Skip to content

কুরআন মজীদ সূরা আল আনকাবুত আয়াত ২৭

Qur'an Surah Al-'Ankabut Verse 27

আল আনকাবুত [২৯]: ২৭ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ

وَوَهَبْنَا لَهٗٓ اِسْحٰقَ وَيَعْقُوْبَ وَجَعَلْنَا فِيْ ذُرِّيَّتِهِ النُّبُوَّةَ وَالْكِتٰبَ وَاٰتَيْنٰهُ اَجْرَهٗ فِى الدُّنْيَا ۚوَاِنَّهٗ فِى الْاٰخِرَةِ لَمِنَ الصّٰلِحِيْنَ (العنكبوت : ٢٩)

wawahabnā
وَوَهَبْنَا
And We granted
এবং আমরা দান করলাম
lahu
لَهُۥٓ
to him
জন্যে তার
is'ḥāqa
إِسْحَٰقَ
Ishaq
ইসহাককে
wayaʿqūba
وَيَعْقُوبَ
and Yaqub
ও ইয়াকুবকে
wajaʿalnā
وَجَعَلْنَا
and We placed
এবং আমরা স্হির করলাম
فِى
in
মধ্যে
dhurriyyatihi
ذُرِّيَّتِهِ
his offsprings
বংশধরদের তার
l-nubuwata
ٱلنُّبُوَّةَ
the Prophethood
নবুয়্যত
wal-kitāba
وَٱلْكِتَٰبَ
and the Book
ও কিতাব
waātaynāhu
وَءَاتَيْنَٰهُ
And We gave him
এবং তাকে দিয়েছি
ajrahu
أَجْرَهُۥ
his reward
প্রতিফল তার
فِى
in
মধ্যে
l-dun'yā
ٱلدُّنْيَاۖ
the world
দুনিয়ার
wa-innahu
وَإِنَّهُۥ
And indeed he
এবং নিশ্চয়ই সে (হবে)
فِى
in
মধ্যে
l-ākhirati
ٱلْءَاخِرَةِ
the Hereafter
আখেরাতের
lamina
لَمِنَ
(is) surely among
অবশ্যই অন্তর্ভুক্ত
l-ṣāliḥīna
ٱلصَّٰلِحِينَ
the righteous
সৎকর্মশীলদের

Transliteration:

Wa wahabnaa lahoo Ishaaqa wa Ya'Qooba wa ja'alnaa fee zurriyyatihin Nubuwwata wal Kitaaba wa aatainaahu ajrahoo fid dunyaa wa innahoo fil aakhirati laminas saaliheen (QS. al-ʿAnkabūt:27)

English Sahih International:

And We gave to him Isaac and Jacob and placed in his descendants prophethood and scripture. And We gave him his reward in this world, and indeed, he is in the Hereafter among the righteous. (QS. Al-'Ankabut, Ayah ২৭)

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

আমি তাকে দান করেছিলাম ইসহাক্ব ও ইয়া‘কুব, তার বংশধরদের জন্য স্থির করেছিলাম নবূওয়াত ও কিতাব, আর তাকে প্রতিদান দিয়েছিলাম দুনিয়াতে, এবং আখিরাতেও অবশ্যই সে সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত। (আল আনকাবুত, আয়াত ২৭)

Tafsir Ahsanul Bayaan

আমি ইব্রাহীমকে দান করলাম ইসহাক ও ইয়াকুব এবং তার বংশধরদের জন্য স্থির করলাম নবুঅত ও গ্রন্থ[১] এবং আমি তাকে পৃথিবীতে পুরস্কৃত করলাম;[২] পরকালেও সে নিশ্চয়ই সৎকর্মপরায়ণদের অন্যতম হবে। [৩]

[১] অর্থাৎ, ইসহাক (আঃ) এর ঔরসে ইয়াকূব (আঃ)-এর জন্ম হয়। (ইয়াকূব (আঃ)-এর অপর নাম ছিল ইস্রাঈল।) যাঁর ঔরসে বানী ইস্রাঈল বংশের সূত্রপাত হয় এবং তাদের মধ্যেই সমস্ত নবী আগমন করেন ও আসমানী কিতাব অবতীর্ণ হয়। শেষ পর্যায়ে নবী মুহাম্মাদ (সাঃ) ইবরাহীম (আঃ)-এর দ্বিতীয় পুত্র ইসমাঈল (আঃ)-এর বংশে জন্মলাভ করে নবী হন এবং তাঁর উপর কুরআন অবতীর্ণ হয়।

[২] এখানে পুরস্কার বা প্রতিদান বলতে পৃথিবীর জীবিকা এবং সুনাম ও সুখ্যাতিও। অর্থাৎ, পৃথিবীর সকল ধর্মের লোক (খ্রিষ্টান, ইয়াহুদী এমনকি পৌত্তলিকরাও) ইবরাহীম (আঃ)-কে সম্মান ও শ্রদ্ধেয়ভাজন গণ্য করে থাকে। আর মুসলিমরা তো ইবরাহীম (আঃ)-এর ধর্মাদর্শের অনুসারী। তিনি তাদের নিকট সম্মানের পাত্র হবেন না কেন?

