Skip to content

কুরআন মজীদ সূরা আল আনকাবুত আয়াত ১৪

Qur'an Surah Al-'Ankabut Verse 14

আল আনকাবুত [২৯]: ১৪ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ

وَلَقَدْ اَرْسَلْنَا نُوْحًا اِلٰى قَوْمِهٖ فَلَبِثَ فِيْهِمْ اَلْفَ سَنَةٍ اِلَّا خَمْسِيْنَ عَامًا ۗفَاَخَذَهُمُ الطُّوْفَانُ وَهُمْ ظٰلِمُوْنَ (العنكبوت : ٢٩)

walaqad
وَلَقَدْ
And verily
এবং নিশ্চয়ই
arsalnā
أَرْسَلْنَا
We sent
আমরা পাঠিয়েছিলাম
nūḥan
نُوحًا
Nuh
নূহকে
ilā
إِلَىٰ
to
প্রতি
qawmihi
قَوْمِهِۦ
his people
তার জাতির
falabitha
فَلَبِثَ
and he remained
অতঃপর সে অবস্থান করেছিলো
fīhim
فِيهِمْ
among them
মধ্যে তাদের
alfa
أَلْفَ
a thousand
এক হাজার
sanatin
سَنَةٍ
year(s)
ব্ছর
illā
إِلَّا
save
কম
khamsīna
خَمْسِينَ
fifty
পঞ্চাশ
ʿāman
عَامًا
year(s)
ব্ছর (অর্থাৎ সাড়ে নয়শত বছর)
fa-akhadhahumu
فَأَخَذَهُمُ
then seized them
অতঃপর গ্রাস করেছিলো তাদেরকে
l-ṭūfānu
ٱلطُّوفَانُ
the flood
প্লাবন
wahum
وَهُمْ
while they
এ অবস্থায় যে তারা ছিলো
ẓālimūna
ظَٰلِمُونَ
(were) wrongdoers
সীমালঙ্ঘনকারী

Transliteration:

Wa laqad arsalnaa Noohan ilaa qawmihee falabisa feehim alfa sanatin illaa khamseena 'aaman fa akhazahumut toofaanu wa hum zaalimoon (QS. al-ʿAnkabūt:14)

English Sahih International:

And We certainly sent Noah to his people, and he remained among them a thousand years minus fifty years, and the flood seized them while they were wrongdoers. (QS. Al-'Ankabut, Ayah ১৪)

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

আমি নূহকে তার সম্প্রদায়ের কাছে পাঠিয়েছিলাম, অতঃপর সে পঞ্চাশ বছর কম হাজার বছর তাদের মাঝে অবস্থান করেছিল। অতঃপর মহাপ্লাবন তাদেরকে গ্রাস করল কারণ তারা ছিল সীমালঙ্ঘনকারী। (আল আনকাবুত, আয়াত ১৪)

Tafsir Ahsanul Bayaan

আমি অবশ্যই নূহকে তার সম্প্রদায়ের নিকট প্রেরণ করেছিলাম; সে ওদের মধ্যে অবস্থান করেছিল সাড়ে ন’শ বছর।[১] অতঃপর বন্যা ওদেরকে গ্রাস করল; কারণ ওরা ছিল সীমালংঘনকারী।

[১] কুরআনের শব্দাবলীতে এ কথা জানা যায় যে, এটি ছিল তাঁর দাওয়াত ও তাবলীগের বয়স। তাঁর পূর্ণ বয়স কত ছিল তা পরিষ্কার নয়। কেউ কেউ বলেন, নবুঅতের পূর্বে ৪০ বছর ও বন্যার পর ৬০ বছর ঐ সংখ্যায় পরিগণিত। এছাড়া আরো অন্য উক্তিও আছে। এ ব্যাপারে আল্লাহই ভাল জানেন।

Tafsir Abu Bakr Zakaria

আর আমরা তো নূহকে তাঁর সম্প্রদায়ের কাছে পাঠিয়েছিলাম [১]। তিনি তাদের মধ্যে অবস্থান করেছিলেন পঞ্চাশ কম হাজার বছর। অতঃপর প্লাবন তাদেরকে গ্রাস করে; এমতাবস্থায় যে তারা ছিল যালিম [২]।

