Skip to content

কুরআন মজীদ সূরা আল ইমরান আয়াত ১৭২

Qur'an Surah Ali 'Imran Verse 172

আল ইমরান [৩]: ১৭২ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ

اَلَّذِيْنَ اسْتَجَابُوْا لِلّٰهِ وَالرَّسُوْلِ مِنْۢ بَعْدِ مَآ اَصَابَهُمُ الْقَرْحُ ۖ لِلَّذِيْنَ اَحْسَنُوْا مِنْهُمْ وَاتَّقَوْا اَجْرٌ عَظِيْمٌۚ (آل عمران : ٣)

alladhīna
ٱلَّذِينَ
Those who
যারা
is'tajābū
ٱسْتَجَابُوا۟
responded
সাড়া দেয়
lillahi
لِلَّهِ
to Allah
আল্লাহর
wal-rasūli
وَٱلرَّسُولِ
and the Messenger
ও রাসূলের (ডাকে)
min
مِنۢ
from
(থেকে)
baʿdi
بَعْدِ
after
এরপরেও
مَآ
what
যা
aṣābahumu
أَصَابَهُمُ
befell them
তাদের পৌঁছেছে
l-qarḥu
ٱلْقَرْحُۚ
the injury
আঘাত
lilladhīna
لِلَّذِينَ
for those who
তাদের জন্য
aḥsanū
أَحْسَنُوا۟
did good
নেকী করেছে (যারা)
min'hum
مِنْهُمْ
among them
তাদের মধ্যে
wa-ittaqaw
وَٱتَّقَوْا۟
and feared Allah
ও ভয় করেছে (আল্লাহকে)
ajrun
أَجْرٌ
(is) a reward
পুরস্কার (রয়েছে)
ʿaẓīmun
عَظِيمٌ
great
বিরাট

Transliteration:

Allazeenas tajaaboo lil laahi war Rasooli mim ba'di maaa asaabahumulqarh; lillazeena ahsanoo minhum wattaqaw ajrun 'azeem (QS. ʾĀl ʿImrān:172)

English Sahih International:

Those [believers] who responded to Allah and the Messenger after injury had struck them. For those who did good among them and feared Allah is a great reward – (QS. Ali 'Imran, Ayah ১৭২)

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার পরও যারা আল্লাহ এবং রসূলের ডাকে সাড়া দিয়েছে তাদের মধ্যে যারা সৎকাজ করে ও তাকওয়া অবলম্বন করে তাদের জন্য রয়েছে মহা প্রতিদান। (আল ইমরান, আয়াত ১৭২)

Tafsir Ahsanul Bayaan

আঘাত পাওয়ার পরও যারা আল্লাহ ও রসূলের ডাকে সাড়া দিয়েছে, তাদের মধ্যে যারা সৎকাজ করে এবং সাবধান হয়ে চলে, তাদের জন্য রয়েছে মহা পুরস্কার। [১]

[১] যখন মুশরিকরা উহুদ যুদ্ধ থেকে প্রত্যাবর্তন করে, তখন পথিমধ্যে তাদের খেয়াল হয় যে, আমরা তো একটি সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করে দিলাম। পরাজয়ের কারণে মুসলিমদের মনোবল তো দমে গেছে এবং তারা এখন ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে। সুতরাং এই সুযোগ গ্রহণ করে আমাদের উচিত ছিল, মদীনার উপর পুরোদমে আক্রমণ করে বসা, যাতে মদীনা ভূমি থেকে ইসলাম সমূলে উচ্ছেদ হয়ে যেত। এদিকে মদীনায় পৌঁছে নবী করীম (সাঃ)ও তাদের (কাফেরদের) পুনরায় পাল্টা আক্রমণের আশঙ্কা বোধ করলেন। তাই তিনি সাহাবাদেরকে যুদ্ধের জন্য প্রস্ত্তত করলেন। সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) যদিও নিজেদের নিহত ও আহতদের কারণে বড়ই মর্মাহত ও দুঃখিত ছিলেন, তবুও নবী করীম (সাঃ)-এর নির্দেশ মত যুদ্ধের জন্য প্রস্ত্তত হয়ে গেলেন। মুসলিমদের এই দল যখন মদীনা থেকে ৮ মাইল দূরে অবস্থিত 'হামরাউল আসাদ' নামক স্থানে পৌঁছল, তখন মুশরিকরা ভয় পেয়ে গেল। কাজেই তাদের ইচ্ছার পরিবর্তন ঘটল এবং মদীনার উপর আক্রমণ করার পরিবর্তে মক্কা অভিমুখে যাত্রা শুরু করল। অতঃপর নবী করীম (সাঃ) এবং তাঁর সাথীরাও মদীনায় প্রত্যাগমন করলেন। আলোচ্য আয়াতে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করার উদ্দীপনার উপর মুসলিমদের প্রশংসা করা হয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন, এই আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার কারণ হল, আবূ সুফিয়ানের ধমক ও হুমকি। সে হুমকি দিয়েছিল যে, আগামী বছর 'বদর সুগরা'য় আমাদের ও তোমাদের মধ্যে মোকাবেলা হবে। (আবূ সুফিয়ান তখন পর্যন্ত ইসলাম গ্রহণ করেনি) তার এই হুমকির ভিত্তিতে মুসলিমরাও আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করার পূর্ণ উৎসাহ প্রদর্শন করে জিহাদে পুরো দমে অংশ গ্রহণ করার দৃঢ় সংকল্প করেন। (ফাতহুল ক্বাদীর ও ইবনে কাসীর থেকে সংগৃহীত সার-সংক্ষেপ। তবে শেষোক্ত কথাটি আলোচ্য বিষয়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়)

