Skip to content

কুরআন মজীদ সূরা আল ইমরান আয়াত ৭৯

Qur'an Surah Ali 'Imran Verse 79

আল ইমরান [৩]: ৭৯ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ

مَا كَانَ لِبَشَرٍ اَنْ يُّؤْتِيَهُ اللّٰهُ الْكِتٰبَ وَالْحُكْمَ وَالنُّبُوَّةَ ثُمَّ يَقُوْلَ لِلنَّاسِ كُوْنُوْا عِبَادًا لِّيْ مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ وَلٰكِنْ كُوْنُوْا رَبَّانِيّٖنَ بِمَا كُنْتُمْ تُعَلِّمُوْنَ الْكِتٰبَ وَبِمَا كُنْتُمْ تَدْرُسُوْنَ ۙ (آل عمران : ٣)

مَا
Not
নয়
kāna
كَانَ
is
শোভনীয়
libasharin
لِبَشَرٍ
for a human
কোন মানুষের জন্যে
an
أَن
that
যে
yu'tiyahu
يُؤْتِيَهُ
gives him
তাকে দেবেন
l-lahu
ٱللَّهُ
Allah
আল্লাহ
l-kitāba
ٱلْكِتَٰبَ
the Book
কিতাব
wal-ḥuk'ma
وَٱلْحُكْمَ
and the wisdom
ও জ্ঞান
wal-nubuwata
وَٱلنُّبُوَّةَ
and the Prophethood
ও নবূয়্যত
thumma
ثُمَّ
then
এরপর
yaqūla
يَقُولَ
he says
সে বলবে
lilnnāsi
لِلنَّاسِ
to the people
মানুষকে
kūnū
كُونُوا۟
"Be
''তোমরা হয়ে যাও
ʿibādan
عِبَادًا
worshippers
দাস
لِّى
of me
আমার
min
مِن
from
(থেকে)
dūni
دُونِ
besides
ব্যতীত
l-lahi
ٱللَّهِ
Allah
আল্লাহ
walākin
وَلَٰكِن
but (would say)
কিন্তু (সে বলবে)
kūnū
كُونُوا۟
"Be
''তোমরা হও
rabbāniyyīna
رَبَّٰنِيِّۦنَ
worshippers of the Lord
আল্লাহওয়ালা
bimā
بِمَا
because
যেহেতু
kuntum
كُنتُمْ
you have been
তোমরা
tuʿallimūna
تُعَلِّمُونَ
teaching
শিখিয়ে থাক
l-kitāba
ٱلْكِتَٰبَ
the Book
কিতাব
wabimā
وَبِمَا
and because
ও যেহেতু
kuntum
كُنتُمْ
you have been
(আপনি)
tadrusūna
تَدْرُسُونَ
studying (it)"
তোমরা অধ্যয়ন করে থাক''

Transliteration:

Maa kaana libasharin ai yu'tiyahul laahul Kitaaba walhukma wan Nubuwwata summa yaqoola linnaasi koonoo 'ibaadal lee min doonil laahi wa laakin koonoo rabbaaniy yeena bimaa kuntum tu'allimoonal Kitaaba wa bimaa kuntum tadrusoon (QS. ʾĀl ʿImrān:79)

English Sahih International:

It is not for a human [prophet] that Allah should give him the Scripture and authority and prophethood and then he would say to the people, "Be servants to me rather than Allah," but [instead, he would say], "Be pious scholars of the Lord because of what you have taught of the Scripture and because of what you have studied." (QS. Ali 'Imran, Ayah ৭৯)

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

কোন মানব সন্তানের পক্ষে এটা সম্ভব নয় যে, আল্লাহ তাকে কিতাব, জ্ঞান ও নুবুওয়াত দান করেন, অতঃপর সে লোকেদেরকে বলে, ‘তোমরা আল্লাহকে ছেড়ে আমার বান্দা হয়ে যাও, বরং (সে বলবে), ‘তোমরা আল্লাহ্ওয়ালা হও; যেহেতু তোমরা কিতাব শিক্ষা দান কর এবং নিজেরাও পাঠ কর’। (আল ইমরান, আয়াত ৭৯)

Tafsir Ahsanul Bayaan

(হে ঐশীগ্রন্থধারিগণ!) কোন মানুষের পক্ষে এ হতে পারে না যে, আল্লাহ তাকে কিতাব, প্রজ্ঞা ও নবুঅত দান করেন, তারপর সে লোকদেরকে বলে, ‘তোমরা আল্লাহকে ছেড়ে আমার দাস হয়ে যাও।’ বরং সে বলে, ‘তোমরা রাব্বানী (আল্লাহ-ভক্ত) হও’;[১] যেহেতু তোমরা কিতাব শিক্ষা দাও এবং যেহেতু তোমরা অধ্যয়ন কর। [২]

[১] এখানে খ্রিষ্টানদের ব্যাপারে বলা হচ্ছে। তারা ঈসা (আঃ)-কে প্রভু বানিয়ে রেখেছে। অথচ তিনি হলেন একজন মানুষ। তাঁকে কিতাব, হিকমত এবং নবুঅত দানে ধন্য করা হয়েছিল। আর এ দাবী কেউ করতে পারে না যে, আল্লাহকে বাদ দিয়ে আমার পূজারী ও দাস হয়ে যাও, বরং তিনি তো এ কথাই বলেন যে, তোমরা আল্লাহ ওয়ালা হয়ে যাও। 'রব্বানী' রব্ব শব্দের সাথে সম্বন্ধ। 'মুবালাগা' তথা আধিক্য বুঝানোর জন্য 'আলিফ' ও 'নুন'কে বৃদ্ধি করা হয়েছে। (ফাতহুল ক্বাদীর)