[১] পূর্ববর্তী আয়াতসমূহে কাফেরদের বিরোধিতা ও মুসলিমদের উপর নির্যাতনমূলক অবস্থা বর্ণিত হয়েছিল। আলোচ্য আয়াতসমূহে নির্যাতনমূলক ঘটনাবলীর পরিপ্রেক্ষিতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে সান্তনা দেয়ার জন্যে পূর্ববর্তী নবীগণ ও তাদের উম্মতের কিছু অবস্থা বর্ণনা করা হয়েছে। [দেখুন, ইবন কাসীর] উদ্দেশ্য এই যে, প্রাচীনকাল থেকেই সত্যপন্থীদের উপর কাফেরদের তরফ থেকে নির্যাতনের ধারা অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু এসব-উৎপীড়নের কারণে তারা কোন সময় সাহস হারাননি। মুমিনদের উচিত কাফেরদের উৎপীড়নের পরওয়া না করা। পূর্ববর্তী নবীগণের মধ্যে সর্বপ্রথম নূহ আলাইহিস সালাম-এর কাহিনী উল্লেখ করা হয়েছে। প্রথমতঃ এর কারণ এই যে, তিনিই প্রথম নবী, যিনি কুফর ও শিরকের মোকাবেলা করেছেন। দ্বিতীয়তঃ তার সম্প্রদায়ের তরফ থেকে তিনি যতটুকু নির্যাতিত হয়েছিলেন, অন্য কোন নবী ততটুকু হননি। কেননা, আল্লাহ্‌ তা‘আলা তাকে বিশেষভাবে সুদীর্ঘ জীবন দান করেছিলেন এবং তার সমস্ত জীবন কাফেরদের নিপীড়নের মধ্যে অতিবাহিত হয়। কুরআনের এ সূরায় বর্ণিত তার বয়স সাড়ে নয়শ' বছর তো অকাট্য ও নিশ্চিতই। কোন কোন বর্ণনায় আছে যে, এটা তার প্রচার ও দাওয়াতের বয়স। এর আগে এবং প্লাবনের পরেও তার আরও বয়স আছে। [ফাতহুল কাদীর] মোটকথা, এই অসাধারণ সুদীর্ঘ বয়স অবিরাম দাওয়াত ও তাবলীগে ব্যয় করা এবং প্রতিক্ষেত্রেই কাফেরদের তরফ থেকে নানারকম উৎপীড়ন সহ্য করা সত্ত্বেও কোন সময় সাহস না হারানো—এগুলো সব নূহ আলাইহিস সালাম-এরই বৈশিষ্ট্য। এখানে এ জিনিসটি বর্ণনা করাই উদ্দেশ্য যে, হে মুহাম্মাদ! আপনি কাফের মুশরিকদের অবাধ্যতায় আফসোস করে নিজেকে ক্ষতিগ্রস্ত করবেন না। কারণ হেদায়াত আল্লাহ্‌র হাতে তিনি যাকে ইচ্ছা হেদায়াত করবেন আর যাকে ইচ্ছে হেদায়াত থেকে দূরে রাখবেন। আপনার দায়িত্ব তো তাবলীগের মাধ্যমেই সমাপ্ত হবে। তবে এটা জেনে রাখুন যে, আল্লাহ্‌ আপনার দ্বীনকে জয়ী করবেন। আপনার শক্ৰদের বিনাশ করবেন। [ইবন কাসীর] আর আয়াতের মাধ্যমে মুমিনদের হেদায়াত দেয়া হচ্ছে যে, তোমরা তো মাত্র পাঁচ বছর থেকে জুলুম-নির্যাতন সহ্য করছো এবং একটি গোমরাহ জাতির হঠকারিতা বরদাশত করে চলছো কিন্তু আমার এ বান্দা যে অনবরত সাড়ে নয়শ’ বছর ধরে এসবের মোকাবিলা করেছে তার সবর ও দৃঢ়তার কথা ভেবে দেখো। তুলনামূলক অধ্যয়নের জন্য দেখুন সূরা আলে ইমরান, ৩৩-৩৪; আন নিসা, ১৬৩; আল আন‘আম, ৮৪; আল-আ‘রাফ, ৫৯ থেকে ৬৪; ইউনুস, ৭১ ও ৭৩; হূদ, ২৫ ও ৪৮; আল আম্বিয়া, ৭৬ ও ৭৭; আল মুমিনূন, ২৩ ও ৩০; আল ফুরকান, ৩৭; আশ শো‘আরা, ১০৫ থেকে ১২৩; আস সাফফাত, ৭৫ ও ৮২; আল কামার, ৯০; আল হাক্কাহ, ১১ ও ১২ আয়াত এবং সূরা নূহ সম্পূর্ণ।

[২] অর্থাৎ তারা নিজেদের যুলুম-নিপীড়ন চালিয়ে যেতে থাকা অবস্থায় মহাপ্লাবনের গ্রাসে পরিণত হয়। যদি মহাপ্লাবন আসার আগে তারা নিজেদের যুলুম-নিপীড়ন থেকে বিরত হতো তাহলে আল্লাহ্‌ তাদের ওপর এ আযাব পাঠাতেন না। কিন্তু তারা নূহের কথা না শুনে যুলুম ও শির্কেই নিপতিত ছিল। [ফাতহুল কাদীর]

Tafsir Bayaan Foundation

আর আমি অবশ্যই নূহকে তার কওমের নিকট প্রেরণ করেছিলাম। সে তাদের মধ্যে পঞ্চাশ কম এক হাজার বছর অবস্থান করেছিল। অতঃপর মহা-প্লাবন তাদের গ্রাস করল, এমতাবস্থায় যে তারা ছিল যালিম।

Muhiuddin Khan

আমি নূহ (আঃ) কে তাঁর সম্প্রদায়ের কাছে প্রেরণ করেছিলাম। তিনি তাদের মধ্যে পঞ্চাশ কম এক হাজার বছর অবস্থান করেছিলেন। অতঃপর তাদেরকে মহাপ্লাবণ গ্রাস করেছিল। তারা ছিল পাপী।

Zohurul Hoque

আর ইতিপূর্বে আমরা অবশ্যই নূহ্‌কে পাঠিয়েছিলাম তাঁর লোকদের কাছে, তিনি তখন তাদের মধ্যে অবস্থান করেছিলেন পঞ্চাশ বছর কম এক হাজার বৎসর। তখন মহাপ্লাবন তাদের পাকড়াও করল, যেহেতু তারা ছিল অত্যাচারী।