Skip to content

কুরআন মজীদ সূরা আল কাসাস আয়াত ২৫

Qur'an Surah Al-Qasas Verse 25

আল কাসাস [২৮]: ২৫ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ

فَجَاۤءَتْهُ اِحْدٰىهُمَا تَمْشِيْ عَلَى اسْتِحْيَاۤءٍ ۖقَالَتْ اِنَّ اَبِيْ يَدْعُوْكَ لِيَجْزِيَكَ اَجْرَ مَا سَقَيْتَ لَنَاۗ فَلَمَّا جَاۤءَهٗ وَقَصَّ عَلَيْهِ الْقَصَصَۙ قَالَ لَا تَخَفْۗ نَجَوْتَ مِنَ الْقَوْمِ الظّٰلِمِيْنَ (القصص : ٢٨)

fajāathu
فَجَآءَتْهُ
Then came to him
অতঃপর কাছে আসলো তার
iḥ'dāhumā
إِحْدَىٰهُمَا
one of the two women
দু'জনের একজন তাদের
tamshī
تَمْشِى
walking
হেঁটে
ʿalā
عَلَى
with
সাথে
is'tiḥ'yāin
ٱسْتِحْيَآءٍ
shyness
লজ্জা ও শালিনতার
qālat
قَالَتْ
She said
(মেয়েটি) বললো
inna
إِنَّ
"Indeed
"নিশ্চয়ই
abī
أَبِى
my father
আমার পিতা (শোয়াইব আঃ)
yadʿūka
يَدْعُوكَ
calls you
আপনাকে ডাকছেন
liyajziyaka
لِيَجْزِيَكَ
that he may reward you
যাতে তিনি আপনাকে প্রতিদান দিতে পারেন
ajra
أَجْرَ
(the) reward
পারিশ্রমিক
مَا
(for) what
(তার) যা
saqayta
سَقَيْتَ
you watered
আপনি (জন্তুগুলোকে) পানি পান করিয়েছেন
lanā
لَنَاۚ
for us"
পক্ষ হয়ে আমাদের"
falammā
فَلَمَّا
So when
অতঃপর যখন
jāahu
جَآءَهُۥ
he came to him
সে আসলো কাছে তার
waqaṣṣa
وَقَصَّ
and narrated
ও বর্ণনা করলো
ʿalayhi
عَلَيْهِ
to him
কাছে তার
l-qaṣaṣa
ٱلْقَصَصَ
the story
সব বৃত্তান্ত
qāla
قَالَ
he said
সে বললো
لَا
"(Do) not
"না
takhaf
تَخَفْۖ
fear
ভয় করো
najawta
نَجَوْتَ
You have escaped
তুমি বেঁচে গিয়েছো
mina
مِنَ
from
হ'তে
l-qawmi
ٱلْقَوْمِ
the people -
সম্প্রদায়
l-ẓālimīna
ٱلظَّٰلِمِينَ
the wrongdoers"
সীমালঙ্ঘনকারী"

Transliteration:

Fajaaa'at hu ihdaahumaa tamshee 'alas tihyaaa'in qaalat inna abee yad'ooka li yajziyaka ajra maa saqaita lanaa; falammaa jaaa'ahoo wa qassa 'alaihil qasasa qaala laa takhaf najawta minal qawmiz zaalimeen (QS. al-Q̈aṣaṣ:25)

English Sahih International:

Then one of the two women came to him walking with shyness. She said, "Indeed, my father invites you that he may reward you for having watered for us." So when he came to him and related to him the story, he said, "Fear not. You have escaped from the wrongdoing people." (QS. Al-Qasas, Ayah ২৫)

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

তখন নারীদ্বয়ের একজন তার কাছে সলজ্জ পদে আসল। সে বলল- ‘আমার পিতা তোমাকে ডাকছে তুমি আমাদের জন্য (জন্তুগুলোকে) পানি পান করিয়েছ তোমাকে তার প্রতিদান দেয়ার জন্য। যখন মূসা তার কাছে গেল আর তার কাছে সকল ঘটনা বিবৃত করল, সে বলল- তুমি ভয় করো না, ‘তুমি যালিম গোষ্ঠীর থেকে রেহাই পেয়ে গেছ।’ (আল কাসাস, আয়াত ২৫)