[২] অর্থাৎ, আল্লাহর কিতাব শিখানো ও নিজেদের পড়ার ফলস্বরূপ প্রতিপালককে চেনা এবং তাঁর সাথে বিশেষ সম্পর্ক কায়েম হওয়া উচিত। অনুরূপ আল্লাহর কিতাব সম্পর্কে জ্ঞাত ব্যক্তিদের জন্য অত্যাবশ্যক হল, তারা অন্য লোকদেরকেও তার শিক্ষা দেবে। এই আয়াত দ্বারা এ কথা পরিষ্কার হয়ে যায় যে, যখন আল্লাহর পয়গম্বরদের এ অধিকার নেই যে, তাঁরা লোকদেরকে তাঁদের ইবাদত করার নির্দেশ দেবে, তখন অন্য আর কারো এ অধিকার কিভাবে থাকতে পারে? (তফসীর ইবনে কাসীর)

Tafsir Abu Bakr Zakaria

কোন ব্যক্তির জন্য সঙ্গত নয় যে, আল্লাহ্‌ তাকে কিতাব, হেকমত ও নবুওয়াত দান করার পর তিনি মানুষকে বলবেন, ‘আল্লাহ্‌র পরিবর্তে তোমরা আমার দাস হয়ে যাও’ [১], বরং তিনি বলবেন, ‘তোমরা রব্বানী [২] হয়ে যাও, যেহেতু তোমরা কিতাব শিক্ষা দাও এবং যেহেতু তোমরা অধ্যয়ন কর।’

[১] আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, যখন নাজরানের নাসারারা রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরবারে হাজির হলো, সেখানে ইয়াহূদী ও নাসারারা সবাই একত্রিত হলো, রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদেরকে ইসলাম গ্রহণের আহবান জানালেন, তখন আবু রাফে’ আল-কুরায়ী বলে বসল; হে মুহাম্মাদ! আপনি কি চান যে, নাসারারা যেভাবে ঈসা ইবন মারইয়ামের ইবাদাত করে থাকে, সেভাবে আমরাও আপনার ইবাদাত করি? তখন নাসারাদের একজন যাকে আর-রায়িস বলা হয় সে দাঁড়িয়ে বলল, হে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপনি কি তা-ই চান? আর এটাই আপনার দাওয়াত? অথবা এরকম কোন কথা বলল। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, আমরা আল্লাহ্‌ ছাড়া কারও ইবাদত করা বা আল্লাহ্‌ ছাড়া অপর কারও ইবাদতের প্রতি আহবান জানাবো এমন কাজ থেকে আল্লাহ্‌র কাছে আশ্রয় চাই। আল্লাহ্‌ আমাকে এ জন্য পাঠান নি। অথবা এরকম কোন কথা তিনি বললেন। তখন আল্লাহ তা’আলা উপরোক্ত আয়াতসমূহ নাযিল করেন। [তাবারী]

[২] ‘রব্বানী’ শব্দের ব্যাখ্যায় বিভিন্ন মত এসেছে। ইবনে আব্বাস থেকে এক বর্ণনায় এর অর্থ এসেছে, (حُكَمَاء عُلَمَاء حُلَمَاء) অর্থাৎ প্রজ্ঞাবান, জ্ঞানী ও সহিষ্ণু হওয়া। হাসান বসরী বলেন, ফকীহ হওয়া। অন্য বর্ণনায় ইবন আব্বাস, সা’য়ীদ ইবন জুবাইর, কাতাদাহ, আতা সহ অনেকের মতে এর অর্থ ইবাদত ও তাকওয়ার অধিকারী হওয়া। [ইবন কাছীর] এগুলোতে কোন বিরোধ নেই। শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়্যাহ্‌ বলেন; এ শব্দটি (رُبَّانُ السَّفِيْنَةِ) (জাহাজের নাবিক) শব্দ থেকে এসেছে। এর অর্থ কর্ণধার, পরিচালক, বিপদে নেতৃত্বপ্রদানকারী। [মাজমূ’ ফাতাওয়া]

Tafsir Bayaan Foundation

কোন মানুষের জন্য সংগত নয় যে, আল্লাহ তাকে কিতাব, হিকমাত ও নবুওয়াত দান করার পর সে মানুষকে বলবে, ‘তোমরা আল্লাহকে ছেড়ে আমার বান্দা হয়ে যাও’। বরং সে বলবে, ‘তোমরা রববানী হও। যেহেতু তোমরা কিতাব শিক্ষা দিতে এবং তা অধ্যয়ন করতে’।

Muhiuddin Khan

কোন মানুষকে আল্লাহ কিতাব, হেকমত ও নবুওয়ত দান করার পর সে বলবে যে, ‘তোমরা আল্লাহকে পরিহার করে আমার বান্দা হয়ে যাও’-এটা সম্ভব নয়। বরং তারা বলবে, ‘তোমরা আল্লাহওয়ালা হয়ে যাও, যেমন, তোমরা কিতাব শিখাতে এবং যেমন তোমরা নিজেরা ও পড়তে।

Zohurul Hoque

কোনো মানবের জন্য এটি উচিত নয় যে আল্লাহ্ তাকে কিতাব, নির্দেশনামা ও নবুওৎ দেবেন, তারপর সে লোকদের বলবে -- “তোমরা আল্লাহ্‌কে ছেড়ে আমার উপাসনাকারী হও”, বরং -- ''তোমরা রব্বানী হও, কেননা তোমরা কিতাব শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছিলে ও অনুশীলন করে চলছিলে।’’