Skip to content

কুরআন মজীদ সূরা আন-নূর আয়াত ৩

Qur'an Surah An-Nur Verse 3

আন-নূর [২৪]: ৩ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ

اَلزَّانِيْ لَا يَنْكِحُ اِلَّا زَانِيَةً اَوْ مُشْرِكَةً ۖوَّالزَّانِيَةُ لَا يَنْكِحُهَآ اِلَّا زَانٍ اَوْ مُشْرِكٌۚ وَحُرِّمَ ذٰلِكَ عَلَى الْمُؤْمِنِيْنَ (النور : ٢٤)

al-zānī
ٱلزَّانِى
The fornicator
ব্যভিচারী
لَا
(will) not
না
yankiḥu
يَنكِحُ
marry
বিয়ে করবে (অন্য কাউকে)
illā
إِلَّا
except
ছাড়া
zāniyatan
زَانِيَةً
a fornicatress
ব্যভিচারিণীকে
aw
أَوْ
or
অথবা
mush'rikatan
مُشْرِكَةً
a polytheist woman
মুশরিক নারীকে
wal-zāniyatu
وَٱلزَّانِيَةُ
and the fornicatress -
আর ব্যভিচারিণী
لَا
(will) not
না
yankiḥuhā
يَنكِحُهَآ
marry her
তাকে বিয়ে করবে (অন্য কেউ)
illā
إِلَّا
except
ছাড়া
zānin
زَانٍ
a fornicator
ব্যভিচারী
aw
أَوْ
or
অথবা
mush'rikun
مُشْرِكٌۚ
a polytheist man
মুশরিক
waḥurrima
وَحُرِّمَ
And is forbidden
এবং নিষিদ্ধ করা হলো
dhālika
ذَٰلِكَ
that
এটা
ʿalā
عَلَى
to
জন্যে
l-mu'minīna
ٱلْمُؤْمِنِينَ
the believers
মু'মিনদের

Transliteration:

Azzaanee laa yankihu illaa zaaniyatan aw mushrikatanw wazzaaniyatu laa yankihuhaaa illaa zaanin aw mushrik; wa hurrima zaalika 'alal mu'mineen (QS. an-Nūr:3)

English Sahih International:

The fornicator does not marry except a [female] fornicator or polytheist, and none marries her except a fornicator or a polytheist, and that [i.e., marriage to such persons] has been made unlawful to the believers. (QS. An-Nur, Ayah ৩)

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

ব্যভিচারী বিয়ে করে না ব্যভিচারিণী বা মুশরিকা নারী ছাড়া। আর ব্যভিচারিণী- তাকে বিয়ে করে না ব্যভিচারী বা মুশরিক পুরুষ ছাড়া, মু’মিনদের জন্য এটা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। (আন-নূর, আয়াত ৩)

Tafsir Ahsanul Bayaan

ব্যভিচারী কেবল ব্যভিচারিণী অথবা অংশীবাদিনীকেই বিবাহ করবে এবং ব্যভিচারিণীকে কেবল ব্যভিচারী অথবা অংশীবাদীই বিবাহ করবে। বিশ্বাসীদের জন্য এ বিবাহ অবৈধ। [১]