Tafsir Ahsanul Bayaan

তখন রমণী দু’জনের একজন লজ্জা-জড়িত পদক্ষেপে তার নিকট এল[১] এবং বলল, ‘আপনি যে আমাদের পশুগুলিকে পানি পান করিয়েছেন, তার পারিশ্রমিক দেওয়ার জন্য আমার পিতা আপনাকে ডাকছেন।’[২] অতঃপর মূসা তার নিকট এসে সমস্ত বৃত্তান্ত বর্ণনা করলে সে বলল, ‘ভয় করো না। তুমি যালিম সম্প্রদায়ের কবল হতে বেঁচে গেছ।’ [৩]

[১] আল্লাহ মূসা (আঃ)-এর দু'আ কবুল করলেন এবং দুটি মেয়ের মধ্যে একজন তাঁকে ডাকতে এল। কুরআন বিশেষভাবে মেয়েটির লজ্জার কথা বর্ণনা করেছে। যেহেতু লজ্জাই হল নারীর ভূষণ। পক্ষান্তরে নারীর জন্য পুরুষদের মত লজ্জা ও পর্দার পরোয়া না করে নির্লজ্জ ও বেপর্দা হওয়া শরীয়তে অবৈধ ও ঘৃণিত।

[২] মেয়ে দু'টির পিতা কে ছিলেন কুরআনে স্পষ্টভাবে তার পরিচয় বা নাম উল্লেখ করা হয়নি। অধিকাংশ ব্যাখ্যাকারিগণ শুআইব (আঃ) মনে করেছেন। যিনি মাদয়্যানবাসীদের প্রতি নবীরূপে প্রেরিত হয়েছিলেন। ইমাম শাওকানী (রঃ) এই মতটিকেই সমর্থন করেছেন। কিন্তু ইমাম ইবনে কাসীর (রঃ) বলেন, শুআইব (আঃ)-এর যুগ মূসা (আঃ)-এর নবুঅতের আগে ছিল। সুতরাং তিনি শুআইব (আঃ)-এর কোন ভায়ের ছেলে অথবা তাঁর জাতির কোন লোক হবেন। এ ব্যাপারে আল্লাহই ভাল জানেন। যাই হোক, মূসা (আঃ) মেয়ে দুটির প্রতি যে সহানুভূতি প্রদর্শন ও উপকার করলেন তা তারা বাড়ি ফিরে বৃদ্ধ পিতার নিকট খুলে বলল। যার ফলে তাঁর অন্তরেও উপকারের বদলা দেওয়ার আগ্রহ সৃষ্টি হল। অথবা তাঁর পরিশ্রমের পারিশ্রমিক দেওয়া কর্তব্য মনে করলেন।

[৩] অর্থাৎ, মিসরের ঘটনাবলী ও ফিরআউনের অত্যাচার-কাহিনী বিস্তারিত বর্ণনা করলেন। বৃত্তান্ত শুনে তিনি বললেন, এই এলাকা ফিরআউনের রাজ্য-সীমার বাইরে। অতএব ভয়ের কোন কারণ নেই। আল্লাহ তোমাকে অত্যাচারী হতে পরিত্রাণ দিয়েছেন।

Tafsir Abu Bakr Zakaria

তখন নারী দুজনের একজন শরম-জড়িত পায়ে তার কাছে আসল [১] এবং বলল, ‘আমার পিতা আপনাকে আমন্ত্রণ করছেন, আমাদের জানোয়ারগুলোকে পানি পান করানোর পারিশ্রমিক দেয়ার জন্য।’ অতঃপর মূসা তার কাছে এসে সমস্ত বৃত্তান্ত বর্ণনা করলে তিনি বললেন, ‘ভয় করো না, তুমি যালিম সম্প্রদায়ের কবল থেকে বেঁচে গেছ।’

