কুরআন মজীদ সূরা আল আহযাব আয়াত ৫
Qur'an Surah Al-Ahzab Verse 5
আল আহযাব [৩৩]: ৫ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ
اُدْعُوْهُمْ لِاٰبَاۤىِٕهِمْ هُوَ اَقْسَطُ عِنْدَ اللّٰهِ ۚ فَاِنْ لَّمْ تَعْلَمُوْٓا اٰبَاۤءَهُمْ فَاِخْوَانُكُمْ فِى الدِّيْنِ وَمَوَالِيْكُمْ ۗوَلَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ فِيْمَآ اَخْطَأْتُمْ بِهٖ وَلٰكِنْ مَّا تَعَمَّدَتْ قُلُوْبُكُمْ ۗوَكَانَ اللّٰهُ غَفُوْرًا رَّحِيْمًا (الأحزاب : ٣٣)
- id'ʿūhum
- ٱدْعُوهُمْ
- Call them
- তোমরা ডাকো তাদেরকে
- liābāihim
- لِءَابَآئِهِمْ
- by their fathers
- নিয়ে পিতাদের তাদের (সম্পর্কে)
- huwa
- هُوَ
- it
- তা-ই
- aqsaṭu
- أَقْسَطُ
- (is) more just
- অধিক ন্যায়সঙ্গত
- ʿinda
- عِندَ
- near
- কাছে
- l-lahi
- ٱللَّهِۚ
- Allah
- আল্লাহর
- fa-in
- فَإِن
- But if
- অতঃপর যদি
- lam
- لَّمْ
- not
- না
- taʿlamū
- تَعْلَمُوٓا۟
- you know
- তোমরা জানো
- ābāahum
- ءَابَآءَهُمْ
- their fathers
- পিতাদের তাদের(পরিচয়)
- fa-ikh'wānukum
- فَإِخْوَٰنُكُمْ
- then (they are) your brothers
- তবে ভাই তোমাদের
- fī
- فِى
- in
- ভিত্তিতে
- l-dīni
- ٱلدِّينِ
- [the] religion
- দ্বীনের
- wamawālīkum
- وَمَوَٰلِيكُمْۚ
- and your friends
- ও বন্ধু তোমাদের
- walaysa
- وَلَيْسَ
- But not is
- এবং নেই
- ʿalaykum
- عَلَيْكُمْ
- upon you
- উপর তোমাদের
- junāḥun
- جُنَاحٌ
- any blame
- কোনো ত্রুটি
- fīmā
- فِيمَآ
- in what
- (এসব বিষয়ে) যা
- akhṭatum
- أَخْطَأْتُم
- you made a mistake
- তোমরা ভুল করে ফেলেছো
- bihi
- بِهِۦ
- in it
- সম্পর্কে সে
- walākin
- وَلَٰكِن
- but
- কিন্তু
- mā
- مَّا
- what
- যা
- taʿammadat
- تَعَمَّدَتْ
- intended
- ইচ্ছাকৃতভাবে করে
- qulūbukum
- قُلُوبُكُمْۚ
- your hearts
- অন্তর তোমাদের
- wakāna
- وَكَانَ
- And Allah
- এবং হলেন
- l-lahu
- ٱللَّهُ
- And Allah
- আল্লাহ্
- ghafūran
- غَفُورًا
- (is) Oft-Forgiving
- ক্ষমাশীল
- raḥīman
- رَّحِيمًا
- Most Merciful
- পরম দয়ালু
Transliteration:
Ud'oohum li aabaaa'ihim huwa aqsatu 'indal laah; fa illam ta'lamooo aabaaa'ahum fa ikhwaanukum fid deeni wa mawaaleekum; wa laisa 'alaikum junaahun feemaaa akhtaatum bihee wa laakim maa ta'ammadat quloobukum; wa kaanal laahu Ghafoorar Raheemaa(QS. al-ʾAḥzāb:5)
English Sahih International:
Call them by [the names of] their fathers; it is more just in the sight of Allah. But if you do not know their fathers – then they are [still] your brothers in religion and those entrusted to you. And there is no blame upon you for that in which you have erred but [only for] what your hearts intended. And ever is Allah Forgiving and Merciful. (QS. Al-Ahzab, Ayah ৫)
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
তাদেরকে তাদের পিতৃ-পরিচয়ে ডাক, আল্লাহর কাছে এটাই অধিক ইনসাফপূর্ণ। আর যদি তোমরা তাদের পিতৃ-পরিচয় না জান, তাহলে তারা তোমাদের দ্বীনী ভাই এবং তোমাদের বন্ধু। এ ব্যাপারে তোমাদের ত্রুটি-বিচ্যুতি হলে তোমাদের কোন গুনাহ্ নেই, কিন্তু (ধর্তব্য হল) তোমাদের অন্তরের সংকল্প। আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (আল আহযাব, আয়াত ৫)
Tafsir Ahsanul Bayaan
