Skip to content

কুরআন মজীদ সূরা আল-মু'মিন আয়াত ৫১

Qur'an Surah Ghafir Verse 51

আল-মু'মিন [৪০]: ৫১ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ

اِنَّا لَنَنْصُرُ رُسُلَنَا وَالَّذِيْنَ اٰمَنُوْا فِى الْحَيٰوةِ الدُّنْيَا وَيَوْمَ يَقُوْمُ الْاَشْهَادُۙ (غافر : ٤٠)

innā
إِنَّا
Indeed We
নিশ্চয়ই আমরা
lananṣuru
لَنَنصُرُ
We will surely help
অবশ্যই সাহায্য করবো
rusulanā
رُسُلَنَا
Our Messengers
আমাদের রাসূলগণকে
wa-alladhīna
وَٱلَّذِينَ
and those who
এবং যারা
āmanū
ءَامَنُوا۟
believe
ঈমান এনেছে (তাদেরকে)
فِى
in
মধ্যে
l-ḥayati
ٱلْحَيَوٰةِ
the life
জীবনের
l-dun'yā
ٱلدُّنْيَا
(of) the world
পার্থিব
wayawma
وَيَوْمَ
and (on the) Day
এবং যেদিনে
yaqūmu
يَقُومُ
(when) will stand
দাঁড়াবে
l-ashhādu
ٱلْأَشْهَٰدُ
the witnesses
সাক্ষীরা

Transliteration:

Innaa lanansuru Rusulanaa wallazeena aamanoo fil hayaatid dunyaa wa Yawma yaqoomul ashhaad (QS. Ghāfir:51)

English Sahih International:

Indeed, We will support Our messengers and those who believe during the life of this world and on the Day when the witnesses will stand – (QS. Ghafir, Ayah ৫১)

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

আমি আমার রসূলদেরকে আর মু’মিনদেরকে অবশ্যই সাহায্য করব দুনিয়ার জীবনে আর (ক্বিয়ামতে) যে দিন সাক্ষীরা দাঁড়াবে। (আল-মু'মিন, আয়াত ৫১)

Tafsir Ahsanul Bayaan

নিশ্চয়ই আমি আমার রসূলদেরকে ও বিশ্বাসীদেরকে পার্থিব জীবনে[১] ও সাক্ষীগণের দন্ডায়মান (কিয়ামত) দিনে সাহায্য করব--[২]

[১] অর্থাৎ, পৃথিবীতে তাদেরকে জয়যুক্ত এবং তাদের শত্রুদেরকে লাঞ্ছিত করব। কোন কোন মানুষের মাথায় এই জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে যে, নবীদের কাউকে কাউকে হত্যা করা হয়েছে। যেমন, ইয়াহয়্যা ও যাকারিয়া (আলাইহিমাস্ সালাম) প্রভৃতি। কাউকে কাউকে হিজরত করতে বাধ্য করা হয়েছে। যেমন, ইবরাহীম (আঃ) এবং আমাদের নবী মুহাম্মাদ (সাঃ) ও তাঁর সাহাবীগণ (রাঃ)। সাহায্যের প্রতিশ্রুতি থাকা সত্ত্বেও এমনটি কেন হল? আসলে এ প্রতিশ্রুতির সম্পর্ক হল অধিকাংশ অবস্থা এবং বেশীরভাগ ব্যক্তিবর্গের সাথে। তাই কোন কোন অবস্থায় এবং কোন কোন ব্যক্তিবর্গের উপর কাফেরদের জয়যুক্ত হওয়া এই প্রতিশ্রুতির পরিপন্থী নয়। অথবা এর (প্রতিশ্রুতির) অর্থ হল, ক্ষণস্থায়ীভাবে কখনো কখনো আল্লাহ নিজ কৌশল ও ইচ্ছায় কাফেরদেরকে বিজয় দান করেন। কিন্তু পরিশেষে ঈমানদাররাই জয়লাভ ও সফলতা অর্জন করেন। যেমন, ইয়াহয়্যা ও যাকারিয়া (আলাইহিমাস্ সালাম)-এর হত্যাকারীদের উপর পরে মহান আল্লাহ তাদের শত্রুদেরকে প্রবল করে দিয়েছিলেন। তারা তাদের রক্তে নিজেদের পিপাসা মিটিয়ে ছিল এবং তাদেরকে জঘন্যভাবে লাঞ্ছিত করেছিল। যে ইয়াহুদীরা ঈসা (আঃ)-কে ক্রুশ বিদ্ধ করে হত্যা করতে চেয়েছিল, আল্লাহ তাআলা সেই ইয়াহুদীদের উপর রোমদেরকে এমন আধিপত্য দান করলেন যে, তারা এই ইয়াহুদীদেরকে অতীব অপমানজনকভাবে শায়েস্তা করে। নবী মুহাম্মাদ (সাঃ) এবং তাঁর সাহাবীগণ অবশ্যই হিজরত করতে বাধ্য হন, কিন্তু তারপর বদর, উহুদ, আহযাব ও খায়বার প্রভৃতি যুদ্ধে এবং মক্কা বিজয় ইত্যাদির মাধ্যমে মহান আল্লাহ যেভাবে মুসলিমদের সাহায্য করেন এবং তাঁর রসূল ও ঈমানদারদেরকে যেভাবে বিজয় দান করেন যে, এর পর আর আল্লাহর সাহায্য করার ব্যাপারে কোন সন্দেহ থাকে না। (ইবনে কাসীর)