[১] এ ব্যাপারে ব্যাখ্যাকারিগণের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। কেউ কেউ বলেন, অধিক সময় এ রকমই ঘটে থাকে বলে এ রকম বলা হয়েছে। আয়াতের অর্থ হল, সাধারণতঃ ব্যভিচারী ব্যক্তি বিবাহের জন্য নিজের মত ব্যভিচারিণীর দিকেই রুজু করে থাকে। সেই জন্য দেখা যায় অধিকাংশ ব্যভিচারী নারী-পুরুষ তাদেরই অনুরূপ ব্যভিচারী নারী-পুরুষের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক কায়েম করতে পছন্দ করে। আর এ কথা বলার আসল লক্ষ্য হল, মু'মিনদেরকে সতর্ক করা যে, যেমন ব্যভিচার একটি জঘন্যতম কর্ম ও মহাপাপ, তেমনি ব্যভিচারী ব্যক্তির সাথে বিবাহ ও দাম্পত্য জীবনের সম্পর্ক গড়াও অবৈধ। ইমাম শাওকানী (রঃ) এই মতটিকেই প্রাধান্য দিয়েছেন। এবং হাদীসসমূহে এই আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার যে কারণ বলা হয়েছে, তাতেও উক্ত মতের সমর্থন হয়। যে কোন এক সাহাবী নবী (সাঃ)-এর কাছে (আনাক বা উম্মে মাহযূল নামক) ব্যভিচারিণীকে বিবাহ করার অনুমতি চাইলে এই আয়াত অবতীর্ণ হয়। অর্থাৎ, তাঁদেরকে এ রকম করতে নিষেধ করা হল। এখান হতে দলীল গ্রহণ করে উলামাগণ বলেছেন যে, কোন পুরুষ কোন মহিলার সাথে বা কোন মহিলা কোন পুরুষের সাথে ব্যভিচার করে বসলে তাদের আপোসে বিবাহ হারাম। তবে তারা যদি বিশুদ্ধভাবে তওবা করে নেয়, তাহলে বিবাহ বৈধ। (তাফসীর ইবনে কাসীর)

আবার কেউ কেউ বলেন, এখানে نِكاح বলতে বিবাহ উদ্দেশ্য নয়। বরং তা মিলন বা সঙ্গম (মূল) অর্থে ব্যবহার হয়েছে। উদ্দেশ্য হল, ব্যভিচার ও যিনার নিকৃষ্টতা ও জঘন্যতা বর্ণনা করা। আর আয়াতের অর্থ এই যে, ব্যভিচারী ব্যক্তি নিজ যৌনকামনা চরিতার্থ করার জন্য অবৈধ রাস্তা অবলম্বন করে ব্যভিচারিণী মহিলার প্রতি রুজু করে থাকে, অনুরূপ ব্যভিচারিণী মহিলাও ব্যভিচারী পুরুষের প্রতি রুজু করে। কিন্তু মু'মিনদের জন্য এ রকম করা হারাম। অর্থাৎ, ব্যভিচার হারাম। এখানে ব্যভিচারীর সাথে মুশরিক নারী-পুরুষের আলোচনা এই জন্য করা হয়েছে যে, শিরকের সাথে ব্যভিচারের বেশ সামঞ্জস্য আছে। একজন মুশরিক যেরূপ আল্লাহকে ছেড়ে দিয়ে অন্যের নিকট মাথা নত করে, অনুরূপ একজন ব্যভিচারী পুরুষ নিজের স্ত্রীকে বাদ দিয়ে বা একজন ব্যভিচারিণী নিজের স্বামীকে ছেড়ে অন্যের সাথে যৌনমিলন করে নিজের মুখে কালিমা লেপন করে। এইভাবে মুশরিক ও ব্যভিচারীর মাঝে এক ধরনের নৈতিক সামঞ্জস্য পাওয়া যায়।

Tafsir Abu Bakr Zakaria

ব্যভিচারী পুরুষ-ব্যভিচারীণীকে অথবা মুশরিক নারীকে ছাড়া বিয়ে করে না এবং ব্যভিচারিণী নারী, তাকে ব্যভিচারী অথবা মুশরিক ছাড়া কেউ বিয়ে করে না [১], আর মুমিনদের জন্য এটা হারাম করা হয়েছে [২]।

