Skip to content

কুরআন মজীদ সূরা আন নিসা আয়াত ৮৮

Qur'an Surah An-Nisa Verse 88

আন নিসা [৪]: ৮৮ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ

۞ فَمَا لَكُمْ فِى الْمُنٰفِقِيْنَ فِئَتَيْنِ وَاللّٰهُ اَرْكَسَهُمْ بِمَا كَسَبُوْا ۗ اَتُرِيْدُوْنَ اَنْ تَهْدُوْا مَنْ اَضَلَّ اللّٰهُ ۗوَمَنْ يُّضْلِلِ اللّٰهُ فَلَنْ تَجِدَ لَهٗ سَبِيْلًا (النساء : ٤)

famā
فَمَا
So what
অতঃপর কি হয়েছে
lakum
لَكُمْ
(is the matter) with you
তোমাদের
فِى
concerning
(মধ্যে)
l-munāfiqīna
ٱلْمُنَٰفِقِينَ
the hypocrites (that)
মুনাফিকদের
fi-atayni
فِئَتَيْنِ
(you have become) two parties?
(তোমরা) দুই মতের অধিকারী
wal-lahu
وَٱللَّهُ
While Allah
অথচ আল্লাহই
arkasahum
أَرْكَسَهُم
cast them back
তাদের ঘুরিয়ে দিয়েছেন
bimā
بِمَا
for what
এ কারণে যা
kasabū
كَسَبُوٓا۟ۚ
they earned
তারা অর্জন করেছে
aturīdūna
أَتُرِيدُونَ
Do you wish
কি তোমরা চাও
an
أَن
that
যে
tahdū
تَهْدُوا۟
you guide
তোমরা হিদায়াত দিবে
man
مَنْ
whom
যাকে
aḍalla
أَضَلَّ
is let astray?
পথভ্রষ্ট করেছেন
l-lahu
ٱللَّهُۖ
(by) Allah?
আল্লাহ
waman
وَمَن
And whoever
অথচ যাকে
yuḍ'lili
يُضْلِلِ
is let astray
পথভ্রষ্ট করেন
l-lahu
ٱللَّهُ
(by) Allah
আল্লাহ
falan
فَلَن
then never
কক্ষনো না তখন
tajida
تَجِدَ
will you find
পাবে তুমি
lahu
لَهُۥ
for him
তার জন্য
sabīlan
سَبِيلًا
a way
কোন পথ

Transliteration:

Famaa lakum filmuna afiqeena fi'ataini wallaahu arkasahum bimaa kasaboo; atureedoona an tahdoo man adallal laahu wa mmai yudlilil laahu falan tajida lahoo sabeelaa (QS. an-Nisāʾ:88)

English Sahih International:

What is [the matter] with you [that you are] two groups concerning the hypocrites, while Allah has made them fall back [into error and disbelief] for what they earned. Do you wish to guide those whom Allah has sent astray? And he whom Allah sends astray – never will you find for him a way [of guidance]. (QS. An-Nisa, Ayah ৮৮)

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

তোমাদের কী হল যে, মুনাফিকদের ব্যাপারে (কী নীতি অবলম্বন করা হবে সে বিষয়ে) তোমরা দু’ দলে বিভক্ত হয়ে গেলে? বস্তুতঃ আল্লাহ তাদের এ কার্যকলাপের কারণে তাদেরকে উল্টা মুখে ফিরিয়ে দিয়েছেন (ইসলাম থেকে আবার কুফরের দিকে)। আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেছেন, তোমরা কি তাকে সুপথ দেখাতে চাও? বস্তুতঃ আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন, তার জন্য কক্ষনো পথ খুঁজে পাবে না। (আন নিসা, আয়াত ৮৮)

Tafsir Ahsanul Bayaan

তোমাদের কি হয়েছে যে, তোমরা কপটদের সম্বন্ধে দু’ দলে বিভক্ত হয়ে গেলে? [১] যখন আল্লাহ তাদের কৃতকর্মের জন্য তাদেরকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দিয়েছেন! [২] আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেছেন, তোমরা কি তাকে সৎপথে পরিচালিত করতে চাও? বস্তুতঃ আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন, তুমি তার জন্য কখনও কোন পথ পাবে না। [৩]

[১] এখানে জিজ্ঞাসা অস্বীকৃতি সূচক। অর্থাৎ, তোমাদের মধ্যে এই মুনাফিকদের ব্যাপারে কোন মতবিরোধ হওয়া উচিত ছিল না। আর মুনাফিকদের বলতে সেই মুনাফিকদেরকে বুঝানো হয়েছে যারা উহুদ যুদ্ধে মদীনা থেকে কিছু দূর গিয়ে এই বলে ফিরে চলে এসেছিল যে, আমাদের কথা গ্রহণ করা হয় নি। (বুখারীঃ সূরা নিসা, মুসলিমঃ মুনাফ্বীকীন অধ্যায়) এর বিস্তারিত আলোচনা পূর্বে হয়েছে। সে সময় এই মুনাফিকদের নিয়ে মুসলিমদের দু'টি দল হয়েছিল। একটি দলের বক্তব্য ছিল, আমাদেরকে এই মুনাফিকদের বিরুদ্ধেও যুদ্ধ করা দরকার। পক্ষান্তরে দ্বিতীয় দল এটাকে বৃহত্তর স্বার্থের পরিপন্থী মনে করত।

