Skip to content

কুরআন মজীদ সূরা আল আনকাবুত আয়াত ৬

Qur'an Surah Al-'Ankabut Verse 6

আল আনকাবুত [২৯]: ৬ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ

وَمَنْ جَاهَدَ فَاِنَّمَا يُجَاهِدُ لِنَفْسِهٖ ۗاِنَّ اللّٰهَ لَغَنِيٌّ عَنِ الْعٰلَمِيْنَ (العنكبوت : ٢٩)

waman
وَمَن
And whoever
এবং যে
jāhada
جَٰهَدَ
strives
জিহাদ (সংগ্রাম সাধনা) করে
fa-innamā
فَإِنَّمَا
then only
তবে শুধুমাত্র
yujāhidu
يُجَٰهِدُ
he strives
সে জিহাদ (সংগ্রাম সাধনা)করে
linafsihi
لِنَفْسِهِۦٓۚ
for himself
জন্যে নিজের তার
inna
إِنَّ
Indeed
নিশ্চয়ই
l-laha
ٱللَّهَ
Allah
আল্লাহ্‌
laghaniyyun
لَغَنِىٌّ
(is) Free from need
অবশ্যই অমুখাপেক্ষী
ʿani
عَنِ
of
হ'তে
l-ʿālamīna
ٱلْعَٰلَمِينَ
the worlds
বিশ্ববাসী

Transliteration:

Wa man jaahada fainnamaa yujaahidu linafsih; innal laaha laghaniyyun 'anil 'aalameen (QS. al-ʿAnkabūt:6)

English Sahih International:

And whoever strives only strives for [the benefit of] himself. Indeed, Allah is Free from need of the worlds. (QS. Al-'Ankabut, Ayah ৬)

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

যে লোক (আল্লাহর পথে) সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালায়, সে তার নিজের কল্যাণেই প্রচেষ্টা চালায়, আল্লাহ সৃষ্টিজগত থেকে অবশ্যই বে-পরওয়া। (আল আনকাবুত, আয়াত ৬)

Tafsir Ahsanul Bayaan

যে কেউ সংগ্রাম করে, সে তো নিজের জন্যই সংগ্রাম করে; আল্লাহ অবশ্যই বিশ্বজগতের ওপর নির্ভরশীল নন। [১]

[১] এর অর্থ {مَنْ عَمِلَ صَالِحًا فَلِنَفْسِهِ وَمَنْ أَسَاء فَعَلَيْهَا} এর মত। (সূরা জাসিয়াহ ৪৫;১৫ আয়াত) অর্থাৎ, যে ভাল কাজ করবে তার ফল সে নিজেই ভোগ করবে। তাছাড়া আল্লাহ বান্দাদের কোন কাজের মুখাপেক্ষী নন। যদি পৃথিবীর সবাই আল্লাহর পরহেযগার বান্দা হয়ে যায়, তাহলে তার ফলে তাঁর রাজ্যের শক্তি বৃদ্ধি হবে না। আর যদি সকল মানুষই আল্লাহর নাফরমান ও অবাধ্য হয়ে যায়, তাহলেও তাঁর রাজ্যে কোন প্রকার কমি আসবে না। শাব্দিক অর্থের দিক দিয়ে এতে কাফেরদের বিরুদ্ধে জিহাদও শামিল। কারণ, এটিও অন্যতম সৎকর্ম।

Tafsir Abu Bakr Zakaria

আর যে কেউ প্রচেষ্টা চালায়, সে তো নিজের জন্যই প্রচেষ্টা চালায় [১]; আল্লাহ্‌ তো সৃষ্টিকুল থেকে অমুখাপেক্ষী [২]।