Tafsir Abu Bakr Zakaria

যখম হওয়ার পর যারা আল্লাহ্‌ ও রাসূলের ডাকে সাড়া দিয়েছে [১]। তাদের মধ্যে যারা সৎকাজ করে এবং তাক্‌ওয়া অবলম্বন করে চলে তাদের জন্য মহাপুরস্কার রয়েছে [২]।

আঠারতম রুকূ‘

[১] উরওয়া ইবনে যুবাইর বলেনঃ আমাকে আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বলেছেন, তোমার পিতা ও আমার পিতা ঐ সমস্ত সাহাবীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন, যারা যখমী হওয়ার পরে আল্লাহ্‌ এবং তাঁর রাসূলের ডাকে সাড়া দিয়েছিলেন। [বুখারীঃ ৪০৭৭] অর্থাৎ যুবাইর ও আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহুমা।

[২] এ যুদ্ধের ঘটনাটি এই যে, মক্কার কাফেররা যখন ওহুদের ময়দান থেকে ফিরে এল, তখন পথে এসে তাদের আফসোস হলো যে, আমরা বিজয় অর্জন করার পরিবর্তে অনর্থকই ফিরে এলাম। সবাই মিলে একটা কঠিন আক্রমণ চালিয়ে সমস্ত মুসলিমকে খতম করে দেয়াই উচিৎ ছিল। আর এই কল্পনা তাদের মনে এমনই প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করল যে, পুনরায় মদীনায় ফিরে যেতে ইচ্ছা করতে লাগল। কিন্তু আল্লাহ্ তা’আলা তাদের মনে গভীর ভীতির সঞ্চার করে দিলেন। তাতে তারা সোজা মক্কার পথ ধরল। কিন্তু যেতে যেতে মদীনাযাত্রী কোন পথিকের কাছে বলে দিয়ে গেল যে, তোমরা সেখানে গিয়ে কোন প্রকারে মুসলিমদের মনে আমাদের ভয় বিস্তুার করবে যে, তারা এদিকে ফিরে আসছে। এ ব্যাপারটি ওহীর মাধ্যমে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম জানতে পারলেন। কাজেই তিনি ‘হামরাউল-আসাদ’ পর্যন্ত তাদের পশ্চাদ্ধাবন করলেন। বিভিন্ন বর্ণনায় এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করলেন, কে আছে, যারা মুশরেকদের পশ্চাদ্ধাবন করবে? তখন সত্তর জন সাহাবী প্রস্তুত হলেন যাদের মধ্যে এমন লোকও ছিলেন যারা গত কালকের যুদ্ধে কঠিন ভাবে আহত হয়ে পড়েছিলেন এবং অন্যের সাহায্যে চলাফেরা করছিলেন। এরাই রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে মুশরিকদের পশ্চাদ্ধাবনে রওয়ানা হলেন। [বুখারী ৪০৭৭]

Tafsir Bayaan Foundation

যারা আল্লাহ ও রাসূলের ডাকে সাড়া দিয়েছে যখমপ্রাপ্ত হওয়ার পরও, তাদের মধ্য থেকে যারা সৎকর্ম করেছে এবং তাকওয়া অবলম্বন করেছে তাদের জন্য রয়েছে মহাপুরস্কার।

Muhiuddin Khan

যারা আহত হয়ে পড়ার পরেও আল্লাহ এবং তাঁর রসূলের নির্দেশ মান্য করেছে, তাদের মধ্যে যারা সৎ ও পরহেযগার, তাদের জন্য রয়েছে মহান সওয়াব।

Zohurul Hoque

যারা আল্লাহ্ ও রসূলের আহ্বানে সাড়া দিয়েছিল তাদের উপরে দুর্যোগ ঘটার পরে, -- তাদের মধ্যে যারা সৎকর্ম করে ও ভয়শ্রদ্ধা করে তাদের জন্য আছে বিরাট পুরস্কার।