Skip to content

কুরআন মজীদ সূরা আন নিসা আয়াত ১০০

Qur'an Surah An-Nisa Verse 100

আন নিসা [৪]: ১০০ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ

۞ وَمَنْ يُّهَاجِرْ فِيْ سَبِيْلِ اللّٰهِ يَجِدْ فِى الْاَرْضِ مُرَاغَمًا كَثِيْرًا وَّسَعَةً ۗوَمَنْ يَّخْرُجْ مِنْۢ بَيْتِهٖ مُهَاجِرًا اِلَى اللّٰهِ وَرَسُوْلِهٖ ثُمَّ يُدْرِكْهُ الْمَوْتُ فَقَدْ وَقَعَ اَجْرُهٗ عَلَى اللّٰهِ ۗوَكَانَ اللّٰهُ غَفُوْرًا رَّحِيْمًا ࣖ (النساء : ٤)

waman
وَمَن
And whoever
এবং যে
yuhājir
يُهَاجِرْ
emigrates
হিজরত করবে
فِى
in
(মধ্যে)
sabīli
سَبِيلِ
(the) way
পথে
l-lahi
ٱللَّهِ
(of) Allah
আল্লাহর
yajid
يَجِدْ
will find
সে পাবে
فِى
in
মধ্যে
l-arḍi
ٱلْأَرْضِ
the earth
পৃথিবীর
murāghaman
مُرَٰغَمًا
place(s) of refuge
আশ্রয়স্থল
kathīran
كَثِيرًا
many
অনেক
wasaʿatan
وَسَعَةًۚ
and abundance
ও প্রাচুর্য
waman
وَمَن
And whoever
এবং যে
yakhruj
يَخْرُجْ
leaves
বের হবে
min
مِنۢ
from
থেকে
baytihi
بَيْتِهِۦ
his home
তার ঘর
muhājiran
مُهَاجِرًا
(as) an emigrant
মুহাজির হয়ে
ilā
إِلَى
to
দিকে
l-lahi
ٱللَّهِ
Allah
আল্লাহর
warasūlihi
وَرَسُولِهِۦ
and His Messenger
ও তাঁর রাসূলের (দিকে)
thumma
ثُمَّ
then
এরপর
yud'rik'hu
يُدْرِكْهُ
overtakes him
তাকে পাবে
l-mawtu
ٱلْمَوْتُ
[the] death
মৃত্যু
faqad
فَقَدْ
then certainly
নিশ্চয় তবে
waqaʿa
وَقَعَ
(became) incumbent
(দায়িত্ব ভার) পড়ল
ajruhu
أَجْرُهُۥ
his reward
তার পুরস্কারের
ʿalā
عَلَى
on
উপর
l-lahi
ٱللَّهِۗ
Allah
আল্লাহর
wakāna
وَكَانَ
And is
এবং হলেন
l-lahu
ٱللَّهُ
Allah
আল্লাহ
ghafūran
غَفُورًا
Oft-Forgiving
ক্ষমাশীল
raḥīman
رَّحِيمًا
Most Merciful
মেহেরবান

Transliteration:

Wa mai yuhaajir fee sabeelil laahi yajid fil ardi mmuraaghaman kaseeranw wa sa'ah; wa mai yakhruj mim baitihee muhaajiran ilal laahi wa Rasoolihee summa yudrikhul mawtu faqad waqa'a ajruhoo 'alal laah; wa kaanal laahu Ghafoorar Raheemaa (QS. an-Nisāʾ:100)

English Sahih International:

And whoever emigrates for the cause of Allah will find on the earth many [alternative] locations and abundance. And whoever leaves his home as an emigrant to Allah and His Messenger and then death overtakes him – his reward has already become incumbent upon Allah. And Allah is ever Forgiving and Merciful. (QS. An-Nisa, Ayah ১০০)

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে হিজরাত করবে, সে পৃথিবীতে বহু আশ্রয়স্থল এবং প্রাচুর্য প্রাপ্ত হবে; এবং যে ব্যক্তি নিজের গৃহ হতে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের দিকে হিজরাত করে বের হয়, অতঃপর মৃত্যু তাকে পেয়ে বসে তার সাওয়াব আল্লাহর জিম্মায় সাব্যস্ত হয়ে গেছে এবং আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (আন নিসা, আয়াত ১০০)

Tafsir Ahsanul Bayaan

আর যে কেউ আল্লাহর পথে দেশ ত্যাগ করবে, সে পৃথিবীতে বহু আশ্রয়স্থল ও প্রাচুর্য লাভ করবে[১] এবং যে কেউ আল্লাহ ও রসূলের উদ্দেশ্যে গৃহত্যাগী হয়ে বের হলে অতঃপর (সে অবস্থায়) তার মৃত্যু ঘটলে তার পুরস্কারের ভার আল্লাহর উপর।[২] বস্তুতঃ আল্লাহ চরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।

[১] এই আয়াতে হিজরতের প্রতি প্রেরণা এবং মুশরিকদের থেকে পৃথকভাবে বসবাস করার শিক্ষা রয়েছে। مُرَاغَمًا এর অর্থ স্থান, বাসস্থান অথবা আশ্রয়স্থল। আর سَعَةٌ এর অর্থ রুযীর প্রাচুর্য অথবা স্থান ও পৃথিবী ও দেশসমূহের প্রশস্ততা।

