কুরআন মজীদ সূরা যুখরুফ আয়াত ১৩
Qur'an Surah Az-Zukhruf Verse 13
যুখরুফ [৪৩]: ১৩ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ
لِتَسْتَوٗا عَلٰى ظُهُوْرِهٖ ثُمَّ تَذْكُرُوْا نِعْمَةَ رَبِّكُمْ اِذَا اسْتَوَيْتُمْ عَلَيْهِ وَتَقُوْلُوْا سُبْحٰنَ الَّذِيْ سَخَّرَ لَنَا هٰذَا وَمَا كُنَّا لَهٗ مُقْرِنِيْنَۙ (الزخرف : ٤٣)
- litastawū
- لِتَسْتَوُۥا۟
- That you may sit firmly
- তোমরা যেন স্হির হয়ে বসতে পারো
- ʿalā
- عَلَىٰ
- on
- উপর
- ẓuhūrihi
- ظُهُورِهِۦ
- their backs
- তাদের পিঠের
- thumma
- ثُمَّ
- then
- এরপর
- tadhkurū
- تَذْكُرُوا۟
- remember
- তোমরা স্মরণ করো
- niʿ'mata
- نِعْمَةَ
- (the) favor
- অনুগ্রহের (কথা)
- rabbikum
- رَبِّكُمْ
- (of) your Lord
- তোমাদের রবের
- idhā
- إِذَا
- when
- যখন
- is'tawaytum
- ٱسْتَوَيْتُمْ
- you sit firmly
- তোমরা চড়ে বসো
- ʿalayhi
- عَلَيْهِ
- on them
- তার উপর
- wataqūlū
- وَتَقُولُوا۟
- and say
- এবং তোমরা বলো
- sub'ḥāna
- سُبْحَٰنَ
- "Glory be (to)
- "মহান পবিত্র (আল্লাহ)
- alladhī
- ٱلَّذِى
- the One Who
- যিনি
- sakhara
- سَخَّرَ
- has subjected
- বশ করে দিয়েছেন
- lanā
- لَنَا
- to us
- আমাদের জন্যে
- hādhā
- هَٰذَا
- this
- এটা
- wamā
- وَمَا
- and not
- এবং না
- kunnā
- كُنَّا
- we were
- আমরা ছিলাম
- lahu
- لَهُۥ
- of it
- তাকে
- muq'rinīna
- مُقْرِنِينَ
- capable
- বশীভূতকারী
Transliteration:
Litastawoo 'alaa zuhoorihee summa tazkuroo ni'mata Rabbikum izastawaitum 'alaihi wa taqooloo Subhaanal lazee sakhkhara lana haaza wa maa kunnaa lahoo muqrineen(QS. az-Zukhruf:13)
English Sahih International:
That you may settle yourselves upon their backs and then remember the favor of your Lord when you have settled upon them and say, "Exalted is He who has subjected this to us, and we could not have [otherwise] subdued it. (QS. Az-Zukhruf, Ayah ১৩)
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
যাতে তোমরা যখন তাদের পিঠে স্থির হয়ে বস, তখন যেন তোমাদের প্রতিপালকের অনুগ্রহের কথা স্মরণ কর আর বল- মহান ও পবিত্র তিনি যিনি, এগুলোকে আমাদের (ব্যবহারের জন্য) বশীভূত করে দিয়েছেন, আমরা এগুলোকে বশীভূত করতে সক্ষম ছিলাম না। (যুখরুফ, আয়াত ১৩)
Tafsir Ahsanul Bayaan
যাতে তোমরা ওর পিঠে স্থির হয়ে বসতে পার[১] অতঃপর তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের সম্পদ স্মরণ কর ও বল, ‘পবিত্র ও মহান তিনি যিনি একে আমাদের বশীভূত করে দিয়েছেন; যদিও আমরা একে বশীভূত করতে সমর্থ ছিলাম না। [২]
[১] لِتَسْتَوُوْا এর অর্থ, لِتَسْتَقِرُّوْا অথবা لِتَسْتَعْلُوْا স্থির হয়ে বসতে পার অথবা সওয়ার হতে পার। ظُهُوْرِهِ তে 'য্বমীর' (সর্বনাম) একবচন ব্যবহার হয়েছে 'জিনস' (শ্রেণী) এর দিকে লক্ষ্য করে।
[২] অর্থাৎ, যদি এই পশুগুলোকে আমাদের অনুগত ও বশীভূত না করে দিতেন, তবে আমরা তাদেরকে আমাদের আয়ত্তে এনে তাদেরকে বাহন ও বোঝ বহনের জন্য এবং অন্যান্য উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে পারতাম না। مُقْرِنِيْنَ অর্থ, مُطِيْقِيْنَ বশীকরণে সমর্থ।
Tafsir Abu Bakr Zakaria
