Skip to content

কুরআন মজীদ সূরা আল ইমরান আয়াত ৪৬

Qur'an Surah Ali 'Imran Verse 46

আল ইমরান [৩]: ৪৬ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ

وَيُكَلِّمُ النَّاسَ فِى الْمَهْدِ وَكَهْلًا وَّمِنَ الصّٰلِحِيْنَ (آل عمران : ٣)

wayukallimu
وَيُكَلِّمُ
And he will speak
এবং সে কথা বলবে
l-nāsa
ٱلنَّاسَ
(to) the people
মানুষের (সাথে)
فِى
in
(মধ্যে)
l-mahdi
ٱلْمَهْدِ
the cradle
দোলনায়
wakahlan
وَكَهْلًا
and (in) maturity;
ও পরিণত বয়সে
wamina
وَمِنَ
and (he will be) of
এবং অন্যতম হবে
l-ṣāliḥīna
ٱلصَّٰلِحِينَ
the righteous"
সৎকর্মশীলদের''

Transliteration:

Wa yukallimun naasa filmahdi wa kahlanw wa minassaaliheen (QS. ʾĀl ʿImrān:46)

English Sahih International:

He will speak to the people in the cradle and in maturity and will be of the righteous." (QS. Ali 'Imran, Ayah ৪৬)

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

‘সে লোকেদের সাথে দোলনা থাকা অবস্থায় এবং বয়োঃপ্রাপ্ত অবস্থায় কথা বলবে এবং নেক বান্দাদের অন্তর্গত হবে। (আল ইমরান, আয়াত ৪৬)

Tafsir Ahsanul Bayaan

সে (ঈসা) দোলনায় থাকা অবস্থায় ও পরিণত বয়সে মানুষের সাথে কথা বলবে[১] এবং সে হবে পুণ্যবানদের একজন।’

[১] ঈসা (আঃ)-এর শিশু অবস্থায় দোলনায় কথা বলার ব্যাপারটা সূরা মারয়্যামেও উল্লিখিত হয়েছে। তাছাড়া সহীহ হাদীসে আরো দু'টি শিশুর কথা উল্লেখিত হয়েছে (যারা মায়ের কোলে কথা বলেছে)। একটি শিশু হল জুরায়েজ সম্পর্কিত ঘটনায় এবং অপরটি একজন ইস্রাঈলী মহিলার শিশু। (বুখারী ৩৪৩৬নং) এই বর্ণনায় যে তিনজন শিশুর কথা এসেছে, তাদের সকলের সম্পর্ক হল বানী-ইস্রাঈলদের সাথে। কারণ, সহীহ মুসলিম শরীফে 'আসহাবে উখদুদ' (গর্ত ওয়ালাদের) ঘটনাতেও একজন দুধের শিশুর বাক্যালাপ করার কথা এসেছে। আর ইউসুফ (আঃ)-এর ব্যাপারে ফায়সালাকারী সাক্ষীও নাকি একজন শিশু ছিল; কথাটা প্রসিদ্ধ হলেও তা সঠিক নয়। বরং সে দাঁড়িওয়ালা ছিল। (আয্যায়ীফাহ ৮৮১নং) كَهْلٌ (পরিণত বয়সে) কথা বলার অর্থ কেউ করেছেন, যখন তিনি বড় হয়ে অহী ও নবুঅত পেয়ে ধন্য হবেন তখনকার বাক্যালাপ। আবার কেউ বলেছেন, কিয়ামতের নিকটবর্তী সময়ে যখন তিনি আসমান থেকে অবতরণ করবেন এবং তিনি ইসলামের তবলীগ করবেন, তখনকার বাক্যালাপকে বুঝানো হয়েছে; যেমন আহলে সুন্নাতের আকীদা এবং যা বহুধাসূত্রে বর্ণিত সহীহ হাদীস দ্বারা এ কথা প্রমাণিত। (ইবনে কাসীর ও ক্বুরত্ববী)

