কুরআন মজীদ সূরা আল মু'মিনূন আয়াত ৬৪
Qur'an Surah Al-Mu'minun Verse 64
আল মু'মিনূন [২৩]: ৬৪ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ
حَتّٰٓى اِذَآ اَخَذْنَا مُتْرَفِيْهِمْ بِالْعَذَابِ اِذَا هُمْ يَجْـَٔرُوْنَ ۗ (المؤمنون : ٢٣)
- ḥattā
- حَتَّىٰٓ
- Until
- শেষ পর্যন্ত
- idhā
- إِذَآ
- when
- যখন
- akhadhnā
- أَخَذْنَا
- We seize
- আমরা পাকড়াও করবো
- mut'rafīhim
- مُتْرَفِيهِم
- their affluent ones
- তাদের ঐশ্বর্যশালীদেরকে
- bil-ʿadhābi
- بِٱلْعَذَابِ
- with the punishment
- দিয়ে শাস্তি
- idhā
- إِذَا
- behold!
- তখন
- hum
- هُمْ
- They
- তারা
- yajarūna
- يَجْـَٔرُونَ
- cry for help
- চিৎকার করে উঠবে
Transliteration:
Hattaaa izaaa akhznaa mutrafeehim bil'azaabi izaa hum yaj'aroon(QS. al-Muʾminūn:64)
English Sahih International:
Until when We seize their affluent ones with punishment, at once they are crying [to Allah] for help. (QS. Al-Mu'minun, Ayah ৬৪)
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
অবশেষে আমি যখন তাদের (অর্থাৎ কাফিরদের) মধ্যে বিত্ত সম্পদশালীদেরকে শাস্তি দ্বারা পাকড়াও করব, তখন তারা চিৎকার জুড়ে দেবে। (আল মু'মিনূন, আয়াত ৬৪)
Tafsir Ahsanul Bayaan
পরিশেষে আমি যখন তাদের ঐশ্বর্যশালী ব্যক্তিদেরকে শাস্তি দ্বারা পাকড়াও করব[১] তখনই তারা আর্তনাদ করে উঠবে।
[১] مُترَفِين (ঐশ্বর্যশালী)। আযাব ঐশ্বর্যশালী ও অনৈশ্বর্যশালী উভয় শ্রেণীর লোকেদের জন্য আসে। কিন্তু এখানে ঐশ্বর্যশালীদের নাম বিশেষভাবে নেওয়া হয়েছে। কারণ, সাধারণতঃ সমাজের নেতৃত্ব এদের হাতেই থাকে। এরা যেভাবে চায় জাতির মুখ ফেরাতে পারে। যদি তারা আল্লাহর অবাধ্যতার পথ অবলম্বন করে ও তার উপর অবিচল থাকে, তাহলে তাদের দেখা-দেখি সমাজের মানুষও তাদের একটু এদিক-ওদিক করে না এবং তওবা ও অনুশোচনার পথ ধরে না। এখানে 'ঐশ্বর্যশালী' বলতে সেই সব কাফেরদেরকে বুঝানো হয়েছে, যাদেরকে ধন-দৌলতের প্রাচুর্য ও সন্তান-সন্ততি দ্বারা সমৃদ্ধ করে অবকাশ দেওয়া হয়েছে। যেমন এই শ্রেণীর কিছু আয়াত পূর্বেও উল্লিখিত হয়েছে। অথবা নেতা ও মোড়ল-মাতব্বর শ্রেণীর লোকদের বোঝানো হয়েছে। আর আযাব বা শাস্তি বলতে যদি পৃথিবীর আযাব উদ্দেশ্য হয়, তাহলে বদরের যুদ্ধে মক্কার কিছু কাফেররা যে ধ্বংস হল এবং নবী (সাঃ)-এর অভিশাপের ফলে দুর্ভিক্ষ ও অনাবৃষ্টির যে আযাব তাদের উপর এসেছিল তাই উদ্দেশ্য। অথবা আযাব বলতে আখেরাতের আযাবও হতে পারে। তবে তা আয়াতের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
Tafsir Abu Bakr Zakaria
শেষ পর্যন্ত যখন আমরা তাদের বিলাসী [১] ব্যাক্তিদেরকে শাস্তি দ্বারা পাকড়াও করি তখনই তারা আর্তনাদ করে উঠে।
[১] মূলে শব্দ এসেছে, مُتْرَفِيْن ‘‘মুতরাফীন”। শব্দটি আসলে এমন সব লোককে বলা হয় যারা পার্থিব ধন-সম্পদ লাভ করে ভোগ বিলাসে লিপ্ত হয়েছে এবং আল্লাহ্ ও তাঁর সৃষ্টির অধিকার থেকে গাফিল হয়ে গেছে। “বিলাসপ্ৰিয়” শব্দটির মাধ্যমে এ শব্দটির সঠিক মর্মকথা প্ৰকাশ হয়ে যায়। এ আয়াতে তাদেরকে যে আযাবে গ্রেফতার করার কথা বলা হয়েছে সে সম্পর্কে মুফাসসিরগণ বলেনঃ সে আযাব বলে বদর যুদ্ধে মুসলিমদের তরবারি দ্বারা তাদের সরদারদের উপর যে শাস্তি আপতিত হয়েছিল সেটাই বোঝানো হয়েছে। [কুরতুবী] কারও কারও মতে এই আযাব দ্বারা দুর্ভিক্ষের আযাব বুঝানো হয়েছে, যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বদদো‘আর কারণে মক্কাবাসীদের চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল। [কুরতুবী] রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাফেরদের জন্যে খুবই কম বদদো‘আ করেছিলেন। কিন্তু এ স্থলে মুসলিমদের উপর তাদের অত্যাচারের সীমা ছাড়িয়ে গেলে তিনি বাধ্য হয়ে এরূপ দো‘আ করেন, “হে আল্লাহ্! আপনি মুদার গোত্রের উপর আপনার পাকড়াও কঠোর করে দিন। আর তাদের জন্য এটাকে ইউসুফ আলাইহিসসালামের দুর্ভিক্ষের মত করে দিন।’’ [বুখারীঃ ৭৭১, মুসলিমঃ ৬৭৫]
Tafsir Bayaan Foundation
অবশেষে যখন আমি তাদের ভোগবিলাসপূর্ণ জীবনধারীদের আযাব দ্বারা পাকড়াও করব, তখন তারা সজোরে আর্তনাদ করে উঠবে।
Muhiuddin Khan
এমনকি, যখন আমি তাদের ঐশ্বর্যশালী লোকদেরকে শাস্তি দ্বারা পাকড়াও করব, তখনই তারা চীৎকার জুড়ে দেবে।
Zohurul Hoque
যে পর্যন্ত না আমরা তাদের মধ্যের সমৃদ্ধিশালী লোকদের শাস্তি দিয়ে পাকড়াও করি তখনই তারা আর্তনাদ ক’রে ওঠে।