Skip to content

কুরআন মজীদ সূরা আল মু'মিনূন আয়াত ৭৬

Qur'an Surah Al-Mu'minun Verse 76

আল মু'মিনূন [২৩]: ৭৬ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ

وَلَقَدْ اَخَذْنٰهُمْ بِالْعَذَابِ فَمَا اسْتَكَانُوْا لِرَبِّهِمْ وَمَا يَتَضَرَّعُوْنَ (المؤمنون : ٢٣)

walaqad
وَلَقَدْ
And verily
এবং নিশ্চয়ই
akhadhnāhum
أَخَذْنَٰهُم
We seized them
তাদেরকে আমরা ধরেছি
bil-ʿadhābi
بِٱلْعَذَابِ
with the punishment
দিয়ে শাস্তি
famā
فَمَا
but not
কিন্তু না
is'takānū
ٱسْتَكَانُوا۟
they submit
তারা বিনত হলো
lirabbihim
لِرَبِّهِمْ
to their Lord
প্রতি তাদের রবের
wamā
وَمَا
and not
আর না
yataḍarraʿūna
يَتَضَرَّعُونَ
they supplicate humbly
তারা কাতর প্রার্থনা করলো

Transliteration:

Wa laqad akhaznaahum bil'azaabi famastakaanoo li Rabbihim wa maa yatadarra'oon (QS. al-Muʾminūn:76)

English Sahih International:

And We had gripped them with suffering [as a warning], but they did not yield to their Lord, nor did they humbly supplicate, [and will continue thus] (QS. Al-Mu'minun, Ayah ৭৬)

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

আমি তাদেরকে শাস্তি দ্বারা পাকড়াও করেছিলাম, কিন্তু তারা তাদের প্রতিপালকের নিকট নত হল না, আর তারা কাকুতি মিনতিও করল না। (আল মু'মিনূন, আয়াত ৭৬)

Tafsir Ahsanul Bayaan

আমি তাদেরকে শাস্তি দ্বারা পাকড়াও করলাম, কিন্তু তারা তাদের প্রতিপালকের প্রতি বিনয়ী হল না এবং সকাতর প্রার্থনাও করল না। [১]

[১] এখানে শাস্তি আযাব বলতে বদরের যুদ্ধে মক্কার কাফেরদের পরাজয়কে বুঝানো হয়েছে। যাতে তাদের ৭০ জন ব্যক্তি মারা পড়েছিল। অথবা সেই দুর্ভিক্ষের বছরকে বুঝানো হয়েছে যা নবী (সাঃ)-এর বদ্দুআর ফলে তাদের উপর এসেছিল। নবী (সাঃ) বদ্দুআ করেছিলেন, "হে আল্লাহ! ইউসুফ (আঃ)-এর যুগের ৭ বছর দুর্ভিক্ষের মত দুর্ভিক্ষে পীড়িত করে তাদের বিরুদ্ধে আমাকে সাহায্য কর।" (বুখারীঃ দু'আ অধ্যায়, মুসলিমঃ মাসাজিদ অধ্যায়।) যার ফলে মক্কার কাফেররা দুর্ভিক্ষের কবলে পড়ে। অতঃপর আবু সুফিয়ান নবী (সাঃ)-এর নিকট আসেন এবং আল্লাহ ও আত্মীয়তার দোহাই দিয়ে বললেন যে, 'এখন আমরা জীব-জন্তুর চামড়া ও রক্ত পর্যন্ত ভক্ষণ করতে বাধ্য হয়েছি।' এই পরিপ্রেক্ষিতে এই আয়াত অবতীর্ণ হয়।

Tafsir Abu Bakr Zakaria

আর অবশ্যই আমরা তাদেরকে শাস্তি দ্বারা পাকড়াও করলাম, তারপরও তারা তাদের রব-এর প্রতি অবনত হল না এবং কাতর প্রার্থনাও করল না [১]।

[১] পূৰ্ববতী আয়াতে মুশরিকদের সম্পর্কে বলা হয়েছিল যে, তারা আযাবে পতিত হওয়ার সময় আল্লাহ্‌র কাছে ফরিয়াদ করে। আমি যদি তাদের ফরিয়াদের কারণে দয়াপরবশ হয়ে আযাব সরিয়ে দেই, তবে মজ্জাগত অবাধ্যতার কারণে আযাব থেকে মুক্তি পাওয়ার পরক্ষণেই ওরা আবার নাফরমানীতে মশগুল হয়ে যাবে। এ আয়াতে তাদের এমনি ধরণের এক ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে যে, তাদেরকে একবার এক আযাবে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দো‘আর বরকতে আযাব থেকে মুক্তি পাওয়ার পরও তারা আল্লাহ্‌র কাছে নত হয়নি এবং শির্ককেই আঁকড়ে ধরে থাকে। মূলতঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কাবাসীদের উপর দুর্ভিক্ষের আযাব দেয়ার জন্য দো‘আ করেছিলেন। ফলে কুরাইশরা ঘোরতর দুর্ভিক্ষে পতিত হয় এবং মৃত জন্তু, কুকুর ইত্যাদি খেতে বাধ্য হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে আবু সুফিয়ান রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে উপস্থিত হয় এবং বলেঃ আমি আপনাকে আত্মীয়তার কসম দিচ্ছি। আপনি কি একথা বলেননি যে, আপনি বিশ্ববাসীদের জন্যে রহমতস্বরূপ প্রেরিত হয়েছেন? তিনি উত্তরে বললেনঃ হ্যাঁ, নিঃসন্দেহে আমি একথা বলেছি এবং বাস্তবেও তাই। আবু সুফিয়ান বললঃ স্বগোত্রের প্রধানদেরকে তো বদর যুদ্ধে তরবারী দ্বারা হত্যা করেছেন। যারা জীবিত আছে, তাদেরকে ক্ষুধা দিয়ে হত্যা করছেন। আল্লাহ্‌র কাছে দো‘আ করুন, যাতে এই আযাব আমাদের উপর থেকে সরে যায়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম দো‘আ করলেন। ফলে, তৎক্ষণাৎ আযাব খতম হয়ে যায়। এর পরিপ্রেক্ষিতেই উক্ত আয়াত নাযিল হয়। আয়াতে বলা হয়েছে যে, আযাবে পতিত হওয়া এবং আযাব থেকে মুক্তি পাওয়ার পরও তারা তাদের পালনকর্তার সামনে নত হয়নি। বাস্তব ঘটনা তাই ছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দো‘আয় দুর্ভিক্ষ দূর করা হলো কিন্তু মক্কার মুশরিকরা তাদের শির্ক ও কুফরে পূর্ববৎ অটল রইল। [সহীহ ইবনে হিব্বানঃ ১৭৫৩ (মাওয়ারিদুজ্জামআন)]

Tafsir Bayaan Foundation

আর অবশ্যই আমি তাদেরকে আযাব দ্বারা পাকড়াও করলাম, তবুও তারা তাদের রবের কাছে নত হয়নি এবং বিনীত প্রার্থনাও করে না।

Muhiuddin Khan

আমি তাদেরকে শাস্তি দ্বারা পাকড়াও করেছিলাম, কিন্তু তারা তাদের পালনকর্তার সামনে নত হল না এবং কাকুতি-মিনুতিও করল না।

Zohurul Hoque

আর আমরা ইতিপূর্বেই তাদের শাস্তিদ্বারা পাকড়াও করেছি, তথাপি তারা তাদের প্রভুর কাছে বিনত হ’ল না, আর তারা কাকুতি- মিনতিও করল না।