কুরআন মজীদ সূরা হাজ্জ্ব আয়াত ৫৫
Qur'an Surah Al-Hajj Verse 55
হাজ্জ্ব [২২]: ৫৫ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ
وَلَا يَزَالُ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا فِيْ مِرْيَةٍ مِّنْهُ حَتّٰى تَأْتِيَهُمُ السَّاعَةُ بَغْتَةً اَوْ يَأْتِيَهُمْ عَذَابُ يَوْمٍ عَقِيْمٍ (الحج : ٢٢)
- walā
- وَلَا
- And not
- এবং না
- yazālu
- يَزَالُ
- will cease
- বিরত হবে
- alladhīna
- ٱلَّذِينَ
- those who
- যারা
- kafarū
- كَفَرُوا۟
- disbelieve
- অমান্য করেছে
- fī
- فِى
- (to be) in
- মধ্যে
- mir'yatin
- مِرْيَةٍ
- doubt
- সন্দেহের
- min'hu
- مِّنْهُ
- of it
- তা হ'তে
- ḥattā
- حَتَّىٰ
- until
- যতক্ষণ না
- tatiyahumu
- تَأْتِيَهُمُ
- comes to them
- তাদের (নিকট) এসে পড়বে
- l-sāʿatu
- ٱلسَّاعَةُ
- the Hour
- ক্বিয়ামাত
- baghtatan
- بَغْتَةً
- suddenly
- হঠাৎ করে
- aw
- أَوْ
- or
- অথবা
- yatiyahum
- يَأْتِيَهُمْ
- comes to them
- তাদের (নিকট) আসবে
- ʿadhābu
- عَذَابُ
- (the) punishment
- শাস্তি
- yawmin
- يَوْمٍ
- (of) a Day
- দিনের
- ʿaqīmin
- عَقِيمٍ
- barren
- বন্ধ্যা (খারাপ)
Transliteration:
Wa laa yazaalul lazeena kafaroo fee miryatim minhu hattaa taatiyahumus Saa'atu baghtatan aw yaatiyahum 'azaabu Yawmin 'aqeem(QS. al-Ḥajj:55)
English Sahih International:
But those who disbelieve will not cease to be in doubt of it until the Hour comes upon them unexpectedly or there comes to them the punishment of a barren Day. (QS. Al-Hajj, Ayah ৫৫)
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
অবিশ্বাসীরা তাতে (অর্থাৎ ওয়াহীতে) সন্দেহ পোষণ করা থেকে বিরত হবে না যতক্ষণ না কিয়ামাত আসবে হঠাৎ ক’রে অথবা তাদের উপর শাস্তি এসে যাবে এক বন্ধ্যা দিনে (যা কাফিরদেরকে কোন সুফল দিবে না)। (হাজ্জ্ব, আয়াত ৫৫)
Tafsir Ahsanul Bayaan
যারা অবিশ্বাস করেছে তারা ওতে সন্দেহ পোষণ করা হতে বিরত হবে না; যতক্ষণ না তাদের নিকট কিয়ামত এসে পড়বে আকস্মিকভাবে অথবা এসে পড়বে এক বন্ধ্যা (অশুভ) দিনের শাস্তি। [১]
[১] يَومٌ عَقِيم এর মূল অর্থ বন্ধ্যা দিন। আর তা হল কিয়ামতের দিন। এ দিনকে বন্ধ্যা এই কারণে বলা হয়েছে যে, তারপর আর কোন দিন হবে না। যেমন যার সন্তান হয় না তাকে বন্ধ্যা বলা হয়। অথবা এই কারণে যে, সেদিন কাফেরদের জন্য কোন দয়া থাকবে না, অর্থাৎ সেদিন তাদের জন্য কল্যাণশূন্য হবে। যেমন আযাব স্বরূপ আসা ঝড়কে رِيحٌ عَقِيم বলা হয়। যেমন মহান আল্লাহ বলেন, {إِذْ أَرْسَلْنَا عَلَيْهِمُ الرِّيحَ الْعَقِيمَ} অর্থাৎ, যখন আমি তাদের বিরুদ্ধে প্রেরণ করেছিলাম অকল্যাণকর বায়ু। (সূরা যারিয়াত ৫১;৪১) অর্থাৎ এমন বায়ু; যার মধ্যে কোন কল্যাণ ও বৃষ্টির পূর্বাভাস ছিল না।
