কুরআন মজীদ সূরা আন-নূর আয়াত ১৬
Qur'an Surah An-Nur Verse 16
আন-নূর [২৪]: ১৬ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ
وَلَوْلَآ اِذْ سَمِعْتُمُوْهُ قُلْتُمْ مَّا يَكُوْنُ لَنَآ اَنْ نَّتَكَلَّمَ بِهٰذَاۖ سُبْحٰنَكَ هٰذَا بُهْتَانٌ عَظِيْمٌ (النور : ٢٤)
- walawlā
- وَلَوْلَآ
- And why not
- এবং কেন না
- idh
- إِذْ
- when
- যখন
- samiʿ'tumūhu
- سَمِعْتُمُوهُ
- you heard it
- তা তোমরা শুনেছিলে
- qul'tum
- قُلْتُم
- you said
- বললে তোমরা
- mā
- مَّا
- "Not
- "নয়
- yakūnu
- يَكُونُ
- it is
- হবার (শোভা পায়)
- lanā
- لَنَآ
- for us
- জন্যে আমাদের
- an
- أَن
- that
- যে
- natakallama
- نَّتَكَلَّمَ
- we speak
- কথা বলবো আমরা
- bihādhā
- بِهَٰذَا
- of this
- এ বিষয়ে
- sub'ḥānaka
- سُبْحَٰنَكَ
- Glory be to You!
- (হে আল্লাহ) তুমি মহান পবিত্র
- hādhā
- هَٰذَا
- This
- এটাতো
- buh'tānun
- بُهْتَٰنٌ
- (is) a slander
- অপবাদ
- ʿaẓīmun
- عَظِيمٌ
- great?"
- গুরুতর"
Transliteration:
Wa law laaa iz sami'tu moohu qultum maa yakoonu lanaaa an natakallama bihaazaa Subhaanaka haaza buhtaanun 'azeem(QS. an-Nūr:16)
English Sahih International:
And why, when you heard it, did you not say, "It is not for us to speak of this. Exalted are You, [O Allah]; this is a great slander"? (QS. An-Nur, Ayah ১৬)
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
তোমরা যখন এটা শুনলে তখন তোমরা কেন বললে না যে, এ ব্যাপারে আমাদের কথা বলা ঠিক নয়। আল্লাহ পবিত্র ও মহান, এটা তো এক গুরুতর অপবাদ! (আন-নূর, আয়াত ১৬)
Tafsir Ahsanul Bayaan
যখন তোমরা এ শ্রবণ করলে, তখন কেন বললে না যে, ‘এ বিষয়ে বলাবলি করা আমাদের উচিত নয়। আল্লাহ্ই পবিত্র, মহান! এ তো এক গুরুতর অপবাদ।’[১]
[১] দ্বিতীয় শিক্ষা এই যে, আল্লাহ মু'মিনদেরকে এ কথা বললেন যে, অপবাদের জন্য তারা একটি সাক্ষীও পেশ করেনি, যদিও এর জন্য চারটি সাক্ষী পেশ করা জরুরী ছিল। এ সত্বেও তোমরা অপবাদদাতাদেরকে মিথ্যাবাদী বলনি। অথচ এই কারণেই উক্ত আয়াতগুলি অবতীর্ণ হওয়ার পর হাসসান, মিসত্বাহ ও হামনাহ বিনতে জাহাশকে অপবাদ আরোপের শাস্তি প্রদান করা হয়েছে। (আহমাদ ৬/৩০, তিরমিযী ৩১৮১, আবু দাউদ ৪৪৭৪, ইবনে মাজাহ ২৫২৭নং) পক্ষান্তরে মুনাফিক আব্দুল্লাহ বিন উবাইকে উক্ত কারণে শাস্তি দেওয়া হয়নি। বরং তার জন্য আখেরাতের কঠিন