[১] উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু এ বাক্যাংশটির এরূপ ব্যাখ্যা করেছেনঃ “সে নিজের মুখ ঘোমটার আড়ালে লুকিয়ে লজ্জাজড়িত পায়ে হেঁটে এলো। সেই সব ধিংগি চপলা মেয়েদের মতো হন হন করে ছুটে আসেনি, যারা যেদিকে ইচ্ছা যায় এবং যেখানে খুশী ঢুকে পড়ে।” এ বিষয়বস্তু সম্বলিত কয়েকটি বর্ণনা সাঈদ ইবনে মানসুর, ইবনে জারীর, ইবনে আবী হাতেম ও ইবনুল মুনযির নির্ভরযোগ্য সনদ সহকারে উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে উদ্ধৃত করেছেন। এ থেকে পরিষ্কার জানা যায়, সাহাবায়ে কেরামের যুগে কুরআন ও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের বদৌলতে এ মনীষীগণ লজ্জাশীলতার যে ইসলামী ধারণা লাভ করেছিলেন তা অপরিচিত ও ভিন্ন পুরুষদের সামনে চেহারা খুলে রেখে ঘোরাফেরা করা এবং বেপরোয়াভাবে ঘরের বাইরে চলাফেরা করার সম্পূর্ণ বিরোধী ছিল। উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু পরিস্কার ভাষায় এখানে চেহারা ঢেকে রাখাকে লজ্জাশীলতার চিহ্ন এবং তা ভিন পুরুষের সামনে উন্মুক্ত রাখাকে নির্লজ্জতা গণ্য করেছেন। [দেখুন, বাগভী; কুরতুবী; ইবন কাসীর; ফাতহুল কাদীর; আত-তাফসীরুস সহীহ]

Tafsir Bayaan Foundation

অতঃপর নারীদ্বয়ের একজন লাজুকভাবে হেঁটে তার কাছে এসে বলল যে, আমার পিতা আপনাকে ডাকছেন, যেন তিনি আপনাকে পারিশ্রমিক দিতে পারেন, আমাদের পশুগুলোকে আপনি যে পানি পান করিয়েছেন তার বিনিময়ে’। অতঃপর যখন মূসা তার নিকট আসল এবং সকল ঘটনা তার কাছে খুলে বলল, তখন সে বলল, ‘তুমি ভয় করো না। তুমি যালিম কওম থেকে রেহাই পেয়ে গেছ’।

Muhiuddin Khan

অতঃপর বালিকাদ্বয়ের একজন লজ্জাজড়িত পদক্ষেপে তাঁর কাছে আগমন করল। বলল, আমার পিতা আপনাকে ডাকছেন, যাতে আপনি যে আমাদেরকে পানি পান করিয়েছেন, তার বিনিময়ে পুরস্কার প্রদান করেন। অতঃপর মূসা যখন তাঁর কাছে গেলেন এবং সমস্ত বৃত্তান্ত বর্ণনা করলেন, তখন তিনি বললেন, ভয় করো না, তুমি জালেম সম্প্রদায়ের কবল থেকে রক্ষা পেয়েছ।

Zohurul Hoque

তারপরে সেই দুইজন মহিলার একজন তাঁর নিকটে লাজুকভাবে হেঁটে এল। সে বললে -- ''আমার আব্বা আপনাকে আমন্ত্রণ করেছেন আপনি যে আমাদের জন্য পানি খাইয়েছেন সেজন্য আপনাকে পারিশ্রমিক প্রদান করতে।’’ তারপর যখন তিনি তার কাছে এলেন এবং তার কাছে বৃত্তান্ত বর্ণনা করলেন তখন সে বলল -- ''ভয় করো না, তুমি অত্যাচারী লোকদের কবল থেকে রক্ষা পেয়েছ।’’