[১] “মুজাহাদা’’ শব্দটির মূল অর্থ হচ্ছে, কোন বিরোধী শক্তির মোকাবিলায় দ্বন্দ্ব, প্ৰচেষ্টা চালানো। আর যখন কোন বিশেষ বিরোধী শক্তি চিহ্নিত করা হয় না বরং সাধারণভাবে “মুজাহাদা” শব্দ ব্যবহার করা হয় তখন এর অর্থ হয় একটি সর্বাত্মক ও সর্বব্যাপী দ্বন্দ্ব-সংঘাত। মুমিনকে এ দুনিয়ায় যে দ্বন্দ্ব-সংগ্রাম করতে হয় তা হচ্ছে এ ধরনের। তাকে নাফস, শয়তান ও কাফেরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হয়। [সা‘দী] তাকে শয়তানের সাথে লড়াই করতে হয়, কারণ সে তাকে সর্বক্ষণ সৎকাজের ক্ষতির ভয় দেখায় এবং অসৎকাজের লাভ ও স্বাদ উপভোগের লোভ দেখিয়ে বেড়ায়। তাকে নিজের নফসের বা কুপ্রবৃত্তির সাথেও লড়তে হয়, যে তাকে সর্বক্ষণ নিজের খারাপ ইচ্ছা-আকাংখার দাসে পরিণত করে রাখার জন্য জোর দিতে থাকে। নিজের গৃহ থেকে নিয়ে বিশ্ব-সংসারের এমন সকল মানুষের সাথে তাকে লড়তে হয় যাদের আদর্শ, মতবাদ, মানসিক প্রবণতা, চারিত্রিক নীতি, রসম-রেওয়াজ, সাংস্কৃতিক ধারা এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিধান সত্য দ্বীনের সাথে সংঘর্ষিক। তাকে কাফেরদের বিরুদ্ধেও লড়তে হয়। [দেখুন, সা‘দী; আত-তাহরীর ওয়াত তানওয়ীর] এ প্রচেষ্টা এক-দুদিনের নয়, সারাজীবনের। দিন-রাতের চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে প্রতি মুহূর্তের। কোন একটি ময়দানে নয় বরং জীবনের প্রত্যেকটি ময়দানে ও প্রতি দিকে। হাসান বসরী বলেন, একজন মানুষ প্রতিনিয়ত জিহাদ করে যাচ্ছে অথচ একদিনও তরবারী ব্যবহার করেনি। [ইবন কাসীর]

[২] অর্থাৎ আল্লাহ্‌ এ জন্য তোমাদের কাছে এ দ্বন্দ্ব-সংগ্রামের দাবী করছেন না যে, নিজের সার্বভৌম কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত করার ও প্রতিষ্ঠিত রাখার জন্য তোমাদের সাহায্যের প্রয়োজন, বরং এটিই তোমাদের উন্নতি ও অগ্রগতির পথ, তাই তিনি তোমাদের এ দ্বন্দ্ব-সংগ্রামে লিপ্ত হবার নির্দেশ দিচ্ছেন। এ পথে অগ্রসর হয়ে তোমরা এমন শক্তির অধিকারী হতে পারো যার ফলে দুনিয়ায় তোমরা কল্যাণ ও সুকৃতির ধারক এবং আখেরাতে আল্লাহ্‌র জান্নাতের অধিকারী হবে। এ যুদ্ধ চালিয়ে তোমরা আল্লাহ্‌র কোন উপকার করবে না বরং তোমরা নিজেরাই উপকৃত হবে। তাছাড়া এ প্রচেষ্টার মাধ্যমে তোমরা আল্লাহ্‌র সে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পার যার কথা সূরার শুরুতে আল্লাহ্‌ উল্লেখ করেছেন। [দেখুন, ইবন কাসীর; ফাতহুল কাদীর; সা‘দী, ইবনুল কাইয়্যেম, শিফাউল আলীলঃ ২৪৬]

Tafsir Bayaan Foundation

আর যে চেষ্টা করে সে তো তার নাফ্সের জন্য চেষ্টা করে। নিশ্চয় আল্লাহ সৃষ্টিকুল থেকে প্রয়োজনমুক্ত।

Muhiuddin Khan

যে কষ্ট স্বীকার করে, সে তো নিজের জন্যেই কষ্ট স্বীকার করে। আল্লাহ বিশ্ববাসী থেকে বে-পরওয়া।

Zohurul Hoque

আর যে কেউ জিহাদ করে, সে তাহলে নিশ্চয়ই সংগ্রাম করে তার নিজেরই জন্যে। আল্লাহ্ নিঃসন্দেহ বিশ্বজগতের উপরে অনন্য- নির্ভর।