Tafsir Abu Bakr Zakaria

আর তিনি দোলনায় [১] ও বয়োঃপ্রাপ্ত অবস্থায় মানুষের সাথে কথা বলবেন [২] এবং তিনি হবেন পুণ্যবানদের একজন। ’

[১] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ‘দোলনায় মাত্র তিন জন কথা বলেছেন। ঈসা, জুরাইজের সময়ের এক ছোট বাচ্চা আর একটি বাচ্চা’। [বুখারীঃ ২৪৮২, অনুরূপ ৩৪৩৬; মুসলিমঃ ২৫৫০]

দোলনায় তিনি কি কথা কাদের উদ্দেশ্যে বলেছেন তা এখানে বর্ণনা করা হয়নি। অন্যত্র বলা হয়েছে যে, তিনি তার কাওমের লোকদেরকে তার নিজের পরিচয় দিয়ে তার মাকে বিব্রত অবস্থা থেকে রেহাই দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “আমি তো আল্লাহ্‌র বান্দা। তিনি আমাকে কিতাব দিয়েছেন, আমাকে নবী করেছেন, ‘যেখানেই আমি থাকি না কেন তিনি আমাকে বরকতময় করেছেন, তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন যতদিন জীবিত থাকি ততদিন সালাত ও যাকাত আদায় করতে। ‘আর আমাকে আমার মায়ের প্রতি অনুগত করেছেন এবং তিনি আমাকে করেননি উদ্ধত, হতভাগ্য; ‘আমার প্রতি শান্তি যেদিন আমি জন্ম লাভ করেছি, যেদিন আমার মৃত্যু হবে এবং যেদিন জীবিত অবস্থায় আমি উখিত হব’। [সূরা মারইয়াম; ৩০-৩৩]

[২] আয়াতে বলা হয়েছে যে, ঈসা ‘আলাইহিস সালাম শৈশব ও পৌঢ় বয়সে মানুষের সাথে কথা বলবেন। নিঃসন্দেহে শৈশবে পূর্ণ বয়স্কদের মত জ্ঞানীসুলভ, মেধাসম্পন্ন প্রাঞ্জল ও বিশুদ্ধভাবে কথা বলা একটি মু'জিযা। কিন্তু তার সাথে ‘পৌঢ় বয়সে কথা বলার ব্যাপারটির কি সম্পর্ক থাকতে পারে? অধিকাংশ আলেমদের নিকট এর উত্তর এই যে, মূলত; শৈশব অবস্থায় কথা বলার মু'জিযা বর্ণনা করাই এখানে উদ্দেশ্য। তার সাথে পৌঢ় বয়সেও কথা বলবেন বলা দ্বারা উভয় অবস্থায়ই তার কথা পাণ্ডিত্যপূর্ণ ও জ্ঞানীসুলভ হবে এমনটি বোঝানো হয়েছে। কোন কোন আলেম বলেন, তিনি যেহেতু যুবক বয়সে পৌঢ় হবার পূর্বেই আসমানে উত্থিত হয়েছেন, সেহেতু এ আয়াত দ্বারা বোঝা যায় যে, তিনি পৌঢ় অবস্থায় আবার ফিরে এসে মানুষের সাথে কথা বলবেন। সুতরাং আবার ফিরে আসার ব্যাপারটি এ আয়াতের মাধ্যমেও প্রমাণিত হয়ে গেল। যা আরেকটি অলৌকিক ব্যাপার।

Tafsir Bayaan Foundation

আর সে মানুষের সাথে কথা বলবে দোলনায় ও পরিণত বয়সে এবং সে নেককারদের অন্তর্ভুক্ত।

Muhiuddin Khan

যখন তিনি মায়ের কোলে থাকবেন এবং পূর্ণ বয়স্ক হবেন তখন তিনি মানুষের সাথে কথা বলবেন। আর তিনি সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত হবেন।

Zohurul Hoque

''আর তিনি লোকদের সাথে কথা বলবেন দোলনায় এবং বার্ধক্যকালে, আর তিনি সুকর্মীদের অন্যতম।’’