তোমরা ওদেরকে পিতৃপরিচয়ে ডাক; আল্লাহর দৃষ্টিতে এটিই ন্যায়সঙ্গত,[১] যদি তোমরা ওদের পিতৃপরিচয় না জান, তবে ওদেরকে তোমরা ধর্মীয় ভাই এবং বন্ধুরূপে গণ্য কর।[২] যে বিষয়ে তোমরা ভুল কর, সে বিষয়ে তোমাদের কোন অপরাধ নেই,[৩] কিন্তু তোমাদের আন্তরিক ইচ্ছা থাকলে (তাতে অপরাধ আছে)।[৪] আর আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
[১] এই আদেশ দ্বারা সেই প্রচলিত প্রথাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, যা জাহেলী যুগ থেকে চলে আসছিল এবং ইসলামের প্রারম্ভিক যুগেও প্রচলিত ছিল। আর তা হল পোষ্যপুত্রকে আপন পুত্র ভাবা। সাহাবায়ে কিরামগণ বলেন, আমরা (اُدْعُوْهُمْ لِآبَآئِهِمْ) আয়াত অবতীর্ণ হওয়া পর্যন্ত যায়েদ বিন হারেসাহ (রাঃ)-কে (যাঁকে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) মুক্ত করে বেটা বানিয়ে নিয়েছিলেন) যায়েদ বিন মুহাম্মাদ বলে ডাকতাম। (বুখারীঃ সূরা আহযাবের তফসীর) উক্ত আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পর আবু হুযাইফা (রাঃ) যিনি সালেমকে পোষ্যপুত্র বানিয়ে রেখেছিলেন, তাঁর ঘরে এক সমস্যা দেখা দিল যে, যখন পোষ্যপুত্রকে আপন সন্তান ভাবতে নিষেধ করে দেওয়া হল, তখন তার স্ত্রীর জন্য তার থেকে পর্দা করা অপরিহার্য হয়ে গেল। নবী (সাঃ) আবু হুযাইফার স্ত্রীকে বললেন, "তুমি তাকে দুধ পান করিয়ে দুধ-বেটা বানিয়ে নাও। কারণ এতে তুমি তার জন্য মাহরাম হয়ে যাবে।" সুতরাং তাঁরা তাই করলেন। (মুসলিমঃ শিশুদের দুধপান অধ্যায়, আবূ দাঊদঃ বিবাহ অধ্যায়) অনেকের মতে, এ সমাধান তাঁর জন্যই খাস।
[২] অর্থাৎ, যাদের আসল পিতার খবর জানো, তাদেরকে অন্যের দিকে সম্বদ্ধ না করে তাদের আসল পিতার দিকে সম্বদ্ধ কর। তবে যাদের পিতার পরিচয় জানা নেই, তোমরা তাদেরকে বেটা নয়; বরং ভাই বা বন্ধু মনে কর।
[৩] কারণ ভুলে গিয়ে বা ভুল করে কৃত অপরাধ ক্ষমার্হ; যেমন হাদীসেও বলা হয়েছে।
[৪] অর্থাৎ, যে ব্যক্তি জেনেশুনে (পিতা-পুত্রের) সম্পর্ক অন্যের দিকে জুড়বে, সে বড় পাপী হবে। হাদীসে এসেছে, "যে ব্যক্তি জেনেশুনে নিজেকে অন্য পিতার দিকে সম্পৃক্ত করে, সে কুফরী করে।" (বুখারীঃ মানাক্বিব অধ্যায়)
Tafsir Abu Bakr Zakaria
ডাকো তোমরা তাদেরকে তাদের পিতৃ পরিচয়ে ; আল্লাহ্র নিকট এটাই বেশী ন্যায়সংগত। অতঃপর যদি তোমরা তাদের পিতৃ পরিচয় না জান, তবে তারা তোমাদের দ্বীনি ভাই এবং বন্ধু। আর এ ব্যাপারে তোমরা কোন অনিচ্ছাকৃত ভুল করলে তোমাদের কোন অপরাধ নেই; কিন্তু তোমাদের অন্তর যা স্বেচ্ছায় করেছে (তা অপরাধ), আর আল্লাহ্ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।
Tafsir Bayaan Foundation
তোমরা তাদেরকে তাদের পিতৃ-পরিচয়ে ডাক; আল্লাহর কাছে এটাই অধিক ইনসাফপূর্ণ। অতঃপর যদি তোমরা তাদের পিতৃ-পরিচয় না জান, তাহলে তারা তোমাদের দীনি ভাই এবং তোমাদের বন্ধু। আর এ বিষয়ে তোমরা কোন ভুল করলে তোমাদের কোন পাপ নেই; কিন্তু তোমাদের অন্তরে সংকল্প থাকলে (পাপ হবে)। আর আল্লাহ অধিক ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
Muhiuddin Khan
তোমরা তাদেরকে তাদের পিতৃপরিচয়ে ডাক। এটাই আল্লাহর কাছে ন্যায়সঙ্গত। যদি তোমরা তাদের পিতৃ-পরিচয় না জান, তবে তারা তোমাদের ধর্মীয় ভাই ও বন্ধুরূপে গণ্য হবে। এ ব্যাপারে তোমাদের কোন বিচ্যুতি হলে তাতে তোমাদের কোন গোনাহ নেই, তবে ইচ্ছাকৃত হলে ভিন্ন কথা। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
Zohurul Hoque
তোমরা তাদের সন্বোধন কর তাদের বাপেদের নামে, এটিই আল্লাহ্র কাছে বেশি ন্যায়সংগত। কিন্তু যদি তোমরা তাদের পিতাদের না জানো তাহলে তারা তোমাদের ধর্ম-ভাই ও তোমাদের বন্ধুবান্ধব। আর তোমাদের উপরে কোনো অপরাধ হবে না সে-সবে যাতে তোমরা ভুল কর, কিন্তু যা তোমাদের হৃদয় মতলব আঁটে। আর আল্লাহ্ পরিত্রাণকারী, অফুরন্ত ফলদাতা।