কুরআন মজীদ সূরা আল-ফুরকান আয়াত ৬০
Qur'an Surah Al-Furqan Verse 60
আল-ফুরকান [২৫]: ৬০ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ
وَاِذَا قِيْلَ لَهُمُ اسْجُدُوْا لِلرَّحْمٰنِ قَالُوْا وَمَا الرَّحْمٰنُ اَنَسْجُدُ لِمَا تَأْمُرُنَا وَزَادَهُمْ نُفُوْرًا ۩ ࣖ (الفرقان : ٢٥)
- wa-idhā
- وَإِذَا
- And when
- এবং যখন
- qīla
- قِيلَ
- it is said
- বলা হয়
- lahumu
- لَهُمُ
- to them
- তাদেরকে
- us'judū
- ٱسْجُدُوا۟
- "Prostrate
- "তোমরা সিজদা করো
- lilrraḥmāni
- لِلرَّحْمَٰنِ
- to the Most Gracious"
- জন্যে দয়াময়ের"
- qālū
- قَالُوا۟
- They say
- তারা বলে
- wamā
- وَمَا
- "And what
- "কে আবার
- l-raḥmānu
- ٱلرَّحْمَٰنُ
- (is) the Most Gracious?
- (সেই) দয়াময়
- anasjudu
- أَنَسْجُدُ
- Should we prostrate
- কি আমরা সিজদা করবো
- limā
- لِمَا
- to what
- (তাকে) যাকে
- tamurunā
- تَأْمُرُنَا
- you order us?"
- আমাদের তুমি নির্দেশ দিবে"
- wazādahum
- وَزَادَهُمْ
- And it increases them
- আর (এভাবে) বৃদ্ধি করলো তাদের
- nufūran
- نُفُورًا۩
- (in) aversion
- বিমুখতা
Transliteration:
Wa izaa qeela lahumus judoo lir Rahmaani qaaloo wa mar Rahmaanu anasjudu limaa taamurunaa wa zaadahum nufooraa(QS. al-Furq̈ān:60)
English Sahih International:
And when it is said to them, "Prostrate to the Most Merciful," they say, "And what is the Most Merciful? Should we prostrate to that which you order us?" And it increases them in aversion. (QS. Al-Furqan, Ayah ৬০)
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
তাদেরকে যখন বলা হয় ‘রহমান’-এর উদ্দেশ্যে সাজদায় অবনত হও, তারা বলে- ‘রহমান আবার কী? আমাদেরকে তুমি যাকেই সেজদা করতে বলবে আমরা তাকেই সেজদা করব নাকি?’ এতে তাদের অবাধ্যতাই বেড়ে যায়। [সাজদাহ] (আল-ফুরকান, আয়াত ৬০)
Tafsir Ahsanul Bayaan
যখন ওদেরকে বলা হয়, ‘পরম দয়াময়ের প্রতি তোমরা সিজদাবনত হও।’ তখন ওরা বলে, ‘পরম দয়াময় আবার কে? তুমি কাউকেও সিজদা করতে বললেই কি আমরা তাকে সিজদা করব?’ আর এতে ওদের বিমুখতাই বৃদ্ধি পায়। [১] (সাজদাহ-৭)
[১] رحمن و رحيم (রাহমান ও রাহীম) আল্লাহর সুন্দর গুণ ও নামাবলীর মধ্যে দু'টি গুণবাচক নাম। কিন্তু জাহেলী যুগের লোকেরা আল্লাহকে উক্ত নামে চিনত না। যেমন হুদাইবিয়ার সন্ধিপত্র লেখার সময় শুরুতে بسم الله الرحمن الرحيم লেখা হলে মক্কার মুশরিকরা বলেছিল, আমরা রাহমান ও রাহীমকে জানি না। باسمك اللّهم লেখ। (সীরাতে ইবনে হিশাম ২/৩১৭) আরো দেখুন সূরা বানী ইস্রাঈল ১৭;১১০ এবং সূরা রা'দ ১৩;৩০ নং আয়াত; এখানেও কাফেরদের 'রাহমান' নাম শুনে চমকে যাওয়া ও সিজদা করতে অস্বীকার করার কথা বর্ণিত হয়েছে। (এই আয়াত পাঠ করার পর সিজদা করা মুস্তাহাব। সিজদার আহকাম জানতে সূরা আ'রাফের শেষ আয়াতের ৭;২০৬ টীকা দেখুন। -সম্পাদক)
Tafsir Abu Bakr Zakaria
আর যখন তাদেরকে বলা হয়, ‘সিজদাবনত হও ‘রাহমান’ -এর প্রতি,’ তখন তারা বলে, ‘রাহমান আবার কি [১]? তুমি কাউকে সিজদা করতে বললেই কি আমরা তাকে সিজদা করব?’ আর এতে তাদের পলায়নপরতাই বৃদ্ধি পায়।
[১] মক্কার কাফেররা এ নামটি যে জানত না তা নয়। তারা এ নামটি জানত তবে আল্লাহ্র জন্য নির্দিষ্ট করতে দ্বিধা করত। তারা এ নামটিকে কোন কোন মানুষকেও প্রদান করত। অথচ এ নামটি এমন এক নাম যা শুধুমাত্র মহান রাব্ববুল আলামীনের জন্যই নির্দিষ্ট। কোন ক্রমেই অন্য কারো জন্য এ নামটিকে নাম হিসেবে বা গুণ হিসেবে ব্যবহার করা জায়েয নেই। কিন্তু তারা হঠকারিতাবশতঃ প্রশ্ন করল যে, রহমান কে এবং কি? হুদায়বিয়ার সন্ধির দিনও তারা এমনটি অস্বীকার করে বলেছিলঃ “আমরা রহমান বা রহীম কি জিনিস তা জানিনা; বরং যেভাবে তুমি আগে লিখতে, সেভাবে ‘বিসমিকা আল্লাহুম্মা’ লিখা।” [মুসলিমঃ ১৭৮৪] সূরা আল-ইসরার ১১০ নং আয়াতেও আল্লাহ্ তা‘আলা কাফেরদেরকে উদ্দেশ্য করে তাঁর এ নামের তাৎপর্য বর্ণনা করে বলেছেন যে, “আল্লাহ্কে ডাক বা রহমানকে ডাক, যেভাবেই ডাক এগুলো তাঁর সুন্দর নামসমূহের অন্তর্গত’’।
Tafsir Bayaan Foundation
আর যখন তাদেরকে বলা হয়, তোমরা ‘রহমান’ কে সিজদা কর, তখন তারা বলে, রহমান কী আবার? তুমি আমাদেরকে আদেশ করলেই কি আমরা সিজদা করব? আর এটা তাদের পলায়নপরতাই বৃদ্ধি করে।[সাজদাহ]
Muhiuddin Khan
তাদেরকে যখন বলা হয়, দয়াময়কে সেজদা কর, তখন তারা বলে, দয়াময় আবার কে? তুমি কাউকে সেজদা করার আদেশ করলেই কি আমরা সেজদা করব? এতে তাদের পলায়নপরতাই বৃদ্ধি পায়।
Zohurul Hoque
আর যখন তাদের বলা হয়, 'পরম করুণাময়কে সিজদা কর’, তারা বলে -- ''করুণাময় আবার কে? আমরা কি তাকেই সিজদা করব যার সন্বন্ধে তুমি আমাদের আদেশ কর?’’ আর এটি তাদের জন্য বাড়িয়ে দেয় বিতৃষ্ণা।