Skip to content

কুরআন মজীদ সূরা আন নিসা আয়াত ৪৮

Qur'an Surah An-Nisa Verse 48

আন নিসা [৪]: ৪৮ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ

اِنَّ اللّٰهَ لَا يَغْفِرُ اَنْ يُّشْرَكَ بِهٖ وَيَغْفِرُ مَا دُوْنَ ذٰلِكَ لِمَنْ يَّشَاۤءُ ۚ وَمَنْ يُّشْرِكْ بِاللّٰهِ فَقَدِ افْتَرٰٓى اِثْمًا عَظِيْمًا (النساء : ٤)

inna
إِنَّ
Indeed
নিশ্চয়
l-laha
ٱللَّهَ
Allah
আল্লাহ
لَا
(does) not
না
yaghfiru
يَغْفِرُ
forgive
মাফ করেন
an
أَن
that
(যে)
yush'raka
يُشْرَكَ
partners be associated
শিরক করাকে
bihi
بِهِۦ
with Him
তার সাথে
wayaghfiru
وَيَغْفِرُ
but He forgives
কিন্তু মাফ করেন
مَا
from
যা (আছে)
dūna
دُونَ
other than
ছাড়া
dhālika
ذَٰلِكَ
that
এটা (অর্থাৎ শিরক)
liman
لِمَن
for whom
যাকে
yashāu
يَشَآءُۚ
He wills
তিনি ইচ্ছা করেন
waman
وَمَن
And whoever
এবং যে কেউ
yush'rik
يُشْرِكْ
associates partners
শিরক করে
bil-lahi
بِٱللَّهِ
with Allah
আল্লাহর সাথে
faqadi
فَقَدِ
then surely
নিশ্চয়ই তবে
if'tarā
ٱفْتَرَىٰٓ
he has fabricated
সে রচনা করল
ith'man
إِثْمًا
a sin
গুনাহ
ʿaẓīman
عَظِيمًا
tremendous
বিরাট

Transliteration:

Innal laaha laa yaghfiru ai yushraka bihee wa yaghfiru maa doona zaalika limai yashaaa'; wa mai yushrik billaahi faqadif taraaa isman 'azeemaa (QS. an-Nisāʾ:48)

English Sahih International:

Indeed, Allah does not forgive association with Him, but He forgives what is less than that for whom He wills. And he who associates others with Allah has certainly fabricated a tremendous sin. (QS. An-Nisa, Ayah ৪৮)

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর সাথে শরীক করা ক্ষমা করবেন না। এটা ছাড়া অন্য সব যাকে ইচ্ছে মাফ করবেন এবং যে আল্লাহর সাথে শরীক করল, সে এক মহা অপবাদ আরোপ করল। (আন নিসা, আয়াত ৪৮)

Tafsir Ahsanul Bayaan

নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর সাথে অংশী (শিরক) করার অপরাধ ক্ষমা করেন না। এ ছাড়া অন্যান্য অপরাধ যার জন্য ইচ্ছা ক্ষমা করে দেন। [১] আর যে কেউ আল্লাহর সাথে অংশী স্থাপন (শিরক) করে, সে এক মহাপাপ করে। [২]

[১] অর্থাৎ, এমন অপরাধ ও গুনাহ, যা থেকে তওবা না করেই মু'মিন মারা গেছে। আল্লাহ তাআলা কারো জন্য চাইলে কোন প্রকারের শাস্তি না দিয়েই তাকে ক্ষমা করে দেবেন এবং অনেককে শাস্তি দেওয়ার পর ক্ষমা করবেন। আবার অনেককে নবী করীম (সাঃ)-এর সুপারিশে ক্ষমা করবেন। কিন্তু আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করার অপরাধ কোন অবস্থাতেই মাফ হবে না। কেননা, মুশরিকের উপর তিনি জান্নাতকে হারাম করে দিয়েছেন।

[২] অন্যত্র বলেছেন, [إِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيمٌ] "শিরক হল সব চেয়ে বড় অন্যায়।" (লুকমানঃ ১৩) হাদীসেও শিরককে সব থেকে বড় পাপ গণ্য করা হয়েছে। أَكْبَرُ الْكَبَائِرِ الشِّرْكُ بِاللهِ ...।

Tafsir Abu Bakr Zakaria

নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর সাথে শরীক [১] করাকে ক্ষমা করেন না। এছাড়া অন্যান্য অপরাধ যাকে ইচ্ছে ক্ষমা করেন [২]। আর যে-ই আল্লাহর সাথে শরীক করে, সে এক মহাপাপ রটনা করে।