[২] كَسَبُوا (কৃতকর্ম) বলতে রসূল (সাঃ)-এর বিরোধিতা এবং জিহাদ থেকে বিমুখতা অবলম্বন করা। أَرْكَسَهُمْ (বিপরীত দিকে ঘুরিয়ে দিয়েছেন বা পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দিয়েছেন) অর্থাৎ, যে কুফরী ও ভ্রষ্টতা থেকে বের হওয়ার কথা, তার দিকেই ফিরিয়ে দিয়েছেন অথবা তার কারণে ধ্বংস করে দিয়েছেন।

[৩] যাকে আল্লাহ পথভ্রষ্ট করেন অর্থাৎ, অব্যাহত কুফরী ও ঔদ্ধত্যের কারণে যাদের অন্তঃকরণ মোহর করে দেন, তাদেরকে কেউ সুপথে আনতে পারবে না।

Tafsir Abu Bakr Zakaria

অতঃপর তোমাদের কি হল যে, তোমরা মুনাফেকদের ব্যাপারে দু’দল হয়ে গেলে? যখন আল্লাহ তাদেরকে তাদের কৃতকর্মের জন্য পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দিয়েছেন [১]। আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন তোমরা কি তাকে সৎপথে পরিচালিত করতে চাও? আর আল্লাহ কাউকেও পথভ্রষ্ট করলে আপনি তার জন্য কখনো কোন পথ পাবেন না [২]।

বারতম রুকূ‘

[১] যায়েদ ইবন সাবেত রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ওহুদের যুদ্ধে বের হলেন তখন তার সাথীদের মধ্য থেকে কিছু লোক ফিরে চলে আসলেন। তাদের ব্যাপারে সাহাবাগণ দ্বিমত পোষণ করলেন । কেউ বললেন হত্যা করব, কেউ বললেন হত্যা করব না। তখন এ আয়াত নাযিল হয় এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এই মদীনা নগরী কিছু মানুষকে দেশান্তর করে যেমনিভাবে আগুন দূর করে লোহার ময়লাকে। [বুখারীঃ ১৮৮৪, ৪০৫০, ৪৫৮৯, মুসলিমঃ ১৩৮৪, ২৭৭৬]

[২] এ আয়াতে যেভাবে ব্যক্ত করা হয়েছে যে, যাদেরকে আল্লাহ তা’আলা পথভ্রষ্ট করেছেন, তাদের জন্য পথের দিশা পাওয়ার কোন উপায়ই অবশিষ্ট নেই। অন্য আয়াতেও আল্লাহ্ তা’আলা তা স্পষ্ট বলেছেন। আল্লাহ বলেন, “আর আল্লাহ যাকে ফিতনায় ফেলতে চান তার জন্য আল্লাহর কাছে আপনার কিছুই করার নেই। এরাই হচ্ছে তারা যাদের হৃদয়কে আল্লাহ বিশুদ্ধ করতে চান না; তাদের জন্য আছে দুনিয়ায় লাঞ্ছনা আর আখেরাতে রয়েছে তাদের জন্য মহাশাস্তি” [সূরা আল-মায়িদাহ ৪১] অন্য আয়াতে এসেছে, “আল্লাহ যাদেরকে বিপথগামী করেন তাদের কোন পথপ্রদর্শক নেই" সূরা আল-আরাফ; ১৮৬]

Tafsir Bayaan Foundation

সুতরাং মুনাফিকদের ব্যাপারে তোমাদের কী হল যে, তোমরা দু’ দল হয়ে গেলে? অথচ আল্লাহ তারা যা কামাই করেছে তার জন্য তাদেরকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দিয়েছেন। আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেছেন তোমরা কি তাকে হিদায়াত করতে চাও? আর আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন তুমি কখনো তার জন্য কোন পথ পাবে না।

Muhiuddin Khan

অতঃপর তোমাদের কি হল যে, মুনাফিকদের সম্পর্কে তোমরা দু’দল হয়ে গেলে? অথচ আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে ঘুরিয়ে দিয়েছেন তাদের মন্দ কাজের কারনে! তোমরা কি তাদেরকে পথ প্রদর্শন করতে চাও, যাদেরকে আল্লাহ পথভ্রষ্ট করেছেন? আল্লাহ যাকে পথভ্রান্ত করেন, তুমি তার জন্য কোন পথ পাবে না।

Zohurul Hoque

তারা চায় যে তোমরা যেন অবিশ্বাস পোষণ করো যেমন তারা অবিশ্বাস করে, যাতে তোমরা সবাই এক রকমের হতে পারো। কাজেই তাদের মধ্যে থেকে কাউকে বন্ধু হিসেবে নিও না যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহ্‌র পথে গৃহত্যাগ করে। কিন্তু তারা যদি ফিরে যায় তবে তাদের ধরো আর তাদের বধ করো যেখানেই তাদের পাও, আর তাদের থেকে কাউকেও বন্ধুরূপে নিও না এবং সাহায্যকারীরূপেও নয়, --