Skip to content

কুরআন মজীদ সূরা হাজ্জ্ব আয়াত ৯

Qur'an Surah Al-Hajj Verse 9

হাজ্জ্ব [২২]: ৯ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ

ثَانِيَ عِطْفِهٖ لِيُضِلَّ عَنْ سَبِيْلِ اللّٰهِ ۗ لَهٗ فِى الدُّنْيَا خِزْيٌ وَّنُذِيْقُهٗ يَوْمَ الْقِيٰمَةِ عَذَابَ الْحَرِيْقِ (الحج : ٢٢)

thāniya
ثَانِىَ
Twisting
বাঁকা করে
ʿiṭ'fihi
عِطْفِهِۦ
his neck
তার ঘাড়
liyuḍilla
لِيُضِلَّ
to mislead
জন্যে বিভ্রান্ত করার
ʿan
عَن
from
হ'তে
sabīli
سَبِيلِ
(the) way
পথ
l-lahi
ٱللَّهِۖ
(of) Allah
আল্লাহর
lahu
لَهُۥ
For him
জন্যে তার
فِى
in
মধ্যে আছে
l-dun'yā
ٱلدُّنْيَا
the world
দুনিয়ার
khiz'yun
خِزْىٌۖ
(is) disgrace
লাঞ্ছনা
wanudhīquhu
وَنُذِيقُهُۥ
and We will make him taste
আর তাকে আস্বাদন করাবো আমরা
yawma
يَوْمَ
(on the) Day
দিনে
l-qiyāmati
ٱلْقِيَٰمَةِ
(of) Resurrection
ক্বিয়ামাতের
ʿadhāba
عَذَابَ
(the) punishment
শাস্তি
l-ḥarīqi
ٱلْحَرِيقِ
(of) the Burning Fire
দহনের

Transliteration:

Saaniya 'itfihee liyudilla 'an sabeelil laahi lahoo fiddun yaa khizyunw wa nuzeequhoo Yawmal Qiyaamati 'azaabal lhareeq (QS. al-Ḥajj:9)

English Sahih International:

Twisting his neck [in arrogance] to mislead [people] from the way of Allah. For him in the world is disgrace, and We will make him taste on the Day of Resurrection the punishment of the Burning Fire [while it is said], (QS. Al-Hajj, Ayah ৯)

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

(বিতর্ক করে অবজ্ঞাভরে) ঘাড় বাঁকিয়ে (লোকেদেরকে) আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করার উদ্দেশে। তার জন্য আছে লাঞ্ছনা এ দুনিয়াতে, আর কিয়ামাতের দিন তাকে আস্বাদন করাব (অগ্নির) দহন যন্ত্রণা। (হাজ্জ্ব, আয়াত ৯)

Tafsir Ahsanul Bayaan

(সে বিতন্ডা করে) ঘাড় বাঁকিয়ে,[১] লোকদেরকে আল্লাহর পথ হতে ভ্রষ্ট করবার জন্য; তার জন্য ইহলোকে রয়েছে লাঞ্ছনা। আর কিয়ামতের দিন আমি তাকে আস্বাদ করাবো জ্বলন্ত আগুনের শাস্তি।

[১] ثَانِي কর্তৃকারক, এর অর্থঃ যে বাঁকায়। عِطف মানে পার্শ্ব বা ঘাড়। এ দুটি শব্দ দ্বারা বিতন্ডার অবস্থা বর্ণনা করা হয়েছে। এতে এমন লোকের অবস্থা বর্ণনা করা হয়েছে, যে শরীয়ত অথবা যুক্তিভিত্তিক বিনা কোন প্রমাণে আল্লাহর ব্যাপারে বিতর্ক করে এবং সেই সময় সে অহংকারবশতঃ (পার্শ্ব পরিবর্তন করে, ঘাড় বাঁকিয়ে) মুখ ফিরিয়ে নেয়। যেমন অন্যত্র উক্ত অবস্থাকে অন্য ভাষায় বর্ণনা করা হয়েছে {وَلَّى مُسْتَكْبِرًا كَأَن لَّمْ يَسْمَعْهَا} অর্থাৎ, দম্ভভরে মুখ ফিরিয়ে নেয়; যেন ওরা এ শুনতে পায় নি। (লুকমানঃ ৭) {لَوَّوْا رُؤُوسَهُمْ} অর্থাৎ, তারা মাথা ফিরিয়ে নেয় (মুনাফিকূনঃ ৫) {أَعْرَضَ وَنَأَى بِجَانِبِهِ} অর্থাৎ, মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং অহংকারে দূরে সরে যায়। (বানী ইস্রাঈলঃ ৮৩, ফুসসিলাতঃ ৫১)