[২] أَشْهَادٌ হল شَهِيْدٌ (সাক্ষী)এর বহুবচন। যেমন, شريف এর বহুবচন আসে أشراف কিয়ামতের দিন ফিরিশতা ও আম্বিয়া (আলাইহিমুস সালাম)গণ সাক্ষ্য দেবেন। ফিরিশতাগণ সাক্ষ্য দেবেন যে, হে আল্লাহ! নবীগণ তোমার বার্তা পৌঁছে দিয়েছিলেন, কিন্তু তাঁদের উম্মত তাঁদেরকে মিথ্যা ভেবেছিল। এ ছাড়াও উম্মতে মুহাম্মাদী এবং খোদ নবী (সাঃ)ও সাক্ষ্য দেবেন। এ আলোচনা পূর্বেও (সূরা হাজ্জ ২২;৭৮ আয়াতে) করা হয়েছে। আর এই জন্য কিয়ামতকে সাক্ষীদের দন্ডায়মান হওয়ার দিন বলা হয়েছে। এ দিনে ঈমানদারদের সাহায্য করার অর্থ হল, তাঁদেরকে তাঁদের নেক কাজের প্রতিদান দেওয়া হবে এবং তাঁদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে।

Tafsir Abu Bakr Zakaria

নিশ্চয় আমরা আমাদের রাসূলদেরকে এবং যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে সাহায্য করব দুনিয়ার জীবনে [১], আর যেদিন সাক্ষীগণ দাঁড়াবে [২]।

[১] এ আয়াতে আল্লাহ তা'আলার ওয়াদা রয়েছে যে, তিনি তাঁর রাসুল ও মুমিনগণকে সাহায্য করেন দুনিয়ার জীবনে এবং আখেরাতেও। বলাবাহুল্য, এ সাহায্য কেবল শক্ৰদের বিরুদ্ধেই সীমিত। অধিকাংশ নবী-রাসুলদের ক্ষেত্রে এর বাস্তবতা বর্ণনাসাপেক্ষ নয়। কিন্তু কোন কোন নবী-রাসূল যেমন, ইয়াহইয়া, যাকারিয়্যাকে শত্রুরা শহীদ করেছে এবং কতককে দেশান্তরিত করেছে। যেমন, ইবরাহীম ও খাতামুল আম্বিয়া মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহিমা ওয়া সাল্লাম, তাদের ক্ষেত্রে আয়াতে বর্ণিত সাহায্যের ব্যাপারে সন্দেহ হতে পারে। ইবন কাসীর এর দুটি জওয়াব দেন। এক. এখানে রাসূল বলে সমস্ত রাসূলগণকে বুঝানো হয়নি বরং কোন কোন রাসূল বোঝানো হয়েছে। দুই. এ আয়াতে বর্ণিত সাহায্যের অর্থ শত্রুর কাছ থেকে হোক, কিংবা তাদের ওফাতের পরে হোক। এর অর্থ কোনরূপ ব্যতিক্রম ছাড়াই সমস্ত নবী-রাসূল ও মুমিনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। নবী-রাসুলগণের হত্যাকারীদের আযাব ও দুর্দশার বর্ণনা দ্বারা ইতিহাসের পাতা পরিপূর্ণ। ইয়াহইয়া, যাকারিয়্যা আলাইহিমাস সালাম এর হত্যাকারীদের উপর বহিঃশত্রু চাপিয়ে দেয়া হয়েছে, যারা তাদেরকে অপমানিত ও লাঞ্ছিত করে হত্যা করেছে। নমরূদকে আল্লাহ তা'আলা সামান্যতম প্রাণী দিয়ে পরাজিত করেছেন। এ উম্মতের প্রাথমিক যুগের কাফেরদেরকে বদর যুদ্ধের প্রাক্কালে আল্লাহ তা'আলা মুসলিমদের হাতেই পরাভূত করেছেন। তাদের বড় বড় সদরার নিহত হয়েছে, কিছু বন্দী হয়েছে এবং অবশিষ্টরা মক্কা বিজয়ের দিন গ্রেফতার হয়েছে। অবশ্য রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদেরকে মুক্ত করে দিয়েছেন। তার দ্বীনই জগতের সমস্ত দ্বীনের উপর প্রাধান্য বিস্তার করেছে এবং তার জীবদ্দশায়ই আরব উপদ্বীপের বিরাটাংশে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। [দেখুন, ইবন কাসীর]

[২] যেদিন সাক্ষীরা দণ্ডায়মান হবে। অর্থাৎ কেয়ামতের দিন। সেখানে নবী - রাসূল ও মুমিনগণের জন্যে আল্লাহর সাহায্য বিশেষভাবে প্রকাশ লাভ করবে। [ তাবারী।]

Tafsir Bayaan Foundation

নিশ্চয় আমি আমার রাসূলদেরকে ও মুমিনদেরকে দুনিয়ার জীবনে এবং যেদিন সাক্ষীগণ দন্ডায়মান হবে সেদিন সাহায্য করব।

Muhiuddin Khan

আমি সাহায্য করব রসূলগণকে ও মুমিনগণকে পার্থিব জীবনে ও সাক্ষীদের দন্ডায়মান হওয়ার দিবসে।

Zohurul Hoque

নিঃসন্দেহ আমরা অবশ্যই আমাদের রসূলগণকে ও যারা ঈমান এনেছে তাদের সাহায্য করে থাকি এই দুনিয়ার জীবনে আর সেইদিন যখন সাক্ষীরা দাঁড়াবে, --