কুরআন মজীদ সূরা আন নিসা আয়াত ১৬৪
Qur'an Surah An-Nisa Verse 164
আন নিসা [৪]: ১৬৪ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ
وَرُسُلًا قَدْ قَصَصْنٰهُمْ عَلَيْكَ مِنْ قَبْلُ وَرُسُلًا لَّمْ نَقْصُصْهُمْ عَلَيْكَ ۗوَكَلَّمَ اللّٰهُ مُوْسٰى تَكْلِيْمًاۚ (النساء : ٤)
- warusulan
- وَرُسُلًا
- And Messengers
- এবং (এসব) রাসূলদেরকে
- qad
- قَدْ
- surely
- নিশ্চয়ই
- qaṣaṣnāhum
- قَصَصْنَٰهُمْ
- We (have) mentioned them
- তাদের আমরা বর্ণনা করেছি
- ʿalayka
- عَلَيْكَ
- to you
- তোমার নিকট
- min
- مِن
- from
- (থেকে)
- qablu
- قَبْلُ
- before
- ইতিপূর্বে
- warusulan
- وَرُسُلًا
- and Messengers
- এবং (এমন সব) রাসূলও (ছিলেন)
- lam
- لَّمْ
- not
- না
- naqṣuṣ'hum
- نَقْصُصْهُمْ
- We (have) mentioned them
- তাদের আমরা বর্ণনা করেছি
- ʿalayka
- عَلَيْكَۚ
- to you
- তোমার কাছে
- wakallama
- وَكَلَّمَ
- And spoke
- এবং কথা বলেছেন
- l-lahu
- ٱللَّهُ
- Allah
- আল্লাহ
- mūsā
- مُوسَىٰ
- (to) Musa
- মূসার (সাথে)
- taklīman
- تَكْلِيمًا
- (in a) conversation
- (সরাসরি) কথাবার্তা
Transliteration:
Wa Rusulan qad qasas naahum 'alaika min qablu wa Rusulal lam naqsushum 'alaik; wa kallamallaahu Moosaa takleemaa(QS. an-Nisāʾ:164)
English Sahih International:
And [We sent] messengers about whom We have related [their stories] to you before and messengers about whom We have not related to you. And Allah spoke to Moses with [direct] speech. (QS. An-Nisa, Ayah ১৬৪)
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
আমি সেই রসূলদের প্রতিও ওয়াহী পাঠিয়েছি যাদের সম্পর্কে আমি তোমাকে আগেই বলেছি, আর অনেক রসূল যাদের কথা আমি তোমাকে বলিনি। আর আল্লাহ মূসার সাথে কথা বলেছেন সরাসরি। (আন নিসা, আয়াত ১৬৪)
Tafsir Ahsanul Bayaan
নিশ্চয় আমি অনেক রসূলের কথা পূর্বে তোমার নিকট বর্ণনা করেছি[১] এবং অনেক রসূলের কথা তোমার নিকট বর্ণনা করিনি। [২] আর মূসার সাথে আল্লাহ সাক্ষাৎ বাক্যালাপ করেছেন।[৩]
[১] যে সকল নবী ও রসূলগণের নাম ও তাঁদের ঘটনাবলী কুরআন কারীমে বর্ণিত হয়েছে ,তাঁদের সংখ্যা ২৪ অথবা ২৫ যথাঃ (১) আদম (আঃ) (২) ইদরীস (আঃ) (৩) নূহ (আঃ) (৪) হূদ (আঃ) (৫) সালেহ (আঃ) (৬) ইবরাহীম (আঃ) (৭) লূত (আঃ) (৮) ইসমাঈল (আঃ) (৯) ইসহাক (আঃ) (১০) ইয়াক্বূব (আঃ) (১১) ইউসুফ (আঃ) (১২) আইউব (আঃ) (১৩) শুআইব (আঃ) (১৪) মূসা (আঃ) (১৫) হারূন (আঃ) (১৬) ইউনুস (আঃ) (১৭) দাউদ (আঃ) (১৮) সুলাইমান (আঃ) (১৯) ইলয়্যাস (আঃ) (২০) আল-য়্যাসা' (আঃ) (২১) যাকারিয়া (আঃ) (২২) ইয়াহইয়া (আঃ) (২৩) ঈসা (আঃ) (২৪) যুল কিফল (আঃ) (অধিকাংশ মুফাসসিরগণের নিকটে) (২৫) মুহাম্মাদ (সাঃ)।