[১] আলোচ্য আয়াতের তাফসীর প্রসঙ্গে তাফসীরবিদদের বিভিন্ন উক্তি রয়েছে। কোন কোন তাফসীরকারক আয়াতটিকে মনসূখ তথা রহিত বলেন। তাদের মতে আয়াতের ভাষ্য হলো, ব্যভিচারী মহিলাকে বিয়ে করার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা। [বাগভী] কোন কোন মুফাসসির এ হুকুমকে সুনির্দিষ্ট ঘটনার সাথে সম্পর্কযুক্ত মনে করেন। [দেখুন, ইবন কাসীর, কুরতুবী, বাগভী, ফাতহুল কাদীর] আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল ‘আস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেনঃ সে যুগে এক মহিলার নাম ছিল উম্মে মাহযুল। সে যিনা করত (বেশ্যা ছিল)। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের এক সাহাবী তাকে বিয়ে করতে চাইলে আল্লাহ্‌ তা‘আলা এ আয়াত নাযিল করেন। [মুসনাদে আহমাদঃ ২/১৫৯, ২/২২৫, নাসায়ীঃ কিতাবুত-তাফসীর, হাদীস নং- ৩৭৯, মুস্তাদরাকে হাকেমঃ ২/১৯৩-১৯৪), বায়হাকীঃ ৭/১৫৩] অনুরূপ অন্য এক বর্ণনায় এসেছে, সে যুগে ‘আনাক’ নাম্নী এক বেশ্যা ছিল, মারসাদ নামীয় এক সাহাবী তাকে বিয়ে করতে চাইলে এ আয়াত নাযিল হয়। [তিরমিযীঃ ৩১৭৭, আবু দাউদঃ ২০৫১, মুস্তাদরাকে হাকোমঃ ২/১৬৬]

[২] আয়াতের ذٰلِكَ শব্দ দ্বারা ব্যভিচারী ও ব্যভিচারিণীর বিয়ে এবং মুশরিক ও মুশরিকার বিয়ের দিকে ইশারা করা হয়েছে [দেখুন, কুরতুবী]

কোন নারী বা কোন পুরুষ যিনাকারী হিসাবে পরিচিত হলে যদি সেই কাজ থেকে তাওবাহ না করে তবে তাকে বিয়ে করা জায়েয নাই। [আয়সারুত-তাফাসির, সা‘দী] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ ‘তিন ধরনের লোক জান্নাতে যাবে না। আল্লাহ্‌ তাদের দিকে কেয়ামতের দিন তাকাবেন না। (এক) পিতা-মাতার অবাধ্য, (দুই) পুরুষের মত চলাফেরাকারিণী মহিলা এবং (তিন) দায়্যূস (যে ব্যক্তি তার স্ত্রীর সাথে অপকর্ম হতে দেখেও তার আত্মমর্যাদাবোধ জাগ্রত হয় না)। [মুসনাদে আহমাদঃ ২/১৩৪, ইবনে হিব্বানঃ ৭৩৪০]

Tafsir Bayaan Foundation

ব্যভিচারী কেবল ব্যভিচারিণী অথবা মুশরিক নারীকে ছাড়া বিয়ে করবে না এবং ব্যভিচারিণীকে কেবল ব্যভিচারী অথবা মুশরিক ছাড়া বিয়ে করবে না। আর মুমিনদের উপর এটা হারাম করা হয়েছে।

Muhiuddin Khan

ব্যভিচারী পুরুষ কেবল ব্যভিচারিণী নারী অথবা মুশরিকা নারীকেই বিয়ে করে এবং ব্যভিচারিণীকে কেবল ব্যভিচারী অথবা মুশরিক পুরুষই বিয়ে করে এবং এদেরকে মুমিনদের জন্যে হারাম করা হয়েছে।

Zohurul Hoque

ব্যভিচারী সহবাস করতে পারে না ব্যভিচারিণী অথবা বহুখোদাবাদিনী ব্যতীত, আর ব্যভিচারিণী -- তার সঙ্গে সহবাস করতে পারে না ব্যভিচারী অথবা বহুখোদাবাদী ব্যতীত। আর এটি মুমিনদের জন্য নিষিদ্ধ।