কুরআন মজীদ সূরা আল কাসাস আয়াত ১৩
Qur'an Surah Al-Qasas Verse 13
আল কাসাস [২৮]: ১৩ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ
فَرَدَدْنٰهُ اِلٰٓى اُمِّهٖ كَيْ تَقَرَّ عَيْنُهَا وَلَا تَحْزَنَ وَلِتَعْلَمَ اَنَّ وَعْدَ اللّٰهِ حَقٌّ وَّلٰكِنَّ اَكْثَرَهُمْ لَا يَعْلَمُوْنَ ࣖ (القصص : ٢٨)
- faradadnāhu
- فَرَدَدْنَٰهُ
- So We restored him
- অতঃপর আমরা ফিরিয়ে দিই তাকে
- ilā
- إِلَىٰٓ
- to
- নিকট
- ummihi
- أُمِّهِۦ
- his mother
- মায়ের তার
- kay
- كَىْ
- that
- যেন
- taqarra
- تَقَرَّ
- might be comforted
- জুড়ায়
- ʿaynuhā
- عَيْنُهَا
- her eye
- চক্ষু তার
- walā
- وَلَا
- and not
- এবং না
- taḥzana
- تَحْزَنَ
- she may grieve
- দুশ্চিন্তা করে
- walitaʿlama
- وَلِتَعْلَمَ
- and that she would know
- এবং যেন জানতে পারে
- anna
- أَنَّ
- that
- যে
- waʿda
- وَعْدَ
- the Promise of Allah
- প্রতিশ্রুতি
- l-lahi
- ٱللَّهِ
- the Promise of Allah
- আল্লাহর
- ḥaqqun
- حَقٌّ
- (is) true
- সত্য
- walākinna
- وَلَٰكِنَّ
- But
- কিন্তু
- aktharahum
- أَكْثَرَهُمْ
- most of them
- অধিকাংশই তাদের
- lā
- لَا
- (do) not
- না
- yaʿlamūna
- يَعْلَمُونَ
- know
- জানে
Transliteration:
Faradadnaahu ilaa ummihee kai taqarra 'ainuhaa wa laa tahzana wa lita'lama anna wa'dal laahi haqqunw wa laakinna aksarahum laa ya'lamoon(QS. al-Q̈aṣaṣ:13)
English Sahih International:
So We restored him to his mother that she might be content and not grieve and that she would know that the promise of Allah is true. But most of them [i.e., the people] do not know. (QS. Al-Qasas, Ayah ১৩)
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
এভাবে আমি তাকে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে আনলাম যাতে তার চোখ জুড়ায়, সে দুঃখ না করে আর জানতে পারে যে, আল্লাহর ও‘য়াদা সত্য; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা জানে না। (আল কাসাস, আয়াত ১৩)
Tafsir Ahsanul Bayaan
অতঃপর আমি তাকে তার জননীর কাছে ফিরিয়ে দিলাম,[১] যাতে তার চক্ষু জুড়ায়, সে দুঃখ না পায় এবং জানতে পারে যে, আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য।[২] কিন্তু ওদের অধিকাংশই এ জানে না। [৩]
[১] অতঃপর তারা মূসার বোনকে বলল, 'যাও! সেই মহিলাকে ডেকে আনো।' সুতরাং তিনি দ্রুত গিয়ে নিজ মা (যিনি মূসারও মা ছিলেন তাঁকে) ডেকে নিয়ে এলেন।