[২] যে সকল নবী ও রসূলগণের নাম ও ঘটনাবলী কুরআনে উল্লেখ হয়নি তাঁদের সংখ্যা কত? এ ব্যাপারে আল্লাহই ভালো জানেন। তবে একটি হাদীস পাওয়া যায় যেটা আম জনতার নিকট খুবই প্রসিদ্ধ, তাতে নবী ও রসূলগণের সংখ্যা এক লাখ চব্বিশ হাজার এবং অন্য এক হাদীসে আট হাজার উল্লেখ হয়েছে। কিন্তু এই হাদীসগুলি অত্যন্ত দুর্বল। অথচ কুরআন ও সহীহ হাদীস থেকে শুধু এতটুকু বুঝা যায় যে, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পরিস্থিতির মোকাবেলায় যুগে যুগে মহান আল্লাহ নবী ও রসূলগণকে সুসংবাদদাতা ও ভীতি-প্রদর্শনকারী রূপে প্রেরণ করেছেন। অতঃপর নবুঅতের সেই ধারাবাহিকতা শেষ হয় মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর মাধ্যমে। কিন্তু শেষনবী (সাঃ)-এর পূর্বে নবী ও রসূলের সংখ্যা কত? এর সঠিক উত্তর আল্লাহ ব্যতীত কেউ জানে না। পক্ষান্তরে শেষনবী (সাঃ)-এর পরে যত নবুঅতের দাবী করেছে বা করবে, তারা সকলেই দাজ্জাল ও মিথ্যুক। আর তাদের মিথ্যা নবুঅতের অনুসারীগণ ইসলামের গন্ডি হতে খারিজ। যারা উম্মতে মুহাম্মাদিয়া হতে পৃথক এক প্রতিদ্বন্দ্বী উম্মত। যেমন, বাবিয়াহ, বাহাইয়াহ, মীর্যাইয়াহ বা ক্বাদিয়ানী ফির্কা প্রভৃতি। অনুরূপভাবে মির্যা ক্বাদিয়ানীকে প্রতিশ্রুত 'মাসীহ' বলে বিশ্বাসী লাহোরী মির্যায়ী ফির্কাও।
[৩] (অদৃশ্য থেকে গায়বীভাবে অথবা স্পষ্টভাবে।) এটি মূসা (আঃ)-এর পৃথক বৈশিষ্ট্য; যার ফলে তিনি অন্যান্য নবীদের তুলনায় পৃথক মর্যাদার অধিকারী। সহীহ ইবনে হিব্বানের এক বর্ণনার ভিত্তিতে ইমাম ইবনে কাসীর আল্লাহর সাথে সরাসরি কথোপকথনে আদম (আঃ) ও মুহাম্মাদ (সাঃ)-কেও মূসা (আঃ)-এর শরীক বলেছেন। (তাফসীরে ইবনে কাসীর সূরা বাক্বারার ২;২৫৩ নং আয়াতের ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্য)
Tafsir Abu Bakr Zakaria
আর অনেক রাসূল, যাদের বর্ণনা আমরা আপনাকে পূর্বে দিয়েছি এবং অনেক রাসূল, যাদের বর্ণনা আমরা আপনাকে দেইনি [১]। আর অবশ্যই আল্লাহ মূসার সাথে কথা বলেছেন।
[১] এ আয়াতে নূহ ‘আলাইহিস সালাম-এর পরে যেসব নবী-রাসূল আগমন করেছেন, তাদের সম্পর্কে প্রথমে সাধারণভাবে বলার পর তন্মধ্যে বিশিষ্ট ও মর্যাদাসম্পন্ন কয়েকজনের নাম বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বোঝানো হয়েছে যে, এরা সবাই আল্লাহর রাসূল এবং তাদের নিকটও বিভিন্ন পন্থায় ওহী প্রেরিত হয়েছে। কখনো ফিরিশতাদের মাধ্যমে ওহী পৌছেছে, কখনো লিপিবদ্ধ কিতাব আকারে এসেছে, আবার কখনো আল্লাহ্ তা’আলা রাসূলের সাথে পর্দার আড়াল থেকে কথোপকথন করেছেন। যে কোন পন্থায়ই ওহী পৌঁছুক না কেন, তদানুযায়ী আমল করা মানুষের একান্ত কর্তব্য। অতএব, ইয়াহুদীদের এরূপ আবদার করা যে, তাওরাতের মত লিখিত কিতাব নাযিল হলে আমরা মান্য করবো, অন্যথায় নয় -সম্পূর্ণ আহম্মকী ও স্পষ্ট কুফরী। আবু যর গিফারী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা এক লাখ চব্বিশ হাজার নবী-রাসূল প্রেরণ করেছেন, যাদের মধ্যে স্বতন্ত্র শরীআতের অধিকারী রাসূলের সংখ্যা ছিল তিনশ’ তের জন’। [সিহীহ ইবন হিব্বানঃ ৩৬১]
Tafsir Bayaan Foundation
আর অনেক রাসূল, যাদের বর্ণনা তোমাকে পূর্বে দিয়েছি এবং অনেক রাসূল, যাদের বর্ণনা তোমাকে দেইনি আর আল্লাহ মূসার সাথে সুস্পষ্টভাবে কথা বলেছেন।
Muhiuddin Khan
এছাড়া এমন রসূল পাঠিয়েছি যাদের ইতিবৃত্ত আমি আপনাকে শুনিয়েছি ইতিপূর্বে এবং এমন রসূল পাঠিয়েছি যাদের বৃত্তান্ত আপনাকে শোনাইনি। আর আল্লাহ মূসার সাথে কথোপকথন করেছেন সরাসরি।
Zohurul Hoque
রসূলগণকে সুসংবাদদাতারূপে, আর সাবধানকারীরূপে, যেন আল্লাহ্র বিরুদ্ধে লোকদের কোনো অজুহাত না থাকতে পারে রসূলগণের পরে। আর আল্লাহ্ হচ্ছেন মহাশক্তিশালী, পরমজ্ঞানী।