Tafsir Abu Bakr Zakaria

সে বিতণ্ডা করে অহংকারে ঘাড় বাঁকিয়ে [১] লোকদেরকে আল্লাহর পথ থেকে ভ্রষ্ট করার জন্য [২]। তার জন্য লাঞ্চনা আছে দুনিয়াতে এবং কেয়ামতের দিনে আমরা তাকে আস্বাদন করার দহন যন্ত্রণা।

[১] عطف শব্দের অর্থ পার্শ্ব। [ফাতহুল কাদীর]। এখানে মুখ ফিরিয়ে নেয়া বোঝানো হয়েছে। এর তিনটি অবস্থা রয়েছেঃ এক, মুর্খতাপ্রসূত জিদ ও হঠকারিতা। দুই, অহংকার ও আত্মম্ভরিতা। তিন, যে ব্যক্তি বুঝায় ও উপদেশ দান করে তার কথায় কৰ্ণপাত না করা। এখানে সব প্রকারই উদ্দেশ্য হতে পারে। অর্থাৎ হকের দিকে আহবান করলে সে তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। ঘাড় বাঁকিয়ে চলে যায়, তাকে যে হকের প্রতি আহবান জানানো হচ্ছে অহংকারবশত; তা থেকে বিমুখ হয়। যেমন অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, “তাদেরকে যখন বলা হয়। আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তার দিকে এবং রাসূলের দিকে আস, তখন মুনাফিকদেরকে আপনি আপনার কাছ থেকে একেবারে মুখ ফিরিয়ে নিতে দেখবেন।” [সূরা আন-নিসা; ৬১] [ইবন কাসীর] কুরতুবী বলেন, তর্কের সময় সে হক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। আর তার কথা-বার্তা ও দলীল-প্রমাণাদির মধ্যে গভীর দৃষ্টি দেয়া থেকেও বিরত থাকে। যেমন অন্য আয়াতে এসেছে, “আর যখন তার কাছে আমাদের আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করা হয় তখন সে অহংকারে মুখ ফিরিয়ে নেয় যেন সে এটা শুনতে পায়নি”। [সূরা লুকমান; ৭] অন্যত্র এসেছে, “আর যখন তাদেরকে বলা হয়, “তোমরা আস, আল্লাহর রাসূল তোমাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবেন।’ তখন তারা মাথা ফিরিয়ে নেয়”। [সূরা আল-মুনাফিকূন; ৫] আরও এসেছে, “আর আমরা যখন মানুষের প্রতি অনুগ্রহ করি তখন সে মুখ ফিরিয়ে নেয় ও দূরে সরে যায়। ” [সূরা আল-ইসরা; ৮৩] অনুরূপ অন্যত্র আল্লাহ বলেন, “তারপর সে তার পরিবার পরিজনের কাছে চলে গিয়েছিল অহংকার করে” [সূরা আল-কিয়ামাহ; ৩৩]

[২] অর্থাৎ তারা শুধু নিজেরাই পথভ্ৰষ্ট নয় বরং অন্যদেরকেও পথভ্রষ্ট করার জন্য উঠে পড়ে লাগে। [ফাতহুল কাদীর]। এখানে আরেক অর্থ এও হতে পারে যে, সে অন্যকে পথভ্রষ্ট করার ইচ্ছা না করলেও তার কর্মকাণ্ডের ফলাফল তা-ই দাঁড়ায়। [ইবন কাসীর]

Tafsir Bayaan Foundation

সে বিতর্ক করে ঘাড় বাঁকিয়ে, মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে ভ্রষ্ট করার উদ্দেশ্যে তার জন্য রয়েছে দুনিয়াতে লাঞ্ছনা এবং কিয়ামতের দিন আমি তাকে দহন যন্ত্রণা আস্বাদন করাব।

Muhiuddin Khan

সে পার্শ্ব পরিবর্তন করে বিতর্ক করে, যাতে আল্লাহর পথ থেকে বিভ্রান্ত করে দেয়। তার জন্যে দুনিয়াতে লাঞ্ছনা আছে এবং কেয়ামতের দিন আমি তাকে দহন-যন্ত্রণা আস্বাদন করাব।

Zohurul Hoque

তার ঘাড় ফিরিয়ে, যাতে সে বিপথে চালাতে পারে আল্লাহ্‌র পথ থেকে। তার জন্য এই দুনিয়াতে রয়েছে লাঞ্ছনা, আর কিয়ামতের দিনে আমরা তাকে আস্বাদন করাব জ্বলা-পোড়ার শাস্তি।