পরিবর্তে অন্য জাতিকে প্রতিষ্ঠিত করবেন, এরপর তারা তোমাদের মত হবে না।

Zohurul Hoque

দেখো, তোমরাই তো তারা যাদের আহ্বান করা হচ্ছে যেন তোমরা আল্লাহ্‌র পথে ব্যয় কর, কিন্ত তোমাদের মধ্যে রয়েছে তারা যারা কৃপণতা করছে, বস্তুতঃ যে কার্পণ্য করে সে তো বখিলি করছে তার নিজেরই বিরুদ্ধে। আর আল্লাহ্ ধনবান, এবং তোমরা অভাবগ্রস্ত। আর তোমরা যদি ফিরে যাও তবে তিনি তোমাদের স্থলে অন্য লোকদের বদলে আনবেন, তখন তারা তোমাদের মতন হবে না।