কুরআন মজীদ সূরা আম্বিয়া আয়াত ১
Qur'an Surah Al-Anbya Verse 1
আম্বিয়া [২১]: ১ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ
اِقْتَرَبَ لِلنَّاسِ حِسَابُهُمْ وَهُمْ فِيْ غَفْلَةٍ مُّعْرِضُوْنَ ۚ (الأنبياء : ٢١)
- iq'taraba
- ٱقْتَرَبَ
- (Has) approached
- নিকটে এসেছে
- lilnnāsi
- لِلنَّاسِ
- for [the] mankind
- জন্যে মানুষের
- ḥisābuhum
- حِسَابُهُمْ
- their account
- তাদের হিসাব (নেয়ার সময়)
- wahum
- وَهُمْ
- while they
- অথচ তারা
- fī
- فِى
- (are) in
- মধ্যে
- ghaflatin
- غَفْلَةٍ
- heedlessness
- উদাসীনতার
- muʿ'riḍūna
- مُّعْرِضُونَ
- turning away
- পড়ে আছে বিমুখ হয়ে
Transliteration:
Iqtaraba linnaasi hisaa buhum wa hum fee ghaflatim mu'ridoon(QS. al-ʾAnbiyāʾ:1)
English Sahih International:
[The time of] their account has approached for the people, while they are in heedlessness turning away. (QS. Al-Anbya, Ayah ১)
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
মানুষের হিসাব গ্রহণের কাল ক্রমশঃ ঘনিয়ে আসছে কিন্তু তারা গাফলতিতে মুখ ফিরিয়ে রেখেছে। (আম্বিয়া, আয়াত ১)
Tafsir Ahsanul Bayaan
মানুষের হিসাব-নিকাশের সময় আসন্ন, [১] অথচ ওরা উদাসীনতায় মুখ ফিরিয়ে রয়েছে। [২]
[১] হিসাবের সময় বলতে কিয়ামত; যা প্রতি সেকেন্ড নিকটবর্তী হয়ে চলেছে। আর প্রতিটি আগমনকারী জিনিসই নিকটবর্তী এবং প্রত্যেক ব্যক্তির মৃত্যু স্বস্থানে তার নিজের জন্য কিয়ামত। তাছাড়া বিগত যুগসমূহের তুলনায় কিয়ামত নিকটে; কারণ (বিশ্বসৃষ্টির পর হতে) যে সকল যুগ পার হয়ে গেছে তা অপেক্ষা অবশিষ্ট যুগ অতি অল্প।
[২] অর্থাৎ, ওর জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হতে অমনোযোগী, পৃথিবীর চাকচিক্যে নিমজ্জিত (যা সেদিনকার জন্য ক্ষতিকর) এবং ঈমানের চাহিদা হতে উদাসীন (যা সেদিনকার জন্য কল্যাণকর)।
Tafsir Abu Bakr Zakaria
মানুষের হিসেব-নিকেশের সময় আসন্ন [১], অথচ তারা উদাসীনতায় মুখ ফিরিয়ে রয়েছে [২]
১১২ আয়াত, মক্কী
[১] আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন; বনী-ইসরাঈল, কাহ্ফ, মারইয়াম, ত্বা-হা ও আম্বিয়া- এগুলো আমার প্রাচীন সম্পদ ও উপার্জন ৷ [বুখারীঃ ৪৪৩১] এর থেকে বুঝা যায় যে, এ সূরাগুলো প্রাথমিক যুগে নাযিল হয়েছিল। এগুলোর প্রতি সাহাবায়ে কিরামের আলাদা দরদ ছিল। তাই আমাদেরও উচিত। এগুলোকে বেশি ভালবাসা এবং এগুলো থেকে হেদায়াত সংগ্ৰহ করা।
[১] অর্থাৎ মানুষের কাছ থেকে তাদের কৃতকর্মের হিসাব নেয়ার দিন অর্থাৎ কেয়ামতের দিন ঘনিয়ে এসেছে। এখানে পৃথিবীর বিগত বয়সের অনুপাতে ঘনিয়ে আসার কথা বলা হয়েছে। লোকদের নিজেদের কাজের হিসেব দেবার জন্য তাদের রবের সামনে হাজির হবার সময় আর দূরে নেই। মুহাম্মদ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আগমন একথারই আলামত যে, মানব জাতির ইতিহাস বর্তমানে তার শেষ পর্যায়ে প্রবেশ করছে। এখন সে তার সূচনাকালের পরিবর্তে পরিণামের বেশী নিকটবর্তী হয়ে গেছে। সূচনা ও মধ্যবর্তীকালীন পর্যায় অতিক্রান্ত হয়ে গেছে এবং এবার শেষ পর্যায়ে শুরু হয়ে গেছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর একটি হাদীসে একথাই বলেছেন। তিনি নিজের হাতের দুটি আঙ্গুল পাশাপাশি রেখে বলেনঃ “আমার আগমন এমন সময়ে ঘটেছে যখন আমি ও কেয়ামত এ দু'টি আঙ্গুলের মতো অবস্থান করছি।” [বুখারীঃ ৪৯৯৫] অর্থাৎ আমার পরে শুধু কেয়ামতই আছে, মাঝখানে অন্য কোন নবীর আগমনের অবকাশ নেই। যদি সংশোধিত হয়ে যেতে চাও তাহলে আমার দাওয়াত গ্ৰহণ করে সংশোধিত হও।
[২] অর্থাৎ কোন সতর্কসংকেত ও সর্তকবাণীর প্রতি দৃষ্টি দেয় না। দুনিয়া নিয়ে তারা এতই মগ্ন যে, আখেরাতের কথা ভুলে গেছে। আখেরাতের জন্য প্রস্তুতি নিতে হলে যে আল্লাহর উপর ঈমান, তাঁর ফরায়েযগুলো আদায় করতে হয়, নিষিদ্ধ কাজগুলো থেকে দূরে থাকতে হয় সেটার জন্য তারা প্রস্তুতি নিচ্ছে না। [ফাতহুল কাদীর] আর যে নবী তাদেরকে সর্তক করার চেষ্টা করছেন তার কথাও শোনে না। তাদের রাসূলের কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে যে ওহী এসেছে তারা সেটার প্রতি দৃষ্টি দেয় না। এ নির্দেশটি প্রাথমিকভাবে কুরাইশ ও তাদের মত যারা কাফের তাদেরকে করা হচ্ছে। [ইবন কাসীর]
Tafsir Bayaan Foundation
মানুষের হিসাব-নিকাশের সময় আসন্ন, অথচ তারা উদাসীনতায় মুখ ফিরিয়ে রয়েছে।
Muhiuddin Khan
মানুষের হিসাব-কিতাবের সময় নিকটবর্তী; অথচ তারা বেখবর হয়ে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।
Zohurul Hoque
মানুষের কাছে তাদের হিসেব-নিকেশ আসন্ন, তথাপি তারা বেখেয়ালিতে ফিরে যাচ্ছে।