শাস্তিই যথেষ্ট ভাবা হয়েছে। অন্য দিকে মু'মিনদেরকে শাস্তি দিয়ে পৃথিবীতে পবিত্র করা হয়েছে। তাকে শাস্তি না দেওয়ার দ্বিতীয় কারণ এই যে, তার পশ্চাতে একটি (পৃষ্ঠপোষক) দল ছিল। যার ফলে ওকে শাস্তি দিলে এমন আশঙ্কামূলক পরিস্থিতির সৃষ্টি হত, যেটা সামাল দেওয়া তখনকার যুগের মুসলিমদের পক্ষে কঠিন ছিল। এই জন্য বৃহত্তর স্বার্থকে খেয়ালে রেখে তাকে শাস্তি দেওয়া হতে বিরত থাকা হয়েছে। (ফাতহুল কাদীর) তৃতীয় কথা এই বলা হয়েছে যে, তোমাদের প্রতি আল্লাহর কৃপা ও অনুগ্রহ না থাকলে, সত্যতার যাচাই ও তদন্ত না করে উক্ত গুজব রটানোর এই আচরণ তোমাদের কঠিন শাস্তির কারণ হয়ে দাঁড়াত। এর অর্থ হল অপবাদ রটিয়ে বেড়ানো বা তা প্রচার করাও মহা অপরাধ, যার ফলে মানুষ কঠিন শাস্তির উপযুক্ত হতে পারে। চতুর্থ কথা এই যে, ব্যাপারটি ছিল স্বয়ং রসূল (সাঃ)-এর পত্নী ও তাঁর মান-মর্যাদার সাথে জড়িত। কিন্তু তোমরা তার যথার্থ গুরুত্বই দিলে না; বরং তা হাল্কা মনে করলে। এ কথা হতে এই বুঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে যে, কেবল ব্যভিচারই বড় অপরাধ নয়, যার শাস্তি একশ' বেত্রাঘাত বা পাথর ছুঁড়ে মারা; বরং কারো মান-সম্ভ্রমে আঘাত হানা বা কোন মর্যাদাসম্পন্ন পরিবারের মানহানি করাও আল্লাহর নিকট মহাপাপ বলে গণ্য। এমন পাপকে হাল্কা মনে করো না। সেই জন্য পরবর্তীতে বিশেষ জোর দিয়ে বলা হয়েছে যে, তোমরা শোনার পরই কেন বললে না যে, এ রকম কথা মুখ হতে বের করাও উচিত নয়; নিঃসন্দেহে এটি বড় অপবাদ। এখান হতে ইমাম মালেক (রঃ) বলেন, যে সকল নামসর্বস্ব মুসলমান আয়েশা (রাঃ)-র উপর অশ্লীলতার অপবাদ আরোপ করবে, তারা কাফের। কারণ, এতে কুরআনকে মিথ্যাজ্ঞান করা হয়। (আইসারুত্ তাফাসীর)
Tafsir Abu Bakr Zakaria
আর তোমরা যখন এটা শুনলে তখন কেন বললে না, ‘এ বিষয় বলাবলি করা আমাদের উচিত নয়; আল্লাহ্ পবিত্র, মহান। এটাতো এক গুরুতর অপবাদ!’
Tafsir Bayaan Foundation
আর তোমরা যখন এটা শুনলে, তখন তোমরা কেন বললে না যে, ‘এ নিয়ে কথা বলা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তুমি অতি পবিত্র মহান, এটা এক গুরুতর অপবাদ’।
Muhiuddin Khan
তোমরা যখন এ কথা শুনলে তখন কেন বললে না যে, এ বিষয়ে কথা বলা আমাদের উচিত নয়। আল্লাহ তো পবিত্র, মহান। এটা তো এক গুরুতর অপবাদ।
Zohurul Hoque
আর যখন তোমরা এটি শুনেছিলে তখন কেন তেমরা বল নি -- ''এ আমাদের জন্য উচিত নয় যে আমরা এ বিষয়ে বলাবলি করি, তোমারই সব মহিমা, এ তো এক গুরুতর অপবাদ’’?