[২] মূসা (আঃ) যখন নিজ মায়ের দুধ পান করে ফেললেন তখন ফিরআউন মূসা (আঃ)-এর মাতাকে রাজ-প্রাসাদে থাকার আহবান জানাল, যাতে সঠিকভাবে শিশুর লালন-পালন ও দেখাশোনা হয়। কিন্তু তিনি বললেন, আমি স্বামী ও অন্য সন্তানদেরকে ছেড়ে থাকতে পারি না। শেষ পর্যন্ত এটাই ঠিক হল যে, তিনি শিশুকে নিজ ঘরে নিয়ে যাবেন ও সেখানেই লালন-পালন করবেন এবং রাজকোষ হতে তার মজুরী ও পারিশ্রমিক তাঁকে দেওয়া হবে। সুবহানাল্লাহ, আল্লাহর কি অপার মহিমা! তিনি নিজ সন্তানকে দুধ পান করাবেন, আর পারিশ্রমিক (দুশমন) ফিরআউন হতে পাবেন! মহান আল্লাহ মূসাকে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি কি সুন্দরভাবেই না পূর্ণ করলেন।{فَسُبْحَانَ الَّذِي بِيَدِهِ مَلَكُوتُ كُلِّ شَيْءٍ} একটি মুরসাল হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, যে কারিগর নিজ তৈরী জিনিসের মধ্যে নেকী ও কল্যাণের নিয়ত রাখে, তার উদাহরণ মূসার মায়ের মত; যে নিজ সন্তানকে দুধ পান করায়, উপরন্তু তার উপর পারিশ্রমিকও লাভ করে! (মারাসীলে আবী দাউদ)
[৩] এমন বহু কাজ আছে যার বাস্তব পরিণামের কথা অধিকাংশ লোকের অজানা থাকে। কিন্তু আল্লাহর নিকট রয়েছে তার শুভ পরিণামের জ্ঞান। সেই জন্য মহান আল্লাহ বলেছেন, "তোমরা যা অপছন্দ কর, সম্ভবতঃ তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর এবং তোমরা যা পছন্দ কর, সম্ভবতঃ তা তোমাদের জন্য অকল্যাণকর। আল্লাহ জানেন, তোমরা জান না। (সূরা বাকারাহ ২;২১৬ আয়াত) অন্যত্র বলেছেন, "এমন হতে পারে যে, আল্লাহ যাতে প্রভূত কল্যাণ রেখেছেন, তোমরা তাকে ঘৃণা করছ।" (সূরা নিসা ৪;১৯ আয়াত) এই কারণে মানুষের উচিত, নিজ পছন্দ-অপছন্দ দৃষ্টিচ্যুত করে প্রতিটি বিষয়ে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করা। কারণ এর মধ্যেই রয়েছে প্রভূত কল্যাণ ও শুভ পরিণাম।
Tafsir Abu Bakr Zakaria
অতঃপর আমরা তাকে ফিরিয়ে দিলাম তার জননীর কাছে, যাতে তার চোখ জুড়ায় এবং সে দুঃখ না করে, আর সে জেনে নেয় যে, আল্লাহ্র প্রতিশ্রুতি সত্য; কিন্তু অধিকাংশ মানুষই এটা জানে না।
Tafsir Bayaan Foundation
অতঃপর আমি তাকে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিলাম, যাতে তার চোখ জুড়ায় এবং সে যেন কোন দুশ্চিন্তা না করে। আর সে যেন জানতে পারে যে, নিশ্চয় আল্লাহর ওয়াদা সত্য। কিন্তু তাদের অধিকাংশই তা জানে না।
Muhiuddin Khan
অতঃপর আমি তাকে জননীর কাছে ফিরিয়ে দিলাম, যাতে তার চক্ষু জুড়ায় এবং তিনি দুঃখ না করেন এবং যাতে তিনি জানেন যে, আল্লাহর ওয়াদা সত্য, কিন্তু অনেক মানুষ তা জানে না।
Zohurul Hoque
তখন আমরা তাঁকে ফিরিয়ে দিলাম তাঁর মায়ের কাছে, যেন তার চোখ জুড়িয়ে যায় আর যেন সে দুঃখ না করে, আর যেন সে জানতে পারে যে আল্লাহ্র ওয়াদা ধ্রুবসত্য। কিন্তু তাদের অধিকাংশই জানে না।