Tafsir Abu Bakr Zakaria
আর যারা কুফরী করেছে, তারা তাতে সন্দেহ পোষণ থেকে বিরত হবে না, যতক্ষণ না তাদের কাছে কেয়ামত এসে পরবে হঠাৎ করে, অথবা এসে পরবে এক বন্ধ্যা দিনের শাস্তি [১]।
[১] মূলে আছে عقيم শব্দ। এর শাব্দিক অর্থ হচ্ছে “বন্ধ্যা”। [ফাতহুল কাদীর] দিনকে বন্ধ্যা বলার দু’টি অর্থ হতে পারে। যদি দুনিয়ার দিন উদ্দেশ্য হয়, তখন অর্থ হবে, আযাব ও শাস্তি নাযিলের দিন। যা এমন ভাগ্য বিড়ম্বিত দিন তাতে কোনরকম কলাকৌশল কার্যকর হয় না। কোন কল্যাণ ও দয়া অবশিষ্ট থাকে না। প্ৰত্যেকটা প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। প্রত্যেকটা আশা নিরাশায় পরিণত হয়। যেমন, বদরের দিন। [ইবন কাসীর; ফাতহুল কাদীর] এ দিনটি প্রতি উম্মতের জন্যই এসেছিল। যেদিন নূহের জাতির উপর তুফান এলো সেদিনটি তাদের জন্য ছিল ‘বন্ধ্যা’ দিন। এমনিভাবে আদ, সামুদ, লূতের জাতি, মাদইয়ানবাসী ও অন্যান্য সকল ধ্বংসপ্রাপ্ত জাতির জন্য আল্লাহ্র আযাব নাযিলের দিনটি বন্ধ্যা দিনই প্রমাণিত হয়েছে। কারণ, “সেদিনের” পরে আর তার “পরের দিন” দেখা যায়নি এবং নিজেদের বিপর্যস্ত ভাগ্যকে সৌভাগ্যে রূপান্তরিত করার কোন পথই খুঁজে পাওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি। রহমত ও দয়ার দেখা তারা আর পায় নি। সুতরাং দুনিয়াতে এ আযাব ও যুদ্ধের দিনগুলো হচ্ছে বন্ধ্যা দিন। অথবা এখানে বন্ধ্যা দিন বলে কিয়ামতের দিনকে বুঝানো হয়েছে। কারণ সেটা এমন দিন যার পরে আর কোন রাত নেই। [কুরতুবী; ইবন কাসীর; ফাতহুল কাদীর; সা‘দী] সেদিন যখন আসবে তখন কাফেররা জানতে পারবে যে, তারা মিথ্যাবাদী ছিল। আর তারা অনুশোচনা করবে, কিন্তু তাদের সে অনুশোচনা কোন কাজে আসবে না। তারা যাবতীয় কল্যাণ হতেই নিরাশ ও হতাশ হয়ে যাবে। তখন আশা করবে, যদি তারা রাসুলের উপর ঈমান আনত এবং তার পথে চলত। সুতরাং এ আয়াতে তাদের মিথ্যা পথ ও বানোয়াট রাস্তায় স্থির থাকার ব্যাপারে সাবধান করা হয়েছে। [সা‘দী]
Tafsir Bayaan Foundation
আর যারা কুফরী করে, তারা এতে সন্দেহ পোষণ করতে থাকবে যতক্ষণ না তাদের নিকট আকস্মিকভাবে কিয়ামত এসে পড়বে অথবা তাদের নিকট এসে পড়বে এক বন্ধ্যা দিনের আযাব।
Muhiuddin Khan
কাফেররা সর্বদাই সন্দেহ পোষন করবে যে পর্যন্ত না তাদের কাছে আকস্মিকভাবে কেয়ামত এসে পড়ে অথবা এসে পড়ে তাদের কাছে এমন দিবসের শাস্তি যা থেকে রক্ষার উপায় নেই।
Zohurul Hoque
আর যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তারা এ সন্বন্ধে সন্দেহ করা থেকে বিরত হবে না যতক্ষণ না ঘড়িঘন্টা অতর্কিতে তাদের উপরে এসে পড়ে, অথবা তাদের উপরে এসে পড়ে এক ধ্বংসাত্মক দিনে শাস্তি।