Skip to content

কুরআন মজীদ সূরা ইয়াসীন আয়াত ৬৮

Qur'an Surah Ya-Sin Verse 68

ইয়াসীন [৩৬]: ৬৮ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ

وَمَنْ نُّعَمِّرْهُ نُنَكِّسْهُ فِى الْخَلْقِۗ اَفَلَا يَعْقِلُوْنَ (يس : ٣٦)

waman
وَمَن
And (he) whom
এবং কোনো ব্যক্তি
nuʿammir'hu
نُّعَمِّرْهُ
We grant him long life
যাকে দীর্ঘায়ু দিই আমরা
nunakkis'hu
نُنَكِّسْهُ
We reverse him
উল্টিয়ে দিই আমরা তার
فِى
in
মধ্যে
l-khalqi
ٱلْخَلْقِۖ
the creation
আকৃতি-প্রকৃতির (বুদ্ধি ও যোগ্যতার)
afalā
أَفَلَا
Then will not
তবুও কি না
yaʿqilūna
يَعْقِلُونَ
they use intellect?
তারা জ্ঞানবুদ্ধি কাজে লাগায়

Transliteration:

Wa man nu 'ammirhu nunakkishu fil-khalq; afalaa ya'qiloon (QS. Yāʾ Sīn:68)

English Sahih International:

And he to whom We grant long life We reverse in creation; so will they not understand? (QS. Ya-Sin, Ayah ৬৮)

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

আমি যাকে দীর্ঘ জীবন দেই, তাকে সৃষ্টির ক্ষেত্রে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনি। তবুও কি তারা বুঝে না? (ইয়াসীন, আয়াত ৬৮)

Tafsir Ahsanul Bayaan

আমি যাকে দীর্ঘ জীবন দান করি, তাকে তো জরাগ্রস্ত করে দিই।[১] তবুও কি ওরা বোঝে না?[২]

[১] অর্থাৎ, আমি যাকে বেশি আয়ু দান করি, তার দৈহিক অবস্থা পরিবর্তন করে পুরো তার উল্টা অবস্থা করে দিই। অর্থাৎ সে যখন বাচ্চা থাকে, তখন তার বাড়-বৃদ্ধি অব্যাহত থাকে এবং তার বুঝশক্তি ও দৈহিক শক্তিতে বৃদ্ধি পেতে থাকে। এইভাবে সে যুবক ও প্রৌঢ় অবস্থায় পৌঁছে। তারপর এর বিপরীত তার বুঝশক্তি ও দৈহিক শক্তি ক্রমে ক্রমে দুর্বল হতে থাকে; এমনকি পরিশেষে সে একটি শিশুর ন্যায় হয়ে যায়।

[২] যে, যে আল্লাহ এরূপ করতে সক্ষম, তিনি কি পুনরায় মানুষকে জীবিত করতে সক্ষম নন?

Tafsir Abu Bakr Zakaria

আর,আমরা যাকে দীর্ঘ জীবন দান করি, সৃষ্টি অবয়বে তার অবনতি ঘটায়। তবুও কি তারা বুঝে না [১]?

[১] আল্লামা শানকীতী বলেন, আয়াতের অর্থ, তাদের সৃষ্টিকে উল্টিয়ে দেই। আগে যেভাবে সৃষ্টি করেছি ঠিক তার বিপরীত সৃষ্টি করি। কারণ, তাদেরকে দূর্বল শরীর দিয়ে সৃষ্টি করেছিলাম, যেখানে বিবেক ও জ্ঞানের অভাব ছিল। তারপর তা বাড়াতে লাগলাম এবং এক অবস্থা থেকে অপর অবস্থায় স্থানান্তর চলতে থাকল। এক স্তর থেকে অন্য স্তরে উন্নীত হতে লাগল, শেষ পর্যন্ত সে পূর্ণতা পেল। তার শক্তি-সামর্থ সর্বোচ্চ পর্যায়ে গেল। যে বুঝতে পারল ও জানতে পারল কোনটা তার পক্ষে আর কোনটা তার বিপক্ষে। যখন এ পর্যায়ে পৌঁছে গেল, তখনই তার সৃষ্টিকে আমরা উল্টিয়ে দিলাম। তার সবকিছুতে ঘাটতি দিতে থাকলাম, অবশেষে সে বার্ধক্যে উপনীত হয়ে ছোট বাচ্চাদের মতই দূর্বল শরীর, স্বল্প বিবেক ও জ্ঞানহীন হয়ে গেল। বস্তুত; تنكيس এর অর্থই হচ্ছে কোন বস্তুর উপরের অংশ নিচের দিকে করে দেয়া। [আদওয়াউল বায়ান] অন্য আয়াতেও আল্লাহ তা’আলা এ অবস্থার কথা ব্যক্ত করেছেন। আল্লাহ বলেন, “আল্লাহ, তিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেন দূর্বলতা থেকে, দূর্বলতার পর তিনি দেন শক্তি; শক্তির পর আবার দেন দূর্বলতা ও বার্ধক্য।” [সূরা আর-রূম; ৫৪] আরও বলেন, “অবশ্যই আমরা সৃষ্টি করেছি মানুষকে সুন্দরতম গঠনে, তারপর আমরা তাকে হীনতাগ্রস্তদের হীনতমে পরিণত করি”। [সূরা আত-তীন; ৪-৫] এক তাফসীর অনুসারে এখানে এ বার্ধক্যই উদ্দেশ্য নেয়া হয়েছে। তাছাড়া আরও এসেছে, “আর আমরা যা ইচ্ছে তা এক নির্দিষ্ট কালের জন্য মাতৃগর্ভে স্থিত রাখি, তারপর আমরা তোমাদেরকে শিশুরূপে বের করি , পরে যাতে তোমরা পরিণত বয়সে উপনীত হও। তোমাদের মধ্যে কারো কারো মৃত্যু ঘটান হয় এবং তোমাদের মধ্যে কাউকে কাউকে হীনতম বয়সে প্রত্যাবর্তিত করা হয়, যার ফলে সে জানার পরেও যেন কিছুই (আর) জানে না।” [সূরা আল-হাজ; ৫] আরও এসেছে, “আর আল্লাহই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন; তারপর তিনি তোমাদের মৃত্যু ঘটাবেন এবং তোমাদের মধ্যে কাউকে প্রত্যাবর্তিত করা হবে নিকৃষ্টতম বয়সে; যাতে জ্ঞান লাভের পরেও তার সবকিছু অজানা হয়ে যায়।” [সূরা আন-নাহল; ৭০]

Tafsir Bayaan Foundation

আর আমি যাকে দীর্ঘ জীবন দান করি, সৃষ্টি-অবয়বে আমি তার পরিবর্তন ঘটাই। তবুও কি তারা বুঝবে না?

Muhiuddin Khan

আমি যাকে দীর্ঘ জীবন দান করি, তাকে সৃষ্টিগত পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে নেই। তবুও কি তারা বুঝে না?

Zohurul Hoque

আর যাকে আমরা দীর্ঘ জীবন দান করি তাকে তো আমরা সৃষ্টিতে ঘুরিয়ে দিই। তবুও কি তারা বুঝে না।