[৩] অর্থাৎ, পরকালেরও তিনি সুউচ্চ মর্যাদার অধিকারী এবং সৎ লোকদের দলভুক্ত হবেন। এই বিষয়টি অন্যত্র এভাবে বলা হয়েছে,

{وَلَقَدِ اصْطَفَيْنَاهُ فِي الدُّنْيَا وَإِنَّهُ فِي الآخِرَةِ لَمِنَ الصَّالِحِينَ} (১৩০) سورة البقرة

{وَآتَيْنَاهُ فِي الْدُّنْيَا حَسَنَةً وَإِنَّهُ فِي الآخِرَةِ لَمِنَ الصَّالِحِينَ } (১২২) سورة النحل

Tafsir Abu Bakr Zakaria

আর আমরা ইবরাহীমকে দান করলাম ইসহাক ও ইয়া‘কূব [১] এবং তাঁর বংশধরদের জন্য স্থির করলাম নবূওয়ত ও কিতাব। আর আমরা তাকে তার প্রতিদান দুনিয়ায় দিয়েছিলাম; এবং আখেরাতেও তিনি নিশ্চয়ই সৎকর্মপরায়ণদের অন্যতম হবেন [২]।

[১] ইসহাক আলাইহিস সালাম ছিলেন তাঁর পুত্র এবং ইয়াকূব ছিলেন পৌত্র। এখানে ইবরাহীম আলাইহিস সালামের অন্যান্য পুত্রদের উল্লেখ না করার কারণ হচ্ছে এই যে, ইবরাহীম সন্তানদের মাদ্‌ইয়ানী শাখায় কেবলমাত্র শু‘আইব আলাইহিস সালামই নবুওয়াত লাভ করেন এবং ইসমাঈলী শাখায় মুহাম্মাদ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুওয়াত লাভ পর্যন্ত আড়াই হাজার বছরে আর কোন নবী আসেননি। পক্ষান্তরে ইসহাক আলাইহিস সালাম থেকে যে শাখাটি চলে তার মধ্যে একের পর এক ঈসা আলাইহিস সালাম পর্যন্ত নবুওয়াত ও কিতাবের নেয়ামত প্রদত্ত হতে থাকে।

[২] অর্থাৎ আল্লাহ্‌ তা‘আলা ইবরাহীম আলাইহিস সালাম-এর আত্মত্যাগ ও অন্যান্য সৎকর্মের প্রতিদান দুনিয়াতেও দান করেছেন। তাঁকে মানুষের প্রিয় ও নেতা করেছেন। যারাই ইবরাহীম আলাইহিস সালামের দাওয়াতকে হেয় প্রতিপন্ন করতে চেয়েছিল তারা সবাই দুনিয়ার বুক থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে এবং এমনভাবে বিলুপ্ত হয়ে গেছে যে, আজ দুনিয়ার কোথাও তাদের কোন নাম নিশানাও নেই। কিন্তু যে ব্যাক্তিকে আল্লাহ্‌র কালেমা বুলন্দ করার অপরাধে তারা জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে দিতে চেয়েছিল এবং শেষ পর্যন্ত যাকে সহায়-সম্বলহীন অবস্থায় স্বদেশভূমি ত্যাগ করতে হয়েছিল তাকে আল্লাহ্‌ এমন সফলতা দান করেন যে, দুনিয়াতে তাকে উত্তম স্বচ্ছন্দ রিযিক, প্রশস্ত আবাস, উত্তম নেককার স্ত্রী, সুপ্ৰশংসা প্ৰদান করা হয়েছে। তাছাড়া চার হাজার বছর থেকে দুনিয়ার বুকে তার নাম সমুজ্জ্বল রয়েছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত থাকবে। দুনিয়ার সকল মুসলিম, নাসারা ও ইয়াহূদী রাব্বুল আলামীনের সেই খলীল তথা বন্ধুকে একযোগে নিজেদের নেতা বলে স্বীকার করে। একমাত্র সেই ব্যাক্তি এবং তার সন্তানদের থেকেই তারা হিদায়াতের আলোকবর্তিকা লাভ করতে পেরেছে। আখেরাতে তিনি যে মহাপুরস্কার লাভ করবেন তাতো তার জন্য নির্ধারিত হয়েই আছে কিন্তু এ দুনিয়ায়ও তিনি যে মর্যাদা লাভ করেছেন তা দুনিয়ার বৈষয়িক স্বাৰ্থ উদ্ধার প্রচেষ্টায় জীবনপাতকারীদের একজনও আজ পর্যন্ত লাভ করতে পারেনি। [দেখুন, ইবন কাসীর; সা‘দী; আদওয়াউল বায়ান] এ থেকে জানা গেল যে, কর্মের আসল প্রতিদান তো আখেরাতে পাওয়া যাবে, কিন্তু তার কিছু অংশ দুনিয়াতেও নগদ দেয়া হয়। অনেক নির্ভরযোগ্য হাদীসে অনেক সৎকর্মের পার্থিব উপকারিতা ও অসৎকর্মের পার্থিব অনিষ্ট বর্ণিত হয়েছে।

Tafsir Bayaan Foundation

আর আমি তাকে দান করলাম ইসহাক ও ‘ইয়া‘কূবকে এবং তার বংশে নবুওয়াত ও কিতাব দিলাম। আর দুনিয়াতে তাকে তার প্রতিদান দিলাম এবং নিশ্চয় সে আখিরাতে সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত হবে।

Muhiuddin Khan

আমি তাকে দান করলাম ইসহাক ও ইয়াকুব, তাঁর বংশধরদের মধ্যে নবুওয়ত ও কিতাব রাখলাম এবং দুনিয়াতে তাঁকে পুরস্কৃত করলাম। নিশ্চয় পরকালে ও সে সৎলোকদর অন্তর্ভূক্ত হবে।

Zohurul Hoque

আর আমরা তাঁকে দিয়েছিলাম ইসহাক ও ইয়াকুবকে, আর তাঁর বংশধরদের মধ্যে আমরা প্রতিষ্ঠা করেছিলাম নবুওৎ ও ধর্মগ্রন্থ, আর আমরা তাঁর পুরস্কার দুনিয়াতেই তাঁকে প্রদান করেছিলাম, আর পরকালে তিনি আলবৎ হবেন সৎকর্মীদেরই অন্তর্ভুক্ত।