[১] আয়াতে আল্লাহ্ তা’আলার সত্তা ও গুণাবলী সম্পর্কে যেসব বিশ্বাসের কথা বলা হয়েছে, যে কোন সৃষ্ট বস্তুর ব্যাপারে তেমন কোন বিশ্বাস পোষণ করাই হল শির্ক। অর্থাৎ আল্লাহ ব্যতীত কোন সৃষ্ট বস্তুকে ইবাদাত কিংবা মহব্বত ও সম্মান প্রদর্শনে আল্লাহর সমতুল্য মনে করাই শির্ক। জাহান্নামে পৌঁছে মুশরিকরা যে উক্তি করবে, আল্লাহ তা’আলা তা উল্লেখ করেছেন যে, “আল্লাহর শপথ, আমরা প্রকাশ্য পথভ্রষ্টতায় লিপ্ত ছিলাম যখন আমরা তোমাদেরকে বিশ্ব-পালনকর্তার সমতুল্য স্থির করেছিলাম।” সূ[রা আশ-শু’আরাঃ ৯৭-৯৮]

শির্কের প্রকারভেদ সম্পর্কে সূরা আল-বাকারাহ এর ২২ নং আয়াতের ব্যাখ্যায় বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এখানে এটা জানা আবশ্যক যে, যুলুম ও অবিচার তিন প্রকার। এক প্রকার যুলুম যা আল্লাহ্ তা’আলা কখনো ক্ষমা করবেন না। দ্বিতীয় প্রকার যুলুম যা মাফ হতে পারে। আর তৃতীয় প্রকার যুলুমের প্রতিশোধ আল্লাহ তা’আলা না নিয়ে ছাড়বেন না। প্রথম প্রকার যুলুম হচ্ছে শির্ক, দ্বিতীয় প্রকার আল্লাহর হকে ক্রটি করা এবং তৃতীয় প্রকার বান্দার হক বিনষ্ট করা। [ইবন কাসীর] এ আয়াতে বলা হয়েছে যে, তিনি তাঁর সাথে শির্ক করাকে ক্ষমা করবেন না। এর বাইরে যত গোনাহ আছে সবই তিনি যার জন্যে ইচ্ছে ক্ষমা করে দিবেন। আর যে তাঁর সাথে কাউকে শরীক করে সে অবশ্যই এক বড় মিথ্যা অপবাদ রটনা করল। অন্য আয়াতে অবশ্য আল্লাহ তা’আলা শির্ককারীদের মধ্যে যারা তাওবা করবে তাদেরকে ক্ষমা করার কথা ঘোষণা করেছেন। আল্লাহ বলেন, “আর যারা আল্লাহর সাথে অন্য কোন ইলাহকে ডাকে না, ...তবে যদি তারা তাওবা করে, ঈমান আনে এবং সৎকাজ করে” [সূরা আল-ফুরকান;৭০] সুতরাং তাওবাহ্‌ করলে শির্কও মাফ হয়ে যায়।

[২] আব্দুল্লাহ ইবন উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেনঃ আমরা কবীরা গোনাহকারীর জন্য ইস্তেগফার করা থেকে বিরত থাকতাম। শেষ পর্যন্ত যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে এ আয়াত শুনলাম এবং আরো শুনলাম যে, তিনি বলছেনঃ ‘আমি আমার দো’আকে গচ্ছিত রেখেছি আমার উম্মতের কবীরা গোনাহ্‌গারদের সুপারিশ করার জন্য। ইবন উমর বলেনঃ এরপর আমাদের অন্তরে যা ছিল, তা অনেকটা কেটে গেল ফলে আমরা ইস্তেগফার করতে থাকলাম ও আশা করতে থাকলাম। [মুসনাদে আবি ইয়া'লাঃ ৫৮১৩]

Tafsir Bayaan Foundation

নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর সাথে শরীক করাকে ক্ষমা করেন না। তিনি ক্ষমা করেন এ ছাড়া অন্যান্য পাপ, যার জন্য তিনি চান। আর যে আল্লাহর সাথে শরীক করে সে অবশ্যই মহাপাপ রচনা করে।

Muhiuddin Khan

নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন না, যে লোক তাঁর সাথে শরীক করে। তিনি ক্ষমা করেন এর নিম্ন পর্যায়ের পাপ, যার জন্য তিনি ইচ্ছা করেন। আর যে লোক অংশীদার সাব্যস্ত করল আল্লাহর সাথে, সে যেন অপবাদ আরোপ করল।

Zohurul Hoque

নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ক্ষমা করবেন না যে, তাঁর সাথে কাউকে শরিক করা হোক, আর তা ছাড়া আর সব তিনি ক্ষমা করেন যার জন্য তিনি ইচ্ছা করেন। আর যে কেউ আল্লাহ্‌র সাথে শরিক করে সে তাহলে উদ্ভাবন করেছে বিরাট পাপ।