[২] এখানে নেক-নিয়ত অনুযায়ী নেকী ও প্রতিদান পাওয়ার নিশ্চয়তা দেওয়া হচ্ছে, যদিও কেউ মৃত্যু হয়ে যাওয়ার কারণে নেক আমলকে পূর্ণ করতে না পারে। যেমন, অতীত উম্মতের মধ্য থেকে এমন এক ব্যক্তির ঘটনা হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, যে ১০০ জন মানুষ খুন করেছিল। অতঃপর তওবা করার জন্য পুণ্যবানদের একটি গ্রামে যাচ্ছিল। পথিমধ্যেই তার মৃত্যু হয়ে যায়। মহান আল্লাহ পুণ্যবানদের গ্রামকে অন্য গ্রামের তুলনায় নিকটতর করে দিলেন। যার ফলে রহমতের ফিরিশতাগণ তাকে তাঁদের সাথে নিয়ে গেলেন। (বুখারী ৩৪৭০, মুসলিম ২৬৭৭নং) অনুরূপ যে ব্যক্তি হিজরতের নিয়তে ঘর থেকে বের হল, তার যদি পথিমধ্যেই মৃত্যু এসে যায়, সে আল্লাহর পক্ষ হতে হিজরতের সওয়াব অবশ্যই পাবে, যদিও সে হিজরতের কাজ সম্পূর্ণ করতে সক্ষম হয়নি। নবী করীম (সাঃ) বলেছেন, ((إِنَّمَا الأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ)) আমলসমূহ নির্ভর করে নিয়তের উপর। ((وَإِنَّمَا لِكُلِّ امْرِىءٍمَا نَوَى)) আর মানুষ তা-ই পায়, যার সে নিয়ত করে। যে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের জন্য হিজরত করবে, তার হিজরত আল্লাহ ও তাঁর রসূলের জন্যই হবে। আর যে দুনিয়া অর্জনের জন্য অথবা কোন মহিলাকে বিবাহ করার জন্য হিজরত করবে, তার হিজরত তারই জন্য হবে, যার জন্য সে হিজরত করেছে।" (বুখারী১, মুসলিম ১৯০৭নং) এটি একটি এমন ব্যাপক বিধান, যা দ্বীনের প্রত্যেক বিষয়কেই শামিল। অর্থাৎ, কাজ করার সময় যদি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ উদ্দেশ্য হয়, তবে তা গ্রহণীয় হবে, অন্যথা তা প্রত্যাখ্যাত হবে।

Tafsir Abu Bakr Zakaria

আর কেউ আল্লাহর পথে হিজরত করলে সে দুনিয়ায় বহু আশ্রয়স্থল এবং প্রাচুর্য লাভ করবে। আর কেউ আল্লাহ ও রাসূলের উদ্দেশ্যে নিজ ঘর থেকে মুহাজির হয়ে বের হবার পর তার মৃত্যু ঘটলে তার পুরস্কারের ভার আল্লাহর উপর; আর আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু [১]।

[১] বিভিন্ন বর্ণনায় এসেছে যে, হিজরত বাধ্যতামূলক হওয়ার সংবাদ পেয়ে অনেক সাহাবী মক্কা থেকে মদীনায় হিজরত করতে বের হওয়ার পর পথিমধ্যেই বিভিন্ন কারণে মারা যান। এতে কাফেররা তাদেরকে বিভিন্নভাবে উপহাস করতে আরম্ভ করল। তখন আল্লাহ তা’আলা এ আয়াত নাযিল করেন, যাতে বলা হয়েছে যে, কেউ খাঁটি নিয়তে আল্লাহর পথে হিজরত করতে বের হলেই তার পক্ষ থেকে হিজরত ধরে নেয়া হবে। [দেখুন- মুসনাদে আবি ইয়া'লাঃ ২৬৭৯] আবার কোন কোন বর্ণনায় এসেছে, খালেদ ইবন হিযাম আবিসিনিয়ায় হিজরতকালে পথিমধ্যে সর্প-দংশনে মারা যান। তখন লোকেরা তার সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করতে থাকায় এ আয়াত নাযিল হয়। [তাবাকাতে ইবন সা’দ]

Tafsir Bayaan Foundation

আর যে আল্লাহর রাস্তায় হিজরত করবে, সে যমীনে বহু আশ্রয়ের জায়গা ও সচ্ছলতা পাবে। আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উদ্দেশ্যে মুহাজির হয়ে নিজ ঘর থেকে বের হয় তারপর তাকে মৃত্যু পেয়ে বসে, তাহলে তার প্রতিদান আল্লাহর উপর অবধারিত হয়। আর আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।

Muhiuddin Khan

যে কেউ আল্লাহর পথে দেশত্যাগ করে, সে এর বিনিময়ে অনেক স্থান ও সচ্ছলতা প্রাপ্ত হবে। যে কেউ নিজ গৃহ থেকে বের হয় আল্লাহ ও রসূলের প্রতি হিজরত করার উদ্দেশে, অতঃপর মৃত্যুমুখে পতিত হয়, তবে তার সওয়াব আল্লাহর কাছে অবধারিত হয়ে যায়। আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়।

Zohurul Hoque

আর যখন তোমরা পৃথিবীতে বেরোও তখন তোমাদের উপরে কোনো অপরাধ হবে না যদি তোমরা নামাযে 'কছর’ করো, যদি তোমরা আশঙ্কা করো যে যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তারা তোমাদের ঝামেলা করবে। নিঃসন্দেহ অবিশ্বাসীরা হচ্ছে তোমাদের প্রতি প্রকাশ্য শত্রু।