যাতে তোমরা এর পিঠে স্থির হয়ে বসতে পার, তারপর তোমাদের রবের অনুগ্রহ স্মরণ করবে যখন তোমরা এর উপর স্থির হয়ে বসবে; এবং বলবে [১], ‘পবিত্ৰ-মহান তিনি, যিনি এগুলোকে আমাদের বশীভূত করে দিয়েছেন। আর আমরা সমর্থ ছিলাম না এদেরকে বশীভূত করতে।
[১] সওয়ারীর পিঠে বসার সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মুখ থেকে যেসব কথা উচ্চারিত হতো সেগুলোই এ আয়াতের উদ্দেশ্য ও অভিপ্ৰায়ের সর্বোত্তম বাস্তব ব্যাখ্যা। আব্দুল্লাহ ইবন উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, সফরে রওয়ানা হওয়ার সময় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সওয়ারীর জন্তুর উপর সওয়ার হওয়ার পর তিনবার ‘আল্লাহু আকবর’ বলতেন। তারপর سُبْحٰنَ الَّذِىْ سَخَّرلَنَا থেকে শুরু করে لَمُنْقَلِبُوْنَ পর্যন্ত পাঠ করতেন। তারপর এই বলে দো'আ করতেনঃ
اللّٰهُمَّ إِنَّا نَسْأَلُكَ فِيْ سَفَرِنَا هَذَاالْبِرَّ وَالتَّقْوَىِ وَمِنَ الْعَمَلِ مَاتَرْضَى اللّٰهُمَّ هَوِّنْ عَلَيْنَا سَفَرَنَا هٰذَاوَاطْوِ عَنَّا بُعْدَهُ اللّٰهُمَّ أَنْتَ الصَّا حِبُ فيِ السَّفَرِ وَالْخَلِيفَةُ فيِ الْأَهْلِ اللّٰهُمَّ إَنِّي أَعُوذُبِكا مِنْ وَ عْثَاءِ السَّفَرِ وَكَآبَةِ الْمَنْظَرِ وَسُوءِ الْمُنقَلَبِ فِي الْمَالِ وَالْأَهْلِ
‘আল্লাহুম্মা ইন্না নাসআলুক ফী সাফারিনা হায্যাল বিররা ওয়াত তাকওয়া ওয়া মিনাল আমালে মা তারদা। আল্লাহুম্মা হাওয়িন আলাইনা সাফারানা হাযা ওয়াতওয়ে ‘আন্না বু’দাহ। আল্লাহুম্মা আনতাস সাহিবু ফিস সাফারে ওয়াল খালিফাতু ফিল আহলে। আল্লাহুম্মা ইন্নি ‘আউযু বিকা মিন ওয়া‘সা-ইস সাফারে ওয়া কাআবাতিল মানযারে ওয়া সুয়িল মুনকালাবে ফিল মালে ওয়াল আহিল।’ [মুসলিম; ২৩৯২]
আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেনঃ একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিসমিল্লাহ বলে রিকাবে পা রাখলেন এবং সওয়ার হওয়ার পর ‘আলহামদুলিল্লাহ' বললেন। তারপর এ আয়াত অর্থাৎ سُبْحٰنَ الَّذِىْ سَخَّرَلَنَا থেকে শুরু করে لَمُنْقَلِبُوْنَ পর্যন্ত বললেন, তারপর ‘আলহামদুলিল্লাহ' তিনবার ও ‘আল্লাহু আকবার তিনবার বললেন এবং তারপর বললেনঃ “আপনি অতি পবিত্র। তুমি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। আমি নিজের প্রতি যুলুম করেছি। আমাকে ক্ষমা করে দিন।” এরপর তিনি হেসে ফেললেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল, আপনি কি কারণে হাসলেন। তিনি বললেন, বান্দা (হে রব, আমাকে ক্ষমা করে দিন) বললে আল্লাহর কাছে তা বড়ই পছন্দনীয় হয়। তিনি বলেনঃ আমার এই বান্দা জানে যে, আমি ছাড়া ক্ষমাশীল আর কেউ নেই। [মুসনাদে আহমদ; ১/৯৭, আবু দাউদ; ২৬০২, তিরমিযীঃ ৩৪৪৬]
Tafsir Bayaan Foundation
যাতে তোমরা এর পিঠে স্থির থাকতে পার তারপর তোমাদের রবের অনুগ্রহ স্মরণ করবে, যখন তোমরা এর উপর স্থির হয়ে বসবে আর বলবে, ‘পবিত্র-মহান সেই সত্তা যিনি এগুলোকে আমাদের বশীভূত করে দিয়েছেন। আর আমরা এগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম ছিলাম না’।
Muhiuddin Khan
যাতে তোমরা তাদের পিঠের উপর আরোহণ কর। অতঃপর তোমাদের পালনকর্তার নেয়ামত স্মরণ কর এবং বল পবিত্র তিনি, যিনি এদেরকে আমাদের বশীভূত করে দিয়েছেন এবং আমরা এদেরকে বশীভূত করতে সক্ষম ছিলাম না।
Zohurul Hoque
যেন তোমরা তাদের পিঠের উপরে মজবুত হয়ে বসতে পার, তারপর তোমাদের প্রভুর অনুগ্রহ স্মরণ করো যখন তোমরা তাদের উপরে বস, আর বলো -- ''সকল মহিমা তাঁর যিনি এদের আমাদের বশ করেছেন, অথচ আমরা এতে সমর্থ ছিলাম না,